পহেলা বৈশাখ মানেই পান্তা ভাতে ইলিশ খাওয়া! এদিনের খাবারে ইলিশ ছাড়া চলেই না। মহামারির কারণে গতবারের মতো এবারও ঘরেই উদযাপন করতে হবে পহেলা বৈশাখ। তাই এদিন বাহারি পদ তৈরি করে পরিবারসহ উপভোগ করার দারুণ সুযোগ পাবেন।
ইলিশ বিভিন্নভাবে রান্না করা যায়। যেভাবেই রান্না করুন না কেন, ইলিশের স্বাদ মুখে লেগে থাকে। কারণ ইলিশ যেভাবেই রান্না করা হোক না কেন এর সুবাস ছড়াবেই। পহেলা বৈশাখ উদযাপনে ইলিশের বেশ কয়েকটি সুস্বাদু পদ তৈরি করে নিতে পারেন খুব সহজেই। জেনে নিন রেসিপি-
পদ্ধতি: প্রথমে মাছের টুকরো ভালোভাবে ধুয়ে হলুদ ও লবণ মাখিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে। কড়াইয়ে তেল গরম করে মাছগুলো ভালোভাবে ভেজে নিন। শুকনো মরিচ মচমচে করে ভেজে নিন।
মাছ ঠান্ডা হলে কাঁটা বেছে নিতে হবে। এরপর পেঁয়াজ, মরিচ ও ধনেপাতা স্বাদমতো লবণ এবং বেছে রাখা মাছ দিয়ে খুব ভালোভাবে মাখিয়ে গরম গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন মজাদার ইলিশ মাছের ভর্তা।
লেবু ইলিশ
উপকরণ ১. ইলিশ মাছের টুকরো ৬টি ২. পেঁয়াজ বেরেস্তা ১ কাপ ৩. লেবু ১টি ৪. আদা বাটা ১ চা-চামচ ৫. হলুদ গুঁড়া আধা চা-চামচ ৬. মরিচ গুঁড়া ১ চা-চামচ ৭. ধনিয়া গুঁড়া আধা চা-চামচ ৮. কাঁচা মরিচ ৫টি ৯. সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ ১০. লবণ পরিমাণমতো
পদ্ধতি: মাছের সঙ্গে মরিচ ও হলুদের গুঁড়ো এবং লবণ মাখিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন। এরপর চুলায় রাখা কড়াইয়ে তেলের মধ্যে পেঁয়াজ বেরেস্তা দিয়ে হালকা নেড়ে একে একে আদা বাটা ও ধনিয়ার গুঁড়ো দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে এর মধ্যে ইলিশ মাছের টুকরোগুলো দিতে হবে।
কষানো হয়ে গেলে পরিমাণমতো পানি দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত। সেদ্ধ হয়ে গেলে ঢাকনা তুলে মাছের মধ্যে ফালি করে কাটা কাঁচা মরিচ ও একটি লেবু কেটে রস ছড়িয়ে দিয়ে ২-৩ মিনিট দমে রেখে নামিয়ে নিন। সাদা ভাত অথবা পোলাওয়ের সঙ্গে পরিবেশন করুন সুস্বাদু লেবু ইলিশ।
ইলিশের কোরমা
উপকরণ ১. ইলিশ মাছের টুকরো ৫-৬টি ২. পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ ৩. আদা বাটা ১ চা-চামচ ৪. পেঁয়াজ বাটা আধা কাপ ৫. তেজপাতা ১টি ৬. এলাচ ২টি ৭. দারুচিনি ২টি ৮. গুঁড়া মরিচ দেড় চা-চামচ ৯. টক দই আধা কাপ ১০. কাঁচা মরিচ ৮-১০টি ১১. বাদাম বাটা ১ টেবিল চামচ ১২. কিশমিশ ১ চা-চামচ ১৩. ঘি ১ টেবিল চামচ ১৪. চিনি ১ টেবিল চামচ ১৫. লবণ স্বাদমতো ১৬. তেল পরিমাণমতো
পদ্ধতি: মাছের সব টুকরোগুলো বাটা মশলা, মরিচ গুঁড়া, টক দই ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে মেখে ঘণ্টাখানেক মেরিনেট করে রাখুন। একটি কড়াইয়ে তেল ও ঘি গরম করে মিহি করা পেঁয়াজ বাদামি করে ভেজে তাতে মাখানো ইলিশ মাছ, এলাচ, দারুচিনি ও তেজপাতা দিয়ে ১০ মিনিট রান্না করুন।
যখন তেল উপরে ভেসে উঠবে; তখন চিনি ও কিশমিশ দিয়ে আরও ৫ মিনিট রান্না করে নামিয়ে নিন। গরম গরম পরিবেশন করুন ভাত, পোলাও কিংবা খিচুড়ির সঙ্গে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন