আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

বাংলাদেশ

করোনা ভাইরাস: স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছেন না অনেকে, দীর্ঘমেয়াদে কী প্রভাব রেখে যাচ্ছে বাংলাদেশে?

বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত তরুণ বা যুবকদেরও অনেকের শরীরে দীর্ঘ মেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে।
বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত তরুণ বা যুবকদেরও অনেকের শরীরে দীর্ঘ মেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকে পাঁচ মাস কেটে গেছে।

ঘনবসতিপূর্ণ এই দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে বলে অনেকেই আশংকা করেছিলেন।

কিন্তু আমেরিকা এবং ইউরোপের তুলনায় বাংলাদেশে মৃত্যুর হার অনেক কম।

অন্যদিকে সরকারি হিসাবে বলা হচ্ছে, সুস্থতার হার প্রায় ৬০ শতাংশ।

তবে যারা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন, তাদের অনেকের শরীর এবং মনের উপর নেতিবাচক নানা প্রতিক্রিয়া হওয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

করোনাভাইরাস মানুষের শরীর এবং মনে কতটা ক্ষত তৈরি করছে?

ঢাকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের হার দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় অনেক বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে মোট শনাক্ত রোগীর প্রায় ৭০ শতাংশই ঢাকা বিভাগে।

নগরীতে কোভিড-১৯ এর জন্য নির্ধারিত একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে দুই মাস আগে বাসায় ফিরেছেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মর্তুজা আহমেদ ফারুক। কিন্তু ৬৫বছর বয়স্ক মি: ফারুক এখনও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি।

“একটা জটিলতা দুর্বলতা ছিল, এটা সাধারণত সবারই থাকে শুনেছি। কিন্তু আমার এই দুর্বলতা দীর্ঘ সময় ধরে চলে। এরপরে দেখা যাচ্ছে যে মাথা ঘোরে। এখনও শোয়া বা বসা থেকে উঠলে এবং হাঁটলে মাথা ঘোরে। এটা কিন্তু দু’মাস হওয়ার পরও রয়ে গেছে। যদিও বিশ্রামে আছি এবং যথেষ্ট প্রোটিন খাচ্ছি, তারপরও এই জিনিসটা যাচ্ছে না। সেজন্য আমি স্বাভাবিক কাজকর্ম করার জন্য এখনও ফিট নই।”

বাংলাদেশে বয়স্কদের অনেকের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগসহ নানা ধরণের জটিল রোগ থাকে।

কোভিড আক্রান্ত হবার আগে সুস্থ ফুসফুসের ছবি
কোভিড আক্রান্ত হবার আগে সুস্থ ফুসফুসের ছবি
কোভিড আক্রান্ত হবার আগে সুস্থ ফুসফুসের ছবি
কোভিড আক্রান্ত হবার আগে সুস্থ ফুসফুসের ছবি

যদিও করোনাভাইরাস মহামারিতে সমাজের এই অংশকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

তবে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত তরুণ বা যুবকদেরও অনেকের শরীরে দীর্ঘ মেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে।

২৯ বছর বয়স্ক আজিজা বেগম শ্বাসকষ্ট নিয়ে গুরুতর অবস্থায় গত এপ্রিল মাসে চিকিৎসা নিয়েছিলেন ঢাকায় কুর্মিটোলা হাসপাতালে। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নার্স হিসাবে কাজ করেন। মে মাসের মাঝামাঝি তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে হাসপাতালের কাজে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু করোনাভাইরাসে প্রভাবে তার শরীরে জটিলতা বেড়েছে এবং মনে তৈরি হয়েছে ভয়।

আগে থেকে আমার ডায়াবেটিস ছিল। এখন ডায়াবেটিস খুব আপডাউন করছে। আবার ইদানীং ব্লাড প্রেশারটাও ধরা পড়েছে। এখনো আবহাওয়াও একটু অন্যরকম, কখনও রোদ এবং কখনও বৃষ্টি হচ্ছে। এই সময়ে একটু গলা ব্যথা হলেই ভয় লাগে, এই বুঝি আবার কিছু হচ্ছে। বয় লাগে, মনে একটা শঙ্কা চলে এসেছে। মানে স্বাভাবিক জীবন যাপন অনুভব করতে পারি না।”

দীর্ঘ মেয়াদের নেতিবাচক প্রভাব কাটানোর জন্য চিকিৎসার কোন প্রটোকল না থাকার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
দীর্ঘ মেয়াদের নেতিবাচক প্রভাব কাটানোর জন্য চিকিৎসার কোন প্রটোকল না থাকার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

ঢাকায় একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সাংবাদিক মোঃ সাহাদাত হোসেন এবং তার স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ হয়ে নয় দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন তিন মাস আগে।

মি: হোসেনের বয়স ৩০ বছর। তিনি বলেছেন, কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হওয়ার পর এখন তিনি ভুলে যাওয়া বা স্মৃতি ভ্রমের মতো সমস্যা অনুভব করছেন।

“খুবই শারীরিক দুর্বলতা অনুভব করি। এবং আমি হঠাৎ হঠাৎ স্মৃতি রিকল করতে সমস্যায় পড়ছি। সেটা হচ্ছে, ধরেন আমি কাউকে ফোন করবো, যখন হয়তো আমি ফোন করতে যাই, তখন আমি কাকে ফোন করবো, সেটা ভুলে যাই। এই সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আগে এ ধরণের কোন সমস্যা ছিল না।”

এখন বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের সংখ্যা তিন লাখ ছুঁই ছুঁই করছে। সেখানে সুস্থতার হার প্রায় ৬০ শতাংশ বলা হচ্ছে।

তবে সুস্থ হওয়ার পর দীর্ঘ মেয়াদের নানা প্রতিক্রিয়া বা প্রভাবের ব্যাপারে দেশে কোন গবেষণা হয়নি। অবশ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ নিয়ে আইইডিসিআর একটি জরিপ শুরু করেছে।

করোনাভাইরাসের প্রভাবে দীর্ঘ মেয়াদে কী ধরণের জটিলতা দেখছেন চিকিৎসকরা

যদিও দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়া নিয়ে এখনও গবেষণা হয়নি। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়া অনেক মানুষ তাদের শরীরে নানা জটিলতা নিয়ে আবার হাসপাতালে যাচ্ছেন।

ঢাকায় মুগদা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা: টিটো মিয়া তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে বলেছেন, মানসিক অবসাদ থেকে শুরু করে স্মৃতিভ্রমের মতো জটিল নানা সমস্যা তৈরি হচ্ছে সুস্থ হওয়া মানুষের শরীরে।

“প্রথমে দেখা যায় তারা মানসিক অবসাদে ভুগছেন। রোগীরা অভিযোগ করে, আনডিউ টায়ার্ডনেস । তারা বলে, তাদের কিছু ভাল লাগছে না, কিছু করতে ইচ্ছা করছে না। এরকম একটা অবস্থা থাকে। কারও কারও দেখা যায়, প্যানিক ভাবটা থাকে। হঠাৎ করে মনে হয় যে, শ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বা দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।”

“আর কিছু সমস্যা দেখা যায়, যার প্রভাবে আমাদের তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। যেমন কারও কারও শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যাটা আরও জটিল হয়। কোভিড ভাল হয়ে যায়, জ্বর আর থাকে না। কিন্তু কারও কারও ফুসফুসে পরিবর্তন হয় এবং জটিলতা দেখা দেয়। আবার কেউ হার্ড এর সমস্যায় পড়েন। হার্ড ফেইলোরও হয়। অনেক সময় হঠাৎ কার্ডিয়াক ডেথও হয়ে যায়। হার্ডের রিদমেরও সমস্যা হয়, হার্ড বিট কখনও স্লো হয়ে যায় বা খুব বেড়ে যায়। এছাড়া অনেকের ভুলে যাওয়ার বিষয়টা বেড়ে যায়।”

দক্ষিণ পশ্চিমের জেলা যশোরের ৪৫ বছর বয়স্ক শাহিনা ইয়াসমিন প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন গত জুন মাসে।

মুমূর্ষু অবস্থা থেকে তিনি দেড় মাস আগে বাড়ি ফিরতে পেরেছেন।

তিনি জানিয়েছেন, তার পুরনো রোগ ডায়াবেটিস এখন অনিয়ন্ত্রিত হয়ে গেছে এবং নতুন করে দেখা দিয়েছে উচ্চ রক্তচাপ।

“এখন আমার শারীরিক দুর্বলতা তো আছেই। আর মাঝে মাঝে প্রেশারের কারণে দুই কান গরম হয়ে যায়। শরীর খুব ঘেমে যায়। ডাক্তারের সাথে আলাপ করেছি। তারা কোন ঔষধ দেয়নি। খাওয়া ঠিকমতো খেতে বলেছে আরকি।”

করোনা ভাইরাস: স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছেন না অনেকে, দীর্ঘমেয়াদে কী প্রভাব রেখে যাচ্ছে বাংলাদেশে?
করোনা ভাইরাস: স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছেন না অনেকে, দীর্ঘমেয়াদে কী প্রভাব রেখে যাচ্ছে বাংলাদেশে?

ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের মতো সমস্যা যাদের আছে, করোনাভাইরাসের প্রভাবে তারাই বেশি নতুন নতুন জটিলতার মুখোমুখি হচ্ছেন বলে চিকিৎসকরা বলছেন।

মুগদা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা: টিটো মিয়ার বক্তব্য হচ্ছে, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপসহ জটিল সব রোগীরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তারাই বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সুস্থ হওয়ার কয়েক মাস পরও নানা অভিযোগ নিয়ে তাদেরকে আবার চিকিৎসকের কাছে যেতে হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।

“যদের গুরুতর অবস্থায় দীর্ঘ সময় হাসপাতালে থাকতে হয়, যাদের নিউমোনিয়া বা অক্সিজেন সমস্যা হয় অথবা যাদের আইসিইউতে থাকতে হয়, তারা যখন হাসপাতাল ছেড়ে যায়, তাদের ক্ষেত্রে কিন্তু এই সমস্যাগুলো বেশি হয়। এরকম জটিলতার মুখোমুখি হচ্ছেন, তাদের সংখ্যা ২০ শতাংশের কম নয়।”

যাদের উপসর্গ নাই, তারা কি দীর্ঘ মেয়াদের জটিলতায় পড়তে পারেন

সরকারের রোগ তত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট বা আইইডিসিআর এর এক জরিপে বলা হয়েছে, ঢাকায় আক্রান্তদের প্রায় ৮০ শতাংশেরই কোন উপসর্গ নেই।

তাহলে যাদের কোন উপসর্গ নেই, তাদের ওপর কি নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে না -এসব প্রশ্নও অনেকে তুলছেন।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা: লেলিন চৌধুরী তার অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছেন, উপসর্গ নেই বা আছে এবং বয়সের বিবেচনা -কোনটাই খাটছে না দীর্ঘ সময়ের নেতিবাচক প্রভাবের ক্ষেত্রে।

তিনি বলেছেন, যারাই আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের বেশির ভাগেরই শরীর দুর্বলতা এবং মানসিক অবসাদসহ নানা সমস্যা হচ্ছে।

“করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর উপসর্গ কম, মাঝারি এবং বেশি -যাই থাকুক না কেন, তাদের সুস্থ হওয়ার পর কয়েক সপ্তাহ চিকিৎসকের পরামর্শে থাকা উচিত। তাহলে প্রভাব সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরি করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া যাবে। বাংলাদেশে এই কাজটি করা হচ্ছে না।”

তিনি আরও বলেছেন, “যদি একটি মানুষ না বুঝে যে তার শরীর এবং মনের ওপর কি প্রভাব পড়ছে, তাহলে পারিবারিক এবং কর্মজীবনে তাকে সমস্যায় পড়তে হবে। কারণ কর্মজীবনে সহকর্মীরা ভাববে সে কাজ করছে না। আর পরিবারের সদস্যরা ভাববে, লোকটা ঝিমাচ্ছে কেন? ফলে মানুষটির সমস্যা আরও জটিল হবে।”

করোনা ভাইরাস: স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছেন না অনেকে, দীর্ঘমেয়াদে কী প্রভাব রেখে যাচ্ছে বাংলাদেশে?
করোনা ভাইরাস: স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছেন না অনেকে, দীর্ঘমেয়াদে কী প্রভাব রেখে যাচ্ছে বাংলাদেশে?

করোনাভাইরাস আক্রান্তরা সুস্থ হওয়ার পর তাদের ফলোআপ চিকিৎসা কতটা হচ্ছে?

করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হওয়ার পরও যখন এর নেতিবাচক প্রভাব থাকছে, সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় কোন পরিকল্পনা নেই বলে চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞরা বলেছেন।

তারা মনে করেন, বাংলাদেশে যেহেতু করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করানো এবং রোগীর চিকিৎসার ব্যাপারে মানুষকে আগ্রহী করতে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। সেখানে সুস্থ হওয়ার পর নানা জটিলতা হলেও তার ফলোআপ চিকিৎসা করানোর সংখ্যাও অনেক কম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক নাসরিন সুলতানা বলেছেন, তিনি নিজেও দীর্ঘ মেয়াদের নেতিবাচক প্রভাবের মুখোমুখি হয়েছেন এবং নিজে থেকেই ডাক্তারের কাছে ফলোআপ চিকিৎসা নিচ্ছেন।

তিনি মনে করেন, ফলোআপ চিকিৎসার ব্যাপারেও মানুষকে সচেতন করা প্রয়োজন।

“আমি করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছিলাম ২৬শে মে। জুন-জুলাই গেলো এবং এখন অগাস্ট মাস। আড়াই মাস হয়ে গেলো। এখনও ঘুম থেকে উঠলে আমার শরীর কাঁপে। আমার স্বামীর অবস্থা আমার চেয়েও খারাপ ছিল। সে সিএমএইচএর আইসিইউতেও ছিল। সে এখনও বলে যে বুকের মধ্যে একটু প্রেশার ফিল করছি। আর তাছাড়া সাইকোলজিক্যাল সমস্যা যেটা রয়েছে, এখনও প্যানিক কাজ করে মাঝে মাঝে। এখনও মাথা ঘোরে। আড়াই মাস হয়ে গেছে এখনও আমরা নরমাল ফিল করছি না। আমরা ফলোআপ চিকিৎসা নিচ্ছি।”

“আমি মনে করি, যেমন করোনার সময় বলা হয়, এই নম্বরে ফোন করো বা এই নম্বরে ফোন করো বা এই হাসপাতালে যাবে। এক্ষেত্রেও সেভাবে বলা উচিত যে যাদের ক্রিটিক্যাল অবস্থায় গিয়েছিল, তাদের এতদিন পর এই এই হাসপাতালে যেতে হবে । এটা অবশ্যই করা উচিত।”

চিকিৎসকরা বলেছেন, এখন কোভিড-১৯ এর চিকিৎসার নির্ধারিত ঢাকায় সরকারি কয়েকটি হাসপাতালে সুস্থ হওয়াদের ছাড়পত্র দেয়ার সময় ফলোআপ চিকিৎসার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

ডা: টিটো মিয়া বলেছেন, ” এখনও আমরা করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ম্যানেজ করতেই বেশি ব্যস্ত। তারপরও আমরা এখন প্ল্যান করছি এবং কাউকে কাউকে বলে দিচ্ছি একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর আবার আমাদের পরামর্শ নিতে। আর আমরা আমাদের মুগদা হাসপাতালে একটা প্রটোকলও মেইনটেইন করার চেষ্টা চালাচ্ছি।”

কিন্তু সারাদেশের সরকারি বেসরকারি সব হাসপাতালের জন্য সরকারের কোন পরিকল্পনা বা কোন প্রটোকল নেই।

কিন্তু সারাদেশের সরকারি বেসরকারি সব হাসপাতালের জন্য সরকারের কোন পরিকল্পনা বা কোন প্রটোকল নেই।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিষয়টাকে এখনও কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।

দীর্ঘ মেয়াদের নেতিবাচক প্রভাব কাটানোর জন্য চিকিৎসার কোন প্রটোকল না থাকার কথা স্বীকার করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মোঃ খুরশিদ আলম।

তিনি বলেছেন, তারা একটি প্রটোকল তেরি করছেন।

“পোস্ট কোভিড নানান রকমের সিনড্রম হয়। সেগুলো অ্যাড্রেস করার জন্য সরকারি হাসপাতালগুলোতে একটা আউটডোর সার্ভিস আগে থেকেই ছিল। যে কেউ এই সার্ভিস নিতে পারে। আর স্পেশালি যদি কেউ আগে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে থাকে এবং ভাল হয়ে গিয়ে তারপর তার সমস্যা থাকে, সে ক্ষেত্রেও হাসপাতালগুলোর নন-কোভিড সার্ভিসে অ্যাড্রেস করা হচ্ছে।”

” তবে স্ট্রাকচার্ড ওয়েতে যে ফলোআপ করা- সেটা এখনও হচ্ছে না। আমরা অতি শিগগিরই এটার ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছি। এটা ব্যাপারে একটা সুনির্দিষ্ট প্রটোকল যে কি কি সমস্যা থাকলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে,আর কি কি সমস্যা নিজেরা অপেক্ষা করলে একটা সময়ে ভাল হয়ে যাবে-এটা আমরা তৈরি করছি।”

যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যত দ্রুত সম্ভব ফলোআপ চিকিৎসার ব্যবস্থাপনা বা প্রটোকল প্রয়োজন।

কিন্তু কতদিনে এই চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা বা প্রটোকল দেয়া সম্ভব হতে পারে, সেটা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না কর্তৃপক্ষ।

  • বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত তরুণ বা যুবকদেরও অনেকের শরীরে দীর্ঘ মেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে।

    বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত তরুণ বা যুবকদেরও অনেকের শরীরে দীর্ঘ মেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে।

  • করোনা ভাইরাস: স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছেন না অনেকে, দীর্ঘমেয়াদে কী প্রভাব রেখে যাচ্ছে বাংলাদেশে?

    করোনা ভাইরাস: স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছেন না অনেকে, দীর্ঘমেয়াদে কী প্রভাব রেখে যাচ্ছে বাংলাদেশে?

  • করোনা ভাইরাস: স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছেন না অনেকে, দীর্ঘমেয়াদে কী প্রভাব রেখে যাচ্ছে বাংলাদেশে?

    করোনা ভাইরাস: স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছেন না অনেকে, দীর্ঘমেয়াদে কী প্রভাব রেখে যাচ্ছে বাংলাদেশে?

  • দীর্ঘ মেয়াদের নেতিবাচক প্রভাব কাটানোর জন্য চিকিৎসার কোন প্রটোকল না থাকার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

    দীর্ঘ মেয়াদের নেতিবাচক প্রভাব কাটানোর জন্য চিকিৎসার কোন প্রটোকল না থাকার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

  • বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত তরুণ বা যুবকদেরও অনেকের শরীরে দীর্ঘ মেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে।
  • করোনা ভাইরাস: স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছেন না অনেকে, দীর্ঘমেয়াদে কী প্রভাব রেখে যাচ্ছে বাংলাদেশে?
  • করোনা ভাইরাস: স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছেন না অনেকে, দীর্ঘমেয়াদে কী প্রভাব রেখে যাচ্ছে বাংলাদেশে?
  • দীর্ঘ মেয়াদের নেতিবাচক প্রভাব কাটানোর জন্য চিকিৎসার কোন প্রটোকল না থাকার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

এগ্রোবিজ

পতিত জমিতে চিনাবাদাম চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষক

মেহেরপুর: পতিত ও অনুর্বর বেলে মাটির জমিতে চিনাবাদাম চাষ করে লাভবান হচ্ছেন মেহেরপুরের চাষিরা। ফলন ও বাজার দর ভালো এবং কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন এই এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাদামের চাষ। 

সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা, শ্যামপুর, টেংগারমাঠ ও গোপালপুর গ্রামের অধিকাংশ জমির মাটি বেলে। ফলে এই এলাকার চাষিরা ধান, গম, পাটসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করে খুব একটা লাভবান হতে পারেন না।

ধান কাটার পর এ সব জমি সাধারণত পতিত থাকে। এজন্য ৯০ দিনের ফসল হিসেবে অল্প খরচে বাদাম চাষ করছেন এলাকার চাষিরা।  

মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, জেলায় এবার বাদাম চাষ হয়েছে ১৫ হেক্টর জমিতে। এবার এক বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করতে চাষিদের খরচ হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা সেক্ষেত্রে বাদামের ফলন হয়েছে ৬ থেকে ৭ মণ। আর এ  ফলনে প্রায় ২০ হাজার টাকা ঘরে তুলছেন তারা। বাজারে প্রতিমণ বাদাম বিক্রি হচ্ছে ২৭শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত।  সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা গ্রামের বাদাম চাষি খাঁজা আহমেদ, কাওছার আলী ও ফিরোজ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এলাকার মাটি বেলে হওয়ায় সাধারণত সবজি, আলু ও অন্যান্য ফসল চাষ করার পর জমি পতিত থাকে। সে সময়ে চিনা বাদামের চাষ করা হয়। বাদাম চাষে খরচ কম এবং উৎপাদন ও বাজার দর ভাল। তাই দিন দিন চাষিরা তাদের পতিত জমিতে চিনা বাদামের চাষ শুরু করছেন।  

এছাড়া বাদাম ছাড়ানো, শুকানোসহ যাবতীয় কাজ করে থাকেন এখানকার নারীরা। বাদামের গাছ আবার শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করছেন গৃহিণীরা।  

নারী শ্রমিক সাহানা খাতুন ও জরিমন নেছা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বাদাম ছাড়ানো ও শুকানোর কাজ করে থাকি। এলাকার ২৫/৩০ জন নারী শ্রমিক এ কাজ করে আসছেন।  
গৃহিণী সাজেদা খাতুন ও জামেলা খাতুন জানান, বাদামের লতা জালানি হিসেবে বেশ ভাল। তাই লতাও বিক্রি হচ্ছে।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আক্তারুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, চিনা বাদামের চাষ সাধারণত পতিত জমিতে হয়ে থাকে। এলাকার চাষিরা এই জমিতে বাদামের চাষ করে বাড়তি আয় করছেন। তাই বাদাম চাষ যাতে আরও সম্প্রসারিত হয় সেজন্য কৃষি বিভাগ চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে।  

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

সিলেটে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের সম্ভাবনা

সিলেট বিভাগের উচ্চমাত্রার অ্যাসিডিক জমিতে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কৃষি বিজ্ঞানিরা মৌলভীবাজারের আকবরপুরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে ফুল চাষ করে সফল হয়েছেন। এ ফুল চাষ মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে ১০০ চাষিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে কৃষি গবেষণা কেন্দ্র।

কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের তথ্যমতে, যশোরে বাণিজ্যিকভাবে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল চাষ হয়। যার বাজার দর প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। যশোরের ফুল সারাদেশের পাশাপাশি সিলেটেও আসে প্রচুর। সিলেটে ফুলের বাজার শত কোটি টাকার উপরে। কিন্তু সিলেটে ফুলের চাষ বাণিজ্যিকভাবে হয় না।

সিলেট বিভাগের মাটি অ্যাসিডিক হওয়ায় ফুল চাষ করা যাবে না, সেটাই ছিল প্রচলিক ধারণা। কিন্তু এ ধারণাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যদিয়ে ভুল প্রমাণ করেছেন মৌলভীবাজার আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের একদল গবেষক। মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস এম শরিফুজ্জামানের নেতৃত্বে উচ্চমাত্রার অ্যাসিডিটিক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ফুল চাষ করে সফল হয়েছেন তারা। এ পরীক্ষামূলক চাষে ফলনও হয়েছে ভালো। তাই সিলেট অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট অঞ্চলে অনেক জায়গা অনাবাদি ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। প্রবাসীরা দেশের বাইরে অবস্থান করায় তাদের অনেক জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকে। এ জমিকে আবাদের আওতায় আনতে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের উদ্যোগ নিয়ে আগ্রহী ১০০ চাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে আমন ধান কাটার পর এ অঞ্চলের অনেক জমি পতিত থাকে। ফলে ফুল চাষ করে অনাবাদি জমি থেকে কোটি টাকা উপার্জন সম্ভব।

বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মিরানা আক্তার সুমি জানান, চাষিরা প্রশিক্ষণ শেষে অনেক কিছু শিখেছেন। কী পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে হয়, তা জেনেছেন। ধানের চেয়ে যেহেতু ফুলের দাম বেশি, তাই ফুল চাষে তাদের আগ্রহ বাড়ছে।

ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. সরফ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভালোভাবে জমি চাষ করে নির্দেশিত মাত্রায় জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয়। অন্য ফসলের মতোই এর চাষ পদ্ধতি সহজ। বেড তৈরি করে ফুল চাষ করতে হয়। প্রতিটি বেডের দৈর্ঘ যে কোন মাপের হতে পারে। তবে প্রস্থে ১.২-১.৫ মিটার হলে ভালো।’

তিনি বলেন, ‘কলম (বীজ) লাগানো থেকে তিন মাস পর স্টিক সংগ্রহ শুরু হয়। সংগ্রহ করা যাবে পরবর্তী ২৫ দিন। গ্লাডিওলাস ৫টি জাতসহ মোট ১২টি প্রজাতির ফুলের পরীক্ষা করে আমরা সফল হয়েছি।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

জৈব

জৈব পদ্ধতিতে ফসলের রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণ

সবুজ বিপ্লবের সময়ে পেস্টিসাইড ব্যবহারকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জীব বৈচিত্র্য, মাটির স্বাস্থ্য ও ফসলের গুণমানতা। এখন ভেবে দেখার সময় এসেছে, এত রাসায়নিক পেস্টিসাইড ব্যবহার করা কি ঠিক হচ্ছে? এ প্রশ্ন শুধু ভারতে নয়, সারাবিশ্বের কৃষকসমাজ ও শস্যবিজ্ঞানীদের কাছে। তাই মনে হয় জৈব নিয়ন্ত্রণকে গুরুত্ব দিয়ে সুসংহত রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণ আগামী দিনে একমাত্র সমাধানের রাস্তা হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।

চলমান খরিফ মরসুমে আমাদের রাজ্যে প্রধানত ধান, খরিফ পেঁয়াজ, জুট, ইক্ষু, তিল ইত্যাদি ফসলের চাষ হয়ে থাকে। এ রাজ্যে ধানে ঝলসা রোগের আক্রমণ একটি গুরুতর বিষয়।

জৈব পদ্ধতিতে এই রোগ দমন করার একটি সহজ উপায় রয়েছে। ৫০ মিলিলিটার কেরোসিন তেলে ৮৫ গ্রাম থেঁতলানো রসুন মিশিয়ে ২৪ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এরপর ৯৫০ মিলি. জল ও ১০ মিলি. তরল সাবান মিশিয়ে ভালোভাবে নেড়ে নিয়ে বোতলে রেখে দিতে হবে। ১৯ লিটার জলের সাথে ১ ভাগ মিশ্রণ মিশিয়ে সকালে/বিকেলে স্প্রেয়ার দিয়ে আক্রান্ত গাছে স্প্রে করতে হবে।

এই মিশ্রণটি আমেরিকান বোল ওয়ার্ম, আর্মি ওয়ার্ম, পেঁয়াজ-এর চিরুনি পোকা, আলুর টিউবার মথ, রুট নট নিমাটোড (কৃমি), আখের কাণ্ড ছিদ্রকারী পোকা, ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ, ডাউনি মিলডিউ ও ধানের ঝলসা রোগ প্রতিরোধে খুবই কার্যকরী।

এছাড়া বিভিন্ন ধরণের পাতা খেকো পোকা ও জাব পোকা নিয়ন্ত্রণে ১ কেজি পেঁয়াজ থেঁতো করে ১ লিটার জলের সাথে মিশিয়ে ২৪ ঘণ্টা রেখে দেবার পর কচলিয়ে রস নিংড়ে নিতে হবে। প্রাপ্ত নির্যাসের সাথে ১০ লিটার জল মিশিয়ে আক্রান্ত ফসলে স্প্রে করতে হবে।

জৈব সার প্রয়োগ ও জৈব কীটনাশক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফসলের উৎপাদন খরচ শতকরা ২৫-৩০ শতাংশ হ্রাস করা সম্ভব। উচ্চ পুষ্টিমানসম্পন্ন প্রযুক্তিতে উৎপাদিত জৈব সার, শাকসব্জী ও অন্যান্য ফসলের প্রয়োজনীয় নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশিয়াম-এর সাথে অণুখাদ্যের যোগান দেয়।

জৈব পদ্ধতিতে উৎপন্ন কীটনাশক ও ছত্রাকনাশকগুলি ফসলে কোনওরকম দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ব্যতিরেকে, পোকা ও রোগ দমনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এতে মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও উর্বরতা দীর্ঘমেয়াদী হয়। উৎপাদিত ফসল হয় স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ।

বন্ধুপোকা মাকড়ের (পরজীবি ও পরভোজী) সংরক্ষণের জন্য জমির পাশে অব্যবহৃত জায়গায় ত্রিধারা, উঁচুটি, শালিঞ্চে ইত্যাদি আগাছা জাতীয় গাছের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।

দূরদর্শী পদক্ষেপের মাধ্যমে রাসায়নিক কৃষি বর্জন করে প্রাণ বৈচিত্র্য নির্ভর জৈব কৃষির মাধ্যমে খাদ্যে সার্বভৌমত্ব আনা সম্ভব। তাই জৈব কৃষির পথে ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়ে কৃষিবিষমুক্ত, স্বাস্থ্যসম্মত সমাজ গড়ে তোলাই বাঞ্ছনীয়।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

টি ব্যাগের ব্যবসা করে আয় করুন প্রচুর অর্থ

চা পানীয়টি আমাদের দেশে খুবই জনপ্রিয় একটি পানীয়। প্রিয়জনের সাথে বৈঠক থেকে শুরু করে সারাদিনের ক্লান্তি দূর করা সবেতেই চা (Tea) আমাদের নিত্যসঙ্গী। তবে এখন মানুষ আগের তুলনায় অনেক বেশী স্বাস্থ্য সচেতন। সাধারণ চায়ের জায়গায় এসেছে, গ্রীণ টি, হার্বাল টি, লেমনগ্র্যাস টি, ব্লু টি ইত্যাদি। আর প্রকারভেদের সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে টি ব্যাগের গুরুত্ব। কারণ এটি খুব অল্প সময়ে তৈরি করা যায় এবং যে কোন স্থানে এর থেকে চা বানানো যায়। অফিস ও হোটেলগুলিতে এর যথেষ্ট চাহিদাও রয়েছে। তাই টি ব্যাগ তৈরীর ব্যবসাটি হয়ে উঠতে পারে আপনার জন্য লাভদায়ক।

চা উৎপাদনকারী দেশ গুলির মধ্যে অংশ নেয় চীন, ভারত , কেনিয়া , শ্রীলঙ্কা , জাপান , ইন্দোনেশিয়া , ভিয়েতনাম, তানজেনিয়া , মালয়, বাংলাদেশ, তার্কী এবং চা পানকারী দেশ গুলির মধ্যে ইংল্যান্ড, জর্মানী, কানাডা ও আমেরিকার বেশ নাম রয়েছে।

এ কারণে বেশিরভাগ সংস্থা টি ব্যাগ বিক্রি শুরু করেছে। আপনি যদি নতুন ব্যবসা করার পরিকল্পনা করে থাকেন, তবে আপনি টি ব্যাগ মেকিং ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এটির মাধ্যমে আপনি খুব ভাল অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। যিনি তৈরী করেন, তার থেকে নিয়ে এসে আপনি বাইরে বিক্রি করতে পারেন, এতে আপনার বিনিয়োগের দরকার পড়বে না। কিন্তু যদি বেশী লাভ করতে চান, তবে বিনিয়োগ করে নিজের ব্যবসা শুরু করুন।

টি ব্যাগ ব্যবসা শুরু করার জন্য জায়গা (How to start) –

এটি শুরু করার জন্য আপনি কোনও জায়গা ভাড়া নিতে পারেন। আপনার নিজের জমি থাকলে ব্যবসার জন্য সুবিধা হবে। এমন জায়গা চয়ন করুন, যেখানে মানুষের সমাগম রয়েছে। টি ব্যাগ তৈরীর জন্য আপনাকে মেশিন ইনস্টল করতে হবে।

চা ব্যাগ ব্যবসায় বিনিয়োগ –

আপনি যদি বড় আকারে ব্যবসা শুরু করতে চান, তবে আপনাকে বেশী অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে। এর মেশিনটি যথেষ্ট ব্যয়বহুল, সুতরাং বেশী পরিমাণ রাশি বিনিয়োগের দরকার রয়েছে এই ব্যবসায়, তবে আপনি যদি ব্যাংক থেকে লোণ নেন, তবে আপনি ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

চা ব্যাগ তৈরিতে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল –

ফিল্টার পেপার –

এর ভিতরে চায়ের পাতা স্টোর করতে হবে। এই কাগজটি সুক্ষ ছিদ্রযুক্ত এবং পাতলা, পাশাপাশি সহজে ভিজে যায় না, তাই এই কাগজটি চা ব্যাগ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

চা পাতা –

আপনি যেমন প্রকারের ব্যাগ বিক্রি করতে চান, তেমন চা পাতা কিনতে হবে।

বিভিন্ন প্রকারের চা –

সাধারণ চা, গ্রীণ টি, উলং টি, ব্ল্যাক টি, হার্বাল টি

চা ব্যাগগুলিতে চা পাতা পূরণ করার প্রক্রিয়া –

চা ব্যাগ তৈরীর মেশিনের সাহায্যে প্রস্তুত চা পাতাগুলি ফিল্টার পেপারে পূরণ করতে হয়। সাধারণত প্রায় ২-৪ আউন্স চা পাতা একটি টি ব্যাগে ভরা হয়। এর পরে, একটি প্যাকিং মেশিনের সাহায্যে ব্যাগটি সিল করা হয়। টি ব্যাগের সাথে একটি সুতো সংযুক্ত থাকে।

চা ব্যাগ ব্যবসায় থেকে লাভ –

আপনি চায়ের পাতার গুণমান অনুযায়ী ব্যাগের দাম নির্ধারণ করতে পারেন। এই ব্যবসা থেকে খুব ভাল লাভ করা যায়। এর আরও বিক্রয়ের জন্য, আপনি বাজারে পাইকারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এগুলি ছাড়াও আপনি হোটেল বা অফিসের লোকের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এই ব্যবসা আপনাকে মাসে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন দিতে পারে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ছাদকৃষি

সহজ পদ্ধতিতে টবে করুন কদবেল চাষ

ছেলে থেকে বুড়ো সবারই প্রিয় টক ঝাল কদবেল। কদবেলের আচার, কদবেল মাখা সকলেরই অত্যন্ত পছন্দের। যারা বাগান করতে পছন্দ করেন, বিশেষত টবে, তাদের জন্য কদবেল এক আদর্শ ফল। কদবেলের আকার অনেকটা টেনিস বলের মতো। শরতের শুরুতে কদবেল বাজারে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এই ফলের মন মাতানো স্বাদ বিশেষ করে মহিলাদের ভীষণই পছন্দের।

টবে কদবেল চাষের পদ্ধতি (Farming Process)

মন কাড়া স্বাদের জন্য পাকা কদবেল সবার কাছেই অত্যন্ত প্রিয়। কদবেল গাছে ফুল আসে মার্চ-এপ্রিল মাস নাগাদ। তবে ফল পাকতে সময় লাগে সেপ্টেম্বর-অক্টবর। টবে রোপনের জন্য কদবেলের কলমের চারা বেশি ভালো। কলমের চারা থেকে কয়েক বছরের মধ্যে ফুল-ফল ধরে। ছাদের টবে এই গাছের চাষ সহজেই করা যায়। জোড় কলম করে এর কলম তৈরি করা যায়। এ গাছের চাষাবাদ অনেকটা বেলের মতোই।

মাটি তৈরি (Land Preparation)

হাফ ড্রামে অথবা টবে পাঁচ সেন্টিমিটার পুরু করে ইটের খোয়া বিছিয়ে তার ওপর ১০ সেন্টিমিটার বালির স্তর দিতে হবে। ড্রামের তলার দিকে জল বার করে দেওয়ার জন্য ছিদ্র রাখতে হবে। এবার তিন ভাগ দো-আঁশ মাটির সাথে দুই ভাগ গোবর সার, ড্রামপ্রতি ২০০ গ্রাম এমওপি (পটাশ) সার, ২৫০ গ্রাম টিএসপি (ফসফেট) সার, ১ কেজি হাড়ের গুঁড়ো, ৫০ গ্রাম জিপসাম সার, ২০ গ্রাম ম্যাগেনেসিয়াম সালফেট (ম্যাগসাল) সার ও ১০ গ্রাম দস্তা সার মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে ড্রামে বা টবে ভরে হালকা করে জল দিয়ে মাটি ভিজিয়ে এক থেকে দুই সপ্তাহ রেখে দিতে হবে।

ড্রাম বা টবের ঠিক মাঝখানে কদবেলের কলম বসিয়ে কলমের গোড়ার মাটি শক্ত করে চেপে দিতে হবে। কলম লাগানোর পর গাছের গোড়ায় জল দিতে হবে। সোজা ভাবে কলম রাখতে গেলে, গোড়ার কাছাকাছি কাঠি পুঁতে তার সাথে কলম বেঁধে দিলে ভালো। শীতকাল ছাড়া বছরের যেকোনও সময় কদবেলের কলম লাগানো যায়। ছাদের ওপর রোদের মধ্যে কদবেলের গাছ রাখা উচিত। এতে গাছের ভালোই হবে।

ফলন এবং পরিচর্যা (Caring)

কলমের গাছে ফুল ফাল্গুন-চৈত্র মাসে নাগাদ আসে। শরৎকালে ফল পেকে যায়। ডালপালা ফল সংগ্রহ করার সময় কিছু ছেঁটে দেওয়া উচিত। এর ফলে পরের বছর ফলন ভালো হবে। কদবেল গাছে ফুল-ফল ভালো আনার জন্য প্রতি বছর ফল তোলা শেষ হলে গাছের গোড়ার মাটিতে ড্রামপ্রতি ১৫০ থেকে ২৫০ গ্রাম ইউরিয়া সার, ১০০ গ্রাম এমওপি সার, ১০০ গ্রাম টিএসপি সার দুই কেজি প্যাকেটের কম্পোস্ট সারের সাথে মিশিয়ে গোড়ার মাটি নিড়িয়ে তার সাথে মিশিয়ে সেচ দিতে হবে।

গাছের বৃদ্ধি ভালো হলে বছরে একবার সার দিলে হবে না। বর্ষাকালের আগেও ঠিক একই ভাবে পুনরায় সার দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে টব বা ড্রামের মাটি যাতে না শুকিয়ে যায়। টবের মাটি কখনো শুকিয়ে গেলে নিয়ম করে সেচ দিয়ে নিতে হবে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@theagronews.com, theagronewsbd@gmail.com