আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

ফল

জেনে নিন আখ চাষের পদ্ধতি : চতুর্থ পর্ব

আখ অর্থকরী ফসলের মধ্যে অন্যতম। আখ থেকে চিনি, গুড় এবং রস পাওয়া যায়। বাংলাদেশের মোট আবাদকৃত জমির ২.০৫% আখের আবাদ হয় যার পরিমাণ ১.৭০ লাখ হেক্টর। মিলজোনে ০.৮৬ লাখ হেক্টর এবং ননমিলজোনে ০.৮৪ লাখ হেক্টর। আসুন আখ চাষের পদ্ধতি জেনে নেই-

সারের উপরি প্রয়োগ

গাছ গজানোর পর জমিতে সার প্রয়োগকে উপরি সার প্রয়োগ বলা হয়। নাইট্রোজেন ও পটাশ জাতীয় সারের ৩ ভাগের ১ ভাগ রোপণের সময় এবং ৩ ভাগের ২ ভাগ ৪ মাস বয়সের মধ্যে উপরি প্রয়োগ করা প্রয়োজন। নামলা আখে সারের উপরি প্রয়োগ ৩ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা উচিত। ইউরিয়া সার ৪ ইঞ্চি মাটির নিচে প্রয়োগ করতে হবে। রোপা আখের বেলায় ঝাড়ের চারপাশে রিং করে সারগুলো মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। সার প্রয়োগের সময় মাটিতে পর্যাপ্ত রস থাকতে হবে।

আখের গোড়ায় মাটি

সচরাচর ২ বার চারার গোড়ায় মাটি দেওয়া হয়। কুশি বের হওয়া শেষ হলে অর্থাৎ আগাম আখের বেলায় ঝাড়প্রতি ৮-১০টি এবং নামলা আখের বেলায় ৫-৬টি কুশি বের হওয়ার পর আর নতুন কুশি হতে না দিয়ে চারার গোড়ায় মাটি তুলে দিতে হবে। প্রথমবারের প্রায় ১ মাস পরে দ্বিতীয় ও শেষবার মাটি তুলে দিতে হবে। অবশ্যই প্রয়োজনীয় সেচ, পোকামাকড়ের রোগ বালাই দমন ব্যবস্থা নিতে হবে।

শুকনো পাতা পরিষ্কার

গাছের শুকনো পাতা বেশি থাকলে আখ বাতাসে হেলে পড়ার আশঙ্কা থাকে। শুকনো পাতায় ক্ষতিকর পোকা আশ্রয় গ্রহণ করে সুস্থ গাছকে আক্রমণ করে। পাতার খোল এবং পর্বের সংযোগস্থলে বৃষ্টির পানি জমে পর্ব থেকে নতুন কুঁড়ি অঙ্কুরিত হয়, যা আখের চিনির পরিমাণ কমিয়ে দেয়।

আখ বাঁধা

সাধারণত আখের কাণ্ড গঠন হওয়ার পর অতিবৃষ্টি কিংবা ঝড়ো হাওয়ায় গাছ হেলে পড়তে পারে। ভাদ্র-কার্তিক মাসের দিকে যখন আখ হেলে পড়ার সম্ভবনা দেখা দেয়; তখন প্রথমে আখের শুকনো ও অর্ধ শুকনো পাতা দিয়ে প্রতিটি ঝাড় আলাদাভাবে বেঁধে দিতে হবে। পরবর্তীতে পাশাপাশি দুই সারির ৩-৪টি ঝাড় একত্রে আড়াআড়িভাবে বাঁধতে হবে। বাঁধার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে, যেন আখের ডগাগুলো পরস্পরের সঙ্গে জড়িয়ে না যায়।

ক্ষতিকর পোকামাকড়

আখের ক্ষতিকর পোকামাকড়ের কারণে ২০% ভাগ ফলন এবং ১৫% চিনি বা গুড় আহরণ কম হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ৭০টি ক্ষতিকর পোকামাকড় শনাক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে ১০টি মারাত্মক।

১. মাজরা পোকা

ক. আগাম মাজরা ও পিঙ্গল মাজরা: জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত এর আক্রমণ দেখা যায়। বাদামি রঙের মথ। পাখার শেষ প্রান্তে গোলাকার কালো ফোটা। স্ত্রীমথ ৪-১৪ গাদায় মোট প্রায় ৬০০টি ডিম পাড়ে। কীড়াগুলো ঘোলা সাদা এবং পিঠে ৫টি হালকা বাদামি রঙের ডোরা থাকে।

লক্ষণ: মরাডিগ দেখা যায় যা টান দিলে সহজে বের হয়ে আসে। মরা ডগার গোড়ায় দুর্গন্ধযুক্ত পঁচা অংশ থাকে। চারার গোড়ায় পোকা ঢোকার কালো ছিদ্র থাকে, ছিদ্রের মুখে করাতের গুড়ার মত পোকার বিষ্ঠা দেখা যায়।

দমন: ছিদ্রের ২-২১/২ ইঞ্চি নিচ থেকে আক্রান্ত গাছ পাতাসহ কেটে আগুনে পোড়াতে হবে। পিঙ্গল মাজরার বেলায় আখ ক্ষেতের সাথে বা কাছের জমিতে গমের চাষ এড়িয়ে চলতে হবে। পাশে গমের ক্ষেত থাকলে জমির সে দিকের আইল পরিষ্কার রাখতে হবে। জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত এলাকার সব চাষি মিলে পোকার দমন কাজ চালাতে হবে। সঠিক কীটনাশক অনুমোদিত মাত্রায় ও সঠিক পদ্ধতিতে প্রয়োগ করতে হবে।

খ. ডগার মাজরা: সাদা ধবধবে মথ সকাল বেলায় আখের পাতার উপর রোদ পোহাতে দেখা যায়। স্ত্রীমথ আখের পাতার নিচে ৩-১৩ গাদায় প্রায় ২০০টি ডিম পাড়ে। ডিমের গাদাগুলো বাদামি রঙের লোমে ঢাকা থাকে। মথ ও ডিমের গাদা সহজেই চেনা যায় এবং তা ধরে পোকা দমন করা যায়।

লক্ষণ: পাতার মধ্যশিরা বরাবর প্রথমে সাদা পরে বাদামি দাগ দেখা যায়। ২-৩ নং পাতায় আড়াআড়ি অনেকগুলো বন্দুকের গুলির মতো ছিদ্র দেখা যায়। মাঝপাতা খর্বাকৃতি, কাচির ন্যায় বাঁকা, কালো, পোড়া বা ছেঁড়া অবস্থায় দেখা যায়।

দমন: আলোর ফাঁদে বা হাত-জালে ধরে মথ সংগ্রহ ও ধ্বংস করা।
আক্রান্ত গাছ কুচকী এলাকার ৮-১২ ইঞ্চি নিচ থেকে পোকাসহ আখের ডগা কেটে ধ্বংস করা।
সম্মিলিতভাবে মাঠের সকল ক্ষেতের পোকা একত্রে দমন করা।
পোকা মুক্ত বীজখণ্ড রোপণ, আগাম আখ রোপণ ও সুপারিশকৃত সারের মাত্রা অনুসরণ করা।
শতকরা ৫ ভাগের বেশি আক্রমণ হলে কার্বোফুরান ৫জি জাতীয় দানাদার কীটনাশক হেক্টর প্রতি ৪০ কেজি বা হেক্টর প্রতি ৩৩.৩৩ কেজি মার্শাল ৬জি নালার দু’পাশে ১০ সে.মি গভীর নালায় ২ বার (চৈত্র ও বৈশাখ, মাসে ১ বার) প্রয়োগ করা।

গ. কাণ্ডের মাজরা: স্ত্রীমথ ৪-৫টি গাদায় সারি করে পাতার নিচে মোট ৫০০-৮০০ ডিম পাড়ে। ডিমগুলো ঢাকা থাকে না। কীড়াগুলো বেগুনি রঙের এবং পিঠে ৪টি পিঙ্গল বর্ণের ডোরা থাকে।

লক্ষণ: আক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে মরাডিগ দেখা যায়। আক্রান্ত কাণ্ডের আগা থেকে প্রায় ১ ফুট নিচে অনেকগুলো ছিদ্র দেখা যায়। করাতের গুড়ার মতো কীড়ার মল কাণ্ডের গায়ে লেগে থাকতে দেখা যায়। প্রাথমিক পর্যায়ে একই স্থানে অনেক কীড়া একত্রে থাকে। পরবর্তীতে প্রতিকাণ্ডে ২-৬টি কীড়া একত্রে দেখা যায়, দ্বিতীয় পর্যায়ে কোন মরাডিগ লক্ষণ হয় না।

দমন: প্রাথমিক অবস্থায় আক্রান্ত গাছ পোকাসহ কেটে পোকা মারতে হবে। এজন্য এপ্রিল-আগস্ট পর্যন্ত প্রতিসপ্তাহে কমপক্ষে ২ বার আখ ক্ষেত পরিদর্শন করতে হবে। পোকামুক্ত বীজখণ্ড রোপণ, পোকা প্রতিরোধী জাতের চাষ এবং পুরনো শুকনো পাতা আখ থেকে ছড়িয়ে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। ২য় পর্যায় আক্রমণ ১০% ভাগের বেশি দেখা গেলে দানাদার কীটনাশক যেমন- পাদান ৪জি হেক্টর প্রতি ৭৫ কেজি আখের সারির পাশে একমাস অন্তর প্রয়োগ করতে হবে। জুন-আগস্ট পর্যন্ত অবস্থাভেদে ২-৩ বার প্রয়োগ করতে হবে।

ঘ. গোড়ার মাজরা: ২-৩ নম্বর পাতা শুকিয়ে যায়। মরাডিগ টান দিলে ওঠে না। আখের শেকড় এলাকার কাণ্ডের ভেতর কীড়া পাওয়া যায়। অনেক সময় বড় আখে মাটির ৬-৮ ইঞ্চি উপর পর্যন্ত কীড়া পাওয়া যায়।

দমন: মার্চ মাস পর্যন্ত আক্রান্ত চারা কীড়াসহ উঠিয়ে আগুনে পোড়াতে হবে। সেচের ব্যবস্থা থাকলে ৪৮ ঘণ্টা সেচের পানিতে জমি ডুবিয়ে রাখতে পারলে পোকা দমন হয়। আক্রান্ত জমিতে কমপক্ষে পরপর দুই মৌসুম আখের চাষ বন্ধ রাখতে হবে। পোকায় আক্রান্ত জমির আখ কাটার পর মোথাগুলো কোদাল দিয়ে তুলে জমা করে আগুনে পোড়াতে হবে। এলাকার সব চাষি একসঙ্গে এ কাজ করতে হবে।

২. শোষক পোকা
যে সব পোকা পাতা অথবা গাছের কোন অংশ থেকে রস শোষণ করে খায়। যেমন- ব্লাক লিফ হপার, পাইরিলা, থ্রিপস, স্কেল ইনসেক্ট, মিলি বাগ, পশমী জাবপোকা এবং সাদামাছি ইত্যাদি।

  • জেনে নিন আখ চাষের পদ্ধতি : চতুর্থ পর্ব

    জেনে নিন আখ চাষের পদ্ধতি : চতুর্থ পর্ব

  • জেনে নিন আখ চাষের পদ্ধতি : চতুর্থ পর্ব

    জেনে নিন আখ চাষের পদ্ধতি : চতুর্থ পর্ব

  • জেনে নিন আখ চাষের পদ্ধতি : চতুর্থ পর্ব

    জেনে নিন আখ চাষের পদ্ধতি : চতুর্থ পর্ব

  • জেনে নিন আখ চাষের পদ্ধতি : চতুর্থ পর্ব

    জেনে নিন আখ চাষের পদ্ধতি : চতুর্থ পর্ব

  • জেনে নিন আখ চাষের পদ্ধতি : চতুর্থ পর্ব
  • জেনে নিন আখ চাষের পদ্ধতি : চতুর্থ পর্ব
  • জেনে নিন আখ চাষের পদ্ধতি : চতুর্থ পর্ব
  • জেনে নিন আখ চাষের পদ্ধতি : চতুর্থ পর্ব

এগ্রোবিজ

বিদেশ থেকে খালি হাতে ফিরে ড্রাগন চাষে সাফল্য

বাগানে চাষ করা ড্রাগন হাতে মিরাজুল ইসলাম
বাগানে চাষ করা ড্রাগন হাতে মিরাজুল ইসলাম

মিরাজুল ইসলাম (৩৩)। ১০ বছর সৌদি আরবে ছিলেন। আকামা জটিলতায় খালি হাতে দেশে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। এক বছর বেকার থাকার পর ইউটিউবে পতিত জমিতে ড্রাগন চাষের ভিডিও দেখেন। বাবার কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে নেমে পড়েন ড্রাগন চাষে। দেড় বছরের ব্যবধানে এখন উপজেলার সবচেয়ে বড় ড্রাগন বাগান তাঁর। এ বছর খরচ বাদে আট থেকে নয় লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার ইন্দুরকানি গ্রামের বাসিন্দা মিরাজুল। উপজেলার টগরা গ্রামে দেড় একর জমিতে তিনি ড্রাগনের বাগান তৈরি করেছেন। তাঁর বাগানে এখন সাড়ে তিন হাজার ড্রাগন ফলের গাছ আছে।

মিরাজুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক হিসেবে ১০ বছর সৌদিতে কাজ করে ২০১৯ সালে দেশে ফেরেন তিনি। আকামা সমস্যার কারণে শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। কিছু একটা করবেন বলে ভাবছিলেন। একদিন ইউটিউবে ড্রাগন চাষের ভিডিও দেখতে পান। সেই থেকে ড্রাগন চাষে আগ্রহ জন্মে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে দেড় একর পতিত জমি ড্রাগন চাষের উপযোগী করেন। গাজীপুর থেকে ৬০ টাকা দরে ৬০০ চারা নিয়ে আসেন। বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে শুরু করেন চাষাবাদ। পরের বছর জুনে ফল পাওয়া শুরু করেন।

ড্রাগনের বাগান করতে মিরাজুলের খরচ হয়েছিল ছয় থেকে সাত লাখ টাকা। ইতিমধ্যে ফল বিক্রি করে তাঁর খরচ উঠে গেছে। সাধারণত মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গাছে ফল আসে। বছরে ছয় থেকে সাতবার পাকা ড্রাগন সংগ্রহ করা যায়। এখন পরিপক্ব ও রোগমুক্ত গাছের শাখা কেটে নিজেই চারা তৈরি করেন। ড্রাগন চাষের পাশাপাশি বাগানে চুইঝাল, এলাচ, চায়না লেবুসহ মৌসুমি সবজি চাষ করেন। এ ছাড়া ড্রাগনের চারাও উৎপাদন করে বিক্রি করেন তিনি।

মিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বাগানের বেশির ভাগ গাছে এ বছর ফল ধরেছে। গত মঙ্গলবার বাগান থেকে দেড় টন ফল সংগ্রহ করেছেন। ২৫০ টাকা কেজি দরে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পাইকারদের কাছে বিক্রি করেছেন। স্থানীয় বাজারে ৩০০ টাকা কেজি দরে ড্রাগন বিক্রি হয়। নভেম্বর পর্যন্ত আরও পাঁচ–ছয়বার বাগান থেকে ফল তোলা যাবে। আশা করছেন, খরচ বাদে এবার আট থেকে নয় লাখ টাকা লাভ থাকবে।

মিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমার বাগান থেকে চারা নিয়ে অনেকে বাড়িতে ও ছাদে ছোট পরিসরে ড্রাগনের বাগান করেছেন। আমি এ পর্যন্ত ৪০ টাকায় দেড় হাজার চারা বিক্রি করেছি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্ণ বয়সের একটি ড্রাগনের চারা রোপণের পর ২৫ বছর পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। এর মৃত্যুঝুঁকি নেই বললেই চলে। তবে কয়েক দিন পরপর সেচ দিতে হয়। বৃষ্টির পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হয়। ড্রাগন ফল চাষে রাসায়নিক সার দিতে হয় না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইশরাতুন্নেছা বলেন, মিরাজুল ইসলামকে ড্রাগন চাষে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে আসছে কৃষি বিভাগ। উপজেলায় তাঁর বাগানটি সবচেয়ে বড়। তিনি নিরলস পরিশ্রম করে ছোট থেকে বাগানটি বড় করেছেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোটেক

কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তারা এক সঙ্গে কাজ করতে রাজি

ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি
ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি

ডাচ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে দুই দেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা একসঙ্গে কাজ করতে রাজি হয়েছেন।

গতকাল সোমবার নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগে অনুষ্ঠিত কৃষি খাতের ব্যবসাবিষয়ক এক সম্মেলনে দুই দেশের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত এগ্রি বিজনেস কনক্লেভে বাংলাদেশের প্রায় ৪০জন উদ্যোক্তা ডাচ কৃষি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি প্রযুক্তি সহযোগিতা ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছে ওয়েগেনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়।

আলোচনায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা প্রযুক্তি কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিলে নেদারল্যান্ডসের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা প্রযুক্তি সহযোগিতা দিতে রাজি থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে ডাচরা প্রস্তুত এবং বাংলাদেশি উদ্যোক্তারাও তাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। এ ছাড়া ডাচ সরকার ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বীজ, পশু খাদ্য, পোলট্রি, হর্টিকালচার ও এ্যাকুয়াকালচার বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম সম্পাদন করেছে, যা ওই দেশের বেসরকারি খাতকে আরও উৎসাহিত করেছে।

আলোচনায় কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করতে তৈরি আছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্কয়ার, ইস্পাহানি এগ্রো, একে খান অ্যান্ড কোম্পানি, প্যারাগন গ্রুপ, এসিআই, জেমকন গ্রুপসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা ডাচ প্রযুক্তির প্রয়োগ সরেজমিনে দেখতে যাবেন।

বাংলাদেশের সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের পোল্ট্রিখাতে সহযোগিতার আলোচনা অনেকটা এগিয়েছে উল্লেখ করে মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, দুই দেশের মধ্যে মৎস্য, পশুপালন ও হর্টিকালচারে সহযোগিতার বিপুল সম্ভাবনা আছে।

কনক্লেভ আয়োজনে প্রথমবারের মতো দূতাবাসের সঙ্গে অংশীদার হয়েছে নেদারল্যান্ডসের কৃষি মন্ত্রণালয়, নেদারল্যান্ডস এন্টারপ্রাইজ এজেন্সি, নেদারল্যান্ডস ফুড পার্টনারশিপ, ডাচ-গ্রিন-হাইজডেল্টা, লারিভ ইন্টারন্যাশনাল, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ।

কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থানকারী নেদারল্যান্ডসের আয়তন বাংলাদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের কম। ২০২১-এ কৃষিপণ্য ও খাদ্য রপ্তানি করে নেদারল্যান্ডস ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি আয় করেছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

পেঁয়াজের ক্ষতি পুষিয়ে দিচ্ছে সাথি ফসল বাঙ্গি

পেঁয়াজ তুলে নেওয়ার পর পুরো জমি ভরে গেছে বাঙ্গিগাছে। ফলন হয়েছে ভালো। পাবনার বেড়া উপজেলার বড়শিলা গ্রামে গত শুক্রবার
পেঁয়াজ তুলে নেওয়ার পর পুরো জমি ভরে গেছে বাঙ্গিগাছে। ফলন হয়েছে ভালো। পাবনার বেড়া উপজেলার বড়শিলা গ্রামে গত শুক্রবার

পাবনার বেড়া উপজেলার বড়শিলা গ্রামের কৃষক সাইদুল ইসলাম তাঁর দুই বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করে এবার প্রায় ৪০ হাজার টাকা লোকসান দিয়েছেন। অথচ পেঁয়াজের জমিতেই সাথি ফসল হিসেবে লাগানো বাঙ্গি থেকে তিনি ৫০ হাজার টাকার মতো লাভ করবেন বলে আশা করছেন। এই বাঙ্গি আবাদে তাঁর কোনো খরচ হয়নি। ফলে পেঁয়াজ আবাদের ক্ষতি পুষিয়ে যাচ্ছে।

সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘বাঙ্গি আবাদ কইর‌্যা যে টাকা পাইল্যাম তা হলো আমাগরে ঈদের বোনাস। পেঁয়াজের দাম না পাওয়ায় আমরা (কৃষকেরা) যে ক্ষতির মধ্যে পড়িছিল্যাম, বাঙ্গিতে তা পুষায়া গেছে। এই কয়েক দিনে ১২ হাজার টাকার বাঙ্গি বেচছি। সব মিলায়া ৫০ হাজার টাকার বাঙ্গি বেচার আশা করতেছি।’

সাইদুল ইসলামের মতো পাবনার বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার অনেক কৃষক এবার পেঁয়াজের সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে বাঙ্গির আবাদ করেন। কৃষকেরা পেঁয়াজ আবাদ করতে গিয়ে বিঘায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করেছিলেন। সেই হিসাবে প্রতি মণ পেঁয়াজ উৎপাদনে তাঁদের খরচ হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকার বেশি। কিন্তু বাজারে সেই পেঁয়াজ কৃষকেরা বিক্রি করতে পেরেছেন প্রতি মণ ৬০০ থেকে ৮৫০ টাকায়। এতে প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদে কৃষকদের এবার ২০ হাজার টাকার বেশি লোকসান হয়েছে।

কৃষকেরা বলেন, পেঁয়াজের জমিতে সাথি ফসল হিসেবে বাঙ্গি, মিষ্টিকুমড়া, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। জমিতে পেঁয়াজ লাগানোর পর তা কিছুটা বড় হলে এর ফাঁকে ফাঁকে এসব সাথি ফসল লাগানো হয়। পেঁয়াজের জন্য যে সার, কীটনাশক, সেচ দেওয়া হয়, তা থেকেই সাথি ফসলের সব চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। ফলে সাথি ফসলের জন্য বাড়তি কোনো খরচ হয় না।

কৃষকেরা বলেন, বাঙ্গিতেই কৃষকের লাভ হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। রমজান মাস হওয়ায় এখন বাঙ্গির চাহিদা ও দাম দুই-ই বেশি।

সাঁথিয়ার শহীদনগর গ্রামের কৃষক আজমত আলী জানান, তাঁর জমিসহ এই এলাকার জমি থেকে ৮ থেকে ১০ দিন হলো বাঙ্গি উঠতে শুরু করেছে। এবার বাঙ্গির ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। বাজারে এসব বাঙ্গি আকারভেদে প্রতিটি ৬০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমন দাম থাকলে এক বিঘা থেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকার বাঙ্গি বিক্রি হবে।

সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জীব কুমার গোস্বামী বলেন, পেঁয়াজের সঙ্গে সাথি ফসলের আবাদ কৃষকদের মধ্যে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এ ব্যাপারে তাঁরাও কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

কাঁঠালের আইসক্রিম জ্যাম ও চিপস

জাতীয় ফল কাঁঠালের জ্যাম, চাটনি ও চিপস উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএআরআই) শস্য সংগ্রহের প্রযুক্তি বিভাগের একদল গবেষক। তাঁরা কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত করে মোট ১২টি প্যাকেট ও বোতলজাত পণ্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।

গত শনিবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসে অবস্থিত বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিনা) ‘কাঁঠালের সংগ্রহত্তোর ক্ষতি প্রশমন ও বাজারজাতকরণ কৌশল’ শীর্ষক কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব তথ্য জানান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. গোলাম ফেরদৌস চৌধুরী। কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) অর্থায়নে এবং নিউভিশন সলিউশন্স লিমিটেডের সহযোগিতায় গবেষণা প্রকল্পটি পরিচালিত হয়।

কর্মশালায় ড. মো. গোলাম ফেরদৌস চৌধুরী বলেন, ‘এই প্রকল্পের আওতায় আমরা কাঁঠালের প্রক্রিয়াজাত করে মুখরোচক ১২টি প্যাকেট ও বোতলজাত পণ্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এসব পণ্য উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। কাঁঠালের জ্যাম, আচার, চাটনি, চিপস, কাটলেট, আইসক্রিম, দই, ভর্তা, কাঁঠাল স্বত্ব, রেডি টু কুক কাঁঠাল, ফ্রেশ কাট পণ্যসহ আরও বিভিন্ন ধরনের প্যাকেটজাত পণ্য তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। প্রক্রিয়াজাত পণ্যগুলো ঘরে রেখে সারা বছর খাওয়া যাবে। কাঁঠাল থেকে এসব পণ্য উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা কমানো সম্ভব বলে মনে করছেন গবেষক।’

কর্মশালায় নিউভিশন সলিউশন্স লিমিটেডের মুখ্য পরিদর্শক তারেক রাফি ভূঁইয়া বলেন, উদ্ভাবিত পণ্যগুলো বাজারজাত করার জন্য নিউভিশন কোম্পানি বিএআরআইয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। ময়মনসিংহসহ বাংলাদেশের কয়েকটি জেলা ও উপজেলা শহরে পণ্যগুলো বিপণনের কাজ চলছে।

কর্মশালায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের শস্য সংগ্রহোত্তর প্রযুক্তি বিভাগের বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. হাফিজুল হক খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। সম্মানিত অতিথি ছিলেন কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের সিনিয়র স্পেশালিস্ট (ফিল্ড ক্রপস) ড. নরেশ চন্দ্র দেব বর্মা। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আবু হানিফ। উপস্থিত ছিলেন নিউভিশন সলিউশন্স লিমিটেডের প্রকল্প ম্যানেজার কায়সার আলম।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ফল

কমলা চাষে সার ব্যবস্থাপনা, সেচ, আগাছা ব্যবস্থাপনা ও ফসল তোলা- দা এগ্রো নিউজ

কমলা

সার ব্যবস্থাপনা:  প্রতি গর্তে ১০০ গ্রাম ইউরিয়া সার, ১০০ গ্রাম টিএসপি সার ও এমওপি সার ১০০ গ্রাম প্রয়োগ করতে হয়।

সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা:  চারা গাছের গোড়ায় মাঝে মাঝে পানি সেচ দিতে হবে। বর্ষাকালে গাছের গোড়ায় যাতে পানি না জমে সেজন্য পানি নিকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তাছাড়া কমলা গাছের আগাছা দমন করতে হবে।

ফসল তোলা: মধ্য কার্তিক থেকে মধ্য পৌষ মাসে ফল সংগ্রহ করতে হয়।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@agronewstoday.com, theagronewsbd@gmail.com