আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

অন্যরকম এক চ্যালেঞ্জের নাম আন্ডারওয়াটার ফটোগ্রাফি। পানির নিচে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই তা করতে হয়। তবে পানির নিচে যাওয়ার জন্য সবার আগে দরকার স্কুবা ডাইভিং প্রশিক্ষণ। এই স্কুবা ডাইভিং প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজন কিছু যোগ্যতা। কারণ একটু ভুলেই চলে যেতে পারে মূল্যবান জীবন।

এত সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই ২০১২ সাল থেকে দিনের পর দিন সাগরের তলদেশে প্রাণ-বৈচিত্রের ছবি তুলে যাচ্ছেন আন্ডারওয়াটার ফটোগ্রাফার শরীফ সারওয়ার। তিনি নরসিংদী জেলার রায়পুর উপজেলার দরি হাইর মারা গ্রামের গোলাম সারওয়ারের ছেলে। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। ১৯৯৭ সাল থেকে জাতীয় দৈনিকে ফটোসাংবাদিক হিসেবে কাজ শুরু করেন। দৈনিক প্রভাত, ডেইলি নিউজ টুডে, প্রথম আলোসহ সর্বশেষ ২০০৯ সাল পর্যন্ত যায়যায়দিনের প্রধান ফটোসাংবাদিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

অন্যরকম নেশায় যাত্রা শুরু করেন আন্ডারওয়াটার ফটোগ্রাফিতে। নিজের এবং সাগরতলের নানা বিষয় নিয়ে শরীফ সারওয়ার কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘একসময় ফটোসাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছি। রাজপথে রাজনৈতিক হাঙ্গামা, রক্তারক্তির অনেক ছবি তুলেছি। কিন্তু তা ভালো লাগত না। মনে অন্যরকম কিছুর ভাবনা আসে। ন্যাশনাল জিওগ্রাফি ও ডিসকভারি চ্যানেলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সমুদ্রতলের জীববৈচিত্র দেখে ভাবতাম, আমিও একদিন এমন ছবি তুলব। দেশের বিশাল একটি অংশ পানির নিচে। কিন্তু সেই সমুদ্রের নিচে কী আছে, তা আমার ক্যামেরায় আবিষ্কার করব। সেই ভাবনা থেকেই স্কুবা ডাইভের প্রশিক্ষণ নেই। সেই যে শুরু, আজও রোমাঞ্চিত করে চলেছে আমাকে।’

শরীফ ভালো চাকরি ছেড়ে অনিশ্চিত পেশা বেছে নিয়েছেন। নিজের গাঁটের পয়সা খরচ করে দিনের পর দিন ছবি তুলে এনেছেন সমুদ্রের তলদেশ থেকে। থাইল্যান্ডে গিয়ে নিয়েছেন উচ্চতর প্রশিক্ষণ। পেয়েছেন স্কুবা ডাইভিংয়ের আন্তর্জাতিক সনদ। নিজে লাভবান না হলেও দু’হাতে দেশকে দিয়ে যাচ্ছেন। বঙ্গোপসাগর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন নদী, হাওর ও জলাশয়ে ছবি তুলেছেন। কাপ্তাই হ্রদ, লালাখাল, হাকালুকি ও টাঙ্গুয়ার হাওর, রামসাগর, দেবতার পুকুর, বগা লেক, কর্ণফুলী নদী, মাতামুহুরী নদী, ব্রহ্মপুত্র নদ, হালদা নদীর তলদেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন দেশের স্বার্থে। জীববৈচিত্রের দুর্লভ ছবি তুলে এনেছেন ক্যামেরায়।

বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদফতর, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ফিশারিজ ডিপার্টমেন্ট, সেভ আওয়ার সি, ইসাবেলা ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জুলজি ও ইনভায়রনমেন্ট ডিপার্টমেন্ট তার তোলা ছবির সাহায্যে মাছ, কোরাল, শৈবাল ও জলতলের জীববৈচিত্র্য নিয়ে গবেষণা করছে।

শরীফ সারওয়ার জানান, ২০১২ সালে ওসানিক স্কুবা ডাইভিং সেন্টারে (সেন্টমার্টিন) ট্রেনিং শুরু করেন। ২০১২ সালে পিএডিআই ওপেন ওয়াটার (আন্দামান, থাইল্যান্ড) এবং ২০১৪ সালে পিএডিআই অ্যাডভান্স ওপেন ওয়াটারে (গলফ অব থাইল্যান্ড) কোর্স করে আন্তর্জাতিক লাইসেন্স পান। এছাড়া বাংলাদেশের ওসানিক স্কুবা ডাইভিং সেন্টার থেকে সারা বছরই বঙ্গোপসাগর, বিভিন্ন নদী, হাওর, লেকে আন্ডারওয়াটার এক্সপেডিশন করে আসছেন।

২০১২ সালে বঙ্গোপসাগরে আন্ডারওয়াটার ফটোগ্রাফি ও ভিডিওগ্রাফি শুরু করলেও ভারতের আন্দামান সাগর, গলফ অব থাইল্যান্ড সাগরের নিচে গেছেন। থাইল্যান্ডে সর্বোচ্চ ৪০ মিটার নিচে গিয়ে বাংলাদেশের পতাকা তুলে ধরেছেন। সেই সাথে তুলে এনেছেন সাগরের নানা জীববৈচিত্রের দুর্লভ ছবি। গবেষণা জাহাজ ‘মীন সন্ধানী’তে করে বঙ্গোপসাগরের তিমি আর হাঙ্গরের আস্তানা ‘সোয়াস অব নো গ্রাউন্ডে’ স্কুবা ডাইভিং, আন্ডারওয়াটার ফটোগ্রাফি ও ভিডিওগ্রাফি করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার।

রোমাঞ্চকর এ পেশায় রোমাঞ্চ যেমন আছে; তেমনি আছে ভয়। শরীফ সারওয়ার জানান, ভয়ঙ্কর প্রাণীর দর্শন যেমন তিনি পেয়েছেন; তেমনি দিয়েছেন সাহসী ডুবও। পৃথিবীর অন্যতম গভীরতম খাদ হিসেবে পরিচিত বঙ্গোপসাগরের সোয়াস অব নো গ্রাউন্ডের তিমি, হাঙ্গরসহ সামুদ্রিক নানা প্রাণীর আস্তানায় ২০১৭ সালে স্কুবা ডাইভিংয়ে নেমেছিলেন। সাহসের সঙ্গে ছবি তোলার কাজটিও করে এসেছেন তিনি।

পানির নিচে একটু হেরফের হলেই যে প্রাণ সংহারের আশঙ্কা, তার উদাহরণ দিলেন কথায় কথায়। শোনালেন সমুদ্রতলে বিষাক্ত প্রাণীর সংস্পর্শের ঘটনা। বঙ্গোপসাগরেই তিনি দেখা পেয়েছিলেন লায়ন ফিশের। বিষাক্ত কাঁটাওয়ালা এ মাছের কাঁটা গায়ে লাগলেই সর্বনাশ। শুধু লায়ন ফিশের ছবিই নয়, সি আর্চিন, স্টিংরে, স্করপিয়ন ফিশের মতো বেশ কিছু মাছ ও প্রাণীর দুর্লভ ছবি তুলেছেন বিভিন্ন সময়।

শরীফ সারওয়ার বলেন, ‘সাগরের নিচে অনেক প্রাণীর কথাই আমরা জানি না। তাদের কোনোটা বিষাক্ত, কোনোটা ক্ষতিকর। জলের তলে তাদের সৌন্দর্য সারাক্ষণ মোহিত করে। তাই সবসময়ই বিপদ সঙ্গে নিয়ে চলতে হয়। তবে সাগরতলের প্রাণী ভয়ঙ্কর হলেও আচরণ সম্পর্কে জানা থাকলে খুবই বন্ধুসুলভ হয়। সহজে ক্ষতি করে না। হাঙ্গর, অক্টোপাস ও হোয়েলশার্ককে আমরা ভয়ঙ্কর মনে করলেও মোটেও ভয়ঙ্কর নয়। বরং জলের তলে তারা খুবই বন্ধুসুলভ।

আন্ডারওয়াটার ফটোগ্রাফিতে অনেক চ্যালেঞ্জ নিতে হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একটু ভুলে হারাতে হতে পারে মূল্যবান জীবন। অনেক সময় সাগরের নিচে একটু ভুল হলেও জীবন হারাতে হবে। সবচেয়ে বড় হচ্ছে সাগরতলের জীববৈচিত্র বিষয়ে জ্ঞানের অভাব। ক্যামেরা নিয়ে পানির নিচে নামার আগে জানতে হবে ওখানকার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র সম্পর্কে। কেবল পরিবেশ রক্ষার জন্য নয়, নিজের নিরাপত্তার জন্যও। কোন প্রাণীটি বিষাক্ত বা কোনটি বর্ণচোরা, সেটি বুঝতে হবে আপনাকে। কেবল নিজেকে রক্ষার জন্যই নয়, নিজের অজান্তেই তাদের কোনো ক্ষতি যেন না হয়, সেটি খেয়াল রাখার জন্যও। এমন আরও হাজার দরকারি তথ্য যেগুলো জানা না থাকলে কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানেই বিপদে পড়তে পারেন।’

শখের বসে নিজের একমাত্র ছেলে স্ট্যান্ডার্ড সিক্সের ছাত্র শায়ান সারওয়ারকেও দিচ্ছেন স্কুবা ডাইভিং প্রশিক্ষণ। গত ডিসেম্বরে ছেলেকে সেন্টমার্টিনে নিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তার ইচ্ছা- ছেলেও যেন দেখতে পারে সাগরতলের অন্য জগত। সাগরতলের অন্য জগত দেখতে পারলেই খুলে যাবে মনের ভেতরের হাজার চোখ। তবে শরীফ সারওয়ারের এই চ্যালেঞ্জিং পেশায় স্বজনদের থাকতে হয় চিন্তিত। শরীফ সারওয়ারের স্ত্রী ইফফাত জাহান লিয়া বলেন, ‘সে যখন সাগরের নিচে থাকে; তখন খুবই টেনশনে থাকি। সে এ পেশার জন্য এত টান অনুভব করে যে, আমরা যদি বাধা দেই, তাই অনেক সময় না বলেই চলে যেত। এসে বলতো, সাগর থেকে এসেছি। আমি বুঝেছি যে, সে কাজটা হৃদয় দিয়ে ভালোবাসে। তাই এখন আর বাধা দেই না।’

শরীফ সারওয়ার অর্জন করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরাম পুরস্কার, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন পুরস্কার, বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটি পুরস্কারসহ ২০টি পুরস্কার। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন আয়োজিত সংবাদপত্রে প্রকাশিত আলোকচিত্রের জন্য ‘ম্যান অব দ্য ইয়ার’ উপাধি লাভ করেন। ২০১৯ সালে আন্ডারওয়াটার ফটোগ্রাফির জন্য বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন আয়োজিত জাতীয় ফটো প্রতিযোগিতায় স্পেশাল জুরি বোর্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন।

শরীফ সারওয়ার ওসানিক স্কুবা ডাইভিং সেন্টারের সাথে সাগরের প্রতি সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। তারা ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সাগরতলে পরীক্ষামূলক কোরাল নার্সারি এবং ২০১২ সাল থেকে প্রতি বছর সাগরতলে আন্ডারওয়াটার ক্লিনআপ করে আসছেন।

কিছু দুঃখও আছে শরীফ সারওয়ারের। তিনি বলেন, ‘বিদেশের আন্ডারওয়াটার এক্সপ্লোরাররা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে। আমরা অর্থাভাবে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারি না। তাই আমদের রিস্ক নিতে হয় বেশি। তবুও আমাদের কাজ আন্তর্জাতিক মানের। সাগর জয়ের পর সরকার যে ব্লু ইকোনমির কথা ভাবছে, সেখানে বড় একটি ভূমিকা রাখতে পারে আন্ডারওয়াটার ফটোগ্রাফি। সরকারের সামান্য পৃষ্ঠপোষকতা পেলেই আমরা আন্তর্জাতিক মানের কাজ দিতে পারি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাইরের দেশে আন্ডারওয়াটার এক্সপ্লোরাররা তাদের সরকার বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকেই কাজের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকে। তবে সরকার পাশে না থাকলেও দেশমাতার প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই দেশের সাগরতলের জীববৈচিত্রের সন্ধানে নিজের জীবনের শেষ সময়টুকুও দিয়ে যাব। বঙ্গোপসাগর আমার বাড়ি, ঘর, সংসার, আমার স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়। এখান থেকেই আমি শিখছি প্রতিনিয়ত। আমার পরম ভালো লাগা, ভালোবাসা।

পরিবেশ

ছাদ বাগানের জন্য কয়েকটি টিপস

ছাদ বাগানীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। টবে, ড্রামে গাছ লাগানো হয়। কেউ ফল, কেউবা সবজির গাছ লাগান। কেউ সফল হন। কেউ সফল হন না। ছোট ছোট কিছু ভুল বাগানীরা করে থাকেন। সে কারণে যত্ন নিলেও ফল আসে না। এখানে ছাদ বাগানীদের জন্য কিছু টিপস দেয়া হলো, যা মানলে সফলতা পাওয়া সহজ হতে পারে।

প্রথমেই মনে রাখতে হবে, টবে বা ড্রামে গাছ লাগালে তাকে খাবার দিতে হবে। প্রকৃতিতে বিদ্যমান গাছের মতো সে খাবার সংগ্রহ করতে পারে না। রোগ-বালাই হলো কিনা সেটাও বুঝে ব্যবস্থা নিতে হবে। ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে।

১. মাটির সাথে অবশ্যই কিছু কোকোপিট মেশাবেন। গাছের গোড়া স্যাতস্যাতে হতে দিবেন না। স্যাতস্যাতে হলে অসংখ্য রোগ হবে। মাটি ভেজা থাকবে তবে স্যাতস্যাতে না। কেকোপিট মেশালে পানি কম দিলেও হবে। কোকোপিট (নারকেলের ছোবলার গুড়া) পানি ধরে রাখে। অতি বৃষ্টি হলে গোড়ায় পানি জমতে দেয় না। হালকা হওয়ায় ছাদে ওজনের চাপ পড়ে না। এছাড়া কোকোপিটে কিছু পুষ্টি উপাদান আছে। যা গাছের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কোকোপিটে চারা দ্রুত গজায়, বড় হয়। মাটির চেয়ে কোকোপিটে চারা ভালো হয়।

২. গাছের জন্য বিরিয়ানি হলো সরিষার খৈল-পচা পানি। মাটির হাড়িতে খৈল পচাতে হবে। কমপক্ষে ৫ দিন। ৭ দিন কিংবা বা ১৫ দিন হলে উত্তম। অল্প পানিতে পচিয়ে তার সাথে আরো পানি মিশিয়ে দিতে হবে। এটি গাছের জন্য অত্যন্ত উপকারী। একটু গন্ধ হয়, তাই অল্প একটু গুড় দিতে পারেন। ছাদে হাড়িতে পচালে বাসায় গন্ধ আসবে না। বৃষ্টির সময় খৈল-পচা পানি দেবেন না। পুকুরের নিচে থাকা পাক কাদা গাছের জন্য খুব উপকারী।

৩. আমরা জানি, মাটিতে অসংখ্য ক্ষতিকর ছত্রাক থাকে। যা গাছকে মেরে ফেলার জন্য যথেস্ট। তাই মাটি রেডি করার সময় কিছুটা বায়োডামা সলিট দিবেন। এটি উপকারী ছত্রাক। মাটিতে ক্ষতিকারক উপাদানগুলো মেরে ফেলে। আবার জৈব সারের কাজও করে। গাছের জন্য মাটি হবে ঝুরঝুরে, হালকা।

৪. যাই লাগান না কেন, ভালো জাতের বীজ কিনা নিশ্চিত হয়ে নেবেন। ভালো বীজে ভালো ফসল হবে। নতুবা যতই যত্ন নেন না কেন, সব পরিশ্রম বেলাশেষে জলে যাবে। বীজ থেকে নিজে চারা করা উত্তম। কারণ বাজার থেকে যে চারা কিনবেন সেটার জাত ভালো হবে সে নিশ্চয়তা কোথায়? ছত্রাকনাশক দিয়ে বীজ শোধন করে নেয়া উত্তম। পদ্ধতি হলো- ছত্রাকনাশক দেয়া পানিতে কিছুটা সময় বীজ ভিজিয়ে রাখতে হবে। ম্যানসার, মেটারিল দুটি ছত্রাকনাশক।

৫. গাছ বেশি তো ফলন বেশি- এটি ভুল ধারণা। অল্প জায়গায় বেশি গাছ লাগানো যাবে না। গাছ পাতলা করে লাগাতে হবে। বেশি লাগালে গাছ প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবে না। একটি ফলের ক্রেটে মাত্র দুটি গাছ। একটি টবে একটি গাছ। ক্রেট বা টবে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

৬. ছাদে মাচা দেয়া সমস্যা। কারণ ঘুঁটি থাকে না। এ জন্য ফলের ক্রেটের চারপাশে লাঠি বেঁধে সহজে মাচা দেয়া যায়। লতাপাতা জাতীয় গাছ লাগানোর পাত্র একটু গভীর হলে উত্তম। গাছের জন্য সবচেয়ে বেশি ভালো জৈব সার হলো পাতা-পচা সার, তারপর ভার্মি কম্পোস্ট, তারপর গোবর সার। পাতা-পচা সার সহজলভ্য নয়। দাম বেশি। কিন্তু ভার্মি কম্পোস্ট সহজলভ্য। মাটির সঙ্গে মিনিমাম ৪০% জৈব সার দেয়া উত্তম।
৭. নিম কীটনাশককে ক্ষতিকারক পোকা-মাকড় খুব অপছন্দ করে। এটি দিলে তারা বিরক্ত বোধ করে। গাছে বাসা বাঁধতে পারে না। প্রতি সাত দিনে একবার সব গাছের পাতায় নিম কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। মাসে একবার ইপসম সল্ট স্প্রে করে দেয়া উত্তম। একইভাবে মাসে একবার পানির সঙ্গে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড মিশিয়ে স্প্রে করা ভালো।

৮. ডাটা, পুইশাক, লালশাক, ধনেপাতা এসব লাগাতে পারেন। মাত্র ২৫ দিনে খেতে পারবেন। লালশাক লাগালে নেট দিয়ে ঘিরে দেবেন। শাকপাতা লাগালে দ্রুত আউটপুট পাবেন। যা আপনাকে প্রেরণা দেবে। পুইশাক গাছের পাতায় দাগ হলে পাতা কেটে দিন। অথবা ছত্রাকনাশক স্প্রে করেন। অথবা গাছ উঠিয়ে আবার লাগান। ইউরিয়া সার দিলে পুইশাক দ্রুত বাড়বে। শশা গাছের বৃদ্বির জন্য ডিএপি সার দিলে ভালো হবে। শশা গাছে ছাড়া ছাড়া ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হয়। খুব রোদ, গাছের গোড়ায় মালচিং করে দিয়ে উত্তম ফল মিলবে। মালচিং হলো গাছের গোড়ায় বিশেষ পলিথিন কিংবা শুকনো পাতা, খড় দিয়ে ঢেকে দেয়া।

৯. ফুল আসার পরে প্রানোফিক্স অথবা মিরাকুরান গাছের পাতায় শেষ বিকালে স্প্রে করবেন। বাসায় দুইটি গ্রুপের ছত্রাকনাশক রাখা ভালো। যেমন- ম্যানসার, মেটারিল। ১৫ দিনে একবার স্প্রে করবেন। এগরোমিন্ড গোল্ড অনুখাদ্য বা অন্য কোনো অনুখাদ্য বাসায় রাখতে হবে। মাসে কমপক্ষে একবার স্প্রে করবেন। অতিরিক্ত গরম, বৃষ্টি, খাদ্যের অভাব, গাছ রোগাক্রান্ত, আবহাওয়া দ্রুত আপডাউন করা ইত্যাদি কারণে ফুল ঝরে পড়তে পারে। আবার পরাগায়ন না হলে ঝরে পড়তে পারে। এ জন্য হাতের মাধ্যমে পরাগায়ন করতে হবে। পুরুষ ফুলের পরাগদণ্ড নারী ফুলে গর্ভে ঘষে দিতে হবে।

১০. ছাদ বাগানে গাছ মারা যাওয়ার অন্যতম কারণ পানি বেশি বা কম দেয়া। যতটুকু লাগে ঠিক ততটুকু পানি দিতে হবে। কোন গাছের কি চাহিদা, রোগ একটু স্টাডি করলে সহজে সফল হতে পারবেন।

১১. গাছের পাতার নিচে খেয়াল করবেন। বেগুন গাছের পোকা মারার জন্য সেক্স ফোরেমান ফাঁদ লাগাবেন। ডগা ছিদ্র বা ফল ছিদ্র হলে সাইপারমেত্রিন গ্রুপের কীটনাশক দিতে হবে। একটি বেগুন গাছ অনেক দিন ফল দেয়। ঢেড়স গাছ বেশি রোদ পড়ে এমন জায়গায় লাগাবেন। বেগুন, ঢেড়স, লালশাক, পুইশাক, ধনেপাতা, ডাটা শাক- এসব গাছের খুব যত্ন করতে হয় না।

১২. রসুন আর লবঙ্গ বেটে সেই পানি গাছে স্প্রে করলে পোকা কম আসবে। মরিচ গাছে নেপথলিন বেঁধে দিন, পোকা কম আসবে। পাতা কোকড়ালে ভার্মিটেক কিংবা এবোম কীটনাশক দিন। কোকড়ানো পাতা ফেলে দিন। মরিচ গাছে দশ দিন পর পর ডায়মেথট গ্রুপের (যেমন টাফগর) কীটনাশক দিলে উপকার হবে। সবকিছু করছেন, তারপরও কাজ হচ্ছে না। এক্ষেত্রে গাছের জায়গা বদল করেন, উঠিয়ে অন্যত্র লাগান।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

দৈনন্দিন

নিপাহ্‌ ভাইরাসঃ খেজুরের রস খাওয়ার আগে সতর্ক থাকতে যা করণীয়

নিপাহ্‌ ভাইরাস খেজুরের রস খাওয়ার আগে সতর্ক থাকতে যা করণীয়
নিপাহ্‌ ভাইরাস খেজুরের রস খাওয়ার আগে সতর্ক থাকতে যা করণীয়
খেজুরের রস সংগ্রহের প্রক্রিয়া।

শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।

আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।

নিপাহ্‌ ভাইরাস আতঙ্ক

খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।

কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।

দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।

মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।

সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।

কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্‌ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

পরিবেশ

জেনে নিন এই মরসুমে কোন কোন ঔষধি উদ্ভিদের চাষ আপনার জন্য সেরা

দেশের বিভিন্ন রাজ্যেই বর্ষার (Monsoon 2021) প্রভাবে চলছে বৃষ্টিপাত। এসময় কৃষকেরা খারিফ শস্য (Kharif Crops) বপনে তৎপর হয়ে ওঠেন। এই খরিফ মরসুমে কৃষকভাইরা সাধারণত অঞ্চলভেদে ধান, অড়হর, সোয়াবিন সহ বিভিন্ন চাষে মনযোগ দিয়ে থাকেন ৷ তবে এসব ছাড়াও, ঔষধি গুন সমৃদ্ধ (Medicinal Crops) গাছ চাষে বর্ষায় যে কতটা লাভ হতে পারে সে সম্পর্কে অনেকেই হয়তো জানেন না৷

বিশেষ করে বর্ষাকালেই এমন বহু ঔষধি গুন সম্পন্ন গাছ রয়েছে যাদের চাষ হতে পারে লাভজনক৷

বর্ষাকালে কোন কোন ঔষধি উদ্ভিদের চাষ করা যেতে পারে অথবা এই চাষ কীভাবেই বা করা যাবে সে বিষয়ে সঠিক তথ্য না পাওয়ার কারণেই অনেকের কাছে বিষয়টি অধরা৷ চলুন এই প্রতিবেদনে এমনই কিছু গাছ নিয়ে আলোচনা করা যাক যা কৃষকদের জন্য হতে পারে লাভদায়ক৷ তবে সঠিক সময়ে, সঠিক রোপন, সেচ, কীটনাশক দেওয়ার প্রয়োজন এগুলিতে, না হলে এর ওপর খারাপ প্রভাব পড়তে পারে৷

অশ্বগন্ধা –

বর্ষায় এর চাষ ভালো৷ জুন থেকে অগস্ট পর্যন্ত এর চাষ করতে পারেন৷ এর বিভিন্ন জাত রয়েছে৷ উন্নত মানের গাছের চাষে কৃষকের লাভের পরিমাণও বৃদ্ধি পেতে পারে৷ উল্লেখ্য, প্রতি হেক্টরে ৫ কিলোগ্রাম বীজ ব্যবস্থা করতে হবে৷ যদি কেউ ১ হেক্টর জমিতে অশ্বগন্ধার চাষ করতে চায় তাহলে তাকে প্রায় ৫০০ বর্গমিটারে নার্সারি তৈরি করতে হবে৷ প্রায় ১ সেন্টিমিটার গভীরে বীজ বপন করতে হবে৷

শতমূলী –

শীত বাদ দিয়ে বছরের যে কোনও সময়ে এই গাছের চাষ করতে পারেন৷ বর্ষাকালে এই চারা রোপন করলে সহজেই তা বেড়ে উঠতে থাকে৷ তবে বীজ বপনের আগে বীজ ১ দিন পর্যন্ত হালকা গরম জলে ভিজিয়ে রাখতে হয়৷

যষ্টিমধু –

জুলাই থেকে অগস্ট পর্যন্ত এর চাষ করা হয়৷ আর তাই জুন থেকেই এর প্রস্তুতি শুরু করে দেন কৃষকেরা৷ জলনিকাশি ব্যবস্থা উচ্চমানের হওয়া প্রয়োজন এই গাছ চাষের জন্য৷ মনে রাখতে হবে এর চাষের আগে জমিতে কমপক্ষে ১৫ টন গোবর সার দেওয়া প্রয়োজন, এরপরেই এটি চাষ করা উচিত৷

ঘৃতকুমারী –

এর ভালো উৎপাদনের জন্য জলনিকাশি ব্যবস্থা ঠিক রাখতে হবে৷ এই ধরনের ঔষধি গুনসম্পন্ন গাছ শীতকাল বাদ দিয়ে যে কোনও সময় চাষ করতে পারেন৷ বর্ষাকালে দূরত্ব রেখে বীজ বপন করতে হবে৷ কম সময়ের মধ্যেই ব্যবহারোপযোগী হয়ে ওঠে এগুলি৷

অগ্নিশিখা বা কলিহারি –

এটি চাষের জন্য কৃষকেরা জুন মাসেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন৷ জুলাইয়ে ভালো বৃষ্টিতে এর চাষ শুরু করা যেতে পারে৷ উল্লেখ্য, ১ হেক্টর জমির জন্য প্রায় ১০ ক্যুইন্টাল কন্দের প্রয়োজন৷ এটি চাষের আগেও জমিতে গোবর সার প্রয়োগ করে তা প্রস্তুত করে নিতে হবে৷

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

পরিবেশ

শিখে নিন টবে দারুচিনির চাষের কৌশল

পৃথিবীতে ভোজ্য মসলা যতরকম আছে তারমধ্যে দারুচিনি সবথেকে উল্লেখযোগ্য। এই প্রাচীনতম মসলা বহুদিন ধরে ওষধি হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে চলেছে। এছাড়াও খাবারে স্বাদ বাড়ানো থেকে শুরু করে, পানীয় এবং তরল মশলাদার খাবারে স্বাদ বাড়ানোর জন্যও এই দারচিনির ব্যবহার হয়। এলাচ, গোলমরিচ, লবঙ্গের সাথে সাথে দারুচিনির নামও মসলা হিসেবে একই পংক্তিতে উচ্চারিত হয়। বহু কৃষক দারুচিনির চাষ করে ভীষণভাবে উপকৃত হয়েছেন। বাজারে এই দারুচিনির চাহিদা প্রচুর পরিমানে থাকায়, এই চাষে ভালো লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও সৌখিন মানুষেরাও ভালোবেসে দারুচিনির চাষ বাড়িতে করে থাকেন। দারুচিনি গাছের বাকল, ফুল, কুঁড়ি, পাতা, ফল, শেকড় সবকিছুই কাজে লেগে যায়। দারুচিনি গাছ বাড়িতে চাষ করতে গেলে ঘরে ছাদে দুই জায়গাতেই চাষ করা যায়।

মনে রাখতে হবে এই চাষ করতে গেলে উপযুক্ত পরিমানে রোদ দরকার। বাংলার জলবায়ুতে মূলত শীতকালে এই চাষ করা সবথেকে ভালো। জানুয়ারি মাসে দারুচিনি গাছে ফুল ফোটা আরম্ভ করে, এবং এই গাছের ফল পাকতে আরম্ভ করে জুলাইয়ে। সেইসময়ই ফল থেকে বীজ সংগ্রহ করে নিয়ে এসে বাগানে বা টবে রোপন করে দেওয়া উচিত।

প্রয়োজনীয় রোদ (Sunlight)

কড়া সূর্যালোক দারুচিনি জন্য প্রয়োজনীয়, তাই এটি পর্যাপ্ত রোদ পাওয়া যায় এমন জায়গায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দারুচিনি রোপন করতে গেলে রৌদ্রোজ্জ্বল স্থান যেমন জানালার ধারে, ব্যালকনি কিংবা ছাদের খালি স্থান ব্যবহার করতে হবে।

উপযুক্ত মাটি (Soil)

দারুচিনি চাষের জন্য ভাল মানের মাটি ব্যবহার করা আবশ্যক। বাগানের মাটি ব্যবহার না করাই ভালো, কেননা এতে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। অনে সময় আমরা আশেপাশ থেকে মাটি নিয়েই টব ভরে গাছ লাগানো হয়।  বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সংবেদনশীল গাছগুলোতে এই উপায় কার্যকরী হয় না। নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভাল এমন মাটি ব্যবহার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে উত্তম নিষ্কাশনযুক্ত বেলে দোআঁশ মাটি ব্যবহার করা সবথেকে উত্তম। জেনে রাখা ভালো দারুচিনি খরা একদমই সহ্য করতে পারে না। মাটির বিকল্প হিসেবে ১৫% ট্রাইকোকমপোস্টযুক্ত কোকোডাস্ট ব্যবহার করা যেতে পারে।

বাইরে চাষ করার জন্য এক মিটার (৩০ সেন্টিমিটার গভীর) পর্যন্ত গর্ত করে মাটি দিয়ে পূরণ করে নিতে হবে। ঘরের ভিতরে বা ছাদবাগানের দারুচিনি চাষের জন্য একটি বড় পাত্র প্রয়োজন হবে।

রোপন (Planting)

দারুচিনির বীজ সংগ্রহও করা যায় অথবা নার্সারি থেকে দারুচিনির গাছ কিনেও আনা যায়।

বাইরে চাষের ক্ষেত্রে

দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে ১ মিটার x ১ মিটার এবং ৩০ সেমি গভীরতায় খনন করে মাটি দিয়ে গর্তটি পূরণ করতে হবে।

ঘরের মধ্যে টবে রোপনের ক্ষেত্রে

নিচে গর্ত সহ বড় সিরামিক পাত্র (৬০ x ৫০ সেমি) ব্যবহার করতে হবে। পাত্রটি মাটি বা কোকোডাস্ট দিয়ে পূরণ করে নিতে হবে। ৩০ সেন্টিমিটার গভীরতা এবং ৩০ সেন্টিমিটার প্রস্থের একটি গর্ত তৈরি করতে একটি বাগান ট্রোয়েল ব্যবহার করে নেওয়া ভালো। বীজ ব্যবহার করলে  ১.৫ সেন্টিমিটার গভীর গর্ত তৈরি করে নেওয়া উচিত। এবার গাছটি গর্তের মধ্যে রেখে মাটি দিয়ে চাপা দিতে হবে। বীজ ব্যবহার করলে প্রতি ১.৫ সেমি গর্তে একটি করে বীজ পুঁততে হবে এবং মাটি দিয়ে বীজটি ঢেকে দিতে হবে।

মাটি সবসময় ভেজা রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল দিতে হবে। দারুচিনি গাছ পাত্রে রোপন করার পর, টবের নিচের গর্ত থেকে জল বের না হওয়া পর্যন্ত জল দিতে হবে। টবের উপরের ৫ সেন্টিমিটার শুকিয়ে গেলেই আবার গাছটিকে জল দিতে হবে।

গাছের পরিচর্যা (Caring)

দারুচিনি গাছে নিয়মিত সার প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম বছর ৫০ গ্রাম টিএসপি, ৭৫ গ্রাম এমওপি ও ৫০ গ্রাম ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হবে। প্রতিবছর ২-৩ কেজি ট্রাইকোকম্পোস্ট ও সার প্রয়োগ শেষে একই হারে টিএসপি, এমওপি ও ইউরিয়া দিতে হবে।

দারুচিনি প্রথম ধরতে দুই থেকে তিন বছর সময় নেয় এবং তার পরে প্রতি দুই বছর পরপরই ফসল দিতে থাকে। দারুচিনি গাছ কম করে ১০-১৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। তাই একে নিয়মিত করে ছোট রাখতে হবে। পাঁচ বছর বয়সী দারুচিনি গাছ থেকে নিয়মিত দারুচিনি সংগ্রহের ডাল পাওয়া সম্ভব। দারুচিনি ব্যবহার করার জন্য যে শাখাগুলি কাটা হবে সেগুলি থেকে বাকল তুলে নিতে হবে, বাকলগুলি ব্যবহার করার আগে জলে ভালোভাবে ভিজিয়ে নেওয়া উচিত।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

আঙিনা কৃষি

টবে লাগান মিষ্টি তেঁতুল গাছ

পৃথিবীতে জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে, হারিয়ে যাচ্ছে বহু প্রাণী ও উদ্ভিদ বৈচিত্র। চাষবাসের জমিরও সংকুলান ঘটছে সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে। গগনচুম্বী বাড়ি ঘিরে ফেলছে সমস্ত ফাঁকা জমিন। শখ করে মানুষ খোলা জায়গায় যে গাছ লাগবে অথবা ফল-ফুলের চারা সেই উপায়ও আর নেই। গাছ লাগানোর জন্য সামান্য জায়গাও ফাঁকা থাকছে না আর। তবে আমাদের করণীয় কী? বৃক্ষরোপন কি তবে অচিরেই বন্ধ হয়ে যাবে। বেঁচে থাকার জন্য তো গাছ লাগাতে হবেই। বাড়ির একটুকরো বারান্দা অথবা ব্যালকনিতেও সুন্দর ভাবে ইচ্ছা করলে গাছ লাগানো যায়। বাড়ির ছাদেও বানানো যায় সুন্দর বাগিচা। শহরের মানুষদের জন্য ছাদ বাগানের কোনও বিকল্পও নেই। বাড়ির মধ্যেকার ব্যালকনি অথবা ছাদের একটুকরো জমিতেও, ইচ্ছা করলে টবে চাষ করা যায় বিভিন্ন ফুলের ও ফলের গাছ।

শাকসবজি, পেয়ারা, লেবু প্রভৃতি দেশীয় গাছ টবে বাড়তে দেওয়া থেকে শুরু করে বর্তমানে বহু বিদেশী গাছের চারাও মানুষ ব্যালকনি অথবা ছাদে চাষ করছেন। তার মধ্যে থাই মিষ্টি তেঁতুল টবের চাষ পদ্ধতি হিসাবে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। প্রথমত মিষ্টি তেঁতুলের চাষ করতে গেলে, নার্সারি থেকে এই বিশেষ তেঁতুলের সঠিক বীজ নিয়ে আনতে হবে। তবে থাই মিষ্টি তেঁতুলের কলম পাওয়া একটু দুষ্কর কাজ। বুঝে সঠিক চারা নিয়ে আসা বাগান মালিকের উপরেই বর্তায়।

থাই মিষ্টি তেঁতুলের ফুল থেকে ফল ধরতে প্রায় ৭ মাস সময় লাগে। বছরে দু’বার থাই মিষ্টি তেঁতুলের গাছে ফল ধরে। প্রথমবার বর্ষাকালে এবং দ্বিতীয়বার শীতকালে। এই গাছের পরিচর্যা আলাদা করে করার কোনও দরকার পড়ে না। গাছের যত্নআত্তি নিতে হয় ঠিকই, কিন্তু তা বলে, আলাদা করে কোনও বিশেষ যত্ন নিতে হয় না।

গাছ লাগানোর পদ্ধতি (Planting):

থাই মিষ্টি তেঁতুল চাষের জন্য আদর্শ মাটি হল, দো-আঁশ বা বেলে দো-আঁশ মাটি। এই দু’টি মৃত্তিকার মধ্যে যে কোনও একটি বেছে নিন। তারপর বেছে নেওয়া মাটির দুই ভাগ অংশের সাথে গোবর, ১০০ গ্রাম, টিএসপি ১০০ গ্রাম, পটাশ, ২৫০ গ্রাম, হাড়ের গুঁড়ো এবং ৫০ গ্রাম সরিষার খোল একসঙ্গে মিশিয়ে ২০ ইঞ্চি মাপের বড় টবে জল মিশিয়ে রেখে দিতে হবে। ১০ থেকে ১২ দিন পর টবের মাটি ভালো করে খুঁচিয়ে দিয়ে আরও ৪-৫ দিন রেখে দিতে হবে। ৪ থেকে ৫ দিন বাদে মিষ্টি তেঁতুলের একটি ভালো চারা ওই টবে লাগান।

পরিচর্যা(Caring):

চারা লাগানোর প্রথম কয়েক মাস তেমন যত্নের দরকার পড়বে না। অবশ্যই গাছে এই সময়টুকু পর্যাপ্ত জলের যোগান, এবং আগাছা পরিষ্কারের কাজ করতে হবে।  ছয় মাস চারা লাগানোর সময়সীমা ফুরোলেই ১ মাস বাদে বাদে গাছে সরষের খোল মিশ্রিত পচা জল দিতে হবে। মনে রাখতে  হবে খোল দেওয়ার আগে গাছের মাটি খুঁচিয়ে নিতে হবে।

রোগ দমন (Disease management):

সাধারণত থাই মিষ্টি তেঁতুল গাছে পোকামাকড়ের আক্রমণ দেখা যায় না। কিন্তু বর্ষাকালে অনেক সময় তেঁতুল গাছে ছত্রাক হানা দেয়। এর ফলে তেঁতুল ফেটে যায়। এই অসুবিধার থেকে গাছকে বাঁচাতে হলে, বর্ষাকাল আসার আগেই ভালো ছত্রাকনাশক ওষুধ ১০ দিন অন্তর গাছে স্প্রে করে ছড়িয়ে দিতে হবে।

বাংলার বেজায় টক তেঁতুলের সঙ্গে থাই মিষ্টি তেঁতুলের কোনও তুলনাই চলে না। অত্যন্ত মিষ্টি খেতে এই তেঁতুল থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়ায় চাষ প্রভূত পরিমাণে হলেও, আমাদের রাজ্য এই ফলের চাষ এখনও ততটা গতি পায়নি। কিন্তু আপনি আপনার ব্যালকনি অথবা ছাদে সহজেই এই থাই তেঁতুলের গাছ লাগাতে পারেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@agronewstoday.com, theagronewsbd@gmail.com