আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

চীন

বাঘের আলিঙ্গন: যে ছবি পেল সেরা পুরষ্কার

সার্গেই গর্শকফের পুরষ্কার জেতা ছবিটির শিরোনাম: আলিঙ্গন
সার্গেই গর্শকফের পুরষ্কার জেতা ছবিটির শিরোনাম: আলিঙ্গন

বিশ্বের সবচেয়ে বিরল কোন প্রাণীর ছবি তুলতে হলে আপনার প্রয়োজন হবে দক্ষতা এবং সৌভাগ্য।

রুশ ফটোগ্রাফার সার্গেই গর্শকফের যে দুটোই রয়েছে তার প্রমাণ পাওয়া গেল তার তোলা ছবিতে।

রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় অরণ্যে তার তোলা একটি সাইবেরিয়ান বাঘ (আমুর টাইগার)-এর ছবি এ বছরের সেরা বন্যপ্রাণীর ছবি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

এই মাদি মাঘকে দেখা যাচ্ছে ল্যান্ড অফ লেপার্ড ন্যাশনাল পার্কের একটি গাছকে জড়িয়ে ধরে আছে।

গাছের গায়ে ঘষা দিয়ে এবং প্রস্রাব করে এক বাঘ অন্য বাঘকে তার নিজের বিচরণ ক্ষেত্রের কথা জানিয়ে দেয়।

“ছবিটির আলো, রং এবং টেক্সচার ইত্যাদি দেখে মনেই হয় না এটি একটি ছবি। মনে হয় এটি একটি অয়েল পেইন্টিং,” বলছেন ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার অফ দ্যা ইয়ার প্রতিযোগিতার একজন বিচারক রজ কিডম্যান।

“দেখে মনে হয় বাঘটি অরণ্যের এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এমনকি বাঘের লেজটি পর্যন্ত মিশে আছে গাছের গুঁড়ির সাথে,‍ বিবিসিকে বলছিলেন তিনি।

এই ছবির আরও চমকপ্রদ দিক হলো যেভাবে ছবিটা তোলা হয়েছে।

এই ক্যামেরা-ট্র্যাপ যন্ত্র জঙ্গলের মধ্যে বাসিয়ে রাখা হয়। কোন বন্য প্রাণী এর আওতার মধ্যে এলেই ক্যামেরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার ছবি তুলে রাখে।

সে জন্য সার্গেইকে জানতে হয়েছে কোথায় ক্যামেরা বসাতে হবে, কোন্‌ অ্যাঙ্গেল থেকে ছবি তুলতে হবে ইত্যাদি। ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার হিসেবে সেখানেই প্রয়োজন হয় দক্ষতা ও একাগ্রতা।

পূর্ব রাশিয়ায় অবৈধ শিকারের জেরে বাঘের সংখ্যা কমতে কমতে প্রায় বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এসব বাঘের সংখ্যা এখন কয়েকশোতে ঠেকেছে বলে ধারণা করা হয়।

হরিণ, বুনো শুয়োর — আমুর টাইগারের প্রধান খাদ্য — তাদের সংখ্যাও কমেছে ব্যাপক হারে শিকারের ফলে।

আমুর টাইগার বিরল হয়ে পড়ায় তার ছবি তোলার কাজও বেশ কঠিন। সার্গেই যে সেরা ছবি তুলেছেন, তার জন্য তার ক্যামেরা-ট্র্যাপ যন্ত্রকে বসিয়ে রাখতে হয়েছিল ১০ মাস।

লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম প্রতি বছর বন্য প্রাণীদের সেরা ছবি পুরষ্কার দিয়ে থাকে। এটা দেয়া হচ্ছে গত ৫৫ বছর ধরে।

শেয়ালের খপ্পরে বুনো হাঁস: লিনা হেকিনেন, ফিনল্যান্ড
শেয়ালের খপ্পরে বুনো হাঁস: লিনা হেকিনেন, ফিনল্যান্ড

একটি বাচ্চা শেয়াল যেভাবে একটি বুনো হাঁসকে কামড়ে খাচ্ছে — এই ছবিটি তুলেছেন ফিনল্যান্ডের টিনএজ ফটোগ্রাফার লিনা হেকিনেন। ১৫-১৭ বছর বয়সী ফটোগ্রাফারদের ক্যাটেগরিতে এটি সেরা ছবি হিসেবে বিবেচিত হয়।

শেয়ালটি তার খাবারকে অন্য শেয়ালের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য একটি পাথরের খাঁজে ঢুকে পড়েছিল।

দ্যা পোজ: মগেন্স ট্রোল, ডেনমার্ক
দ্যা পোজ: মগেন্স ট্রোল, ডেনমার্ক

এটি একটি প্রবোসিস জাতের পুরুষ বাঁদরের ছবি। এটি অ্যানিমাল পোর্ট্রেট বিভাগে এবার সেরা ছবি হিসেবে বাছাই হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার বোর্নিও দ্বীপে একটি অভয়ারণ্যে এই ছবিটি তোলা হয়।

বয়স বাড়ার সাথে সাথে বাঁদরটির নাকের দৈর্ঘ্যও বাড়তে থাকবে। বড় নাকের সাহায্যে তার ডাকও বেশি শোনা যাবে। এবং বাঁদরের দলের মধ্যে তার অবস্থানকেও পরিষ্কার করবে।

আগুনের নদী: লুচিয়ানো গুয়াডেনজিও, ইতালি
আগুনের নদী: লুচিয়ানো গুয়াডেনজিও, ইতালি

ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার অফ দ্যা ইয়ার প্রতিযোগিতায় শুধু বন্য প্রাণীর ছবি তোলা হয় না।

ইউরোপের জীবন্ত আগ্নেয়গিরি ইতালির মাউন্ট এট্নার এই ছবিটি আর্থস এনভায়রনমেন্ট ক্যাটেগরিতে সেরা ছবি নির্বাচিত হয়েছে।

এই ছবি তোলার জন্য লুচিয়ানো গুয়াডেনজিওকে প্রচণ্ড তাপ এবং আগ্নেয়গিরির বিষাক্ত ভাপ সহ্য করতে হয়েছে।

ভারসাম্যের জীবন: হাইম কুলেব্রাস, স্পেন
ভারসাম্যের জীবন: হাইম কুলেব্রাস, স্পেন

ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার অফ দ্যা ইয়ার প্রতিযোগিতার সরিসৃপ বিভাগের এটি সেরা ছবি। এই গ্লাস ফ্রগ জাতের ব্যাঙটির মুখে মাকড়শা। হাইম এই ছবিটি তুলেছেন একুয়েডরের ম্যানডুরিয়াকু অরণ্যে। তখন প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছিল। এর মধ্যেই তিনি এক হাতে ছাতা এবং ফ্ল্যাশ লাইট ধরে অন্য হাত দিয়ে ক্যামেরা পরিচালনা করেন।

দুই বোলতার গল্প: ফ্র্যাংক ডেশানডল, ফ্রান্স
দুই বোলতার গল্প: ফ্র্যাংক ডেশানডল, ফ্রান্স

উত্তর ফ্রান্সের নরমান্ডিতে এই ছবিটি তোলা হয়েছে। এর জন্য ক্যামেরায় বিশেষ ধরনের দ্রুত গতির শাটার ব্যবহার করা হয়েছে যাতে বোলতা দুটির পাখার ছবিকে ফ্রেমবন্দি করা যায়।

সোনালি মুহূর্ত: সোংডা কাই, চীন
সোনালি মুহূর্ত: সোংডা কাই, চীন

ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার অফ দ্যা ইয়ার প্রতিযোগিতার আন্ডার ওয়াটার বিভাগের সেরা ছবি। এটা একটা ডায়মন্ড-ব্যাকড স্কুইড। ফিলিপিন্সের আনিলাও উপকূলে জলের তলে রাতের বেলা সোংডা এই ছবিটি তোলেন। স্কুইডটি প্রায় ৬-৭ সেন্টিমিটার দীর্ঘ।

মা বলেছেন দৌড় দাও: শানুয়ান লি, চীন
মা বলেছেন দৌড় দাও: শানুয়ান লি, চীন

এই বন বিড়ালের বাচ্চাগুলিকে দেখা যায় উত্তর-পশ্চিম চীনের চিংহাই-তিব্বত মালভূমিতে। ছয় বছর ধরে অনুসরণের পর শানুয়ান এই ছবিটি তুলতে সমর্থ হন।

  • মা বলেছেন দৌড় দাও: শানুয়ান লি, চীন

    মা বলেছেন দৌড় দাও: শানুয়ান লি, চীন

  • সোনালি মুহূর্ত: সোংডা কাই, চীন

    সোনালি মুহূর্ত: সোংডা কাই, চীন

  • দুই বোলতার গল্প: ফ্র্যাংক ডেশানডল, ফ্রান্স

    দুই বোলতার গল্প: ফ্র্যাংক ডেশানডল, ফ্রান্স

  • ভারসাম্যের জীবন: হাইম কুলেব্রাস, স্পেন

    ভারসাম্যের জীবন: হাইম কুলেব্রাস, স্পেন

  • আগুনের নদী: লুচিয়ানো গুয়াডেনজিও, ইতালি

    আগুনের নদী: লুচিয়ানো গুয়াডেনজিও, ইতালি

  • দ্যা পোজ: মগেন্স ট্রোল, ডেনমার্ক

    দ্যা পোজ: মগেন্স ট্রোল, ডেনমার্ক

  • শেয়ালের খপ্পরে বুনো হাঁস: লিনা হেকিনেন, ফিনল্যান্ড

    শেয়ালের খপ্পরে বুনো হাঁস: লিনা হেকিনেন, ফিনল্যান্ড

  • সার্গেই গর্শকফের পুরষ্কার জেতা ছবিটির শিরোনাম: আলিঙ্গন

    সার্গেই গর্শকফের পুরষ্কার জেতা ছবিটির শিরোনাম: আলিঙ্গন

  • সহিংসতার জন্য উভয় পক্ষ একে অপরকে দায়ী করছে

    সহিংসতার জন্য উভয় পক্ষ একে অপরকে দায়ী করছে

  • উত্তেজনা বাড়তে থাকায় আর্মেনীয় সংরক্ষিত বাহিনীর সদস্যদের যোগ দেয়ার জন্য তলব করা হয়েছে

    উত্তেজনা বাড়তে থাকায় আর্মেনীয় সংরক্ষিত বাহিনীর সদস্যদের যোগ দেয়ার জন্য তলব করা হয়েছে

  • ১৯৯০ এর দশকে আজারবাইজানের সেনা অভিযানকে ঠেকিয়ে দিয়েছিল আর্মেনীয়রা

    ১৯৯০ এর দশকে আজারবাইজানের সেনা অভিযানকে ঠেকিয়ে দিয়েছিল আর্মেনীয়রা

  • আজারবাইজানের আর্টিলারি

    আজারবাইজানের আর্টিলারি

  • মা বলেছেন দৌড় দাও: শানুয়ান লি, চীন
  • সোনালি মুহূর্ত: সোংডা কাই, চীন
  • দুই বোলতার গল্প: ফ্র্যাংক ডেশানডল, ফ্রান্স
  • ভারসাম্যের জীবন: হাইম কুলেব্রাস, স্পেন
  • আগুনের নদী: লুচিয়ানো গুয়াডেনজিও, ইতালি
  • দ্যা পোজ: মগেন্স ট্রোল, ডেনমার্ক
  • শেয়ালের খপ্পরে বুনো হাঁস: লিনা হেকিনেন, ফিনল্যান্ড
  • সার্গেই গর্শকফের পুরষ্কার জেতা ছবিটির শিরোনাম: আলিঙ্গন
  • সহিংসতার জন্য উভয় পক্ষ একে অপরকে দায়ী করছে
  • উত্তেজনা বাড়তে থাকায় আর্মেনীয় সংরক্ষিত বাহিনীর সদস্যদের যোগ দেয়ার জন্য তলব করা হয়েছে
  • ১৯৯০ এর দশকে আজারবাইজানের সেনা অভিযানকে ঠেকিয়ে দিয়েছিল আর্মেনীয়রা
  • আজারবাইজানের আর্টিলারি
বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

চীন

চীনে পানিবিহীন হাঁসের খামার

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

চীন

চীনের এ কেমন দাবি!

লেখক

ইতালি ও যুক্তরাষ্ট্রের পর এবার ভারত-বাংলাদেশের ওপর করোনাভাইরাসের দায় চাপানোর চেষ্টায় মেতে উঠেছে চীন। দেশটির একদল গবেষক দাবি করেছেন, করোনাভাইরাস উহান থেকে নয়, ভারত-বাংলাদেশ থেকেই ছড়িয়েছে। তারা বলেছেন, ২০১৯ সালের গ্রীষ্মেই সম্ভবত করোনার জীবাণু ছড়িয়েছে। আর সেটা ছড়িয়ে থাকতে পারে ভারত অথবা বাংলাদেশ থেকে। এখান থেকে এ জীবাণু উহানে বাহিত হয়েছে। আর উহানেই এটা প্রথম শনাক্ত হয়। যদিও তাদের এমন অযৌক্তিক দাবিকে সন্দেহের চোখেই দেখছেন পশ্চিমা বিজ্ঞানীরা।

চীনের একাডেমি অব সায়েন্সের একদল গবেষকের গবেষণার ফলাফলে বিস্ফোরক এ দাবি করা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেটের প্রাক-প্রকাশনা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে গত ১৭ নভেম্বর চীনা বিজ্ঞানীদের গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করা হয়। ওই প্রবন্ধ উদ্ধৃত করে গত শুক্রবার ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য সান বলেছে, উহানের দোষ এখন বাংলাদেশ বা ভারতের ওপর চাপানোর চেষ্টা হচ্ছে। চীনা বিজ্ঞানীরা আচমকা এমন অযৌক্তিক দাবি তোলায় পশ্চিমা বিজ্ঞানীরা আগাম সতর্ক করে দিয়েছেন। তাদের মতে, এই গবেষণা ‘বড় ধরনের’ দাবি তুলছে, আর এ কারণে সতর্কতা ও সন্দেহপ্রবণ চোখে এটি ভালো করে মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

শুক্রবার ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর আগেও চীনের একাধিক গবেষণায় কভিড-১৯ মহামারির দায় দেশটির সীমান্তের বাইরে কারও ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করা হয়েছে। একাধিক গবেষণায় ইতালি ও যুক্তরাষ্ট্রকে এই জীবাণুর উৎস দেশ হিসেবে শনাক্তের চেষ্টা করা হয়েছে।

গত বছর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়। গত বছর ৩১ ডিসেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার চীনের কার্যালয় আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন ভাইরাসের তথ্য প্রকাশ করে। শুরুতে এই ভাইরাস চীনের প্রতিবেশী দেশগুলোতে ছড়ায়। একপর্যায়ে তা মহামারি আকারে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে প্রথম রোগী শনাক্তের ঘোষণা আসে এ বছরের ৮ মার্চ।

এরই মধ্যে চীনের বিজ্ঞানীদের দাবিকে পুরোপুরি অনুমাননির্ভর বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গত শুক্রবার সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক মাইক রায়ান এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে বলেন, চীন থেকে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হয়নি, এমন কথা বলা আমাদের জন্য একেবারে অনুমাননির্ভর হবে।

গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ২০১৯ সালের মে থেকে জুন মাসে উত্তর-মধ্য ভারত ও পাকিস্তানে রেকর্ড দ্বিতীয় দীর্ঘতম দাবদাহ তাণ্ডব চালিয়েছিল। ফলে ওই অঞ্চলে ভয়াবহ পানির সংকট সৃষ্টি হয়। পানির অভাবে বানরের মতো বন্যপ্রাণী একে অপরের সঙ্গে ভয়াবহ লড়াইয়ে লিপ্ত হয়েছিল এবং অবশ্যই এটি মানুষ ও বন্যপ্রাণী সংস্পর্শের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছিল। এই দাবদাহকেই প্রাণী থেকে মানবদেহে করোনা সংক্রমণের কারণ বলে মনে করছেন গবেষকরা।

চীনা গবেষক দলটি করোনাভাইরাসের উৎস খুঁজতে ফাইলোজেনেটিক বিশ্নেষণ পদ্ধতি ব্যবহার করেন। তাদের মতে, সবচেয়ে কম রূপান্তরিত রূপটাই ভাইরাসের আসল রূপ হতে পারে। এ ধারণার ভিত্তিতেই তারা দাবি করেছেন, নভেল করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ উহানে হয়নি। এর বদলে ভারত ও বাংলাদেশের মতো জায়গাগুলো, যেখানে কম রূপান্তরিত ভাইরাসের নমুনা পাওয়া গেছে, সেখানেই হতে পারে এর আসল উৎস। এ ছাড়া ভারত-বাংলাদেশের পাশাপাশি করোনার সম্ভাব্য উৎস হিসেবে অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, সার্বিয়া, ইতালি, গ্রিস, যুক্তরাষ্ট্র ও চেক রিপাবলিকের নাম বলেছেন চীনের ওই গবেষকরা।

গবেষকরা আরও বলেছেন, যেহেতু বাংলাদেশ ও ভারতের নমুনায় এ ভাইরাসে কম মাত্রায় মিউটেশন পাওয়া গেছে, তাই এ দুই প্রতিবেশী দেশ থেকেই এটি ছড়ানোর আশঙ্কা আছে।

তবে চীনাদের এ দাবির সঙ্গে একমত নন অনেক বিশেষজ্ঞ। চীনা বিজ্ঞানীদের গবেষণাপত্রকে ‘খুবই ত্রুটিপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করেছেন গ্লাসগো ইউনিভার্সিটির ভাইরাল জিনোমিপ অ্যান্ড বায়োইনফরমেটিকস বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডেভিড রবার্টসন। তিনি বলেন, ন্যূনতম রূপান্তরিত ভাইরাস সিকোয়েন্স শনাক্তকরণে লেখকদের দৃষ্টিভঙ্গি সহজাতভাবেই পক্ষপাতদুষ্ট। লেখকরা মহামারির বিস্তৃতি-সংক্রান্ত উপাত্তগুলো এড়িয়ে গেছেন, যাতে চীনে ভাইরাসের উত্থান এবং সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়া স্পষ্ট দেখা যায়। এই বিশেষজ্ঞের মতে, চীনা বিজ্ঞানীদের গবেষণাপত্রটি সার্স-কভ-২ সম্পর্কে বোঝার বিষয়ে নতুন কিছুই যোগ করেনি।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

চীন

চাঁদ থেকে পাথর আনতে চীনের মিশন শুরু

প্রথমবারের মতো সফলভাবে মানুষবিহীন মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করলো দেশটি

চাঁদ থেকে পাথর ও ধ্বংসাবশেষ আনতে প্রথমবারের মতো সফলভাবে মানুষবিহীন মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করেছে চীন।

মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) চীনের দক্ষিণের প্রদেশ হাইনানের ওয়েনচ্যাং থেকে দেশটির স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ৪টায় সবচেয়ে বড় রকেট লং মার্চ ৫ উৎক্ষেপিত হয়।

“চ্যাংই ফাইভ” নামে এ যানটি এক প্রাচীন চীনা চন্দ্রদেবীর নামানুসারে রাখা হয়েছে। এটি এখনও পর্যন্ত দেশটির সবচেয়ে সাহসী চন্দ্রাভিযান। এই মিশনটি সফল হলে চীনের মহাকাশ বিষয়ে গবেষণা ব্যাপকভাবে এগিয়ে যাবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি মঙ্গল থেকে নমুনা আনার বা চাঁদে অভিযানের পথকে আরও সুগম করতে পারে।

সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,  যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়ার পর চীনই হবে বিশ্বের তৃতীয় দেশ, যারা চাঁদ থেকে পাথর আনবে। মহাকাশযান সাধারণত চাঁদে পৌঁছাতে তিনদিন সময় নেয়।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

চীন

চীনে প্রাচীনকালের ৯০০ ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার

প্রত্নতত্ত্ববিদরা একটি পাথরের তৈরি বৌদ্ধ মন্দিরের প্রায় চার হাজার ৬০০ বর্গমিটার এলাকা খনন করে এ পুরাকীর্তিগুলো আবিষ্কার করেন

চীনা প্রত্নতত্ত্ববিদরা দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমের শহর চংকিংয়ের পাথরের তৈরি স্থানীয় বৌদ্ধ মন্দির এলাকা থেকে ৯০০টিরও বেশি প্রত্নতাত্ত্বিক ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করেছেন।

রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) চংকিং শহরের ইনস্টিটিউট অব কালচারার হেরিটেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রত্নতত্ত্ববিদরা শহরের জিয়াংজিন এলাকার একটি পাথরের তৈরি বৌদ্ধ মন্দিরের প্রায় চার হাজার ৬০০ বর্গমিটার এলাকা খনন করে এ পুরাকীর্তিগুলো আবিষ্কার করেন।

ইনস্টিটিউট অব কালচারাল হেরিটেজের একজন প্রত্নতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ নিও ইয়িংবিনের মতে, ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দুই বছরব্যাপী এ খননের মাধ্যমে তাঙ্গ রাজবংশ (৬১৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৯০৭ খ্রিস্টাব্দ) এবং কোয়িং রাজবংশের (১৬৪৪ খ্রিস্টাব্দ-১৯১১ খ্রিস্টাব্দ) পর্যন্ত সময়কার ৫০টিরও বেশি স্থাপনা, সমাধি এবং খোদাই করা শিলালিপি পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, প্রাচীন চীনের স্থানীয় ইতিহাস এবং বৌদ্ধ সংস্কৃতি অধ্যয়নের ক্ষেত্রে নতুন করে আবিষ্কৃত এ পুরার্কীতিগুলোর দারুন বৈজ্ঞানিক, ঐতিহাসিক এবং শৈল্পিক মূল্য যোগ করবে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

চীন

কোয়াড সংলাপ: চীনের ডানা বাঁধতে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়ার মন্ত্রীরা টোকিওতে

২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে বঙ্গোপসাগরে কোয়াড সদস্য যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রথম যৌথ সামরিক মহড়া চালায়
২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে বঙ্গোপসাগরে কোয়াড সদস্য যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রথম যৌথ সামরিক মহড়া চালায়

ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরে নৌ চলাচল ‘অবাধ ও স্বাধীন‘ রাখার উপায় খোঁজার যুক্তি দেখিয়ে ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের মধ্যে ‘কোয়াড’ নামে যে সংলাপের সূচনা হয়েছিল, তারই আওতায় এই চার দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আজ (মঙ্গলবার) থেকে টোকিওতে দু’দিনের বৈঠকে বসছেন।

দশ বছর হিমঘরে থাকার পর ‘কোয়াড সংলাপ’ ২০১৭ সাল থেকে নতুন করে জীবন ফিরে পেলেও টোকিওর এই বৈঠক নিয়ে এক বিশেষ আগ্রহ তৈরি হয়েছে। আর এই আগ্রহের প্রধান কারণ, বৈঠকটি হচ্ছে সীমান্ত নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে প্রায় চার মাস ধরে চলা বিপজ্জনক উত্তেজনার মধ্যে।

চীন তাদের প্রধান বৈরী এই চারটি দেশের মধ্যে এই বৈঠক নিয়ে যে একইসাথে উদ্বিগ্ন এবং ক্ষুব্ধ, তার ইঙ্গিত স্পষ্ট। জানা গেছে, মঙ্গল ও বুধবার টোকিওতে কোয়াডের এই বৈঠক চলার সময় একই সাথে তিন থেকে চারটি নৌ এবং বিমান মহড়ার ঘোষণা দিয়েছে বেইজিং।

কোয়াডের চারটি সদস্য দেশের মধ্যে ২০১৭ সাল থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে নিয়মিত বৈঠক হচ্ছে – কিন্তু চীনকে আটকাতেই যে এই জোটবদ্ধ উদ্যোগ, পরিষ্কার করে তা কখনই বলা হয়নি।

এমনকি এসব বৈঠক নিয়ে এই চারটি দেশের সরকারগুলোর পক্ষ থেকে জনসমক্ষে যেসব ঘোষণা দেয়া হয়েছে বা যেসব নথিপত্র চালাচালি হয়েছে, তার কোথাও চীন শব্দটিই নেই।

কিন্তু অনেক পর্যবেক্ষক মনে করছেন, টোকিও বৈঠকে তা বদলে যেতে পারে। কারণ যে দেশটি এই প্লাটফর্মকে প্রকাশ্যে ‘চীন-বিরোধী‘ তকমা দিতে সবচেয়ে বেশি কুণ্ঠিত ছিল, সেই ভারত তাদের অবস্থান অনেকটাই বদলে ফেলেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা র‌্যান্ড কর্পোরেশনের সর্বসাম্প্রতিক এক প্রকাশনায় সাউথ ক্যারোলাইনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক ডেরেক গ্রসম্যাস লিখেছেন, পরিস্থিতি এখন অন্যরকম কারণ, তার মতে, এই চারটি দেশের সবগুলোই এখন চীনের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানের প্রশ্নে একমত।

তিনি বলেন, ২০০৭ সালে কোয়াড প্লাটফর্মকে একটি প্রতিরক্ষা জোটে রূপ দেওয়ার প্রচেষ্টা ভেস্তে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ ছিল চীনকে নিয়ে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার আড়ষ্টতা। চীনকে কতটা কোণঠাসা করা উচিৎ, তা নিয়ে এই দুই দেশের মধ্যে দ্বিধা ছিল।

“কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তারা সবাই একমত,“ লিখেছেন ডেরেক গ্রসম্যাস।

“বিশেষ করে আমার সবসময় মনে হয়েছে, কোয়াডে ভারত ছিল উইক লিঙ্ক। কিন্তু ভারত মনে হয় তার অবস্থান বদলে ফেলছে, এখন মনে হচ্ছে চারটি দেশই চীনের প্রশ্নে একমত।“

ভারতের বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর কোয়াডের ব্যাপারে ব্যক্তিগতভাবে উৎসাহী। সেই সাথে, মি. গ্রসম্যান মনে করেন, ২০১৭ সালে ডোকলাম সীমান্তে বিরোধ এবং জুন মাস থেকে লাদাখ সীমান্ত পরিস্থিতির কারণে ভারতের অবস্থান কট্টর হয়েছে।

“এমনকি চীনের সাথে সম্পর্কে ভারসাম্য রাখা নিয়ে ভারতে যারা সব সময় সোচ্চার ছিলেন, তারাও তাদের অবস্থান শক্ত করছেন।“

সামরিক শক্তিতে ভারতের নতুন আস্থা

দিল্লিতে জওহারলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক সঞ্জয় ভরদোয়াজও মনে করেন, ভারতের বর্তমান সরকারের মধ্যে এখন এমন বিশ্বাস দিনকে দিন দৃঢ় হচ্ছে যে কেবলমাত্র সামরিক শক্তির ভয় দেখিয়েই চীনকে সামলানো সম্ভব।

বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, “ভারতের বর্তমান সরকার মনে করছে চীন ভারতের ভৌগলিক সার্বভৌমত্ব হুমকিতে ফেলছে, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের স্বার্থ-প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ করছে, এবং এ থেকে চীনকে বিরত রাখতে হলে শক্তির ভয় দেখানো ছাড়া বিকল্প নেই।“

তার মতে, অন্য দেশের সাথে কোনো সামরিক বা প্রতিরক্ষা চুক্তি করতে ভারত এখন প্রস্তুত। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ভরদোয়াজ গত সপ্তাহে কোয়াড সম্পর্কে ভারতের প্রতিরক্ষা প্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াতের এক বক্তব্যের প্রসঙ্গ টানেন।

বৃহস্পতিবার এক বক্তৃতায় জেনারেল রাওয়াত বলেন, “ভারত মহাসাগর অঞ্চলে এবং আশপাশের অন্যান্য মহাসাগরে আতঙ্ক-উস্কানি ছাড়া চলাফেরা, অন্য কোনো দেশের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টাকে চ্যালেঞ্জ করতে কোয়াডের গুরুত্ব অনেক।“

তিনি আরও বলেন, “সাগরে এবং আকাশে অবাধ গতিবিধি নিশ্চিত করতে ভারত উদগ্রীব।“ কারো নাম তিনি উল্লেখ করেননি, তবে নাম না করলেও জেনারেল রাওয়াত এখানে চীনের কথাই বলেছেন।

তবে ভারতের এই অবস্থান যে রাতারাতি বা গত জুন মাস থেকে তৈরি হয়েছে তা নয়।

শ্রীলঙ্কার ত্রিনকোমালিতে লঙ্কান সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে চীনা সৈন্যরা (সেপ্টেম্বর, ২০১৯) - দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের সাম্প্রতিক ভূমিকায় ভারত উদ্বিগ্ন
শ্রীলঙ্কার ত্রিনকোমালিতে লঙ্কান সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে চীনা সৈন্যরা (সেপ্টেম্বর, ২০১৯) – দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের সাম্প্রতিক ভূমিকায় ভারত উদ্বিগ্ন

গত দশকের মাঝামাঝি থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা নিয়ে ভারত উদ্বিগ্ন। ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কার একটি বন্দরে চীনা সাবমেরিনের উপস্থিতি তাদের জন্য চরম মাথাব্যথার কারণ হয়।

পাশাপাশি, পাকিস্তানকে চীনের অব্যাহত সামরিক সাহায্য, পাকিস্তানের গোয়াদার বন্দরে চীনের নিয়ন্ত্রণ, কাশ্মীরের ভেতর দিয়ে তাদের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের সড়ক নির্মাণে চীনের পরিকল্পনা – এসব নিয়ে ভারতে উদ্বেগের পারদ বাড়ছে।

সে কারণে অনেক পর্যবেক্ষক মনে করেন যে ২০১৪ সাল থেকে চীনের সাথে ভারতের সম্পর্কে যে অনাস্থা-অবিশ্বাস বাড়ছে, তাতেই ১০ বছর বাদে আমেরিকার পক্ষে কোয়াডের পুনর্জন্ম নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।

এশিয়ান নেটো

তাহলে কোয়াড কি এখন আনুষ্ঠানিকভাবে চীন-বিরোধী একটি সামরিক জোটের রূপ নিতে যাচ্ছে?

বেশ কয়েক বছর ধরে, বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র চীনকে কোণঠাসা করতে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মিত্রদের নিয়ে একটি সামরিক জোট গড়তে আগ্রহী।

অনেক পর্যবেক্ষক বলেন, ইউরোপের সামরিক জোট নেটো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আগ্রহ কমলেও, মূলত চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব-প্রতিপত্তির জবাব দিতে এশিয়ায় নেটো ধাঁচের একটি জোট গঠনে আমেরিকা আগ্রহী হয়ে পড়েছে।

অধ্যাপক ডেরেক গ্রসম্যান মনে করেন, মূলত ভারতের অবস্থানে মৌলিক পরিবর্তনে সে সম্ভাবনা জোরদার হয়েছে।

তবে শুধু ভারত নয়, কোভিড মহামারি নিয়ে অস্ট্রেলিয়া আন্তর্জাতিক তদন্তের এক প্রস্তাব দেওয়ার পর তাদের সাথেও চীনের সম্পর্ক অত্যন্ত খারাপ হয়ে গেছে। অস্ট্রেলিয়ার গরুর মাংস এবং বার্লির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে চীন। অস্ট্রেলিয়ান মদ এবং আরো পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের কথাও বিবেচনা করছে তারা।

চীন ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধের ইতিহাস রয়েছে
চীন ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধের ইতিহাস রয়েছে

জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র কোয়াডের বাকি দেশগুলোকে গুয়ামে তাদের সামরিক ঘাঁটিতে যৌথ একটি বিমান মহড়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তাছাড়া, আন্দামানের কাছে গত কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং ভারতের যে নৌ-মহড়া হচ্ছে, তাতে সামনের বছর অস্ট্রেলিয়াও যোগ দেবে।

কিন্তু ভারতের সরকার চাইলেও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে এ ধরণের সামরিক জোটের অংশ হওয়ার পরিণতি নিয়ে এখনও দেশটির অনেকের ভেতরেই গভীর উদ্বেগ রয়েছে বলে মনে করেন অধ্যাপক ভরদোয়াজ।

তিনি বলেন, “সামরিক শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে চীনের মোকাবেলা করা নিয়ে ভারতে বিতর্ক শেষ হয়নি। কৌশলগত এবং বৈদেশিক নীতির যে স্বাধীনতা এখন ভারতের রয়েছে, তা ক্ষুণ্ণ হবে বলে অনেকে ভয় পাচ্ছেন।

“ভারত আমেরিকার তাঁবেদারি রাষ্ট্রে পরিণত হয়ে পড়ে কি-না, তা নিয়ে অনেকে সন্দিহান। অর্থনীতির উন্নয়ন হুমকিতে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কাও প্রবল।“

চীন কী ভাবছে

চীন ২০০৭ সাল থেকে এই চারটি দেশের মধ্যে দহরম-মহরমকে গভীর সন্দেহের চোখে দেখছে।

ওই বছরের মার্চে ম্যানিলায় আসিয়ান জোটের বৈঠকের সময় এই চারটি দেশ প্রথম যখন একটি বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেয়, সাথে সাথেই ওই দেশগুলোর কাছে প্রতিবাদ জানায় চীন। কী নিয়ে কথা হবে, তাও জানতে চায় তারা।

টোকিওর বৈঠক নিয়ে দু’দিন আগে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, কোনো একটি দেশকে টার্গেট করে কোনো জোট তৈরি একেবারেই কাম্য নয়। চীনা মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, “অন্য একটি দেশকে টার্গেট করে, তাদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ না করে, আঞ্চলিক দেশগুলোর বরঞ্চ উচিৎ নিজেদের মধ্যে বিশ্বাস, বোঝাপড়া বাড়ানোর চেষ্টা করা।“

তবে কুয়ালালামপুরে মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব চায়নার অধ্যাপক ড. সৈয়দ মাহমুদ আলী বিবিসি বাংলাকে বলেন, নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি থেকে চীনারা জানে যে অদূর ভবিষ্যতে তাদেরকে হয়ত ভারত মহাসাগর অঞ্চলে সংঘাতের মোকাবেলা করতে হবে।

দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের নৌ মহড়া, ২০১৮
দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের নৌ মহড়া, ২০১৮

১৯৯৩ সালেই চীনারা যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানকে তাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসাবে চিহ্নিত করেছে। এখন বৈরি দেশের তালিকায় যোগ হয়েছে ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া।

সৈয়দ মাহমুদ আলী বলেন, “ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড বা সিঙ্গাপুরের মত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তাদের পুরনো মিত্রদের দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করেছে আমেরিকা, কিন্তু এই দেশগুলো এই বিরোধে জড়াতে অনিচ্ছুক।

“তাদের মনোভাব অনেকটা এমন যে তাদের অঞ্চলে বৃহৎ শক্তিদের লড়াই তারা অতীতে দেখেছে, তার পরিণতিও তারা দেখেছে। দোরগোড়ায় আর তেমন কোনো সংঘাত তারা চায় না, যাতে তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হুমকিতে পড়ে।“

এমনকি গত বছর সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী সরাসরি বলেন যে ভারত মহাসাগরে উত্তেজনার জন্য চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশই সমানভাবে দায়ী। মিত্র একটি দেশের কাছ থেকে এই বিবৃতি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অস্বস্তিকর ছিল।

ড. আলী বলেন, “চীনারা জানে চাপ আসছে। তাদের ভেতর মনোভাব অনেকটা এমন যে ‘আমরা সংঘাত শুরু করবো না, কিন্তু যদি কোনো সংঘাত চাপিয়ে চাপিয়ে দেওয়া হয়, তার জন্য আমরা প্রস্তুত।’ চীন এখন অপেক্ষা করবে, প্রতিপক্ষ কী করে তার জন্য।“

তিনি বলেন, চীন যেটা বলার চেষ্টা করছে তাহলো ঐতিহাসিকভাবে যেসব জায়গা বা অঞ্চলের ওপর তাদের দাবি রয়েছে, সেটা তারা ছেড়ে দেবে না।

“তারা কতগুলো রেড লাইন টেনে রেখেছে, যেমন তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন সাগর, এবং আমেরিকানদেরও তারা পরিষ্কার বলেছে যে এই রেড লাইন অতিক্রম করা হলে তারা বরদাস্ত করবে না।“

এবং সেই সংকল্প জানান দিতেই চীন গত ছয় মাসে দক্ষিণ চীন সাগর এবং তাইওয়ান প্রণালীতে কমপক্ষে ৩০টি সামরিক মহড়া চালিয়েছে।

তবে ড. আলী মনে করেন, দুই পক্ষ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিলেও সত্যিকারের সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার আগে দশবার ভাববে।

“একটি বিষয় মাথায় রাখা দরকার – চীন-যুক্তরাষ্ট্র-ভারত-পাকিস্তান, এরা সবাই পারমানবিক অস্ত্রধর দেশ। ১৯৪৫ সালের পর পৃথিবী পারমানবিক অস্ত্রের ব্যবহার দেখেনি। কোনো যুদ্ধ বাঁধলে হঠাৎ কেউ সেই অস্ত্র ব্যবহার করবে কি-না, করলে তার পরিণতি কি হবে, কে সেই যুদ্ধ থামাবে – তা নিয়ে সবার মধ্যেই গভীর শঙ্কা রয়েছে।”

তাঁর মতে, “যুদ্ধ করতে কেউই হয়তো সাহস পাবে না।“

এসব দলাদলির ভেতর দিয়ে দেশগুলো এক ধরণের ‘ডেটারেন্স‘ তৈরি করতে চাইছে, মনে করছেন সৈয়দ মাহমুদ আলী, যাতে শত্রুপক্ষ তাকে ঘাঁটানোর সাহস না পায়।

“একে অন্যের জন্য ‘রেডলাইন‘ টেনে দেওয়ার চেষ্টা করছে।”

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@agronewstoday.com, theagronewsbd@gmail.com