আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

বিশ্ব

যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন ২০২০: প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি কতোটা পূরণ করেছেন?

নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরজ্যে এক নির্বাচনী সমাবেশে ডোনাল্ড ট্রাম্প।
নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরজ্যে এক নির্বাচনী সমাবেশে ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণায় বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এসব প্রতিশ্রুতির কয়েকটি নিয়ে নির্বাচনের আগে ও পরে আলোচনা হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা, মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণ ইত্যাদি।

২০১৬ সালের ওই নির্বাচনের পর হোয়াইট হাউজে মি. ট্রাম্পের চার বছর কেটে গেছে। তো এসব প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে কতোটা সফল হয়েছেন তিনি?

কর হ্রাস

পূরণ করেছেন

নির্বাচনের আগে তিনি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্পোরেট কর এবং কর্মজীবী নাগরিকদের বড় ধরনের কর হ্রাসের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

কী করেছেন: রিপাবলিকানদের কর পরিকল্পনা পাস হয় ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে। এর মাধ্যমে তিনি তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছেন ঠিকই কিন্তু এটি নিয়ে প্রচুর বিতর্ক হয়েছে। মি. ট্রাম্প কর্পোরেট ট্যাক্স ৩৫% থেকে কমিয়ে ১৫% শতাংশ করার কথা বলেছিলেন কিন্তু সেটা হয়েছে ২১%।

কর্মজীবী নাগরিকদের করও হ্রাস করা হয়েছে। তবে যে সবারই কমানো হয়েছে তা নয়। এতে ধনীদের তুলনায় দরিদ্ররাই বেশি লাভবান হয়েছেন। তবে যেসব রাজ্যে ডেমোক্র্যাট দলের সমর্থন বেশি সেরকম বেশিরভাগ রাজ্যে উচ্চ আয়ের লোকজনের কর বেড়ে গেছে।

প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

প্যারিস জলবায়ু চুক্তি

পূরণ করেছেন

নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প জলবায়ুর পরিবর্তনকে ভুয়া বলে প্রচারণা চালিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন প্যারিস চুক্তিতে যেসব শর্তের কথা বলা হয়েছে সেগুলো আমেরিকার অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে।

কী করেছেন: এই চুক্তির বিরুদ্ধে তিনি দিনের পর দিন আক্রমণ চালিয়েছেন। প্রায় দুশোটি দেশ এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি প্যারিস চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

তবে চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে ৪ঠা নভেম্বর, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক এক দিন পরে।

ইসলামিক স্টেটের ওপর বোমা হামলা

পূরণ করেছেন

আইওয়া অঙ্গরাজ্যে ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে নির্বাচনী প্রচারণার সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে ইসলামিক স্টেটের ওপর তিনি এমন বোমা হামলা চালাতে চান যাতে চরমপন্থি এই গ্রুপটি ধ্বংস হয়ে যায়।

কী করেছেন: প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি আফগানিস্তানের ইসলামিক স্টেটের একটি ঘাটির ওপর অত্যন্ত শক্তিশালী বোমা নিক্ষেপ করেছিলেন। ইরাক ও সিরিয়া থেকে আইএসকে বিতাড়িত করার ব্যাপারেও তিনি কৃতিত্ব দাবী করেন। তিনি বলেছেন আইএস মোটামুটি পরাজিত হয়েছে। তবে এই এই প্রক্রিয়া বারাক ওবামার শাসনামলেই শুরু হয়েছিল।

আইএসের নেতা আবু বকর আল-বাগদাদি ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কমান্ডোদের চালানো এক অভিযানের সময় আত্মহত্যা করেন।

জেরুসালেমে মার্কিন দূতাবাস।
জেরুসালেমে মার্কিন দূতাবাস।

ইসরায়েলে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তর

পূরণ করেছেন

নির্বাচনী প্রচারণায় মি. ট্রাম্প ইসরায়েলে মার্কিন দূতাবাস তেল আভিব থেকে জেরুসালেমে সরিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন। ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল এই শহরটিকে নিজেদের রাজধানী হিসেবে দাবি করে।

কী করেছেন: প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০১৭ সালে জেরুসালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। একই সাথে মার্কিন দূতাবাসও তিনি নেওয়ার কথা বলেন। ২০১৮ সালের মে মাসে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকীতে জেরুসালেমে মার্কিন দূতাবাস খোলা হয়। দূতাবাসের জন্য সেখানে স্থায়ী ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্তও অনুমোদিত হয়েছে এবং ধারণা করা হচ্ছে এবছরের কোন এক সময়ে এই কাজ শুরু হবে।

সৈন্যদের দেশে ফিরিয়ে আনা

আংশিক পূরণ হয়েছে

মধ্যপ্রাচ্য থেকে মার্কিন সৈন্যদের ফিরিয়ে আনা ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের দীর্ঘ দিনের দাবি। নির্বাচনী প্রচারণার সময় তিনি বলেছেন এই অঞ্চল পুরোপুরি বিশৃঙ্খল হয়ে পড়েছে। তিনি বলেছেন সেখানে যে হাজার হাজার কোটি ডলার খরচ করা হয়েছে সেটা যুক্তরাষ্ট্রে করা হলে অনেক ভাল হতো। ২০১৩ সালে এক টুইটে তিনি বলেছিলেন, “যেসব আফগানকে আমরা প্রশিক্ষণ দিচ্ছি তারা আমাদের সৈন্যদের হত্যা করছে। সেখানে আমরা কোটি কোটি ডলারের অপচয় করেছি।” একই বছরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে সিরিয়ার যুদ্ধ থেকে বাইরে রাখার কথাও বলেছিলেন।

কী করেছেন: ট্রাম্প প্রশাসন ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আফগানিস্তানে আরো ৩,০০০ সৈন্য মোতায়েনের কথা ঘোষণা করে। তিনি বলেন, বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন। সিরিয়াতে ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আন্তর্জাতিক জোটের নেতৃত্ব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তাতে অংশ নিয়েছে ২,০০০ মার্কিন সৈন্য।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে সিরিয়া থেকে সব মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেন। তবে এখনও সেখানে ৫০০ সৈন্য মোতায়েন রয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্প্রতি আফগানিস্তান থেকে আরো সৈন্য প্রত্যাহারের কথা বলেছেন। ইতোমধ্যে তাদের সংখ্যা ১৩,০০০ থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ৮,৬০০।

একই সাথে তালেবানের সাথে শান্তি চুক্তি সম্পাদিত হলে ১৪ মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সকল সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও নেটো সম্মত হয়েছে।

সৈন্য প্রত্যাহারের এসব সিদ্ধান্ত তার নিজের প্রশাসনের কর্মকর্তারাও সমালোচনা করেছেন। সিরিয়া থেকে সৈন্যদের দেশে নিয়ে আসার কথা ঘোষণা করার পর প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেমস মাতিস পদত্যাগ করেন।

চীনের সাথে বাণিজ্য ঘাটতি দূর করা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি।
চীনের সাথে বাণিজ্য ঘাটতি দূর করা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি।

বাণিজ্য চুক্তি

আংশিক পূরণ হয়েছে

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প নাফটা চুক্তিকে বিপর্যয়কর বলে উল্লেখ করেছিলেন। টিপিপি চুক্তির বিরুদ্ধেও অবস্থান নিয়েছিলেন তিনি। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার।

কী করেছেন: ক্ষমতা গ্রহণের কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ বা টিপিপি চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। পরে তিনি বলেন, তাকে ভালো কিছু দেওয়া হলে তিনি এই চুক্তিতে আবারও যোগ দেওয়ার কথা বিবেচনা করবেন।

যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর মধ্যে আলোচনার পর এই তিনটি দেশের মধ্যে বাণিজ্য সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। নাফটা চুক্তির পরিবর্তে এই চুক্তিটি কাজ করবে। অবশ্য পরে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা পরস্পরের বিরুদ্ধে অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর শুল্ক আরোপ করেছে।

দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নতুন একটি বাণিজ্য চুক্তি করেছে।

কিন্তু এর মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র চীনের সাথে বাণিজ্য যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। দুটো দেশই এক অপরের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে। এই উত্তেজনা সত্ত্বেও দুটো দেশ ফেজ ওয়ান নামে একটি চুক্তি করেছে যার ফলে বাণিজ্য যুদ্ধ কিছুটা কমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কয়েকটি মুসলিম প্রধান দেশের লোকজনের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কয়েকটি মুসলিম প্রধান দেশের লোকজনের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।

মুসলিমদের ওপর নিষেধাজ্ঞা

আংশিক পূরণ হয়েছে

মি. ট্রাম্প শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রে সকল মুসলিমের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন এবিষয়ে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগ পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।

কী করেছেন: প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি দুটো ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন যা পরে আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। কিন্তু তৃতীয় আরেকটি নিষেধাজ্ঞার তেমন অসুবিধা হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ছটি মুসলিম প্রধান দেশের নাগরিকদের ভ্রমণের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন সেটা কার্যকর হতে পারে। তবে এটিরও চূড়ান্ত সুরাহা হয়নি।

বর্তমানে যেসব দেশ থেকে লোকজনের আসার ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে সেগুলো হচ্ছে: ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন, ভেনেজুয়েলা এবং উত্তর কোরিয়া।

জানুয়ারি মাসে আরো ছটি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়: নাইজেরিয়া, ইরিত্রিয়া, সুদান, তাঞ্জানিয়া, কিরগিজস্তান এবং মিয়ানমার।

কিউবার সাথে সম্পর্ক

আংশিক পূরণ হয়েছে

নির্বাচিত হওয়ার আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন কিউবার সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা ও বাণিজ্যের ব্যাপারে বারাক ওবামার উদ্যোগ তিনি বাতিল করে দেবেন।

কী করেছেন: প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর মায়ামিতে তিনি বলেছিলেন “ওবামা প্রশাসনের এক-পাক্ষিক সমঝোতা” তিনি বাতিল করে দেবেন।

২০১৭ সালে তিনি বাণিজ্য ও ভ্রমণের ওপর কিছু বিধি-নিষেধ নতুন করে আরোপ করেন যা বারাক ওবামা তুলে নিয়েছিলেন। হাভানাতে দূতাবাস রেখে দিয়েছেন মি. ট্রাম্প কিন্তু সেখানে কোন রাষ্ট্রদূতের নাম ঘোষণা করা হয়নি।

দুটো দেশের মধ্যে কিছু কিছু ভ্রমণ এখনও চালু রয়েছে। তবে এমাসে ট্রাম্প প্রশাসন ঘোষণা করেছে যে তারা দুটো দেশের মধ্যে ব্যক্তিগত বিমানের ফ্লাইট অক্টোবর থেকে স্থগিত করবে।

ওবামাকেয়ারে রোগীদের স্বাস্থ্য-বীমার কথা বলা হয়েছে।
ওবামাকেয়ারে রোগীদের স্বাস্থ্য-বীমার কথা বলা হয়েছে।

ওবামাকেয়ার

আংশিক পূরণ হয়েছে

মি. ট্রাম্পের যেসব নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি নিয়ে সবচেয়ে বেশি কথাবার্তা হয়েছে তার একটি ওবামাকেয়ার। তার পূর্বসূরি বারাক ওবামা জনগণকে স্বাস্থ্য-বীমার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে এই আইন তৈরি করেছিলেন যা ওবামাকেয়ার নামে পরিচিত। মি. ট্রাম্প বলেছিলেন নির্বাচিত হলে তিনি এটা বাতিল করে দেবেন।

কী করেছেন: রিপাবলিকানরা এই উদ্যোগকে অপছন্দ করেন। কিন্তু এই আইন বাতিল বা সংস্কার করতে তারা ব্যর্থ হয়েছেন। তবে ট্রাম্প প্রশাসন আইনের কিছু কিছু পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছে।

আইনটি এখনও বলবত রয়েছে। এর বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টে এবং ধারণা করা হচ্ছে ২০২১ সালের কোন এক সময়ে এবিষয়ে রায় ঘোষণা করা হতে পারে।

মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর।
মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর।

মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর

আংশিক পূরণ হয়েছে

ডোনাল্ড ট্রাম্পের যেসব প্রতিশ্রুতি নিয়ে সবচেয়ে বেশি বিতর্ক হয়েছে তার একটি ছিল মেক্সিকোর সাথে সীমান্তে দেয়াল তুলে দেওয়া। তিনি এও বলেছিলেন যে এই প্রাচীর নির্মাণে প্রয়োজনীয় খরচ দেবে মেক্সিকো।

কী করেছেন: প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই দাবিকে গুরুত্ব দেয়নি মেক্সিকো। এবং পরে মি. ট্রাম্পও এবিষয়ে খুব বেশি সোচ্চার হননি।

ডেমোক্র্যাট দল এই পরিকল্পনার ঘোরতর বিরোধী। কিছু কিছু রিপাবলিকানও এই ঘোষণা থেকে বেকে বসেছেন।

মি. ট্রাম্প এজন্য ৫০০ কোটি ডলার চেয়েছিলেন যার বিরোধিতা করে ডেমোক্র্যাটরা। পরে তিনি প্রতিরক্ষাসহ আরো কিছু খাতের বরাদ্দ প্রাচীর নির্মাণের খাতে নিয়ে আসেন। এর বিরুদ্ধেও আইনগত চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছে।

এবছরের মে মাস পর্যন্ত ১৯৪ মাইল দীর্ঘ প্রাচীর তোলা হয়েছে। তবে এর বেশিরভাগই তোলা হয়েছে আগের ভগ্নপ্রায় দেয়াল ঠিক করতে গিয়ে যা আগে থেকেই সেখানে ছিল। একবারে নতুন নির্মিত হয়েছে তিন মাইল।

যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী শ্রমিকরা মাঠে কাজ করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী শ্রমিকরা মাঠে কাজ করছেন।

অবৈধ অভিবাসীদের বহিষ্কার

অগ্রগতি নেই

ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সমর্থকদের বলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে যারা অবৈধভাবে বসবাস করে তাদেরকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। দেশটিতে এরকম অভিবাসীর সংখ্যা এক কোটি ১৩ লাখ।

কী করেছেন: নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে তার গলার স্বর নরম হতে থাকে। নির্বাচিত হওয়ার পর এই সংখ্যাকে তিনি ২০ থেকে ৩০ লাখে নামিয়ে আনেন। তিনি বলেন, “যারা অপরাধী এবং যাদের অপরাধ করার রেকর্ড রয়েছে, যারা অপরাধী চক্রের সদস্য, মাদক ব্যবসায়ী” তাদেরকে বের করে দেওয়া হবে।

গত বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে মোট ২,৬৭,০০০ জনকে তাদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে যা তার আগের বছরের তুলনায় সামান্য কিছু বেশি। ওবামা প্রশাসনের আমলে ২০১২ সালে সর্বোচ্চ সংখ্যক অবৈধ অভিবাসীকে (৪,১০,০০০) যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।

অভিবাসন সংক্রান্ত আইন সংস্কারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একটি পরিকল্পনা সুপ্রিম কোর্টে খারিজ হয়ে যায়। বৈধ কাগজপত্র ছাড়া শিশু বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে আগত ৬,৫০,০০০ জন অভিবাসীকে যে আইনে রক্ষা করার কথা বলা হয়েছে সেটি বাতিল করতে চেয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। সুপ্রিম কোর্ট ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্যোগ বাতিল করে দিয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগ

পূরণ করেছেন

নির্বাচনের আগে মি. ট্রাম্প বলেছিলেন যে তিনি বিচারক খুঁজছেন এবং এরকম ২০ জনকে তিনি খুঁজে পেয়েছেন যারা দ্বিতীয় সংশোধনীকে সম্মান করবে।

কী করেছেন: তিনি দুজন বিচারক নিয়োগ দিয়েছেন- নীল গরসাচ এবং ব্রেট কাভানা। মি. গরসাচকে নিয়োগ দিতে সেনেটের আইনে পরিবর্তন আনতে হয়েছিল। তবে মি. কাভানার নিয়োগ নিয়ে অনেক বেশি বিতর্ক হয়েছে।

মি. কাভানার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল যা তিনি অস্বীকার করেছেন। পরে তিনি ৫০-৪৮ ভোটে নিয়োগ লাভ করেন। ১৮৮১ সালের পর এতো তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা কখনো হয়নি।

এছাড়াও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিন্ম আদালতগুলোতে ২০০ রক্ষণশীল বিচারক নিয়োগ দিয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিযোগ নেটোর সদস্য দেশগুলো প্রয়োজনীয় অর্থ দিচ্ছে না।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিযোগ নেটোর সদস্য দেশগুলো প্রয়োজনীয় অর্থ দিচ্ছে না।

নেটো ত্যাগ

বাতিল

ডোনাল্ড ট্রাম্প সামরিক জোট নেটোর উদ্দেশ্য নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলছেন এই জোট “সেকেলে” হয়ে গেছে। নেটোর সদস্যরা তাদের দায়িত্ব পালন করছে কিনা এবং তারা প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান দিচ্ছে কিনা এসব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। এবং এবিষয়ে তিনি বরাবরই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

কী করেছেন: নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে নেটোর মহাসচিবকে হোয়াইট হাউজে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সেসময় তিনি তাকে বলেছিলেন এই জোটের গুরুত্ব কমে গেছে। তিনি বলেন, “এটি এখন আর সেকেলে নয়।”

ওই বছরের জুলাই মাসে নেটোর সম্মেলনের প্রতি পুনরায় তার সমর্থনের কথা জানান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তবে তিনি বলেছেন মিত্র দেশগুলো বাজেটের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ না দিলে যুক্তরাষ্ট্র এই জোট ছেড়ে চলে যেতে পারে।

তিনি বলেন কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো যথেষ্ট পরিমাণে খরচ করছে না। অতি সম্প্রতি তিনি বলেছেন যে জার্মানি থেকে ১২,০০০ সৈন্য ফিরিয়ে আনা হবে।

নির্যাতন

বাতিল

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন নির্বাচিত হলে পানিতে মুখ ডুবিয়ে স্বীকারোক্তি আদায়ের যে কৌশল তাতে তিনি অনুমোদন দেবেন। এই কৌশল ওয়াটারবোর্ডিং নামে পরিচিত। মি. ট্রাম্প বলেছিলেন, “নির্যাতনে কাজ হয়।”

কী করেছেন: নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি তার এই পরিকল্পনা স্থগিত করেছেন। সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেমস মাতিস এবং সিআইএর তৎকালীন পরিচালক মাইক পম্পিও (বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী) এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেন।

হিলারি ক্লিটনের বিচার করার কথা বলেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
হিলারি ক্লিটনের বিচার করার কথা বলেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

হিলারি ক্লিনটনের বিচার

বাতিল

হিলারি ক্লিনটন যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন তখন তার ব্যক্তিগত ইমেইল ব্যবহারের অভিযোগে তার বিচার করার কথা বলেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বলেছিলেন নির্বাচিত হলে তিনি তাকে জেলে পাঠাবেন। ২০১৬ সালের নির্বাচনে মি. ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন।

যা করেছেন: নির্বাচিত হওয়ার সাথে সাথেই এবিষয়ে তিনি তার সুর পরিবর্তন করে ফেলেন। যাকে তিনি একসময় “জঘন্য নারী” বলে উল্লেখ করেছিলেন পরে তার সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন “আগে তিনি এ সম্পর্কে খুব বেশি চিন্তা ভাবনা করেন নি।”

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য তার কাছে আরো কিছু বিষয় আছে।

  • হিলারি ক্লিটনের বিচার করার কথা বলেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

    হিলারি ক্লিটনের বিচার করার কথা বলেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

  • প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিযোগ নেটোর সদস্য দেশগুলো প্রয়োজনীয় অর্থ দিচ্ছে না।

    প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিযোগ নেটোর সদস্য দেশগুলো প্রয়োজনীয় অর্থ দিচ্ছে না।

  • যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী শ্রমিকরা মাঠে কাজ করছেন।

    যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী শ্রমিকরা মাঠে কাজ করছেন।

  • মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর।

    মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর।

  • ওবামাকেয়ারে রোগীদের স্বাস্থ্য-বীমার কথা বলা হয়েছে।

    ওবামাকেয়ারে রোগীদের স্বাস্থ্য-বীমার কথা বলা হয়েছে।

  • প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কয়েকটি মুসলিম প্রধান দেশের লোকজনের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।

    প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কয়েকটি মুসলিম প্রধান দেশের লোকজনের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।

  • চীনের সাথে বাণিজ্য ঘাটতি দূর করা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি।

    চীনের সাথে বাণিজ্য ঘাটতি দূর করা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি।

  • জেরুসালেমে মার্কিন দূতাবাস।

    জেরুসালেমে মার্কিন দূতাবাস।

  • প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

    প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

  • নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরজ্যে এক নির্বাচনী সমাবেশে ডোনাল্ড ট্রাম্প।

    নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরজ্যে এক নির্বাচনী সমাবেশে ডোনাল্ড ট্রাম্প।

  • হিলারি ক্লিটনের বিচার করার কথা বলেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
  • প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিযোগ নেটোর সদস্য দেশগুলো প্রয়োজনীয় অর্থ দিচ্ছে না।
  • যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী শ্রমিকরা মাঠে কাজ করছেন।
  • মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর।
  • ওবামাকেয়ারে রোগীদের স্বাস্থ্য-বীমার কথা বলা হয়েছে।
  • প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কয়েকটি মুসলিম প্রধান দেশের লোকজনের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।
  • চীনের সাথে বাণিজ্য ঘাটতি দূর করা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি।
  • জেরুসালেমে মার্কিন দূতাবাস।
  • প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
  • নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরজ্যে এক নির্বাচনী সমাবেশে ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

এগ্রোবিজ

যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশে হতে পারে সারের সংকট

সারের সংকট
সারের সংকট
সারের সংকট

চলতি বোরো মৌসুমে সার কিনতে কৃষকদের সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা করে বেশি দিতে হয়েছে। আর সরকারকেও সার বাবদ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে বাজেটে বরাদ্দের তিন গুণের বেশি—প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশ এখন মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার আমদানি নিয়ে বিপাকে পড়েছে।

ধান, আলু ও সবজি চাষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এমওপি সারের ৬০ শতাংশ আনা হতো রাশিয়া ও বেলারুশ থেকে। ওই দুই দেশ নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়ায় এখন বাংলাদেশকে এমওপি কিনতে হচ্ছে কানাডা থেকে। বিশ্ববাজারে দাম বেড়ে যাওয়া ও আমদানিতে অনিশ্চয়তার কারণে বাংলাদেশে সারের সংকট হতে পারে। ভর্তুকির চাপ সামলাতে বাংলাদেশকে সব ধরনের সারের খুচরা মূল্য বাড়াতে হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিবিষয়ক সংস্থা ইউএসডিএর চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ‘বাংলাদেশে সার সরবরাহ ও ব্যবহারে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের এমওপি সারের ২০ শতাংশ সরবরাহ কমানো হলে সামনের বোরো মৌসুমে ধান, গম ও রবি মৌসুমের অন্যান্য ফসলের উৎপাদন ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কমতে পারে। এতে বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে।

এমনিতেই এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমাদের ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে সারের কারণে নতুন করে যাতে আর সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

এ এম এম শওকত আলী, সাবেক কৃষিসচিব

তবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, দেশে চলতি বোরো মৌসুমে নতুন করে আর সারের দরকার হবে না। সামনে আলুর মৌসুমে ইউরিয়া, এমওপিসহ অন্যান্য সারের চাহিদা বাড়বে। ওই সময়ের জন্য সার সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ কানাডা ও মধ্যপ্রাচ্যের সার সরবরাহকারী দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে।

জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কানাডা থেকে মোট আট লাখ টন এমওপি সার আমদানির উদ্যোগ নিয়েছি। এ ব্যাপারে ওই দেশের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা স্মারক হয়েছে। ফলে এই সার নিয়ে সরকারের কোনো দুশ্চিন্তা নেই। তবে সার বাবদ সরকারের বিপুল পরিমাণে ভর্তুকি বাড়ছে। এই চাপ নিয়েও সরকার ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ওই ভর্তুকি দিয়ে যাবে।’

কমানো হয়েছে চাহিদা

বাংলাদেশে চলতি অর্থবছরে ৬৯ লাখ টন রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয়েছে। এর মধ্যে ইউরিয়া, টিএসপি, ডিএপি ও এমওপি—এই চার ধরনের সার ব্যবহার হয় ৫৭ লাখ টন। আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের ওই চার ধরনের সারের চাহিদা কমিয়ে ৫৫ লাখ ৫০ হাজার টনে নামিয়ে আনা হয়েছে।

দেশে প্রয়োজনীয় সারের ৮০ শতাংশই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এর মধ্যে এমওপি সারের বড় অংশ আসে রাশিয়া ও বেলারুশ থেকে।

প্রসঙ্গত, ওই চারটি প্রধান সার কৃষকদের কাছে বিক্রির ক্ষেত্রে সরকার ভর্তুকি দিয়ে থাকে। চলতি অর্থবছরে সরকার প্রাথমিকভাবে সারে ভর্তুকি বাবদ ৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে গত ছয় মাসে সারের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। বেশির ভাগ সারের দাম তিন থেকে চার গুণ বেড়ে যাওয়ায় সরকারকে ভর্তুকির পরিমাণ ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা করতে হয়। কিন্তু অর্থবছরের শেষের দিকে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে হিসাব করে দেখা হয়েছে, ভর্তুকির পরিমাণ এবার বেড়ে কমপক্ষে ৩০ হাজার কোটি টাকা গিয়ে দাঁড়াবে।

জিপসাম, জিংক সালফেট ও অ্যামোনিয়াম সালফেট ও ম্যাগনেসিয়াম সালফেট সারে সরকার কোনো ভর্তুকি দেয় না। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কিনে ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছে তা বিক্রি করে থাকেন। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষককেও বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে।

সাবেক কৃষিসচিব এ এম এম শওকত আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এমনিতেই এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমাদের ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে সারের কারণে নতুন করে যাতে আর সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। আর সরকারের অন্যান্য খাতের ভর্তুকি কমিয়ে প্রয়োজনে সারে ভর্তুকি বাড়াতে হবে, যাতে সারের দাম কম থাকে। কারণ, কৃষকের হাতে এখন টাকা কম। বিশ্ববাজার থেকেও খাদ্য আমদানি করা সামনের দিনে আরও কঠিন হতে পারে। ফলে দেশের উৎপাদন ঠিক রাখতে সারের দাম ও জোগান ঠিক রাখা উচিত।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোটেক

কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তারা এক সঙ্গে কাজ করতে রাজি

ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি
ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি

ডাচ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে দুই দেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা একসঙ্গে কাজ করতে রাজি হয়েছেন।

গতকাল সোমবার নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগে অনুষ্ঠিত কৃষি খাতের ব্যবসাবিষয়ক এক সম্মেলনে দুই দেশের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত এগ্রি বিজনেস কনক্লেভে বাংলাদেশের প্রায় ৪০জন উদ্যোক্তা ডাচ কৃষি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি প্রযুক্তি সহযোগিতা ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছে ওয়েগেনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়।

আলোচনায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা প্রযুক্তি কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিলে নেদারল্যান্ডসের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা প্রযুক্তি সহযোগিতা দিতে রাজি থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে ডাচরা প্রস্তুত এবং বাংলাদেশি উদ্যোক্তারাও তাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। এ ছাড়া ডাচ সরকার ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বীজ, পশু খাদ্য, পোলট্রি, হর্টিকালচার ও এ্যাকুয়াকালচার বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম সম্পাদন করেছে, যা ওই দেশের বেসরকারি খাতকে আরও উৎসাহিত করেছে।

আলোচনায় কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করতে তৈরি আছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্কয়ার, ইস্পাহানি এগ্রো, একে খান অ্যান্ড কোম্পানি, প্যারাগন গ্রুপ, এসিআই, জেমকন গ্রুপসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা ডাচ প্রযুক্তির প্রয়োগ সরেজমিনে দেখতে যাবেন।

বাংলাদেশের সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের পোল্ট্রিখাতে সহযোগিতার আলোচনা অনেকটা এগিয়েছে উল্লেখ করে মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, দুই দেশের মধ্যে মৎস্য, পশুপালন ও হর্টিকালচারে সহযোগিতার বিপুল সম্ভাবনা আছে।

কনক্লেভ আয়োজনে প্রথমবারের মতো দূতাবাসের সঙ্গে অংশীদার হয়েছে নেদারল্যান্ডসের কৃষি মন্ত্রণালয়, নেদারল্যান্ডস এন্টারপ্রাইজ এজেন্সি, নেদারল্যান্ডস ফুড পার্টনারশিপ, ডাচ-গ্রিন-হাইজডেল্টা, লারিভ ইন্টারন্যাশনাল, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ।

কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থানকারী নেদারল্যান্ডসের আয়তন বাংলাদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের কম। ২০২১-এ কৃষিপণ্য ও খাদ্য রপ্তানি করে নেদারল্যান্ডস ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি আয় করেছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

পতিত জমিতে চিনাবাদাম চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষক

মেহেরপুর: পতিত ও অনুর্বর বেলে মাটির জমিতে চিনাবাদাম চাষ করে লাভবান হচ্ছেন মেহেরপুরের চাষিরা। ফলন ও বাজার দর ভালো এবং কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন এই এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাদামের চাষ। 

সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা, শ্যামপুর, টেংগারমাঠ ও গোপালপুর গ্রামের অধিকাংশ জমির মাটি বেলে। ফলে এই এলাকার চাষিরা ধান, গম, পাটসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করে খুব একটা লাভবান হতে পারেন না।

ধান কাটার পর এ সব জমি সাধারণত পতিত থাকে। এজন্য ৯০ দিনের ফসল হিসেবে অল্প খরচে বাদাম চাষ করছেন এলাকার চাষিরা।  

মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, জেলায় এবার বাদাম চাষ হয়েছে ১৫ হেক্টর জমিতে। এবার এক বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করতে চাষিদের খরচ হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা সেক্ষেত্রে বাদামের ফলন হয়েছে ৬ থেকে ৭ মণ। আর এ  ফলনে প্রায় ২০ হাজার টাকা ঘরে তুলছেন তারা। বাজারে প্রতিমণ বাদাম বিক্রি হচ্ছে ২৭শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত।  সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা গ্রামের বাদাম চাষি খাঁজা আহমেদ, কাওছার আলী ও ফিরোজ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এলাকার মাটি বেলে হওয়ায় সাধারণত সবজি, আলু ও অন্যান্য ফসল চাষ করার পর জমি পতিত থাকে। সে সময়ে চিনা বাদামের চাষ করা হয়। বাদাম চাষে খরচ কম এবং উৎপাদন ও বাজার দর ভাল। তাই দিন দিন চাষিরা তাদের পতিত জমিতে চিনা বাদামের চাষ শুরু করছেন।  

এছাড়া বাদাম ছাড়ানো, শুকানোসহ যাবতীয় কাজ করে থাকেন এখানকার নারীরা। বাদামের গাছ আবার শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করছেন গৃহিণীরা।  

নারী শ্রমিক সাহানা খাতুন ও জরিমন নেছা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বাদাম ছাড়ানো ও শুকানোর কাজ করে থাকি। এলাকার ২৫/৩০ জন নারী শ্রমিক এ কাজ করে আসছেন।  
গৃহিণী সাজেদা খাতুন ও জামেলা খাতুন জানান, বাদামের লতা জালানি হিসেবে বেশ ভাল। তাই লতাও বিক্রি হচ্ছে।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আক্তারুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, চিনা বাদামের চাষ সাধারণত পতিত জমিতে হয়ে থাকে। এলাকার চাষিরা এই জমিতে বাদামের চাষ করে বাড়তি আয় করছেন। তাই বাদাম চাষ যাতে আরও সম্প্রসারিত হয় সেজন্য কৃষি বিভাগ চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে।  

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

সিলেটে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের সম্ভাবনা

সিলেট বিভাগের উচ্চমাত্রার অ্যাসিডিক জমিতে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কৃষি বিজ্ঞানিরা মৌলভীবাজারের আকবরপুরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে ফুল চাষ করে সফল হয়েছেন। এ ফুল চাষ মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে ১০০ চাষিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে কৃষি গবেষণা কেন্দ্র।

কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের তথ্যমতে, যশোরে বাণিজ্যিকভাবে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল চাষ হয়। যার বাজার দর প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। যশোরের ফুল সারাদেশের পাশাপাশি সিলেটেও আসে প্রচুর। সিলেটে ফুলের বাজার শত কোটি টাকার উপরে। কিন্তু সিলেটে ফুলের চাষ বাণিজ্যিকভাবে হয় না।

সিলেট বিভাগের মাটি অ্যাসিডিক হওয়ায় ফুল চাষ করা যাবে না, সেটাই ছিল প্রচলিক ধারণা। কিন্তু এ ধারণাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যদিয়ে ভুল প্রমাণ করেছেন মৌলভীবাজার আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের একদল গবেষক। মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস এম শরিফুজ্জামানের নেতৃত্বে উচ্চমাত্রার অ্যাসিডিটিক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ফুল চাষ করে সফল হয়েছেন তারা। এ পরীক্ষামূলক চাষে ফলনও হয়েছে ভালো। তাই সিলেট অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট অঞ্চলে অনেক জায়গা অনাবাদি ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। প্রবাসীরা দেশের বাইরে অবস্থান করায় তাদের অনেক জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকে। এ জমিকে আবাদের আওতায় আনতে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের উদ্যোগ নিয়ে আগ্রহী ১০০ চাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে আমন ধান কাটার পর এ অঞ্চলের অনেক জমি পতিত থাকে। ফলে ফুল চাষ করে অনাবাদি জমি থেকে কোটি টাকা উপার্জন সম্ভব।

বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মিরানা আক্তার সুমি জানান, চাষিরা প্রশিক্ষণ শেষে অনেক কিছু শিখেছেন। কী পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে হয়, তা জেনেছেন। ধানের চেয়ে যেহেতু ফুলের দাম বেশি, তাই ফুল চাষে তাদের আগ্রহ বাড়ছে।

ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. সরফ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভালোভাবে জমি চাষ করে নির্দেশিত মাত্রায় জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয়। অন্য ফসলের মতোই এর চাষ পদ্ধতি সহজ। বেড তৈরি করে ফুল চাষ করতে হয়। প্রতিটি বেডের দৈর্ঘ যে কোন মাপের হতে পারে। তবে প্রস্থে ১.২-১.৫ মিটার হলে ভালো।’

তিনি বলেন, ‘কলম (বীজ) লাগানো থেকে তিন মাস পর স্টিক সংগ্রহ শুরু হয়। সংগ্রহ করা যাবে পরবর্তী ২৫ দিন। গ্লাডিওলাস ৫টি জাতসহ মোট ১২টি প্রজাতির ফুলের পরীক্ষা করে আমরা সফল হয়েছি।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

জৈব

জৈব পদ্ধতিতে ফসলের রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণ

সবুজ বিপ্লবের সময়ে পেস্টিসাইড ব্যবহারকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জীব বৈচিত্র্য, মাটির স্বাস্থ্য ও ফসলের গুণমানতা। এখন ভেবে দেখার সময় এসেছে, এত রাসায়নিক পেস্টিসাইড ব্যবহার করা কি ঠিক হচ্ছে? এ প্রশ্ন শুধু ভারতে নয়, সারাবিশ্বের কৃষকসমাজ ও শস্যবিজ্ঞানীদের কাছে। তাই মনে হয় জৈব নিয়ন্ত্রণকে গুরুত্ব দিয়ে সুসংহত রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণ আগামী দিনে একমাত্র সমাধানের রাস্তা হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।

চলমান খরিফ মরসুমে আমাদের রাজ্যে প্রধানত ধান, খরিফ পেঁয়াজ, জুট, ইক্ষু, তিল ইত্যাদি ফসলের চাষ হয়ে থাকে। এ রাজ্যে ধানে ঝলসা রোগের আক্রমণ একটি গুরুতর বিষয়।

জৈব পদ্ধতিতে এই রোগ দমন করার একটি সহজ উপায় রয়েছে। ৫০ মিলিলিটার কেরোসিন তেলে ৮৫ গ্রাম থেঁতলানো রসুন মিশিয়ে ২৪ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এরপর ৯৫০ মিলি. জল ও ১০ মিলি. তরল সাবান মিশিয়ে ভালোভাবে নেড়ে নিয়ে বোতলে রেখে দিতে হবে। ১৯ লিটার জলের সাথে ১ ভাগ মিশ্রণ মিশিয়ে সকালে/বিকেলে স্প্রেয়ার দিয়ে আক্রান্ত গাছে স্প্রে করতে হবে।

এই মিশ্রণটি আমেরিকান বোল ওয়ার্ম, আর্মি ওয়ার্ম, পেঁয়াজ-এর চিরুনি পোকা, আলুর টিউবার মথ, রুট নট নিমাটোড (কৃমি), আখের কাণ্ড ছিদ্রকারী পোকা, ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ, ডাউনি মিলডিউ ও ধানের ঝলসা রোগ প্রতিরোধে খুবই কার্যকরী।

এছাড়া বিভিন্ন ধরণের পাতা খেকো পোকা ও জাব পোকা নিয়ন্ত্রণে ১ কেজি পেঁয়াজ থেঁতো করে ১ লিটার জলের সাথে মিশিয়ে ২৪ ঘণ্টা রেখে দেবার পর কচলিয়ে রস নিংড়ে নিতে হবে। প্রাপ্ত নির্যাসের সাথে ১০ লিটার জল মিশিয়ে আক্রান্ত ফসলে স্প্রে করতে হবে।

জৈব সার প্রয়োগ ও জৈব কীটনাশক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফসলের উৎপাদন খরচ শতকরা ২৫-৩০ শতাংশ হ্রাস করা সম্ভব। উচ্চ পুষ্টিমানসম্পন্ন প্রযুক্তিতে উৎপাদিত জৈব সার, শাকসব্জী ও অন্যান্য ফসলের প্রয়োজনীয় নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশিয়াম-এর সাথে অণুখাদ্যের যোগান দেয়।

জৈব পদ্ধতিতে উৎপন্ন কীটনাশক ও ছত্রাকনাশকগুলি ফসলে কোনওরকম দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ব্যতিরেকে, পোকা ও রোগ দমনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এতে মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও উর্বরতা দীর্ঘমেয়াদী হয়। উৎপাদিত ফসল হয় স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ।

বন্ধুপোকা মাকড়ের (পরজীবি ও পরভোজী) সংরক্ষণের জন্য জমির পাশে অব্যবহৃত জায়গায় ত্রিধারা, উঁচুটি, শালিঞ্চে ইত্যাদি আগাছা জাতীয় গাছের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।

দূরদর্শী পদক্ষেপের মাধ্যমে রাসায়নিক কৃষি বর্জন করে প্রাণ বৈচিত্র্য নির্ভর জৈব কৃষির মাধ্যমে খাদ্যে সার্বভৌমত্ব আনা সম্ভব। তাই জৈব কৃষির পথে ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়ে কৃষিবিষমুক্ত, স্বাস্থ্যসম্মত সমাজ গড়ে তোলাই বাঞ্ছনীয়।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@theagronews.com, theagronewsbd@gmail.com