আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

লালমনিরহাটের অধিকাংশ মানুষের জীবিকা নির্বাহের প্রধান অবলম্বন কৃষি। তার মধ্যে অন্যতম রবিশস্য ভুট্টা, যা সম্প্রতি এ অঞ্চলের ব্র্যান্ডিং পণ্য বলে পরিচিতি পেয়েছে। ভুট্টা চাষ বদলে দিয়েছে এ অঞ্চলের মানুষের জীবন জীবিকা।

এক সময় চরে মানুষ না খেয়ে কষ্টে দিন পার করত। কিন্তু গত ২৫ বছরে চর এলাকায় দৃশ্যপট বদলে গেছে। বালু মাটিতে ভুট্টা চাষ করে বদলে গেছে তাদের জীবন। গ্রামগুলোতে খড়ের ঘরের পরিবর্তে উঠেছে আধাপাকা ঘর। এখন আর না খেয়ে থাকতে হয় না তাদের।

লালমনিরহাটে এখন ভুট্টাই প্রধান অর্থকরী ফসল। ভুট্টার দানা মানুষের খাদ্য হিসেবে এবং ভুট্টা গাছ ও সবুজ পাতা উন্নতমানের গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয়। হাঁস-মুরগি ও মাছের খাদ্য হিসেবেও এর যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।

লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলাজুড়ে সবুজ পাতায় স্বপ্ন বুনছেন ভুট্টা চাষিরা। ইতোমধ্যে কোথাও কোথাও গাছে ফুল আসা শুরু হয়েছে। কোথাও তরতাজা হয়ে গাছ বেরিয়ে আসছে। কম সময়ে ও ভূগর্ভ স্তরের পানি কম ব্যবহার করতে রবিশস্য আবাদের জন্য কৃষকরা ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন।

তিস্তা ও ধরলা নদীর বুকে জেগে উঠেছে একাধিক চর। সেই চরে গড়ে উঠেছে বসতি। চলছে নানা জাতের ফসলের চাষাবাদ। তিস্তার বুকে সবচেয়ে বেশি চর জেগেছে জেলার হাতীবান্ধা উপজেলায়।

অন্যদিকে ধরলার বুকে সবচেয়ে বেশি চর জেগে উঠেছে লালমনিরহাট সদর উপজেলায়। এসব চরের বুকে মানুষের বসতির পাশাপাশি বিভিন্ন জাতের ফসল চাষ শুরু হয়েছে।

ধরলা নদীতে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ও কুলাঘাটে পাঁচটি চর জেগে উঠেছে। এর মধ্যে দুটি চরে জনবসতি গড়ে উঠেছে। তাছাড়া ধরলা, রত্না ও সানিয়াজান নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় নদীর বুকে বোরো ধান চাষের পাশাপাশি ভুট্টা চাষের ধুম পড়েছে। ভুট্টা চাষের ধুম পড়েছে তিস্তার নদীর বুকেও।

তিস্তার চরাঞ্চলে এ বছর আবহাওয়া অনুকূল ও ভুট্টায় পোকার আক্রমণ না থাকায় কৃষকরা বাম্পার ফলনের আশা করছেন।

ভুট্টা চাষে প্রতি বিঘায় প্রায় ৬-৭ হাজার টাকা খরচ হয়। এছাড়া আলুর জমিতে ভুট্টার আবাদ করলে খরচ একটু কম হয়। ভুট্টার পর ওই জমিতে ধান ও পাট আবাদও হয়।

প্রতি বিঘায় ভুট্টার ফলন আসে ৩৫-৪০ মণ। এছাড়া কমপক্ষে ২০-২৫ মণের মতো ফলন হয়। বাজারে নতুন ভুট্টার মণ ৬০০-৭০০ টাকা।

jagonews24

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, তিস্তা নদীতে পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়ন, হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান, সিঙ্গিমারী, গোড্ডিমারী, সিন্দুর্ণা, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, তুষভাণ্ডার, কাকিনা ইউনিয়ন, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়ন, লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুণ্ডা, খুনিয়াগাছ ও রাজপুর ইউনিয়নে ছোট-বড় প্রায় ৬৩টি জেগে ওঠা চরে ভুট্টার চাষ হচ্ছে।

কৃষকরা জানান, প্রতি বছর ছয় মাস পর পর ভুট্টা চাষ শুরু হয়। ভুট্টা চাষের শুরুতেই দাম বেড়ে যায় সার ও বীজের। এতে সাধারণ কৃষকরা স্থানীয় দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের সুদ নিয়ে চাষ শুরু করেন। ফলন ভালো হলে ভালো, না হলে পথে বসতে হয় কৃষকদের।

এদিকে কৃষি ব্যাংকগুলো ভুট্টা চাষের ওপর ঋণ দিলেও সেই ঋণ তুলতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় কৃষকদের। ভুট্টা প্রক্রিয়াজাত কারখানা চালু হলে স্থানীয় বাজারে ভুট্টার দাম নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি সেখানে এলাকার বেকার যুবকদের কাজ করার সুযোগ তৈরি হবে বলে মনে করে সচেতন মহল।

কৃষি বিভাগের পাশাপশি ভুট্টা চাষিদের স্বাবলম্বী ও বাজার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে বেসরকারি বিভিন্ন এনজিও।

চলতি মৌসুমেও এ অঞ্চলের কৃষকরা রেকর্ড পরিমাণ জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। ২০১৯ সালের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ জমিতে এবার ভুট্টা চাষ করেন এখানকার কৃষকরা। বিশেষভাবে লালমনিরহাট, পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ ও আদিতমারী উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ভুট্টা চাষ করেন তারা।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাটে ২০২০-২১ অর্থবছরে রবি মৌসুমে ৩০ হাজার ২৪০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। চলতি অর্থবছর ভুট্টা চাষের জমির পরিমাণ আরও প্রায় দুই হাজার হেক্টর বেড়েছে। প্রতি বছর তামাক চাষ ছেড়ে দিয়ে ভুট্টা চাষের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা।

jagonews24

এ বছর ভুট্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩০ হাজার ১০০ মেট্রিক টন। গত মৌসুমে এ অঞ্চল থেকে প্রায় দুই লাখ ৮২ হাজার টন ভুট্টা উৎপাদন হয়।

সরেজমিনে হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান এলাকায় কৃষক আফজাল হোসেন জানান, দীর্ঘ ২০ বছর ধরে কৃষি বিভাগের সহায়তায় উন্নতজাতের বীজ আবাদের ফলে আগের চেয়ে ভুট্টার ফলন এখন দ্বিগুণ। বর্তমানে প্রতি একর জমি থেকে প্রায় ১০০-১৪০ মণ ভুট্টা পাওয়া যায় এবং এর জন্য খরচ পড়ে ২০-২৫ হাজার টাকা। একরপ্রতি খরচ বাদে লাভ থাকে ৩৫-৪০ হাজার টাকা।

সানিয়াজান এলাকার নিজ শেখসুন্দর গ্রামের শাহাজাহান মন্ডল জানান, এ এলাকায় মানুষের অনেক কষ্ট ছিল। দিনমজুরি করে পরিবার নিয়ে তাদের চলতে হতো। ভুট্টার চাষ শুরু হলে এখানকার মানুষের দিন পরিবর্তন হতে শুরু করে। ভুট্টা চাষের পর থেকে আমরা অনেক উন্নত।

বড়খাতা বাজারের ভুট্টা ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম বলেন, আগাম জাতের ভুট্টার অধিক ফলন, দামও বেশি। প্রতি মণ ভুট্টা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়।

তিনি আরও বলেন, এ এলাকার ভুট্টা কিনতে ঢাকা, কুষ্টিয়া, যশোরসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা আসেন। তাই কৃষকরা ভুট্টার দামও পান।

হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারুক জানান, ভুট্টা চাষের সময় কৃষকদের জমিতে ব্যাপকভাবে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হয়। চলতি মৌসুমে শীতের কারণে সেচ কম দেয়ায় চাষিদের খরচও কম হবে। তিনি তিস্তার চরাঞ্চলসহ জেলাজুড়ে ভুট্টার বাম্পার ফলনের আশা করছেন।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) মো. শামসুজ্জামান জাগো নিউজকে জানান, লালমনিরহাট জেলাজুড়ে ব্যাপক ভুট্টাচাষ হয়েছে। বিশেষ করে নদীর চরগুলোতে ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। জেলাজুড়ে আমাদের কৃষি অফিসাররা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে ভুট্টাচাষের জন্য কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছেন।

বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

এগ্রোবিজ

বিদেশ থেকে খালি হাতে ফিরে ড্রাগন চাষে সাফল্য

বাগানে চাষ করা ড্রাগন হাতে মিরাজুল ইসলাম
বাগানে চাষ করা ড্রাগন হাতে মিরাজুল ইসলাম

মিরাজুল ইসলাম (৩৩)। ১০ বছর সৌদি আরবে ছিলেন। আকামা জটিলতায় খালি হাতে দেশে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। এক বছর বেকার থাকার পর ইউটিউবে পতিত জমিতে ড্রাগন চাষের ভিডিও দেখেন। বাবার কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে নেমে পড়েন ড্রাগন চাষে। দেড় বছরের ব্যবধানে এখন উপজেলার সবচেয়ে বড় ড্রাগন বাগান তাঁর। এ বছর খরচ বাদে আট থেকে নয় লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার ইন্দুরকানি গ্রামের বাসিন্দা মিরাজুল। উপজেলার টগরা গ্রামে দেড় একর জমিতে তিনি ড্রাগনের বাগান তৈরি করেছেন। তাঁর বাগানে এখন সাড়ে তিন হাজার ড্রাগন ফলের গাছ আছে।

মিরাজুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক হিসেবে ১০ বছর সৌদিতে কাজ করে ২০১৯ সালে দেশে ফেরেন তিনি। আকামা সমস্যার কারণে শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। কিছু একটা করবেন বলে ভাবছিলেন। একদিন ইউটিউবে ড্রাগন চাষের ভিডিও দেখতে পান। সেই থেকে ড্রাগন চাষে আগ্রহ জন্মে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে দেড় একর পতিত জমি ড্রাগন চাষের উপযোগী করেন। গাজীপুর থেকে ৬০ টাকা দরে ৬০০ চারা নিয়ে আসেন। বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে শুরু করেন চাষাবাদ। পরের বছর জুনে ফল পাওয়া শুরু করেন।

ড্রাগনের বাগান করতে মিরাজুলের খরচ হয়েছিল ছয় থেকে সাত লাখ টাকা। ইতিমধ্যে ফল বিক্রি করে তাঁর খরচ উঠে গেছে। সাধারণত মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গাছে ফল আসে। বছরে ছয় থেকে সাতবার পাকা ড্রাগন সংগ্রহ করা যায়। এখন পরিপক্ব ও রোগমুক্ত গাছের শাখা কেটে নিজেই চারা তৈরি করেন। ড্রাগন চাষের পাশাপাশি বাগানে চুইঝাল, এলাচ, চায়না লেবুসহ মৌসুমি সবজি চাষ করেন। এ ছাড়া ড্রাগনের চারাও উৎপাদন করে বিক্রি করেন তিনি।

মিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বাগানের বেশির ভাগ গাছে এ বছর ফল ধরেছে। গত মঙ্গলবার বাগান থেকে দেড় টন ফল সংগ্রহ করেছেন। ২৫০ টাকা কেজি দরে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পাইকারদের কাছে বিক্রি করেছেন। স্থানীয় বাজারে ৩০০ টাকা কেজি দরে ড্রাগন বিক্রি হয়। নভেম্বর পর্যন্ত আরও পাঁচ–ছয়বার বাগান থেকে ফল তোলা যাবে। আশা করছেন, খরচ বাদে এবার আট থেকে নয় লাখ টাকা লাভ থাকবে।

মিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমার বাগান থেকে চারা নিয়ে অনেকে বাড়িতে ও ছাদে ছোট পরিসরে ড্রাগনের বাগান করেছেন। আমি এ পর্যন্ত ৪০ টাকায় দেড় হাজার চারা বিক্রি করেছি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্ণ বয়সের একটি ড্রাগনের চারা রোপণের পর ২৫ বছর পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। এর মৃত্যুঝুঁকি নেই বললেই চলে। তবে কয়েক দিন পরপর সেচ দিতে হয়। বৃষ্টির পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হয়। ড্রাগন ফল চাষে রাসায়নিক সার দিতে হয় না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইশরাতুন্নেছা বলেন, মিরাজুল ইসলামকে ড্রাগন চাষে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে আসছে কৃষি বিভাগ। উপজেলায় তাঁর বাগানটি সবচেয়ে বড়। তিনি নিরলস পরিশ্রম করে ছোট থেকে বাগানটি বড় করেছেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোটেক

কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তারা এক সঙ্গে কাজ করতে রাজি

ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি
ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি

ডাচ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে দুই দেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা একসঙ্গে কাজ করতে রাজি হয়েছেন।

গতকাল সোমবার নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগে অনুষ্ঠিত কৃষি খাতের ব্যবসাবিষয়ক এক সম্মেলনে দুই দেশের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত এগ্রি বিজনেস কনক্লেভে বাংলাদেশের প্রায় ৪০জন উদ্যোক্তা ডাচ কৃষি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি প্রযুক্তি সহযোগিতা ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছে ওয়েগেনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়।

আলোচনায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা প্রযুক্তি কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিলে নেদারল্যান্ডসের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা প্রযুক্তি সহযোগিতা দিতে রাজি থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে ডাচরা প্রস্তুত এবং বাংলাদেশি উদ্যোক্তারাও তাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। এ ছাড়া ডাচ সরকার ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বীজ, পশু খাদ্য, পোলট্রি, হর্টিকালচার ও এ্যাকুয়াকালচার বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম সম্পাদন করেছে, যা ওই দেশের বেসরকারি খাতকে আরও উৎসাহিত করেছে।

আলোচনায় কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করতে তৈরি আছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্কয়ার, ইস্পাহানি এগ্রো, একে খান অ্যান্ড কোম্পানি, প্যারাগন গ্রুপ, এসিআই, জেমকন গ্রুপসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা ডাচ প্রযুক্তির প্রয়োগ সরেজমিনে দেখতে যাবেন।

বাংলাদেশের সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের পোল্ট্রিখাতে সহযোগিতার আলোচনা অনেকটা এগিয়েছে উল্লেখ করে মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, দুই দেশের মধ্যে মৎস্য, পশুপালন ও হর্টিকালচারে সহযোগিতার বিপুল সম্ভাবনা আছে।

কনক্লেভ আয়োজনে প্রথমবারের মতো দূতাবাসের সঙ্গে অংশীদার হয়েছে নেদারল্যান্ডসের কৃষি মন্ত্রণালয়, নেদারল্যান্ডস এন্টারপ্রাইজ এজেন্সি, নেদারল্যান্ডস ফুড পার্টনারশিপ, ডাচ-গ্রিন-হাইজডেল্টা, লারিভ ইন্টারন্যাশনাল, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ।

কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থানকারী নেদারল্যান্ডসের আয়তন বাংলাদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের কম। ২০২১-এ কৃষিপণ্য ও খাদ্য রপ্তানি করে নেদারল্যান্ডস ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি আয় করেছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

পেঁয়াজের ক্ষতি পুষিয়ে দিচ্ছে সাথি ফসল বাঙ্গি

পেঁয়াজ তুলে নেওয়ার পর পুরো জমি ভরে গেছে বাঙ্গিগাছে। ফলন হয়েছে ভালো। পাবনার বেড়া উপজেলার বড়শিলা গ্রামে গত শুক্রবার
পেঁয়াজ তুলে নেওয়ার পর পুরো জমি ভরে গেছে বাঙ্গিগাছে। ফলন হয়েছে ভালো। পাবনার বেড়া উপজেলার বড়শিলা গ্রামে গত শুক্রবার

পাবনার বেড়া উপজেলার বড়শিলা গ্রামের কৃষক সাইদুল ইসলাম তাঁর দুই বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করে এবার প্রায় ৪০ হাজার টাকা লোকসান দিয়েছেন। অথচ পেঁয়াজের জমিতেই সাথি ফসল হিসেবে লাগানো বাঙ্গি থেকে তিনি ৫০ হাজার টাকার মতো লাভ করবেন বলে আশা করছেন। এই বাঙ্গি আবাদে তাঁর কোনো খরচ হয়নি। ফলে পেঁয়াজ আবাদের ক্ষতি পুষিয়ে যাচ্ছে।

সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘বাঙ্গি আবাদ কইর‌্যা যে টাকা পাইল্যাম তা হলো আমাগরে ঈদের বোনাস। পেঁয়াজের দাম না পাওয়ায় আমরা (কৃষকেরা) যে ক্ষতির মধ্যে পড়িছিল্যাম, বাঙ্গিতে তা পুষায়া গেছে। এই কয়েক দিনে ১২ হাজার টাকার বাঙ্গি বেচছি। সব মিলায়া ৫০ হাজার টাকার বাঙ্গি বেচার আশা করতেছি।’

সাইদুল ইসলামের মতো পাবনার বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার অনেক কৃষক এবার পেঁয়াজের সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে বাঙ্গির আবাদ করেন। কৃষকেরা পেঁয়াজ আবাদ করতে গিয়ে বিঘায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করেছিলেন। সেই হিসাবে প্রতি মণ পেঁয়াজ উৎপাদনে তাঁদের খরচ হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকার বেশি। কিন্তু বাজারে সেই পেঁয়াজ কৃষকেরা বিক্রি করতে পেরেছেন প্রতি মণ ৬০০ থেকে ৮৫০ টাকায়। এতে প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদে কৃষকদের এবার ২০ হাজার টাকার বেশি লোকসান হয়েছে।

কৃষকেরা বলেন, পেঁয়াজের জমিতে সাথি ফসল হিসেবে বাঙ্গি, মিষ্টিকুমড়া, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। জমিতে পেঁয়াজ লাগানোর পর তা কিছুটা বড় হলে এর ফাঁকে ফাঁকে এসব সাথি ফসল লাগানো হয়। পেঁয়াজের জন্য যে সার, কীটনাশক, সেচ দেওয়া হয়, তা থেকেই সাথি ফসলের সব চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। ফলে সাথি ফসলের জন্য বাড়তি কোনো খরচ হয় না।

কৃষকেরা বলেন, বাঙ্গিতেই কৃষকের লাভ হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। রমজান মাস হওয়ায় এখন বাঙ্গির চাহিদা ও দাম দুই-ই বেশি।

সাঁথিয়ার শহীদনগর গ্রামের কৃষক আজমত আলী জানান, তাঁর জমিসহ এই এলাকার জমি থেকে ৮ থেকে ১০ দিন হলো বাঙ্গি উঠতে শুরু করেছে। এবার বাঙ্গির ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। বাজারে এসব বাঙ্গি আকারভেদে প্রতিটি ৬০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমন দাম থাকলে এক বিঘা থেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকার বাঙ্গি বিক্রি হবে।

সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জীব কুমার গোস্বামী বলেন, পেঁয়াজের সঙ্গে সাথি ফসলের আবাদ কৃষকদের মধ্যে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এ ব্যাপারে তাঁরাও কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

কাঁঠালের আইসক্রিম জ্যাম ও চিপস

জাতীয় ফল কাঁঠালের জ্যাম, চাটনি ও চিপস উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএআরআই) শস্য সংগ্রহের প্রযুক্তি বিভাগের একদল গবেষক। তাঁরা কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত করে মোট ১২টি প্যাকেট ও বোতলজাত পণ্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।

গত শনিবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসে অবস্থিত বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিনা) ‘কাঁঠালের সংগ্রহত্তোর ক্ষতি প্রশমন ও বাজারজাতকরণ কৌশল’ শীর্ষক কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব তথ্য জানান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. গোলাম ফেরদৌস চৌধুরী। কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) অর্থায়নে এবং নিউভিশন সলিউশন্স লিমিটেডের সহযোগিতায় গবেষণা প্রকল্পটি পরিচালিত হয়।

কর্মশালায় ড. মো. গোলাম ফেরদৌস চৌধুরী বলেন, ‘এই প্রকল্পের আওতায় আমরা কাঁঠালের প্রক্রিয়াজাত করে মুখরোচক ১২টি প্যাকেট ও বোতলজাত পণ্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এসব পণ্য উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। কাঁঠালের জ্যাম, আচার, চাটনি, চিপস, কাটলেট, আইসক্রিম, দই, ভর্তা, কাঁঠাল স্বত্ব, রেডি টু কুক কাঁঠাল, ফ্রেশ কাট পণ্যসহ আরও বিভিন্ন ধরনের প্যাকেটজাত পণ্য তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। প্রক্রিয়াজাত পণ্যগুলো ঘরে রেখে সারা বছর খাওয়া যাবে। কাঁঠাল থেকে এসব পণ্য উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা কমানো সম্ভব বলে মনে করছেন গবেষক।’

কর্মশালায় নিউভিশন সলিউশন্স লিমিটেডের মুখ্য পরিদর্শক তারেক রাফি ভূঁইয়া বলেন, উদ্ভাবিত পণ্যগুলো বাজারজাত করার জন্য নিউভিশন কোম্পানি বিএআরআইয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। ময়মনসিংহসহ বাংলাদেশের কয়েকটি জেলা ও উপজেলা শহরে পণ্যগুলো বিপণনের কাজ চলছে।

কর্মশালায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের শস্য সংগ্রহোত্তর প্রযুক্তি বিভাগের বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. হাফিজুল হক খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। সম্মানিত অতিথি ছিলেন কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের সিনিয়র স্পেশালিস্ট (ফিল্ড ক্রপস) ড. নরেশ চন্দ্র দেব বর্মা। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আবু হানিফ। উপস্থিত ছিলেন নিউভিশন সলিউশন্স লিমিটেডের প্রকল্প ম্যানেজার কায়সার আলম।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ফল

কমলা চাষে সার ব্যবস্থাপনা, সেচ, আগাছা ব্যবস্থাপনা ও ফসল তোলা- দা এগ্রো নিউজ

কমলা

সার ব্যবস্থাপনা:  প্রতি গর্তে ১০০ গ্রাম ইউরিয়া সার, ১০০ গ্রাম টিএসপি সার ও এমওপি সার ১০০ গ্রাম প্রয়োগ করতে হয়।

সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা:  চারা গাছের গোড়ায় মাঝে মাঝে পানি সেচ দিতে হবে। বর্ষাকালে গাছের গোড়ায় যাতে পানি না জমে সেজন্য পানি নিকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তাছাড়া কমলা গাছের আগাছা দমন করতে হবে।

ফসল তোলা: মধ্য কার্তিক থেকে মধ্য পৌষ মাসে ফল সংগ্রহ করতে হয়।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@agronewstoday.com, theagronewsbd@gmail.com