বিশ্বের সেরা তিন হোটেলের অন্যতম এই হোটেলটি ‘অভিশপ্ত’ প্রাসাদে হিসেবে পরিচিত। এই প্রাসাদে প্রাণভয়ে আশ্রয় নিয়েছিল ব্রিটিশরা। জেনে নিন এই প্রাসাদটি সম্পর্কে।
জনশ্রুতি, সেই নটিনীর অভিশাপ থেকে এখনো মুক্তি পায়নি মেবারের রাজবংশ। প্রধানত দত্তকপুত্রের উপর ভরসা করেই চলছে বংশ। জওয়ান সিংহের পর সাত বারের মধ্যে মোট ছয় বারই উত্তরসূরির জন্য দত্তক নিতে হয়েছে অপুত্রক রানাদের।
যে নটিনীর অভিশাপের কিংবদন্তি প্রচলিত এই প্রাসাদকে ঘিরে, তার নামে এখানে একটি অঙ্গন বা চত্বর আছে। লোকমুখে তার নাম ‘নটিনী চবুতরা’।
দড়ি বাঁধা হল হ্রদের পশ্চিম পাড়ের এক গ্রামে। আর এক প্রান্ত পূর্ব তীরে, প্রাসাদের সঙ্গে। শুরু হল খেলা দেখানো। মাঝ বরাবর গিয়ে হ্রদের জলে পড়ে গেল ওই তরুণী। কথিত, ষড়যন্ত্র করে দড়ি ছিঁড়ে দেয়া হয়েছিল। কারণ, জ্ঞান ফিরতে রানা বুঝেছিলেন নেশার ঘোরে কী বলে ফেলেছেন তিনি।
যে হ্রদকে ঘিরে এই জনশ্রুতি, তার নাম পিছোলা। রাজপুতানার প্রাচীন মেবার বংশের প্রাচীন রাজধানী উদয়পুরের প্রাণকেন্দ্রের মূল আকর্ষণ। ১৩৬২ খ্রিস্টাব্দে এই হ্রদ তৈরি করেছিল বানজারা সম্প্রদায়ের লোকজন। কৃষির সেচ ও পানীয় জলের সমস্যা দূর করতেই এই উদ্যোগ। পরে ষোড়শ শতকে এই হ্রদ ঘিরেই মেবারের রাজধানী উদয়পুর প্রতিষ্ঠা করেন দ্বিতীয় উদয় সিংহ (১৫২২-১৫৭২)।
‘পিচ্ছু’ সম্প্রদায়ের বানজারা গোষ্ঠী বা তৎকালীন স্থানীয় গ্রাম ‘পিছোলি’ থেকেই হ্রদের নামকরণ। হ্রদে চারটি দ্বীপ আছে। জগ নিবাস, জগ মন্দির, মোহন মন্দির এবং আরশি বিলাস। প্রতিটায় রয়েছে প্রাসাদ। তার মধ্যে সবথেকে বিখ্যাত জগ নিবাসের হ্রদ প্রাসাদ বা লেক প্যালেস।
এই প্রাসাদ ছিল মেবার বংশের রানাদের গ্রীষ্মকালীন নিবাস। তৈরি হয়েছিল মেবার রাজবংশের ৬২তম উত্তরসূরি মহারানা দ্বিতীয় জগৎ সিংহের শাসনকালে। ১৭৪৩ থেকে ১৭৪৬, মোট তিন বছর লেগেছিল নির্মাণে।
পরবর্তীকালে এই প্রাসাদ ছিল মূলত রানাদের গ্রীষ্মকালীন আবাস। সেখানেই বসত দরবার। সাদাকালো মার্বেলে তৈরি প্রাসাদের দেয়াল সজ্জিত মূল্যবান পাথরে। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে সিপাহি বিদ্রোহের সময়ে এই প্রাসাদে সপরিবারে আশ্রয় নিয়েছিলেন বহু ব্রিটিশ আধিকারিক। তাদের কাছে বিদ্রোহীরা যাতে পৌঁছতে না পারে, তাই নগরের সব নৌকো নষ্ট করে দিয়েছিলেন মেবারের তৎকালীন মহারানা স্বরূপ সিংহ।
ঊনিশ শতকের দ্বিতীয় অর্ধ থেকে প্রাসাদের অবস্থা খারাপ হতে থাকে। বিদেশি অতিথিরা এসে হ্রদ প্রাসাদের করুণ দশা দেখে হতাশ হতেন। অবশেষে মেবারের রাজবংশের উত্তরাধিকারীরা এই প্রাসাদকে হোটেলে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেন।
নামী ভ্রমণ পত্রিকার বিচারে পিছোলা হ্রদের কোলে হোটেল লেক প্যালেস বর্তমানে বিশ্বের সেরা হোটেলের তালিকায় তৃতীয় স্থানে। এই হোটেলের প্রায় সর্ম্পূণটাই সাজানো রাজস্থানি হস্তশিল্পে। হোটেল থেকে শহরে ঘুরতে যাওয়ার জন্য পর্যটকদের জন্য মজুত থাকে ভিন্টেজ গাড়ি। হোটেল কর্মরত রয়্যাল বাটলারদের পূর্বপুরুষরা ছিলেন মেবারের রানাদের খাস পরিচারক।
লর্ড কার্জন থেকে প্রয়াত প্রাক্তন মার্কিন ফার্স্ট লেডি জ্যাকলিন কেনেডি, বিশ্বের নামী সেলেব্রিটিরা অতিথি হয়েছেন এই হোটেলের।
অপরূপ ও রাজকীয় পরিবেশের জন্য এই প্রাসাদে বহু হিন্দি ও ইংরেজি ছবির শুটি হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘গাইড’, ‘রামলীলা’, ‘মেরা সায়া’, ‘ইয়াদে’, ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’, ‘হিট অ্যান্ড ডাস্ট’ এবং জেমস বন্ড সিরিজের ‘অক্টোপুসি’।
জার্মান-মার্কিন বাস্তুবিদ ডেলিয়া নারায়ণ কন্ট্র্যাক্টরের নক্সায় প্রাসাদ থেকে হোটেলে সেজে ওঠে মেবারের এই স্থাপত্য। ১৯৭১ সালে হোটেলের মালিকানার হাতবদল হয়। মেবারের রানা বংশের কাছ থেকে লেক প্যালেসের নতুন কর্ণধার হয় তাজ গ্রুপ।
লেক প্যালেস হোটেলে এক দিন থাকার ন্যূনতম দক্ষিণা, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা। প্রাসাদসম এই হোটেলে আছে মোট ৬৫টি বিলাসবহুল ঘর এবং ১৮ টি সুইট।
যে অভিশপ্ত প্রাসাদে প্রাণভয়ে আশ্রয় নিয়েছিল ব্রিটিশরা
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন