কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের পুরো জনগোষ্ঠীর খাদ্য চাহিদা পূরণের মূল ঝুঁকিটি নিতে হয় কৃষককে। কারণ, কৃষি উৎপাদন বিষয়টিই ঝুঁকিপূর্ণ একটি প্রক্রিয়া। যার সঙ্গে মাটি, পানি ও জলবায়ুর নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। সম্পর্ক রয়েছে যত্ন ও পরিচর্যার। সম্পর্ক রয়েছে সঠিক সময়ে সঠিক উপকরণ প্রয়োগের। আবার প্রকৃতির প্রতিটি অংশের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও বীজ রোপণের সময় থেকে শুরু করে ফসল তোলার আগ পর্যন্ত কৃষক নিশ্চিত করে বলতে পারেন না ষোল আনা ফসল ঘরে উঠবে কি না। বিজ্ঞান অগ্রসর হওয়ায় অনেক কিছুই কৃষকের হাতের নাগালে এসেছে, কিন্তু তার পরও ঝুঁকি কমেনি, বরং বেড়েছে। আর বাংলাদেশের জন্য এই ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা অনেক বেশি প্রযোজ্য। পৃথিবীর শীর্ষ ১০টি দুর্যোগপ্রবণ অঞ্চলের প্রথমটিই বাংলাদেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের নতুন অভিজ্ঞতা আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ সঙ্গে করেই চলে এ দেশের কৃষি।
পরিবেশ, প্রকৃতির পরিবর্তন, জনসংখ্যার বিস্ফোরণ ও সব ক্ষেত্রে ব্যাপক বাণিজ্যিকায়নের কারণে সনাতন পদ্ধতির কৃষির ওপর আর আস্থা রাখার সুযোগ নেই। সে কারণেই একদিকে চলছে প্রতিটি ফসলের বেশি ফলন নিশ্চিত করার প্রতিযোগিতা, অন্যদিকে চলছে ফসলবৈচিত্র্য ও শস্য বহুমুখীকরণের দৌড়। অর্থাৎ প্রাকৃতিক অনিশ্চয়তার ভেতরেই ফসলবৈচিত্র্য, উচ্চমূল্যের ফল-ফসল আবাদ ও শস্য বহুমুখীকরণের ঝুঁকি কৃষক নিজেই মাথায় নিচ্ছেন। কারণ একটাই। তা হচ্ছে, নিজস্ব খাদ্য চাহিদা পূরণ, আর্থিক সংগতি অর্জন ও সর্বোপরি কৃষির সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা। সে কারণে, কৃষক প্রতিনিয়ত পাড়ি দিচ্ছেন কঠিন এক ঝুঁকিপূর্ণ সময়। সবকিছু এড়িয়ে ফসল ঘরে উঠে গেল তো কৃষকের ভাগ্যপ্রসন্ন, আর না উঠল তো কৃষকের ভরাডুবি। এই পরিস্থিতি মেনে কৃষক পথ চলছেন বহুদিন ধরে। কিন্তু দেশের মানুষের খাদ্যের চাহিদা পূরণে তাঁদের যে ভাবনা, সে ভাবনা তো রাষ্ট্রের। কৃষক যেখানে রাষ্ট্রের ভাবনাটি ভাবছেন, দায়িত্বটা পালন করছেন, তাহলে তাঁদের ঝুঁকির ভাগ রাষ্ট্র কেন নেবে না?
প্রশ্ন এখানেই। এই চিন্তা থেকেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কৃষিতে ঝুঁকি সামলে উঠতে কৃষকের জন্য বিমার ব্যবস্থা রয়েছে। এ দেশে এই শস্যবিমা ধারণাটি কয়েক বছর আগ পর্যন্ত একেবারেই মূল্যায়িত হয়নি। যত দূর জানা যায়, ১৯৭৬ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) প্রকাশিত ‘উন্নয়নশীল দেশের জন্য শস্যবিমা’ শীর্ষক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৭ সালে দেশে পরীক্ষামূলকভাবে ‘শস্যবিমা প্রকল্প’ চালু করে। ১৯৮১ সালের পর প্রকল্পের গতি মন্থর হয়ে যায়। তবে গতি মন্থর হলেও ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত তা চালু ছিল। প্রকল্পটি আরও শক্তিশালী করার জন্য ১৯৯৬ সালে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি বিভিন্ন সুপারিশের একটি প্রতিবেদন তৈরি করলেও এ ব্যাপারে সরকারের কাছ থেকে কোনো দিকনির্দেশনা না পাওয়ায় প্রকল্পটি আর চালু হয়নি। পরবর্তী সময়ে ১৯৯৯ সালের জানুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে কৃষকদের জন্য নামমাত্র প্রিমিয়ামে বিমা চালুর সুপারিশ করা হয়। এগুলো তথ্যপত্রে পাওয়া গেলেও শস্যবিমার বাস্তবতা সত্যিকার অর্থে কৃষক কখনো চোখেও দেখেননি।
সত্তরের শেষ থেকে এখন পর্যন্ত নিয়মিত গ্রামে যাচ্ছি। কৃষকদের সঙ্গে তাঁদের সমস্যা-সংকট নিয়ে কথা হচ্ছে। কথা হচ্ছে তাঁদের ঝুঁকি নিয়ে। কিন্তু কৃষকের ঝুঁকির অংশীদার কেউই হতে চায় না। ২০০৫ সাল থেকে জাতীয় বাজেটের আগে যখন কৃষকের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনার আয়োজন করছি, তখন থেকে কৃষকদের মধ্যে শস্যবিমার ধারণাটি নিয়ে কম-বেশি আলোচনা চালু করেছি। সে সময় থেকে জাতীয় বাজেটের আগে সরকারের কাছে সুপারিশমালা হিসেবে শস্যবিমা বাস্তবায়নের অনুরোধও জানানো হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আশাব্যঞ্জক তথ্য হচ্ছে, ২০০৯ সালে বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত কৃষকের জন্য শস্যবিমার এই প্রস্তাবটির প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেন। সে সময় থেকেই সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে শস্যবিমার বিষয়ে কাজ চলছে বলে খবর পাওয়া যায়। যাই হোক, বিষয়টির একটি ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে বলেও শোনা যাচ্ছে। এ বিষয়ে একেবারে সাম্প্রতিক অগ্রগতি হলো, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং জাপান সরকার শস্যবিমা পরীক্ষামূলকভাবে সম্পাদন করার লক্ষ্যে একটি যৌথ তহবিল গঠন করেছে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র কৃষক ও খামারিদের ফসলের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা করা যাবে, বিশেষ করে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি থেকে। ওয়েদার ইনডেক্স বেইজড শস্যবিমার পাইলট প্রজেক্টের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণের উদ্দেশ্যে জাপান ফান্ড ২০ লাখ ডলার অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, যা সম্প্রতি অনুমোদন দিয়েছে এডিবি। তারা এই অর্থের তদারকি করবে।
এই প্রকল্পে বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগ করছে চার লাখ ২০ হাজার ডলার। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো কৃষকদের বিমাকরণে উদ্বুদ্ধ করা, যাতে তাঁরা নিরাপদে জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো হলেও ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মঙ্গোলিয়া, ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ডসহ পৃথিবীর বহু দেশে শস্যবিমা অনেক দিন ধরেই চলে আসছে। জানা গেছে, অন্তত ১২ হাজার কৃষক পরিবারকে সুযোগ-সুবিধা প্রদান করার উদ্দেশ্যে প্রকল্পটি তিন বছর সময়সীমার মধ্যে নির্বাচিত জেলাগুলোতে পরীক্ষামূলকভাবে শস্যবিমা কার্যক্রম সম্পন্ন করবে। প্রচলিত বিমার ক্ষেত্রে চড়া লেনদেনমূল্য এবং দুর্বল নেটওয়ার্কের কারণে গ্রামাঞ্চলে বিমা প্রদান করা কষ্টসাধ্য ও ব্যয়সাপেক্ষ বিবেচনা করে কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রিমিয়ামের হার ৪০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। কৃষি ব্যাংক, বহুমুখী (মাল্টিপারপাস) আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং কৃষি সমবায়ের মতো সংগঠনগুলো এই প্রকল্পের সঙ্গে প্রকল্পটির টেকসই বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করবে একসঙ্গে।
আবহাওয়া বিষয়ে সঠিক তথ্য আহরণের লক্ষ্যে জাপান এরোস্পেস এজেন্সির সহায়তায় একটি রিমোটচালিত মহাকাশভিত্তিক প্রযুক্তির বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ২০টি আবহাওয়াকেন্দ্রের উন্নয়ন হবে এবং সরকারি ও আবহাওয়াসংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান, বিমাপ্রতিষ্ঠান, কৃষিসংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি মিলিয়ে ৪০০ জনকে আবহাওয়া ইনডেক্সভিত্তিক বিমার প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
হ্রাসকৃত প্রিমিয়াম এবং উন্নত বিতরণব্যবস্থার পাশাপাশি এই বিমা পদ্ধতি কৃষকদের অন্যান্য সুবিধা প্রদান করবে। যেমন শুষ্ক মৌসুমে আয়সহায়তা প্রদান, ঋণসুবিধা, ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ কৃষকদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা ইত্যাদি। কমপক্ষে ছয় হাজার ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকের জন্য বিমা সম্পর্কে সচেতনতা এবং ঝুঁকিপূর্ণ জলবায়ু প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক সেমিনারের আয়োজন করা হবে। নিয়ন্ত্রণ ও আইনি কাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে যেখানে অপ্রচলিত বিমাপণ্যের সমাবেশ থাকবে। প্রকল্পটি এডিবির সহায়তায় সেকেন্ড ক্রপ ডাইভারসিফিকেশন প্রজেক্টের (এসসিডিপি) সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। নতুন বিমাপণ্যগুলো ক্ষুদ্র আর্থিক প্রতিষ্ঠান দ্বারা সরবরাহকৃত ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হবে। ফলে কৃষকের উৎপাদিত ফসল হবে মূল্য সংযোজিত।
শস্যবিমা নিয়ে এবারের আয়োজনটি ইতিবাচক, কিন্তু সবকিছুই নির্ভর করছে পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের ওপর। আমি ব্যক্তিগতভাবে ও আমার বিভিন্ন টেলিভিশন কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে সরকারের কাছে যে বিষয়ে বারবার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছি তা হচ্ছে, কৃষকের বিনিয়োগকে মূল্যায়ন করতে হবে। বিশেষ করে, বর্তমান সময়ে উচ্চমূল্যের ফল ও ফসল—আম, কুল, লিচু, পেয়ারা, স্ট্রবেরি ও ড্রাগন ফলে কৃষক অনেক বেশি বিনিয়োগ করছে। এই ফলগুলোর আবাদ কৃষককে এক বছরের মধ্যে যেমন ভাগ্য পাল্টে দিচ্ছে, একইভাবে আর্থসামাজিকভাবে পথেও বসার উদাহরণও আছে। এ ক্ষেত্রে যদি বিমার ব্যবস্থা থাকত, তাহলে কৃষকের একার ওপর ক্ষতির চাপ পড়ত না। স্পষ্টতই আমার মনে হয়, ধান আবাদের ক্ষেত্রে শস্যবিমা এত দ্রুত হয়তো সম্ভব হবে না। তবে যেকোনো উচ্চমূল্যের ফল, ফসল ও কৃষির উপখাতগুলো অনায়াসেই আসতে পারে বিমার আওতায়। যেমন পোলট্রি ও মৎস্য খাত।
এখানেও জলবায়ুগত ও সামাজিক অনেক কারণে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হন। শত্রুতামূলকভাবে বিষ দিয়ে কৃষকের পুকুরের মাছ ধ্বংস করে দেওয়া হয়। কিন্তু কৃষক এই ক্ষতি কোনোভাবেই পুষিয়ে উঠতে পারেন না। এই ঝুঁকিতে কেউ মৎস্যচাষির পাশে নেই। আবার দুগ্ধ খামার বা পশু পালনের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। এসব ক্ষেত্রে বিমাব্যবস্থা না থাকার কারণে, তৃণমূল পর্যায়ে আর্থসামাজিক উন্নয়নের বিষয়টি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আমার পরামর্শ হচ্ছে, ক. একযোগে বিমাব্যবস্থাটি উচ্চমূল্যের ফল-ফসল আবাদ, পোলট্রি খাত, মৎস্য খাত ও দুগ্ধ খামার খাতের জন্য চালু করতে হবে। খ. এ ক্ষেত্রে অবশ্যই ব্যাংক বা বিমাপ্রতিষ্ঠানের মাঝামাঝি ঝুঁকির অংশীদার হিসেবে আরেকটি প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করতে হবে। যা কৃষক ও বিমাপ্রতিষ্ঠান—দুয়ের ঝুঁকিকেই ভারসাম্যপূর্ণ করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। গ. বিমার প্রিমিয়াম নামমাত্র ধার্য করতে হবে। ঘ. বিমা কার্যক্রম চালুর আগে অবশ্যই কৃষকের স্তর (বড়, মাঝারি, ক্ষুদ্র, ভূমিহীন, বর্গাচাষি) নিরূপণ করে নিতে হবে। সবকিছু নির্ভর করছে কার্যকর বাস্তবায়ন, কৃষকের চাহিদা ও দাবি মূল্যায়নের ওপর। সব মিলিয়ে সরকারের গ্রহণ করা নতুন প্রকল্প সম্পর্কে বিশ্বব্যাংকের মন্তব্যটি বেশ ইতিবাচক। তারা বলেছে, বাংলাদেশে কৃষিবিমা চালু হলেও তা এমনভাবেই হওয়া উচিত যাতে করে প্রান্তিক ও দরিদ্র কৃষকেরা এর সুফল ভোগ করতে পারেন।
মেহেরপুর: পতিত ও অনুর্বর বেলে মাটির জমিতে চিনাবাদাম চাষ করে লাভবান হচ্ছেন মেহেরপুরের চাষিরা। ফলন ও বাজার দর ভালো এবং কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন এই এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাদামের চাষ।
সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা, শ্যামপুর, টেংগারমাঠ ও গোপালপুর গ্রামের অধিকাংশ জমির মাটি বেলে। ফলে এই এলাকার চাষিরা ধান, গম, পাটসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করে খুব একটা লাভবান হতে পারেন না।
ধান কাটার পর এ সব জমি সাধারণত পতিত থাকে। এজন্য ৯০ দিনের ফসল হিসেবে অল্প খরচে বাদাম চাষ করছেন এলাকার চাষিরা।
মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, জেলায় এবার বাদাম চাষ হয়েছে ১৫ হেক্টর জমিতে। এবার এক বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করতে চাষিদের খরচ হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা সেক্ষেত্রে বাদামের ফলন হয়েছে ৬ থেকে ৭ মণ। আর এ ফলনে প্রায় ২০ হাজার টাকা ঘরে তুলছেন তারা। বাজারে প্রতিমণ বাদাম বিক্রি হচ্ছে ২৭শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা গ্রামের বাদাম চাষি খাঁজা আহমেদ, কাওছার আলী ও ফিরোজ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এলাকার মাটি বেলে হওয়ায় সাধারণত সবজি, আলু ও অন্যান্য ফসল চাষ করার পর জমি পতিত থাকে। সে সময়ে চিনা বাদামের চাষ করা হয়। বাদাম চাষে খরচ কম এবং উৎপাদন ও বাজার দর ভাল। তাই দিন দিন চাষিরা তাদের পতিত জমিতে চিনা বাদামের চাষ শুরু করছেন।
এছাড়া বাদাম ছাড়ানো, শুকানোসহ যাবতীয় কাজ করে থাকেন এখানকার নারীরা। বাদামের গাছ আবার শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করছেন গৃহিণীরা।
নারী শ্রমিক সাহানা খাতুন ও জরিমন নেছা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বাদাম ছাড়ানো ও শুকানোর কাজ করে থাকি। এলাকার ২৫/৩০ জন নারী শ্রমিক এ কাজ করে আসছেন। গৃহিণী সাজেদা খাতুন ও জামেলা খাতুন জানান, বাদামের লতা জালানি হিসেবে বেশ ভাল। তাই লতাও বিক্রি হচ্ছে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আক্তারুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, চিনা বাদামের চাষ সাধারণত পতিত জমিতে হয়ে থাকে। এলাকার চাষিরা এই জমিতে বাদামের চাষ করে বাড়তি আয় করছেন। তাই বাদাম চাষ যাতে আরও সম্প্রসারিত হয় সেজন্য কৃষি বিভাগ চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে।
সিলেট বিভাগের উচ্চমাত্রার অ্যাসিডিক জমিতে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কৃষি বিজ্ঞানিরা মৌলভীবাজারের আকবরপুরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে ফুল চাষ করে সফল হয়েছেন। এ ফুল চাষ মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে ১০০ চাষিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে কৃষি গবেষণা কেন্দ্র।
কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের তথ্যমতে, যশোরে বাণিজ্যিকভাবে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল চাষ হয়। যার বাজার দর প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। যশোরের ফুল সারাদেশের পাশাপাশি সিলেটেও আসে প্রচুর। সিলেটে ফুলের বাজার শত কোটি টাকার উপরে। কিন্তু সিলেটে ফুলের চাষ বাণিজ্যিকভাবে হয় না।
সিলেট বিভাগের মাটি অ্যাসিডিক হওয়ায় ফুল চাষ করা যাবে না, সেটাই ছিল প্রচলিক ধারণা। কিন্তু এ ধারণাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যদিয়ে ভুল প্রমাণ করেছেন মৌলভীবাজার আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের একদল গবেষক। মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস এম শরিফুজ্জামানের নেতৃত্বে উচ্চমাত্রার অ্যাসিডিটিক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ফুল চাষ করে সফল হয়েছেন তারা। এ পরীক্ষামূলক চাষে ফলনও হয়েছে ভালো। তাই সিলেট অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট অঞ্চলে অনেক জায়গা অনাবাদি ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। প্রবাসীরা দেশের বাইরে অবস্থান করায় তাদের অনেক জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকে। এ জমিকে আবাদের আওতায় আনতে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের উদ্যোগ নিয়ে আগ্রহী ১০০ চাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে আমন ধান কাটার পর এ অঞ্চলের অনেক জমি পতিত থাকে। ফলে ফুল চাষ করে অনাবাদি জমি থেকে কোটি টাকা উপার্জন সম্ভব।
বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মিরানা আক্তার সুমি জানান, চাষিরা প্রশিক্ষণ শেষে অনেক কিছু শিখেছেন। কী পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে হয়, তা জেনেছেন। ধানের চেয়ে যেহেতু ফুলের দাম বেশি, তাই ফুল চাষে তাদের আগ্রহ বাড়ছে।
ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. সরফ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভালোভাবে জমি চাষ করে নির্দেশিত মাত্রায় জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয়। অন্য ফসলের মতোই এর চাষ পদ্ধতি সহজ। বেড তৈরি করে ফুল চাষ করতে হয়। প্রতিটি বেডের দৈর্ঘ যে কোন মাপের হতে পারে। তবে প্রস্থে ১.২-১.৫ মিটার হলে ভালো।’
তিনি বলেন, ‘কলম (বীজ) লাগানো থেকে তিন মাস পর স্টিক সংগ্রহ শুরু হয়। সংগ্রহ করা যাবে পরবর্তী ২৫ দিন। গ্লাডিওলাস ৫টি জাতসহ মোট ১২টি প্রজাতির ফুলের পরীক্ষা করে আমরা সফল হয়েছি।
সবুজ বিপ্লবের সময়ে পেস্টিসাইড ব্যবহারকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জীব বৈচিত্র্য, মাটির স্বাস্থ্য ও ফসলের গুণমানতা। এখন ভেবে দেখার সময় এসেছে, এত রাসায়নিক পেস্টিসাইড ব্যবহার করা কি ঠিক হচ্ছে? এ প্রশ্ন শুধু ভারতে নয়, সারাবিশ্বের কৃষকসমাজ ও শস্যবিজ্ঞানীদের কাছে। তাই মনে হয় জৈব নিয়ন্ত্রণকে গুরুত্ব দিয়ে সুসংহত রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণ আগামী দিনে একমাত্র সমাধানের রাস্তা হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।
চলমান খরিফ মরসুমে আমাদের রাজ্যে প্রধানত ধান, খরিফ পেঁয়াজ, জুট, ইক্ষু, তিল ইত্যাদি ফসলের চাষ হয়ে থাকে। এ রাজ্যে ধানে ঝলসা রোগের আক্রমণ একটি গুরুতর বিষয়।
জৈব পদ্ধতিতে এই রোগ দমন করার একটি সহজ উপায় রয়েছে। ৫০ মিলিলিটার কেরোসিন তেলে ৮৫ গ্রাম থেঁতলানো রসুন মিশিয়ে ২৪ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এরপর ৯৫০ মিলি. জল ও ১০ মিলি. তরল সাবান মিশিয়ে ভালোভাবে নেড়ে নিয়ে বোতলে রেখে দিতে হবে। ১৯ লিটার জলের সাথে ১ ভাগ মিশ্রণ মিশিয়ে সকালে/বিকেলে স্প্রেয়ার দিয়ে আক্রান্ত গাছে স্প্রে করতে হবে।
এই মিশ্রণটি আমেরিকান বোল ওয়ার্ম, আর্মি ওয়ার্ম, পেঁয়াজ-এর চিরুনি পোকা, আলুর টিউবার মথ, রুট নট নিমাটোড (কৃমি), আখের কাণ্ড ছিদ্রকারী পোকা, ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ, ডাউনি মিলডিউ ও ধানের ঝলসা রোগ প্রতিরোধে খুবই কার্যকরী।
এছাড়া বিভিন্ন ধরণের পাতা খেকো পোকা ও জাব পোকা নিয়ন্ত্রণে ১ কেজি পেঁয়াজ থেঁতো করে ১ লিটার জলের সাথে মিশিয়ে ২৪ ঘণ্টা রেখে দেবার পর কচলিয়ে রস নিংড়ে নিতে হবে। প্রাপ্ত নির্যাসের সাথে ১০ লিটার জল মিশিয়ে আক্রান্ত ফসলে স্প্রে করতে হবে।
জৈব সার প্রয়োগ ও জৈব কীটনাশক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফসলের উৎপাদন খরচ শতকরা ২৫-৩০ শতাংশ হ্রাস করা সম্ভব। উচ্চ পুষ্টিমানসম্পন্ন প্রযুক্তিতে উৎপাদিত জৈব সার, শাকসব্জী ও অন্যান্য ফসলের প্রয়োজনীয় নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশিয়াম-এর সাথে অণুখাদ্যের যোগান দেয়।
জৈব পদ্ধতিতে উৎপন্ন কীটনাশক ও ছত্রাকনাশকগুলি ফসলে কোনওরকম দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ব্যতিরেকে, পোকা ও রোগ দমনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এতে মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও উর্বরতা দীর্ঘমেয়াদী হয়। উৎপাদিত ফসল হয় স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ।
বন্ধুপোকা মাকড়ের (পরজীবি ও পরভোজী) সংরক্ষণের জন্য জমির পাশে অব্যবহৃত জায়গায় ত্রিধারা, উঁচুটি, শালিঞ্চে ইত্যাদি আগাছা জাতীয় গাছের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
দূরদর্শী পদক্ষেপের মাধ্যমে রাসায়নিক কৃষি বর্জন করে প্রাণ বৈচিত্র্য নির্ভর জৈব কৃষির মাধ্যমে খাদ্যে সার্বভৌমত্ব আনা সম্ভব। তাই জৈব কৃষির পথে ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়ে কৃষিবিষমুক্ত, স্বাস্থ্যসম্মত সমাজ গড়ে তোলাই বাঞ্ছনীয়।
চা পানীয়টি আমাদের দেশে খুবই জনপ্রিয় একটি পানীয়। প্রিয়জনের সাথে বৈঠক থেকে শুরু করে সারাদিনের ক্লান্তি দূর করা সবেতেই চা (Tea) আমাদের নিত্যসঙ্গী। তবে এখন মানুষ আগের তুলনায় অনেক বেশী স্বাস্থ্য সচেতন। সাধারণ চায়ের জায়গায় এসেছে, গ্রীণ টি, হার্বাল টি, লেমনগ্র্যাস টি, ব্লু টি ইত্যাদি। আর প্রকারভেদের সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে টি ব্যাগের গুরুত্ব। কারণ এটি খুব অল্প সময়ে তৈরি করা যায় এবং যে কোন স্থানে এর থেকে চা বানানো যায়। অফিস ও হোটেলগুলিতে এর যথেষ্ট চাহিদাও রয়েছে। তাই টি ব্যাগ তৈরীর ব্যবসাটি হয়ে উঠতে পারে আপনার জন্য লাভদায়ক।
চা উৎপাদনকারী দেশ গুলির মধ্যে অংশ নেয় চীন, ভারত , কেনিয়া , শ্রীলঙ্কা , জাপান , ইন্দোনেশিয়া , ভিয়েতনাম, তানজেনিয়া , মালয়, বাংলাদেশ, তার্কী এবং চা পানকারী দেশ গুলির মধ্যে ইংল্যান্ড, জর্মানী, কানাডা ও আমেরিকার বেশ নাম রয়েছে।
এ কারণে বেশিরভাগ সংস্থা টি ব্যাগ বিক্রি শুরু করেছে। আপনি যদি নতুন ব্যবসা করার পরিকল্পনা করে থাকেন, তবে আপনি টি ব্যাগ মেকিং ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এটির মাধ্যমে আপনি খুব ভাল অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। যিনি তৈরী করেন, তার থেকে নিয়ে এসে আপনি বাইরে বিক্রি করতে পারেন, এতে আপনার বিনিয়োগের দরকার পড়বে না। কিন্তু যদি বেশী লাভ করতে চান, তবে বিনিয়োগ করে নিজের ব্যবসা শুরু করুন।
টি ব্যাগ ব্যবসা শুরু করার জন্য জায়গা (How to start) –
এটি শুরু করার জন্য আপনি কোনও জায়গা ভাড়া নিতে পারেন। আপনার নিজের জমি থাকলে ব্যবসার জন্য সুবিধা হবে। এমন জায়গা চয়ন করুন, যেখানে মানুষের সমাগম রয়েছে। টি ব্যাগ তৈরীর জন্য আপনাকে মেশিন ইনস্টল করতে হবে।
চা ব্যাগ ব্যবসায় বিনিয়োগ –
আপনি যদি বড় আকারে ব্যবসা শুরু করতে চান, তবে আপনাকে বেশী অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে। এর মেশিনটি যথেষ্ট ব্যয়বহুল, সুতরাং বেশী পরিমাণ রাশি বিনিয়োগের দরকার রয়েছে এই ব্যবসায়, তবে আপনি যদি ব্যাংক থেকে লোণ নেন, তবে আপনি ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
চা ব্যাগ তৈরিতে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল –
ফিল্টার পেপার –
এর ভিতরে চায়ের পাতা স্টোর করতে হবে। এই কাগজটি সুক্ষ ছিদ্রযুক্ত এবং পাতলা, পাশাপাশি সহজে ভিজে যায় না, তাই এই কাগজটি চা ব্যাগ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
চা পাতা –
আপনি যেমন প্রকারের ব্যাগ বিক্রি করতে চান, তেমন চা পাতা কিনতে হবে।
বিভিন্ন প্রকারের চা –
সাধারণ চা, গ্রীণ টি, উলং টি, ব্ল্যাক টি, হার্বাল টি
চা ব্যাগগুলিতে চা পাতা পূরণ করার প্রক্রিয়া –
চা ব্যাগ তৈরীর মেশিনের সাহায্যে প্রস্তুত চা পাতাগুলি ফিল্টার পেপারে পূরণ করতে হয়। সাধারণত প্রায় ২-৪ আউন্স চা পাতা একটি টি ব্যাগে ভরা হয়। এর পরে, একটি প্যাকিং মেশিনের সাহায্যে ব্যাগটি সিল করা হয়। টি ব্যাগের সাথে একটি সুতো সংযুক্ত থাকে।
চা ব্যাগ ব্যবসায় থেকে লাভ –
আপনি চায়ের পাতার গুণমান অনুযায়ী ব্যাগের দাম নির্ধারণ করতে পারেন। এই ব্যবসা থেকে খুব ভাল লাভ করা যায়। এর আরও বিক্রয়ের জন্য, আপনি বাজারে পাইকারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এগুলি ছাড়াও আপনি হোটেল বা অফিসের লোকের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এই ব্যবসা আপনাকে মাসে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন দিতে পারে।
ছেলে থেকে বুড়ো সবারই প্রিয় টক ঝাল কদবেল। কদবেলের আচার, কদবেল মাখা সকলেরই অত্যন্ত পছন্দের। যারা বাগান করতে পছন্দ করেন, বিশেষত টবে, তাদের জন্য কদবেল এক আদর্শ ফল। কদবেলের আকার অনেকটা টেনিস বলের মতো। শরতের শুরুতে কদবেল বাজারে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এই ফলের মন মাতানো স্বাদ বিশেষ করে মহিলাদের ভীষণই পছন্দের।
টবে কদবেল চাষের পদ্ধতি (Farming Process)
মন কাড়া স্বাদের জন্য পাকা কদবেল সবার কাছেই অত্যন্ত প্রিয়। কদবেল গাছে ফুল আসে মার্চ-এপ্রিল মাস নাগাদ। তবে ফল পাকতে সময় লাগে সেপ্টেম্বর-অক্টবর। টবে রোপনের জন্য কদবেলের কলমের চারা বেশি ভালো। কলমের চারা থেকে কয়েক বছরের মধ্যে ফুল-ফল ধরে। ছাদের টবে এই গাছের চাষ সহজেই করা যায়। জোড় কলম করে এর কলম তৈরি করা যায়। এ গাছের চাষাবাদ অনেকটা বেলের মতোই।
মাটি তৈরি (Land Preparation)
হাফ ড্রামে অথবা টবে পাঁচ সেন্টিমিটার পুরু করে ইটের খোয়া বিছিয়ে তার ওপর ১০ সেন্টিমিটার বালির স্তর দিতে হবে। ড্রামের তলার দিকে জল বার করে দেওয়ার জন্য ছিদ্র রাখতে হবে। এবার তিন ভাগ দো-আঁশ মাটির সাথে দুই ভাগ গোবর সার, ড্রামপ্রতি ২০০ গ্রাম এমওপি (পটাশ) সার, ২৫০ গ্রাম টিএসপি (ফসফেট) সার, ১ কেজি হাড়ের গুঁড়ো, ৫০ গ্রাম জিপসাম সার, ২০ গ্রাম ম্যাগেনেসিয়াম সালফেট (ম্যাগসাল) সার ও ১০ গ্রাম দস্তা সার মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে ড্রামে বা টবে ভরে হালকা করে জল দিয়ে মাটি ভিজিয়ে এক থেকে দুই সপ্তাহ রেখে দিতে হবে।
ড্রাম বা টবের ঠিক মাঝখানে কদবেলের কলম বসিয়ে কলমের গোড়ার মাটি শক্ত করে চেপে দিতে হবে। কলম লাগানোর পর গাছের গোড়ায় জল দিতে হবে। সোজা ভাবে কলম রাখতে গেলে, গোড়ার কাছাকাছি কাঠি পুঁতে তার সাথে কলম বেঁধে দিলে ভালো। শীতকাল ছাড়া বছরের যেকোনও সময় কদবেলের কলম লাগানো যায়। ছাদের ওপর রোদের মধ্যে কদবেলের গাছ রাখা উচিত। এতে গাছের ভালোই হবে।
ফলন এবং পরিচর্যা (Caring)
কলমের গাছে ফুল ফাল্গুন-চৈত্র মাসে নাগাদ আসে। শরৎকালে ফল পেকে যায়। ডালপালা ফল সংগ্রহ করার সময় কিছু ছেঁটে দেওয়া উচিত। এর ফলে পরের বছর ফলন ভালো হবে। কদবেল গাছে ফুল-ফল ভালো আনার জন্য প্রতি বছর ফল তোলা শেষ হলে গাছের গোড়ার মাটিতে ড্রামপ্রতি ১৫০ থেকে ২৫০ গ্রাম ইউরিয়া সার, ১০০ গ্রাম এমওপি সার, ১০০ গ্রাম টিএসপি সার দুই কেজি প্যাকেটের কম্পোস্ট সারের সাথে মিশিয়ে গোড়ার মাটি নিড়িয়ে তার সাথে মিশিয়ে সেচ দিতে হবে।
গাছের বৃদ্ধি ভালো হলে বছরে একবার সার দিলে হবে না। বর্ষাকালের আগেও ঠিক একই ভাবে পুনরায় সার দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে টব বা ড্রামের মাটি যাতে না শুকিয়ে যায়। টবের মাটি কখনো শুকিয়ে গেলে নিয়ম করে সেচ দিয়ে নিতে হবে।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন