আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

পরিবেশ

প্রাণীরাও সংখ্যা বোঝে এবং হিসেব করে – কিন্তু কীভাবে করে, কেন করে?

বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে বিভিন্ন ভাবে সংখ্যার বোধ সৃষ্টি হয়
বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে বিভিন্ন ভাবে সংখ্যার বোধ সৃষ্টি হয়

মানুষ তার জীবনের প্রায় প্রতিটা ক্ষেত্রে কোন না কোনভাবে সংখ্যা ব্যবহার করছে। সংখ্যা ছাড়া মানুষের জীবন কল্পনাই করা যায় না।

কিন্তু মানুষ এই সংখ্যার ধারণা বা সংখ্যা বোঝার ক্ষমতা কোথা থেকে পেলো?

গত কয়েক দশকের মধ্যে এটা ছিল একটা গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার যে মানুষ তার সংখ্যা ব্যবহারের ক্ষমতা ভাষা থেকে পায়নি, বরং এটা তার জৈব উত্তরাধিকার থেকেই পাওয়া।

তাই যদি হয়, তাহলে প্রশ্ন: একটা প্রাণীর সংখ্যা বোঝার ক্ষমতার প্রয়োজনটা কী?

যেটা জানা যাচ্ছে তাহলো, একটি প্রাণীর টিকে থাকার জন্য তার সংখ্যা বোঝার ক্ষমতা তাকে এক বড় সুবিধা এনে দেয়।

ঠিক সে কারণেই অনেক ধরণের প্রাণীর মধ্যে এই ক্ষমতা আছে বলে দেখা যায়।

বিভিন্ন প্রাণীকে তাদের স্বাভাবিক প্রাকৃতিক পরিবেশে পর্যবেক্ষণ ও নিরীক্ষা করে দেখা গেছে, তাদের খাদ্যের উৎসকে কাজে লাগানো, শিকার ধরা, অন্য প্রাণীর শিকার হওয়া থেকে নিজেকে বাঁচানো, তার আবাসভূমির মধ্যে চলাচলের পথ বের করা, এবং নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ – সবক্ষেত্রেই তার সক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় এই সংখ্যার ধারণা।

ব্যাকটেরিয়াও সংখ্যা বোঝে

এমনকি ব্যাকটেরিয়ার মতো পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন এককোষী প্রাণী – যাদের খালি চোখে দেখা যায় না – তারাও সংখ্যা-ভিত্তিক তথ্য ব্যবহার করতে পারতো।

ব্যাকটেরিয়া বেঁচে থাকে তার আশপাশের পরিবেশ থেকে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন উপাদান খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তারা নিজেকে ভেঙে ভেঙে বহুগুণ সংখ্যাবৃদ্ধি করে।

তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মাইক্রোবায়োলজিস্টরা আবিষ্কার করেছেন যে এই ব্যাকটেরিয়ারও একটা ‘সামাজিক জীবন’ আছে, এবং তারা তাদের আশপাশে অন্য ব্যকটেরিয়ার উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি বুঝতে পারে।

ভালুকের মাছ শিকার - তারা কি মাছ গুণতেও পারে?
ভালুকের মাছ শিকার – তারা কি মাছ গুণতেও পারে?

এটাকে আপনি এভাবেও বলতে পারেন যে তারা ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বুঝতে পারে।

উদাহরণ হিসেবে সামুদ্রিক ব্যাকটেরিয়া ভিব্রিও ফিশেরি-র দিকে তাকানো যাক।

আলো-ছড়ানো ব্যাকটেরিয়া

এদের একটা বিশেষ ক্ষমতা আছে – তারা অনেকটা জোনাকির মত নিজেদের শরীর থেকে আলো সৃষ্টি করতে পারে, যাকে বলা হয় বায়োলুমিনিসেন্স।

দেখা গেছে, তারা যখন পাতলা পানির দ্রবণের মধ্যে একাকী থাকে, তখন তারা কোন আলো ছড়ায় না।

কিন্তু যখন তাদের সংখ্যা বেড়ে একটা বিশেষ অংকে পৌঁছায় – তখন তারা সবাই এক সাথে আলো ছড়াতে থাকে। তার মানে হচ্ছে ভিব্রিও ফিশেরি বুঝতে পারে কখন তারা একা, আর কখন তার আশপাশে অন্যরা আছে।

এটাও জানা গেছে, তারা এই আলো ছড়ায় একটা ‘রাসায়নিক’ ভাষা ব্যবহার করে।

সেটা হলো, ব্যাকটেরিয়া থেকে বিশেষ কিছু রাসায়নিক পদার্থের অণু নিঃসরণ হয়। আর পানিতে যখন ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ে, তার অনুপাতে সেই রাসায়নিক অণুর পরিমাণও বাড়তে থাকে। বাড়তে বাড়তে যখন তা একটা নির্দিষ্ট সংখ্যায় পৌঁছায়, তাকে বলে ‘কোরাম।’

‘কোরাম’ হলেই ব্যাকটেরিয়ারা টের পায়, সেখানে তারা কতজন উপস্থিত আছে – এবং তখন তারা সবাই আলো ছড়াতে থাকে।

জোনাকির মতই এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া আছে যারা আলো ছড়াতে পারে
জোনাকির মতই এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া আছে যারা আলো ছড়াতে পারে

বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন ‘কোরাম সেন্সিং’।

শুধু যে ভিব্রিও ফিশেরির-ই এ ক্ষমতা আছে তা নয়। সব ব্যাকটেরিয়াই নিজেদের মধ্যে তাদের সংখ্যা কত তা জানান দেয়, এবং সে জন্য ব্যবহার করে রাসায়নিক ‘সিগন্যালিং অণু’।

এই কোরাম সেন্সিং যে শুধু ব্যাকটেরিয়ারই আছে তা নয়, অন্য অনেক প্রাণীরই এ ক্ষমতা আছে।

সংখ্যা হিসেব করে বাড়ি বদল করে জাপানি পিঁপড়ে

ধরা যাক জাপানী পিঁপড়ের কথা – যার বৈজ্ঞানিক নাম মায়ার্মেসিনা নিপ্পনিকা। এই পিঁপড়েরা যদি বুঝতে পারে যে তাদের কলোনির সংখ্যা একটা নির্দিষ্ট সংখ্যা বা কোরামে পৌঁছেছে, তাহলে তারা একটা নতুন জায়গায় গিয়ে বসতি স্থাপন করে।

সেই নতুন জায়গাটা নির্বাচনের ক্ষেত্রেও একটা সংখ্যার হিসেব আছে।

এই পিঁপড়েরা যদি দেখে যে নতুন জায়গাটিতে আগে থেকেই একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক পিঁপড়ের বসতি আছে, তাহলেই তারা সবাই মিলে একমত হয় যে নতুন জায়গাটা বসবাসের জন্য নিরাপদ।

সংখ্যা হিসেব করে বাড়ি বদল করে জাপানি পিঁপড়ে
সংখ্যা হিসেব করে বাড়ি বদল করে জাপানি পিঁপড়ে

তার পরই তারা পুরো দল আর বাচ্চাকাচ্চা মিলে বাড়ি বদল শুরু করে।

যে কোন প্রাণীর পথ চিনে চলা এবং ঘুরে ঘুরে খাদ্যের সন্ধানের জন্য সংখ্যার জ্ঞান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মৌমাছিরা পথ চেনে কিভাবে?

দুজন জীববিজ্ঞানী – ম্যারি ডেক এবং মান্ডিয়াম শ্রীনিবাসন – ২০০৮ সালে একটা চমৎকার পরীক্ষা চালিয়েছিলেন মৌমাছিদের নিয়ে।

তারা দেখেছিলেন, কোথাও খাদ্যের সন্ধান পাওয়া গেলে পথের কি কি চিহ্ন দেখে সেখানে যাওয়া যাবে – তার সংখ্যা মৌমাছিরা বুঝে নিতে পারে। এই চিহ্নগুলোর স্থান অদল-বদল করে দিলেও তারা পথ ঠিকই চিনে নিতে পারে।

মৌমাছি তাদের আবাসস্থল অর্থাৎ চাক থেকে খাদ্যের উৎস পর্যন্ত পথের দূরত্ব মাপতে বিভিন্ন ল্যান্ডমার্ক বা পথের কোথায় কি আছে, তার ওপর নির্ভর করে।

এই হিসেবটা তাদের টিকে থাকার জন্য অত্যন্ত জরুরি।

মেঠো ইঁদুর খাবার হিসেবে জ্যান্ত পিঁপড়ে পছন্দ করে।

কিন্তু পিঁপড়ে আক্রান্ত হলে কামড় দেয়, তাই তারা শিকার হিসেবে বেশ বিপজ্জনক। দেখা গেছে, এই ইঁদুরকে যদি দু’দল পিঁপড়ের সামনে হাজির করা হয়, তাহলে যে দলটিতে পিঁপড়ের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কম, সেটিকেই তারা আক্রমণ করছে।

শিকারী প্রাণীরা তাদের শিকার বা প্রতিপক্ষের সংখ্যা হিসেব করতে পারে
শিকারী প্রাণীরা তাদের শিকার বা প্রতিপক্ষের সংখ্যা হিসেব করতে পারে

এক জরিপে দেখা গেছে, ইঁদুরের ক্ষমতা আছে ৫টি বনাম ১৫টি, ৫টি বনাম ৩০টি, এবং ১০টি বনাম ৩০টির দলের মধ্যে যেটিতে পিঁপড়ে সবচেয়ে কম – সেটাকে বেছে নেবার।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, ইঁদুর এভাবে সবচেয়ে ছোট পিঁপড়ের দলটিকে বেছে নিচ্ছে, যাতে শিকার করাটা সুবিধাজনক হয়, এবং কামড় খাবার সম্ভাবনাও অনেকটা কমানো যায়।

শিকারী প্রাণীরা শিকার করে হিসেব কষে

যেসব প্রাণী দলবদ্ধভাবে শিকার করে, তাদের ক্ষেত্রেও সংখ্যার বোধ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

যেমন ধরা যাক নেকড়ে। তারা প্রায়ই বড় প্রাণী শিকার করে – যেমন ইল্ক বা বাইসন জাতীয় মহিষ। এরা লাথি বা গুঁতো মেরে বা পায়ে মাড়িয়ে একটা নেকড়ে মেরে ফেলার শক্তি রাখে।

সে কারণে দেখা যায়, কখন কোন প্রাণী শিকার করা হচ্ছে, সে অনুযায়ী নেকড়ের দলের সদস্য সংখ্যা ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।

একটা এল্ক শিকারে সাফল্য পেতে হলে নেকড়ের পালে দুই থেকে ছয়জন ‘সদস্য’ থাকতে হবে।

অন্যদিকে একটা বাইসন সফলভাবে শিকার করতে হলে ৯ থেকে ১৩টি নেকড়ের একটা দল দরকার।

তার মানে শিকারে সাফল্য পেতে হলে এই সংখ্যার হিসেবটা নেকড়েদের বুঝতে হয়।

এক পাল সিংহী। তারাও সম্ভাব্য শত্রুর সংখ্যা আন্দাজ করে সিদ্ধান্ত নেয় - লড়াই করবে কি-না
এক পাল সিংহী। তারাও সম্ভাব্য শত্রুর সংখ্যা আন্দাজ করে সিদ্ধান্ত নেয় – লড়াই করবে কি-না

অন্যদিকে আত্মরক্ষার ক্ষেত্রেও একটা দলে কতগুলো প্রাণী আছে, তা গুরুত্বপূর্ণ।

ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল জীববিজ্ঞানী ২০০৫ সালে ইউরোপে এক গবেষণা চালান চিকাডি নামে চড়ুইজাতীয় পাখির আচরণের ওপর।

পাখির ডাকের মধ্যে সংখ্যার ইঙ্গিত

সেখানে তারা দেখতে পান যে এই পাখিরা যখন চিল বা প্যাঁচার মতো কোন সম্ভাব্য ‘শত্রু’ দেখতে পায়, তখন তারা বিশেষ এক ধরনের ডাক দিয়ে অন্য চিকাডিদের সতর্ক করে।

সেই ডাক বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন – এই ডাকের মধ্যে কত বার ‘ডি-ডি-ডি’ করা হচ্ছে তার সংখ্যা থেকে বোঝা যায়, সম্ভাব্য শত্রুকে কতটা বিপজ্জনক বলে মনে করা হচ্ছে।

যেমন পাখিটা যদি ‘চিক-আ-ডি-ডি’ বলে ডাকতে থাকে, তাহলে বোঝানো হচ্ছে সম্ভাব্য শত্রু তেমন বিপজ্জনক নয় – হয়তো একটা ধূসর প্যাঁচা। এরা আকারে বেশ বড় এবং ধীরগতির – তাই ছোট এবং দ্রুতগতির চিকাডির সাথে পেরে ওঠে না।

কিন্তু আশপাশে যদি দ্রুতগতিসম্পন্ন শিকারী পিগমি প্যাঁচা দেখা যায়, তাহলে চিকাডিদের ডাক হয় ‘চিক-আ-ডি-ডি-ডি-ডি’ অর্থাৎ ‘ডি’ ধ্বনির সংখ্যা বেড়ে যায় – যা গুরুতর বিপদের সতর্কবাণী।

একটি প্রাণী যদি তার খাদ্যের উৎস বা বিচরণক্ষেত্র একাই রক্ষা করতে না পারে, তাহলে তার কাছে দল এবং সেই দলের কতজন আছে, তা খুব গুরুত্বপূর্ণ ।

চিকাডি পাখির ডাকের মধ্যে আছে সংখ্যার ইঙ্গিত
চিকাডি পাখির ডাকের মধ্যে আছে সংখ্যার ইঙ্গিত

সেই দলকে যদি কোন প্রতিপক্ষের মোকাবিলা করতে হয়, তাহলে বিপক্ষ দলটি কত বড় তার আন্দাজটাও টিকে থাকার জন্য জরুরি।

বেশ কিছু স্তন্যপায়ী প্রাণী নিয়ে বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা চালিয়ে দেখেছেন যে যুদ্ধের ফলাফল কি হবে, তা অনেক সময়ই নির্ধারিত হয় সংখ্যা দিয়ে।

সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিজ্ঞানী কারেন ম্যাককম্ব এবং তার সহযোগীরা দক্ষিণ আফ্রিকার সেরেংগেটি জাতীয় উদ্যানের সিংহীদের আচরণের ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখেছেন যে যখন তাদের গোপন স্পিকার থেকে তাদের দলের বাইরের অন্য একটি সিংহীর গর্জন শোনানো হয়, তখন তারা আক্রমণাত্মকভাবে শব্দ যেদিক থেকে এসেছে সেদিকে ছুটে যায়।

কিন্তু এক সাথে তিনটি সিংহীর গর্জন শোনানো হলে তারা কম আক্রমণাত্মক ভাব দেখায়।

তবে যখন তাদের দলে পাঁচ বা তার চেয়ে বেশি সিংহী থাকে, তখন আবার তারা তিনটি সিংহীর আওয়াজ যেদিক থেকে এসেছে সেদিকে ছুটে যায়।

তার মানে তারা অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে যে পাল্টা আক্রমণ করা হবে কি-না।

সামরিক কৌশলবিদ

প্রাণীজগতে মানুষের সবচাইতে নিকট আত্মীয় হচ্ছে শিম্পাঞ্জীরা।

তাদের ওপর একই পদ্ধতিতে একটি গবেষণা চালিয়েছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইকেল উইলসন।

তিনি দেখেছেন, শিম্পাঞ্জীদেরকে যখন অন্য শিম্পাঞ্জীদের ডাক শোনানো হচ্ছে, তখন তারা একজন সামরিক কৌশলবিদের মতোই তার নিজ দলের তুলনায় প্রতিপক্ষের শক্তি কতটা – তা চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।

প্রাণীজগতে মানুষের সবচাইতে নিকট আত্মীয় হচ্ছে শিম্পাঞ্জীরা
প্রাণীজগতে মানুষের সবচাইতে নিকট আত্মীয় হচ্ছে শিম্পাঞ্জীরা

এতে দেখা যাচ্ছে, শিম্পাঞ্জীদের দলটি যদি মনে করে যে প্রতিপক্ষের তুলনায় তাদের সদস্য সংখ্যা অন্তত দেড়গুণ বেশি – শুধু তাহলেই তারা যুদ্ধ করতে আগ্রহী হয়।

কারণ জীববৈজ্ঞানিক দিক থেকে তাদের বেঁচে থাকাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং এর লক্ষ্য হচ্ছে তাদের জিনকে পরবর্তী প্রজন্মে ছড়িয়ে দেয়া।

টেনেব্রিও মলিটর নামে এক ধরণের গুবরে পোকাদের মধ্যে দেখা যায় পুরুষ পোকাটি যত বেশি সম্ভব স্ত্রী-পোকার সাথে যৌনমিলন করছে, এবং এ জন্যে প্রতিযোগিতাও হয় তীব্র।

যৌনমিলনের পর পুরুষ পোকাটি স্ত্রী-পোকাকে কিছু সময় ধরে পাহারাও দেয় – যাতে সে অন্য কারো সাথে মিলিত হতে না পারে। মিলনের আগে পুরুষ পোকাটি যত বেশি সংখ্যক প্রতিদ্বন্দ্বীর মোকাবিলা করে – মিলনের পর সে তত বেশি সময় ধরে স্ত্রী পোকাটিকে পাহারা দেয়।

প্রজননের ক্ষেত্রে এই আচরণের গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রয়েছে, এবং এখানেও পুরুষ গুবরে পোকা তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের সংখ্যা হিসেব করছে।

শুক্রাণুর প্রতিযোগিতা

কারণ, এর পেছনে যে শুধু যৌনমিলন করতে সফল হবার তাড়নাই কাজ করছে তাই নয় – বরং এখানে আসল পুরস্কারটা হচ্ছে, কার শুক্রাণু দিয়ে স্ত্রী-প্রাণীর ডিম্বাণু নিষিক্ত হচ্ছে, সেটা।

শুক্রাণুর এই প্রতিযোগিতা বিভিন্ন প্রাণীর ক্ষেত্রে বিভিন্ন আচরণের মধ্যে দিয়ে প্রকাশ পেতে দেখা যায়।

কিছু পাখি ডিম ফোটানো এবং বাচ্চাদের বড় করার কষ্টকর কাজটি এড়াতে নানা রকম কৌশলের আশ্রয় নেয়।

এই বিছাদের মধ্যে দেখা যায় একটি পুরুষ-বিছা একাধিক স্ত্রী বিছার সাথে যৌনমিলন করছে
এই বিছাদের মধ্যে দেখা যায় একটি পুরুষ-বিছা একাধিক স্ত্রী বিছার সাথে যৌনমিলন করছে

তারা অন্য পাখির বাসায় গিয়ে তাদের ডিমের মধ্যেই নিজের ডিম পেড়ে আসে।

আমেরিকান কুট নামে এক ধরণের পাখি এভাবেই ডিম পাড়ে।

কিন্তু বিজ্ঞানীরা এদের ওপর গবেষণা চালাতে গিয়ে দেখেছেন যে প্রতিবেশী অন্য পাখিরা নিজেদের ডিম গুণে রাখে – যাতে তাদের বাসায় আমেরিকান কুট ডিম পেড়ে গেলে তা ধরা পড়ে যায়।

বুদ্ধিমান কাউবার্ড

কাউবার্ড নামে আরেক জাতের পাখিও এই একই কাজ করে।

কিন্তু এতে তারা যেন ধরা না পড়ে এবং ডিমটা থেকে যেন সফলভাবে বাচ্চা ফোটে, তা নিশ্চিত করতে তাদের অনেক হিসেব-নিকেশ করতে হয়।

গবেষকরা দেখেছেন, এ জন্য তারা প্রতিবেশী অনেকগুলো পাখির বাসার ওপর নজর রাখে – কে কখন ডিম দিচ্ছে।

কাউবার্ড যেভাবে অন্য পাখির বাসায় ডিম পেড়ে আসার দিনক্ষণ হিসেব করে, তা প্রায় অবিশ্বাস্য
কাউবার্ড যেভাবে অন্য পাখির বাসায় ডিম পেড়ে আসার দিনক্ষণ হিসেব করে, তা প্রায় অবিশ্বাস্য

তারপর এমনভাবে সময় হিসেব করে, সুযোগ বুঝে, তাদের বাসায় নিজের ডিম পেড়ে আসে, যেন অন্য পাখির বাচ্চা ফোটার সাথে সাথেই তাদের ডিমও ফোটে।

এই হিসেবে ভুল হলে তার ডিমটা ধরা পড়ে যাবে এবং তা নিশ্চিতভাবেই নষ্ট করে ফেলা হবে।

আর যদি বেশি দেরি হয়ে যায়, তাহলে হোস্ট পাখির ডিমে তা দেয়ার সময় শেষ হয়ে যাবে – কাউবার্ডের ডিম ফোটার আগেই।

তার মানে হচ্ছে, সফলভাবে অন্যকে দিয়ে নিজের ডিম ফোটানোর কাজ করাতে হলে একটি কাউবার্ডকে দিনক্ষণ থেকে শুরু করে ডিমের সংখ্যা – সবকিছুরই এক জটিল হিসেব করতে হয়।

কাউবার্ডের মধ্যে মাফিয়া-প্রবণতাও দেখা যায়।

কাউবার্ড
কাউবার্ড

অন্য পাখিরা তার ডিম ভেঙে দিলে এরা নিজেরা আবার অন্য পাখির ডিম ঠুকরে ফুটো করে দিয়ে আসে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, সংখ্যার এই বোধ জীবনধারণ ও বংশবৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

সব প্রাণীই এ ক্ষমতাকে কোন না কোনভাবে ব্যবহার করে।

তারা আরো বলছেন, বিবর্তনবাদের দিক থেকে এ ক্ষমতার উৎস যাই হোক না কেন, একটা বিষয় প্রায় নিশ্চিত যে এটি এমন এক ক্ষমতা, যার সাথে প্রাণীদের পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেবার প্রক্রিয়ার সম্পর্ক আছে।

(টিউবিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোবায়োলজি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক এ্যান্ড্রেয়াস নিডারের এই নিবন্ধটি এমআইটি প্রেস রিডারে প্রথম প্রকাশিত হয়, যা অনুমতি নিয়ে পুনঃপ্রকাশ করা হয়েছে। )

  • কাউবার্ড

    কাউবার্ড

  • কাউবার্ড যেভাবে অন্য পাখির বাসায় ডিম পেড়ে আসার দিনক্ষণ হিসেব করে, তা প্রায় অবিশ্বাস্য

    কাউবার্ড যেভাবে অন্য পাখির বাসায় ডিম পেড়ে আসার দিনক্ষণ হিসেব করে, তা প্রায় অবিশ্বাস্য

  • এই বিছাদের মধ্যে দেখা যায় একটি পুরুষ-বিছা একাধিক স্ত্রী বিছার সাথে যৌনমিলন করছে

    এই বিছাদের মধ্যে দেখা যায় একটি পুরুষ-বিছা একাধিক স্ত্রী বিছার সাথে যৌনমিলন করছে

  • প্রাণীজগতে মানুষের সবচাইতে নিকট আত্মীয় হচ্ছে শিম্পাঞ্জীরা

    প্রাণীজগতে মানুষের সবচাইতে নিকট আত্মীয় হচ্ছে শিম্পাঞ্জীরা

  • চিকাডি পাখির ডাকের মধ্যে আছে সংখ্যার ইঙ্গিত

    চিকাডি পাখির ডাকের মধ্যে আছে সংখ্যার ইঙ্গিত

  • এক পাল সিংহী। তারাও সম্ভাব্য শত্রুর সংখ্যা আন্দাজ করে সিদ্ধান্ত নেয় - লড়াই করবে কি-না

    এক পাল সিংহী। তারাও সম্ভাব্য শত্রুর সংখ্যা আন্দাজ করে সিদ্ধান্ত নেয় - লড়াই করবে কি-না

  • শিকারী প্রাণীরা তাদের শিকার বা প্রতিপক্ষের সংখ্যা হিসেব করতে পারে

    শিকারী প্রাণীরা তাদের শিকার বা প্রতিপক্ষের সংখ্যা হিসেব করতে পারে

  • সংখ্যা হিসেব করে বাড়ি বদল করে জাপানি পিঁপড়ে

    সংখ্যা হিসেব করে বাড়ি বদল করে জাপানি পিঁপড়ে

  • জোনাকির মতই এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া আছে যারা আলো ছড়াতে পারে

    জোনাকির মতই এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া আছে যারা আলো ছড়াতে পারে

  • ভালুকের মাছ শিকার - তারা কি মাছ গুণতেও পারে?

    ভালুকের মাছ শিকার - তারা কি মাছ গুণতেও পারে?

  • বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে বিভিন্ন ভাবে সংখ্যার বোধ সৃষ্টি হয়

    বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে বিভিন্ন ভাবে সংখ্যার বোধ সৃষ্টি হয়

  • কাউবার্ড
  • কাউবার্ড যেভাবে অন্য পাখির বাসায় ডিম পেড়ে আসার দিনক্ষণ হিসেব করে, তা প্রায় অবিশ্বাস্য
  • এই বিছাদের মধ্যে দেখা যায় একটি পুরুষ-বিছা একাধিক স্ত্রী বিছার সাথে যৌনমিলন করছে
  • প্রাণীজগতে মানুষের সবচাইতে নিকট আত্মীয় হচ্ছে শিম্পাঞ্জীরা
  • চিকাডি পাখির ডাকের মধ্যে আছে সংখ্যার ইঙ্গিত
  • এক পাল সিংহী। তারাও সম্ভাব্য শত্রুর সংখ্যা আন্দাজ করে সিদ্ধান্ত নেয় - লড়াই করবে কি-না
  • শিকারী প্রাণীরা তাদের শিকার বা প্রতিপক্ষের সংখ্যা হিসেব করতে পারে
  • সংখ্যা হিসেব করে বাড়ি বদল করে জাপানি পিঁপড়ে
  • জোনাকির মতই এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া আছে যারা আলো ছড়াতে পারে
  • ভালুকের মাছ শিকার - তারা কি মাছ গুণতেও পারে?
  • বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে বিভিন্ন ভাবে সংখ্যার বোধ সৃষ্টি হয়
বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

পরিবেশ

ছাদ বাগানের জন্য কয়েকটি টিপস

ছাদ বাগানীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। টবে, ড্রামে গাছ লাগানো হয়। কেউ ফল, কেউবা সবজির গাছ লাগান। কেউ সফল হন। কেউ সফল হন না। ছোট ছোট কিছু ভুল বাগানীরা করে থাকেন। সে কারণে যত্ন নিলেও ফল আসে না। এখানে ছাদ বাগানীদের জন্য কিছু টিপস দেয়া হলো, যা মানলে সফলতা পাওয়া সহজ হতে পারে।

প্রথমেই মনে রাখতে হবে, টবে বা ড্রামে গাছ লাগালে তাকে খাবার দিতে হবে। প্রকৃতিতে বিদ্যমান গাছের মতো সে খাবার সংগ্রহ করতে পারে না। রোগ-বালাই হলো কিনা সেটাও বুঝে ব্যবস্থা নিতে হবে। ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে।

১. মাটির সাথে অবশ্যই কিছু কোকোপিট মেশাবেন। গাছের গোড়া স্যাতস্যাতে হতে দিবেন না। স্যাতস্যাতে হলে অসংখ্য রোগ হবে। মাটি ভেজা থাকবে তবে স্যাতস্যাতে না। কেকোপিট মেশালে পানি কম দিলেও হবে। কোকোপিট (নারকেলের ছোবলার গুড়া) পানি ধরে রাখে। অতি বৃষ্টি হলে গোড়ায় পানি জমতে দেয় না। হালকা হওয়ায় ছাদে ওজনের চাপ পড়ে না। এছাড়া কোকোপিটে কিছু পুষ্টি উপাদান আছে। যা গাছের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কোকোপিটে চারা দ্রুত গজায়, বড় হয়। মাটির চেয়ে কোকোপিটে চারা ভালো হয়।

২. গাছের জন্য বিরিয়ানি হলো সরিষার খৈল-পচা পানি। মাটির হাড়িতে খৈল পচাতে হবে। কমপক্ষে ৫ দিন। ৭ দিন কিংবা বা ১৫ দিন হলে উত্তম। অল্প পানিতে পচিয়ে তার সাথে আরো পানি মিশিয়ে দিতে হবে। এটি গাছের জন্য অত্যন্ত উপকারী। একটু গন্ধ হয়, তাই অল্প একটু গুড় দিতে পারেন। ছাদে হাড়িতে পচালে বাসায় গন্ধ আসবে না। বৃষ্টির সময় খৈল-পচা পানি দেবেন না। পুকুরের নিচে থাকা পাক কাদা গাছের জন্য খুব উপকারী।

৩. আমরা জানি, মাটিতে অসংখ্য ক্ষতিকর ছত্রাক থাকে। যা গাছকে মেরে ফেলার জন্য যথেস্ট। তাই মাটি রেডি করার সময় কিছুটা বায়োডামা সলিট দিবেন। এটি উপকারী ছত্রাক। মাটিতে ক্ষতিকারক উপাদানগুলো মেরে ফেলে। আবার জৈব সারের কাজও করে। গাছের জন্য মাটি হবে ঝুরঝুরে, হালকা।

৪. যাই লাগান না কেন, ভালো জাতের বীজ কিনা নিশ্চিত হয়ে নেবেন। ভালো বীজে ভালো ফসল হবে। নতুবা যতই যত্ন নেন না কেন, সব পরিশ্রম বেলাশেষে জলে যাবে। বীজ থেকে নিজে চারা করা উত্তম। কারণ বাজার থেকে যে চারা কিনবেন সেটার জাত ভালো হবে সে নিশ্চয়তা কোথায়? ছত্রাকনাশক দিয়ে বীজ শোধন করে নেয়া উত্তম। পদ্ধতি হলো- ছত্রাকনাশক দেয়া পানিতে কিছুটা সময় বীজ ভিজিয়ে রাখতে হবে। ম্যানসার, মেটারিল দুটি ছত্রাকনাশক।

৫. গাছ বেশি তো ফলন বেশি- এটি ভুল ধারণা। অল্প জায়গায় বেশি গাছ লাগানো যাবে না। গাছ পাতলা করে লাগাতে হবে। বেশি লাগালে গাছ প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবে না। একটি ফলের ক্রেটে মাত্র দুটি গাছ। একটি টবে একটি গাছ। ক্রেট বা টবে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

৬. ছাদে মাচা দেয়া সমস্যা। কারণ ঘুঁটি থাকে না। এ জন্য ফলের ক্রেটের চারপাশে লাঠি বেঁধে সহজে মাচা দেয়া যায়। লতাপাতা জাতীয় গাছ লাগানোর পাত্র একটু গভীর হলে উত্তম। গাছের জন্য সবচেয়ে বেশি ভালো জৈব সার হলো পাতা-পচা সার, তারপর ভার্মি কম্পোস্ট, তারপর গোবর সার। পাতা-পচা সার সহজলভ্য নয়। দাম বেশি। কিন্তু ভার্মি কম্পোস্ট সহজলভ্য। মাটির সঙ্গে মিনিমাম ৪০% জৈব সার দেয়া উত্তম।
৭. নিম কীটনাশককে ক্ষতিকারক পোকা-মাকড় খুব অপছন্দ করে। এটি দিলে তারা বিরক্ত বোধ করে। গাছে বাসা বাঁধতে পারে না। প্রতি সাত দিনে একবার সব গাছের পাতায় নিম কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। মাসে একবার ইপসম সল্ট স্প্রে করে দেয়া উত্তম। একইভাবে মাসে একবার পানির সঙ্গে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড মিশিয়ে স্প্রে করা ভালো।

৮. ডাটা, পুইশাক, লালশাক, ধনেপাতা এসব লাগাতে পারেন। মাত্র ২৫ দিনে খেতে পারবেন। লালশাক লাগালে নেট দিয়ে ঘিরে দেবেন। শাকপাতা লাগালে দ্রুত আউটপুট পাবেন। যা আপনাকে প্রেরণা দেবে। পুইশাক গাছের পাতায় দাগ হলে পাতা কেটে দিন। অথবা ছত্রাকনাশক স্প্রে করেন। অথবা গাছ উঠিয়ে আবার লাগান। ইউরিয়া সার দিলে পুইশাক দ্রুত বাড়বে। শশা গাছের বৃদ্বির জন্য ডিএপি সার দিলে ভালো হবে। শশা গাছে ছাড়া ছাড়া ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হয়। খুব রোদ, গাছের গোড়ায় মালচিং করে দিয়ে উত্তম ফল মিলবে। মালচিং হলো গাছের গোড়ায় বিশেষ পলিথিন কিংবা শুকনো পাতা, খড় দিয়ে ঢেকে দেয়া।

৯. ফুল আসার পরে প্রানোফিক্স অথবা মিরাকুরান গাছের পাতায় শেষ বিকালে স্প্রে করবেন। বাসায় দুইটি গ্রুপের ছত্রাকনাশক রাখা ভালো। যেমন- ম্যানসার, মেটারিল। ১৫ দিনে একবার স্প্রে করবেন। এগরোমিন্ড গোল্ড অনুখাদ্য বা অন্য কোনো অনুখাদ্য বাসায় রাখতে হবে। মাসে কমপক্ষে একবার স্প্রে করবেন। অতিরিক্ত গরম, বৃষ্টি, খাদ্যের অভাব, গাছ রোগাক্রান্ত, আবহাওয়া দ্রুত আপডাউন করা ইত্যাদি কারণে ফুল ঝরে পড়তে পারে। আবার পরাগায়ন না হলে ঝরে পড়তে পারে। এ জন্য হাতের মাধ্যমে পরাগায়ন করতে হবে। পুরুষ ফুলের পরাগদণ্ড নারী ফুলে গর্ভে ঘষে দিতে হবে।

১০. ছাদ বাগানে গাছ মারা যাওয়ার অন্যতম কারণ পানি বেশি বা কম দেয়া। যতটুকু লাগে ঠিক ততটুকু পানি দিতে হবে। কোন গাছের কি চাহিদা, রোগ একটু স্টাডি করলে সহজে সফল হতে পারবেন।

১১. গাছের পাতার নিচে খেয়াল করবেন। বেগুন গাছের পোকা মারার জন্য সেক্স ফোরেমান ফাঁদ লাগাবেন। ডগা ছিদ্র বা ফল ছিদ্র হলে সাইপারমেত্রিন গ্রুপের কীটনাশক দিতে হবে। একটি বেগুন গাছ অনেক দিন ফল দেয়। ঢেড়স গাছ বেশি রোদ পড়ে এমন জায়গায় লাগাবেন। বেগুন, ঢেড়স, লালশাক, পুইশাক, ধনেপাতা, ডাটা শাক- এসব গাছের খুব যত্ন করতে হয় না।

১২. রসুন আর লবঙ্গ বেটে সেই পানি গাছে স্প্রে করলে পোকা কম আসবে। মরিচ গাছে নেপথলিন বেঁধে দিন, পোকা কম আসবে। পাতা কোকড়ালে ভার্মিটেক কিংবা এবোম কীটনাশক দিন। কোকড়ানো পাতা ফেলে দিন। মরিচ গাছে দশ দিন পর পর ডায়মেথট গ্রুপের (যেমন টাফগর) কীটনাশক দিলে উপকার হবে। সবকিছু করছেন, তারপরও কাজ হচ্ছে না। এক্ষেত্রে গাছের জায়গা বদল করেন, উঠিয়ে অন্যত্র লাগান।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

দৈনন্দিন

নিপাহ্‌ ভাইরাসঃ খেজুরের রস খাওয়ার আগে সতর্ক থাকতে যা করণীয়

নিপাহ্‌ ভাইরাস খেজুরের রস খাওয়ার আগে সতর্ক থাকতে যা করণীয়
নিপাহ্‌ ভাইরাস খেজুরের রস খাওয়ার আগে সতর্ক থাকতে যা করণীয়
খেজুরের রস সংগ্রহের প্রক্রিয়া।

শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।

আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।

নিপাহ্‌ ভাইরাস আতঙ্ক

খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।

কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।

দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।

মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।

সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।

কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্‌ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

পরিবেশ

জেনে নিন এই মরসুমে কোন কোন ঔষধি উদ্ভিদের চাষ আপনার জন্য সেরা

দেশের বিভিন্ন রাজ্যেই বর্ষার (Monsoon 2021) প্রভাবে চলছে বৃষ্টিপাত। এসময় কৃষকেরা খারিফ শস্য (Kharif Crops) বপনে তৎপর হয়ে ওঠেন। এই খরিফ মরসুমে কৃষকভাইরা সাধারণত অঞ্চলভেদে ধান, অড়হর, সোয়াবিন সহ বিভিন্ন চাষে মনযোগ দিয়ে থাকেন ৷ তবে এসব ছাড়াও, ঔষধি গুন সমৃদ্ধ (Medicinal Crops) গাছ চাষে বর্ষায় যে কতটা লাভ হতে পারে সে সম্পর্কে অনেকেই হয়তো জানেন না৷

বিশেষ করে বর্ষাকালেই এমন বহু ঔষধি গুন সম্পন্ন গাছ রয়েছে যাদের চাষ হতে পারে লাভজনক৷

বর্ষাকালে কোন কোন ঔষধি উদ্ভিদের চাষ করা যেতে পারে অথবা এই চাষ কীভাবেই বা করা যাবে সে বিষয়ে সঠিক তথ্য না পাওয়ার কারণেই অনেকের কাছে বিষয়টি অধরা৷ চলুন এই প্রতিবেদনে এমনই কিছু গাছ নিয়ে আলোচনা করা যাক যা কৃষকদের জন্য হতে পারে লাভদায়ক৷ তবে সঠিক সময়ে, সঠিক রোপন, সেচ, কীটনাশক দেওয়ার প্রয়োজন এগুলিতে, না হলে এর ওপর খারাপ প্রভাব পড়তে পারে৷

অশ্বগন্ধা –

বর্ষায় এর চাষ ভালো৷ জুন থেকে অগস্ট পর্যন্ত এর চাষ করতে পারেন৷ এর বিভিন্ন জাত রয়েছে৷ উন্নত মানের গাছের চাষে কৃষকের লাভের পরিমাণও বৃদ্ধি পেতে পারে৷ উল্লেখ্য, প্রতি হেক্টরে ৫ কিলোগ্রাম বীজ ব্যবস্থা করতে হবে৷ যদি কেউ ১ হেক্টর জমিতে অশ্বগন্ধার চাষ করতে চায় তাহলে তাকে প্রায় ৫০০ বর্গমিটারে নার্সারি তৈরি করতে হবে৷ প্রায় ১ সেন্টিমিটার গভীরে বীজ বপন করতে হবে৷

শতমূলী –

শীত বাদ দিয়ে বছরের যে কোনও সময়ে এই গাছের চাষ করতে পারেন৷ বর্ষাকালে এই চারা রোপন করলে সহজেই তা বেড়ে উঠতে থাকে৷ তবে বীজ বপনের আগে বীজ ১ দিন পর্যন্ত হালকা গরম জলে ভিজিয়ে রাখতে হয়৷

যষ্টিমধু –

জুলাই থেকে অগস্ট পর্যন্ত এর চাষ করা হয়৷ আর তাই জুন থেকেই এর প্রস্তুতি শুরু করে দেন কৃষকেরা৷ জলনিকাশি ব্যবস্থা উচ্চমানের হওয়া প্রয়োজন এই গাছ চাষের জন্য৷ মনে রাখতে হবে এর চাষের আগে জমিতে কমপক্ষে ১৫ টন গোবর সার দেওয়া প্রয়োজন, এরপরেই এটি চাষ করা উচিত৷

ঘৃতকুমারী –

এর ভালো উৎপাদনের জন্য জলনিকাশি ব্যবস্থা ঠিক রাখতে হবে৷ এই ধরনের ঔষধি গুনসম্পন্ন গাছ শীতকাল বাদ দিয়ে যে কোনও সময় চাষ করতে পারেন৷ বর্ষাকালে দূরত্ব রেখে বীজ বপন করতে হবে৷ কম সময়ের মধ্যেই ব্যবহারোপযোগী হয়ে ওঠে এগুলি৷

অগ্নিশিখা বা কলিহারি –

এটি চাষের জন্য কৃষকেরা জুন মাসেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন৷ জুলাইয়ে ভালো বৃষ্টিতে এর চাষ শুরু করা যেতে পারে৷ উল্লেখ্য, ১ হেক্টর জমির জন্য প্রায় ১০ ক্যুইন্টাল কন্দের প্রয়োজন৷ এটি চাষের আগেও জমিতে গোবর সার প্রয়োগ করে তা প্রস্তুত করে নিতে হবে৷

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

পরিবেশ

শিখে নিন টবে দারুচিনির চাষের কৌশল

পৃথিবীতে ভোজ্য মসলা যতরকম আছে তারমধ্যে দারুচিনি সবথেকে উল্লেখযোগ্য। এই প্রাচীনতম মসলা বহুদিন ধরে ওষধি হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে চলেছে। এছাড়াও খাবারে স্বাদ বাড়ানো থেকে শুরু করে, পানীয় এবং তরল মশলাদার খাবারে স্বাদ বাড়ানোর জন্যও এই দারচিনির ব্যবহার হয়। এলাচ, গোলমরিচ, লবঙ্গের সাথে সাথে দারুচিনির নামও মসলা হিসেবে একই পংক্তিতে উচ্চারিত হয়। বহু কৃষক দারুচিনির চাষ করে ভীষণভাবে উপকৃত হয়েছেন। বাজারে এই দারুচিনির চাহিদা প্রচুর পরিমানে থাকায়, এই চাষে ভালো লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও সৌখিন মানুষেরাও ভালোবেসে দারুচিনির চাষ বাড়িতে করে থাকেন। দারুচিনি গাছের বাকল, ফুল, কুঁড়ি, পাতা, ফল, শেকড় সবকিছুই কাজে লেগে যায়। দারুচিনি গাছ বাড়িতে চাষ করতে গেলে ঘরে ছাদে দুই জায়গাতেই চাষ করা যায়।

মনে রাখতে হবে এই চাষ করতে গেলে উপযুক্ত পরিমানে রোদ দরকার। বাংলার জলবায়ুতে মূলত শীতকালে এই চাষ করা সবথেকে ভালো। জানুয়ারি মাসে দারুচিনি গাছে ফুল ফোটা আরম্ভ করে, এবং এই গাছের ফল পাকতে আরম্ভ করে জুলাইয়ে। সেইসময়ই ফল থেকে বীজ সংগ্রহ করে নিয়ে এসে বাগানে বা টবে রোপন করে দেওয়া উচিত।

প্রয়োজনীয় রোদ (Sunlight)

কড়া সূর্যালোক দারুচিনি জন্য প্রয়োজনীয়, তাই এটি পর্যাপ্ত রোদ পাওয়া যায় এমন জায়গায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দারুচিনি রোপন করতে গেলে রৌদ্রোজ্জ্বল স্থান যেমন জানালার ধারে, ব্যালকনি কিংবা ছাদের খালি স্থান ব্যবহার করতে হবে।

উপযুক্ত মাটি (Soil)

দারুচিনি চাষের জন্য ভাল মানের মাটি ব্যবহার করা আবশ্যক। বাগানের মাটি ব্যবহার না করাই ভালো, কেননা এতে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। অনে সময় আমরা আশেপাশ থেকে মাটি নিয়েই টব ভরে গাছ লাগানো হয়।  বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সংবেদনশীল গাছগুলোতে এই উপায় কার্যকরী হয় না। নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভাল এমন মাটি ব্যবহার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে উত্তম নিষ্কাশনযুক্ত বেলে দোআঁশ মাটি ব্যবহার করা সবথেকে উত্তম। জেনে রাখা ভালো দারুচিনি খরা একদমই সহ্য করতে পারে না। মাটির বিকল্প হিসেবে ১৫% ট্রাইকোকমপোস্টযুক্ত কোকোডাস্ট ব্যবহার করা যেতে পারে।

বাইরে চাষ করার জন্য এক মিটার (৩০ সেন্টিমিটার গভীর) পর্যন্ত গর্ত করে মাটি দিয়ে পূরণ করে নিতে হবে। ঘরের ভিতরে বা ছাদবাগানের দারুচিনি চাষের জন্য একটি বড় পাত্র প্রয়োজন হবে।

রোপন (Planting)

দারুচিনির বীজ সংগ্রহও করা যায় অথবা নার্সারি থেকে দারুচিনির গাছ কিনেও আনা যায়।

বাইরে চাষের ক্ষেত্রে

দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে ১ মিটার x ১ মিটার এবং ৩০ সেমি গভীরতায় খনন করে মাটি দিয়ে গর্তটি পূরণ করতে হবে।

ঘরের মধ্যে টবে রোপনের ক্ষেত্রে

নিচে গর্ত সহ বড় সিরামিক পাত্র (৬০ x ৫০ সেমি) ব্যবহার করতে হবে। পাত্রটি মাটি বা কোকোডাস্ট দিয়ে পূরণ করে নিতে হবে। ৩০ সেন্টিমিটার গভীরতা এবং ৩০ সেন্টিমিটার প্রস্থের একটি গর্ত তৈরি করতে একটি বাগান ট্রোয়েল ব্যবহার করে নেওয়া ভালো। বীজ ব্যবহার করলে  ১.৫ সেন্টিমিটার গভীর গর্ত তৈরি করে নেওয়া উচিত। এবার গাছটি গর্তের মধ্যে রেখে মাটি দিয়ে চাপা দিতে হবে। বীজ ব্যবহার করলে প্রতি ১.৫ সেমি গর্তে একটি করে বীজ পুঁততে হবে এবং মাটি দিয়ে বীজটি ঢেকে দিতে হবে।

মাটি সবসময় ভেজা রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল দিতে হবে। দারুচিনি গাছ পাত্রে রোপন করার পর, টবের নিচের গর্ত থেকে জল বের না হওয়া পর্যন্ত জল দিতে হবে। টবের উপরের ৫ সেন্টিমিটার শুকিয়ে গেলেই আবার গাছটিকে জল দিতে হবে।

গাছের পরিচর্যা (Caring)

দারুচিনি গাছে নিয়মিত সার প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম বছর ৫০ গ্রাম টিএসপি, ৭৫ গ্রাম এমওপি ও ৫০ গ্রাম ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হবে। প্রতিবছর ২-৩ কেজি ট্রাইকোকম্পোস্ট ও সার প্রয়োগ শেষে একই হারে টিএসপি, এমওপি ও ইউরিয়া দিতে হবে।

দারুচিনি প্রথম ধরতে দুই থেকে তিন বছর সময় নেয় এবং তার পরে প্রতি দুই বছর পরপরই ফসল দিতে থাকে। দারুচিনি গাছ কম করে ১০-১৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। তাই একে নিয়মিত করে ছোট রাখতে হবে। পাঁচ বছর বয়সী দারুচিনি গাছ থেকে নিয়মিত দারুচিনি সংগ্রহের ডাল পাওয়া সম্ভব। দারুচিনি ব্যবহার করার জন্য যে শাখাগুলি কাটা হবে সেগুলি থেকে বাকল তুলে নিতে হবে, বাকলগুলি ব্যবহার করার আগে জলে ভালোভাবে ভিজিয়ে নেওয়া উচিত।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

আঙিনা কৃষি

টবে লাগান মিষ্টি তেঁতুল গাছ

পৃথিবীতে জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে, হারিয়ে যাচ্ছে বহু প্রাণী ও উদ্ভিদ বৈচিত্র। চাষবাসের জমিরও সংকুলান ঘটছে সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে। গগনচুম্বী বাড়ি ঘিরে ফেলছে সমস্ত ফাঁকা জমিন। শখ করে মানুষ খোলা জায়গায় যে গাছ লাগবে অথবা ফল-ফুলের চারা সেই উপায়ও আর নেই। গাছ লাগানোর জন্য সামান্য জায়গাও ফাঁকা থাকছে না আর। তবে আমাদের করণীয় কী? বৃক্ষরোপন কি তবে অচিরেই বন্ধ হয়ে যাবে। বেঁচে থাকার জন্য তো গাছ লাগাতে হবেই। বাড়ির একটুকরো বারান্দা অথবা ব্যালকনিতেও সুন্দর ভাবে ইচ্ছা করলে গাছ লাগানো যায়। বাড়ির ছাদেও বানানো যায় সুন্দর বাগিচা। শহরের মানুষদের জন্য ছাদ বাগানের কোনও বিকল্পও নেই। বাড়ির মধ্যেকার ব্যালকনি অথবা ছাদের একটুকরো জমিতেও, ইচ্ছা করলে টবে চাষ করা যায় বিভিন্ন ফুলের ও ফলের গাছ।

শাকসবজি, পেয়ারা, লেবু প্রভৃতি দেশীয় গাছ টবে বাড়তে দেওয়া থেকে শুরু করে বর্তমানে বহু বিদেশী গাছের চারাও মানুষ ব্যালকনি অথবা ছাদে চাষ করছেন। তার মধ্যে থাই মিষ্টি তেঁতুল টবের চাষ পদ্ধতি হিসাবে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। প্রথমত মিষ্টি তেঁতুলের চাষ করতে গেলে, নার্সারি থেকে এই বিশেষ তেঁতুলের সঠিক বীজ নিয়ে আনতে হবে। তবে থাই মিষ্টি তেঁতুলের কলম পাওয়া একটু দুষ্কর কাজ। বুঝে সঠিক চারা নিয়ে আসা বাগান মালিকের উপরেই বর্তায়।

থাই মিষ্টি তেঁতুলের ফুল থেকে ফল ধরতে প্রায় ৭ মাস সময় লাগে। বছরে দু’বার থাই মিষ্টি তেঁতুলের গাছে ফল ধরে। প্রথমবার বর্ষাকালে এবং দ্বিতীয়বার শীতকালে। এই গাছের পরিচর্যা আলাদা করে করার কোনও দরকার পড়ে না। গাছের যত্নআত্তি নিতে হয় ঠিকই, কিন্তু তা বলে, আলাদা করে কোনও বিশেষ যত্ন নিতে হয় না।

গাছ লাগানোর পদ্ধতি (Planting):

থাই মিষ্টি তেঁতুল চাষের জন্য আদর্শ মাটি হল, দো-আঁশ বা বেলে দো-আঁশ মাটি। এই দু’টি মৃত্তিকার মধ্যে যে কোনও একটি বেছে নিন। তারপর বেছে নেওয়া মাটির দুই ভাগ অংশের সাথে গোবর, ১০০ গ্রাম, টিএসপি ১০০ গ্রাম, পটাশ, ২৫০ গ্রাম, হাড়ের গুঁড়ো এবং ৫০ গ্রাম সরিষার খোল একসঙ্গে মিশিয়ে ২০ ইঞ্চি মাপের বড় টবে জল মিশিয়ে রেখে দিতে হবে। ১০ থেকে ১২ দিন পর টবের মাটি ভালো করে খুঁচিয়ে দিয়ে আরও ৪-৫ দিন রেখে দিতে হবে। ৪ থেকে ৫ দিন বাদে মিষ্টি তেঁতুলের একটি ভালো চারা ওই টবে লাগান।

পরিচর্যা(Caring):

চারা লাগানোর প্রথম কয়েক মাস তেমন যত্নের দরকার পড়বে না। অবশ্যই গাছে এই সময়টুকু পর্যাপ্ত জলের যোগান, এবং আগাছা পরিষ্কারের কাজ করতে হবে।  ছয় মাস চারা লাগানোর সময়সীমা ফুরোলেই ১ মাস বাদে বাদে গাছে সরষের খোল মিশ্রিত পচা জল দিতে হবে। মনে রাখতে  হবে খোল দেওয়ার আগে গাছের মাটি খুঁচিয়ে নিতে হবে।

রোগ দমন (Disease management):

সাধারণত থাই মিষ্টি তেঁতুল গাছে পোকামাকড়ের আক্রমণ দেখা যায় না। কিন্তু বর্ষাকালে অনেক সময় তেঁতুল গাছে ছত্রাক হানা দেয়। এর ফলে তেঁতুল ফেটে যায়। এই অসুবিধার থেকে গাছকে বাঁচাতে হলে, বর্ষাকাল আসার আগেই ভালো ছত্রাকনাশক ওষুধ ১০ দিন অন্তর গাছে স্প্রে করে ছড়িয়ে দিতে হবে।

বাংলার বেজায় টক তেঁতুলের সঙ্গে থাই মিষ্টি তেঁতুলের কোনও তুলনাই চলে না। অত্যন্ত মিষ্টি খেতে এই তেঁতুল থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়ায় চাষ প্রভূত পরিমাণে হলেও, আমাদের রাজ্য এই ফলের চাষ এখনও ততটা গতি পায়নি। কিন্তু আপনি আপনার ব্যালকনি অথবা ছাদে সহজেই এই থাই তেঁতুলের গাছ লাগাতে পারেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@agronewstoday.com, theagronewsbd@gmail.com