রূপচর্চায় অ্যালোভেরার গুরুত্ব সকলেরই জানা। অ্যালোভেরা ব্যবহারের আরও কত অজানা উপায় রয়েছে। তবে শুধু নতুন কৌশল জানলেই তো হবে না, সেগুলো কাজেও লাগাতে হবে! রূপ-রুটিনে এই উপাদানকে আরও কীভাবে কাজে লাগাতে পারেন, রইলো সেই পরামর্শ।
ত্বকের যত্নে
১.শুধু ত্বক কোমল রাখতেই নয়, ত্বকের দৃঢ়তা বজায় রাখতেও কাজে লাগাতে পারেন অ্যালোভেরা জেল। একটা ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে অর্ধেক শসা ও বেশ খানিকটা অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে পেস্ট করে নিন। রাতে শুতে যাওয়ার আগে মুখে ও গলায় লাগিয়ে নিন। সকালেই দেখতে পাবেন ম্যাজিক।
২.ময়শ্চারাইজার হিসেবে অ্যালোভেরা ব্যবহার করা হয়, তাতো জানেন। তবে ত্বকের মৃত কোষ তুলতেও যে অ্যালো ভেরা ব্যবহার করতে পারেন, তা কি জানেন? ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি স্ক্রাবের উপাদান হিসেবে অ্যালোভেরা দারুণ। খানিকটা অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে সামান্য বেকিং সোডা কিংবা ব্রাউন সুগার মিশিয়ে স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করুন। ত্বক তো কোমল ও নরম হবেই, পাশাপাশি উজ্জ্বলতাও বাড়বে।
হ্যান্ডক্রিম ও স্যানিটাইজার
বাজারচলতি সব হ্যান্ড স্যানিটাইজারেই অ্যালোভেরা থাকে। আর সঙ্গে থাকে খানিকটা অ্যালকোহল। এই ফর্মুলা কাজে লাগালে বাড়িতেই অনায়াসে বানিয়ে ফেলতে পারেন স্যানিটাইজার। আধকাপ অ্যালোভেরা জেল, ১/৪ কাপ অ্যালকোহল (যেকোনও কেমিস্ট শপে পেয়ে যাবেন) ও কয়েক ফোঁটা পছন্দের এসেনশিয়াল অয়েল একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। স্যানিটাইজার তৈরি।
আর বাড়িতে হ্যান্ডক্রিম বানাতে চাইলে খানিকটা অ্যালোভেরা জেলে অল্প নারকেল তেল মিশিয়ে বোতলে ভরে রাখুন। ব্যাগেও রেখে দিতে পারেন, কাজে আসবে।
হাঁটু, কনুই ও গোড়ালির যত্নে
রুক্ষ, শুষ্ক কনুই, হাঁটু কিংবা ফাঁটা গোড়ালির সমস্যায় দারুণ কার্যকর অ্যালোভেরা জেল। আধকাপ ওটমিল, ১/৪ কাপ অ্যালোভেরা জেল ও আধকাপ বডি লোশন মিশিয়ে হাঁটু, কনুই বা গোড়ালিতে লাগাতে পারেন।
এছাড়া, রাতে শুতে যাওয়ার আগে এই অংশে অ্যালোভেরা লাগিয়ে কাপড় জড়িয়ে রাখুন, ফাঁটা গোড়ালির ক্ষেত্রে জেল লাগিয়ে মোজা পরে শুতে যান। সকালেই পাবেন নরম ও কোমল ত্বক।
মাউথওয়াশ হিসেবে
মুখে দুর্গন্ধের সমস্যায় ভুগছেন? কাজে লাগান অ্যালোভেরা জেল। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিভাইরাল উপাদান মাড়িতে জমে থাকা ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস দূর করে মুখের দুর্গন্ধ কমাতে সাহায্য করবে।
এককাপ অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে আধকাপ ডিস্টিলড ওয়াটার (না থাকলে ফিল্টারড ওয়াটারও ব্যবহার করতে পারেন), ২ চা চামচ বেকিং সোডা ও ৮-১০ ফোঁটা পেপারমিন্ট এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে বোতলে ভরে রাখুন। প্রতিদিন দু’বার এই মিশ্রণ দিয়ে কুলকুচি করতে পারেন। খেয়াল রাখবেন যাতে গিলে না ফেলেন। মুখের দুর্গন্ধ নিয়ে আর ভাবতে হবে না।
মেক-আপ রিমুভার
যারা সাজতে পছন্দ করেন, তারা প্রত্যেকেই জানেন মেক-আপ তোলা কী ঝক্কির কাজ! বিশেষত চোখের মেক-আপ—লাইনার, শ্যাডো, কাজল, মাস্কারা ইত্যাদি যেন উঠতেই চায় না। অনেকেই মেক-আপ তুলতে তেল ব্যবহার করেন। মাঝেমধ্যে ব্যবহার করতেই পারেন, তবে সবসময় ব্যবহার করলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। এক্ষেত্রেও ব্যবহার করে দেখতে পারেন অ্যালোভেরা। এটি প্রাকৃতিক হওয়ায় ত্বকের কোনও ক্ষতি করে না।
কটন প্যাডে খানিকটা অ্যালোভেরা জেল নিয়ে পুরো মুখ মুছে নিন। চোখের ওপর খানিকক্ষণ কটন প্যাড চেপে আলতো করে ঘষে নিন। এরপর ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
চুলের কন্ডিশনার
চুলের কন্ডিশনার হিসেবেও অ্যালোভেরা খুব ভাল কাজ করে। একটি স্প্রে বোতলে খানিকটা অ্যালোভেরা জেল, কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল ও কয়েক ফোঁটা ভিটামিন ই অয়েল মিশিয়ে রাখুন। শ্যাম্পু করার পর ভিজে চুলে এই মিশ্রণ স্প্রে করে নিন। এতে চুল অনেক বেশি কোমল ও মসৃণ হবে।
যাদের চুল খুব পাতলা তারা শুধু অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে পানি মিশিয়ে স্প্রে করুন। তেল মেশালে চুল তৈলাক্ত দেখাতে পারে।
শেভিং ক্রিম হিসেবে
ত্বকের অবাঞ্ছিত লোম তুলতে অনেকেই শেভ করতে পছন্দ করেন। সেক্ষেত্রে সাবান বা বডি ওয়াশেরই ব্যবহার হয় বেশি। অবশ্য শেভ করার পর অনেকেই আফটার শেভ লোশন হিসেবে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করে থাকেন। এত খাটনি সত্যিই বৃথা। শেভ করার আগে সাবানের পরিবর্তে ব্যবহার করতে পারেন অ্যালোভেরা জেল। এতে এক ঢিলে দুই পাখি মারতে পারবেন। শেভিং ক্রিম এবং আফটার শেভ লোশন, দু’ভাবেই কাজে আসবে অ্যালোভেরা জেল। সঙ্গে সাবান থেকে হওয়া শুষ্কতার সমস্যাও থাকবে না!
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন