বাংলাদেশ
কেন ভারতীয়রা এখনও যৌথ পরিবারে বাস করে
লেখক
বিবিসি বাংলা
ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক ভিএস নাইপল লিখেছিলেন, ভারতীয় একেকটি পরিবার যেন একেকটি গোত্র যা তার সদস্যদের নিরাপত্তা দেয়, পরিচিতি দেয় এবং “সমাজে অপ্রাসঙ্গিক, বাতিল হয়ে পড়া থেকে রক্ষা করে।“
সেই পরিবার কাঠামোতে তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। অন্তত সাম্প্রতিক গবেষণা তা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।
অনেক পর্যবেক্ষক এবং গবেষক ভাবতেন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, নগরায়ণ, শিক্ষার বিস্তার, সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের পরিণতিতে ভারতের যৌথ পরিবার ধীরে হলেও ভেঙ্গে পড়তে বাধ্য।
কিন্তু ভারতীয় পরিবার কাঠামোর ওপর দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রভাব নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, বাস্তবে ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং নগরায়ণ পরিবার কাঠামোতে তেমন কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি।
গবেষণাটি করেছেন মার্কিন জনতত্ববিদ এবং কর্নেল বিশ্বদ্যিালয়ের গবেষক ড. এটিয়েন ব্রেটন।
মি ব্রেটন বলছেন, যা ধারণা করা হয়েছিল বাস্তবে ভারতের তা হয়নি। ভারতে এক দম্পতি বা এক সদস্যের পরিবারের সংখ্যা বেড়েছে খুব সামান্যই।
একই সাথে দেখা যাচ্ছে যে বিংশ শতাব্দীর শুরুতে ভারতে পরিবারের গড় আকার যা ছিল এখনও তা তেমন বদলায়নি। বিয়ে একটি অবধারিত ঘটনা, বিবাহ বিচ্ছেদের হার খুবই কম, এবং বিয়ে না করা বা সন্তান না হওয়ায় এক বা দুই সদস্যের পরিবারের সংখ্যা নিতান্তই নগণ্য।
বরঞ্চ যৌথ পরিবার এখনও ভারতে খুবই শক্তিশালী, এবং সেদেশের জনসংখ্যার যে বাস্তবতা তার পরিপ্রেক্ষিতে যৌথ পরিবারই এখনও মানুষের রক্ষাকবচ।

“পরিবার কাঠামোর পরিবর্তনকে ভারত শক্তভাবে চ্যালেঞ্জ করে চলেছে,“ বিবিসিকে বলেন ড. ব্রেটন। তার সাম্প্রতিক গবেষণায় তিনি বোঝার চেষ্টা করেছেন কেন এখনও কেন বিশাল সংখ্যায় বাবা-মায়েরা বিবাহিত ছেলের সাথে থাকেন।
ভারতে বিবাহিত নারীরা যৌথ পরিবার ভেঙ্গে আলাদা হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে খুবই কম ভূমিকা রাখে, যদিও অনেক সময় তাদের স্বামীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাদের কিছু প্রভাব হয়ত থাকে।
বাবার মৃত্যুর আগেই ছেলে পরিবার থেকে বেরিয়ে গিয়ে আলাদা বসবাস করছে, এমন উদাহরণ এখনও ভারতের সমাজে বিরল। যদিও বা কেউ কেউ তা করে, তারপরও বাবা বা মায়ের কেউ একজন মারা গেলে বাকি একজনের দায়িত্ব ঐ ছেলের ঘাড়ে এসে পড়ে।
ভারতের জাতীয় নমুনা সমীক্ষা (এনএসএস) থেকে পাওয়া পরিসংখ্যান বলছে, ৬৫ বছর বা তার ঊর্ধ্ব বয়সী মানুষের ৫০ শতাংশেরও বেশি বিবাহিত, এবং ৪৫ শতাংশ বিধবা বা বিপত্নীক। এবং এই বিধবা বা বিপত্নীক জনগোষ্ঠীর প্রায় ৮০ শতাংশই তাদের কোনো না কোনো সন্তানের সাথে বসবাস করে।
পক্ষান্তরে, বয়স্ক দম্পতিদের মাত্র ৪০ শতাংশ হয় নিজেরা না হয় অবিবাহিত সন্তানদের সাথে থাকেন। সন্তানদের ছাড়াই থাকার এই সংখ্যা গত ২৫ বছরে মাত্র ছয় শতাংশ পয়েন্ট বেড়েছে।
ড. ব্রেটন বলছেন, “এই পরিসংখ্যান প্রমাণ করছে ভারতে নিউক্লিয়ার পরিবার অর্থাৎ একক বা এক দম্পতির পরিবারের সংখ্যা বেড়েছে খুবই কম।“
কেন ছেলেরা বাবা-মায়ের সাথে থেকে যায়
কেন ভারতে তরুণ-যুবকরা এখনও তাদের বাবা-মায়ের সাথে থেকে যায়- তার অন্যতম কারণ মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি। ১৯৮০ সালের তুলনায় ২০২০ সালের ভারতে একজন ৩০ বছরের যুবক তার বাবা-মায়ের মধ্যে অন্তত একজনের সাথে থাকার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে গেছে। কারণ তার বাবা-মায়েরা এখন বেশিদিন বেঁচে থাকছে।
আরেকটি প্রধান কারণ- ভারতে নগরায়ণের শ্লথ গতি। এখনও ভারতের জনসংখ্যার মাত্র ৩৫ শতাংশ নগরে বাস করে, যেখানে চীনে সেই সংখ্যা এখন ৬০ শতাংশ। যদিও অনেক গবেষক মনে করেন, ভারতে জনগণনার সময় অনেক নগর অঞ্চলকে ভুল করে গ্রাম হিসাবে দেখানো হয়, তারপরও বড় শহরগুলোতেও যে এক ব্যক্তি বা এক দম্পতির পরিবার খুব যে বেড়েছে তার প্রমাণ নেই।
লন্ডনে কিংস কলেজের সমাজবিজ্ঞানী অ্যালিস ইভান্স বলেন, ভারতে এখনও সিংহভাগ মানুষের যৌথ পরিবারে বসবাস করার পেছন পারিবারিক ব্যবসা এবং চাকরি বা পেশায় নারীদের অপেক্ষাকৃত কম অংশগ্রহণ বড় ভূমিকা রাখছে। তিনি মনে করেন, এসব কারণে পরোক্ষভাবে পরিবারের মধ্যে শক্ত বন্ধন তৈরি হয়।

সেই সাথে যোগ হয়েছে জীবনযাপনের ব্যয় বৃদ্ধি যার পরিণতিতে বহু মানুষ বাধ্য হয়েই যৌথ পরিবারে আটকে থাকে।
তবে ভারতীয় পরিবারই যে একবারেই ব্যতিক্রমী তা নয়।
ড. ইভান্স বলেন ১৯০০ সালে চীন, জাপান, কোরিয়া এবং তাইওয়ানেও একই চিত্র ছিল। ঐ সব দেশেও যৌথ পরিবারের বাইরে বসবাস একসময় খুবই বিরল ঘটনা ছিল।
“পূর্ব এশিয়ায় পরিবারে শক্ত বন্ধন একসময় ভারতের মত একইরকম ছিল। কিন্তু বিংশ শতাব্দী ধরে পরিবারের বাইরে কর্মসংস্থান, গ্রাম থেকে শহরে অভিবাসন এবং নারীদের কর্মসংস্থান বাড়ার পরে ঐ সব দেশে যৌথ পরিবার আলগা হয়ে গেছে,“ বিবিসিকে বলেন ড, ইভান্স।
পূর্ব এশিয়া কেন বদলে গেল
তবে এখনও পূর্ব এশিয়ার ছেলে-মেয়েরা বৃদ্ধ বাবা-মাকে সাহায্য করে, কিন্তু “সেটা মূলত টাকা-পয়সা দিয়ে, একসাথে বসবাস করে নয়।“
নারীদের কর্মসংস্থান যে যৌথ পরিবার ভেঙ্গে পড়ার প্রধান একটি নিয়ামক, পূর্ব এশিয়া তার প্রমাণ।জাপান, কোরিয়া, তাইওয়ান এবং চীনে গত এক শতাব্দী ধরে নারীরা ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় ঘরের বাইরে কাজ করতে যাচ্ছে, ফলে নারী-পুরুষ দুজনেই আয় করায় যৌথ পরিবার থেকে বেরিয়ে স্বাধীনভাবে থাকার আকাঙ্ক্ষা বেড়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার উদাহরণ টেনে ড. ইভান্স বলেন, সেদেশে বিশাল বিশাল কোম্পানি যখন গড়ে উঠতে শুরু করে, তখন থেকে বহু শ্রমিক একসাথে কারখানায় কাজ করছে, তারা একসাথে ডরমিটরিতে থাকছে, কাজের জায়গায় অধিকারের জন্য একসাথে আন্দোলন করছে। “ফলে তাদের মধ্যে শ্রেণী সচেতনতা জন্ম নিয়েছে এবং পরিবারের বাইরে তারা অন্যদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে পরেছে।“
দক্ষিণ কোরিয়ায় নারীদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা যত বেড়েছে, তাদের সন্তান ধারণের সংখ্যা কমেছে। এর ফলে, বাইরে গিয়ে তাদের পক্ষে কাজ করার সুবিধাও বেড়েছে।
কেন দক্ষিণ এশিয়া তেমন বদলায়নি
কিন্তু, ড. ইভান্স বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় সে ধরণের পরিবর্তন তেমন হয়নি।

“দক্ষিণ এশিয়ায় নারীদের প্রতি বঞ্চনার কারণে তাদের কর্মসংস্থান তেমনি হয়নি। গ্রামাঞ্চলে বাইরে কাজ করা বন্ধ করলে নারীদের সামাজিক ও পারিবারিক মর্যাদা বাড়ে, যেটা পশ্চিম ইউরোপ শিল্প বিপ্লবের শুরুর দিকে দেখা যেত। তাছাড়া. গ্রামে নারীরা কাজ করতে ইচ্ছুক হলেও, কৃষিখাতের যান্ত্রিকী-করণে তাদের কাজের সুযোগ কমে যাচ্ছে।“
নারীদের কর্মসংস্থানের অভাবে তরুণ-যুবক দম্পতিদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দক্ষিণ এশিয়ায় এখনও কম।ড. ইভান্স বলেন, “নারীরা যদি কাজ করতে বাইরে না যায়, তাদের নেটওয়ার্ক যদি না বাড়ে, বৃহত্তর পরিবারের ভেতরেই জীবন কাটিয়ে দেয়া ছাড়া তাদের কোনো উপায় থাকেনা।“
তবে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মত একই হাল যেসব দেশে সেখানেও পরিবার কাঠামোর চরিত্র কম-বেশি একইরকম।সম্প্রতি ১৫টি উন্নয়নশীল দেশের জন-গণনার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে স্টিভেন রাগলস্ এবং মিসটি হেগেনিস নামে দুজন গবেষক দেখেছেন, ঐ সব দেশে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মানুষজন যৌথ পরিবারে বসবাস করছে, এবং এই কাঠামোতে খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি।
তবে অনেক গবেষক দাবি করেন, ভারতে পরিবার কাঠামোর জটিলতা খুব সহজে বিশ্লেষণ করা যাবেনা।
সমাজবিজ্ঞানী ড তুলসি প্যাটেল, যিনি ভারতের পরিবার কাঠামো নিয়ে অনেক লেখালেখি করেন, বলেন ভারতে একক পরিবারকে সংজ্ঞায়িত করাও অনেক সময় জটিল একটি বিষয়।
“বৃদ্ধ বাবা-মায়েরা তাদের নাতি-নাতনিদের সঙ্গ দিতে এবং তাদের দেখা-শোনা করতে এক ছেলের বাড়ি থেকে আরেক ছেলের বাড়িতে যায়। ছেলেরা যখন বিদেশে চলে যায়, তখন তারা মেয়ের বাড়িতেও থাকে। ফলে যৌথ পরিবারের কাঠামোও অদল-বদল ঘটতে থাকে। এমন সব পরিবর্তনশীল পারিবারিক কাঠামোকে আপনি কীভাবে একটি ছাঁচে ফেলবেন?” বিবিসিকে বলেন ড. প্যাটেল।
ধনী-শিক্ষিতরাই যৌথ পরিবার ছাড়েনা
সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, ভারতে গরীবদের চেয়ে ধনীরাই তুলনামুলকভাবে অনেক বেশি যৌথ পরিবারে থাকে।ডঃ ব্রেটন তার গবেষণায় দেখেছেন, ভারতে ২০০০ সাল থেকে ৩০ এর কোটায় বয়স এমন বিবাহিত যুবকরা যারা যৌথ পরিবারে থাকে তাদের অধিকাংশই কলেজ ডিগ্রিধারী এবং চাকুরীজীবী।
লেখাপড়া না জানা দরিদ্র কৃষক বা শ্রমজীবীরা সেই তুলনায় অনেক বেশি সংখ্যায় একক পরিবারে থাকে।গরীবদের মধ্যে যৌথ পরিবার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশি থাকার অন্যতম কারণ তাদের বাবা-মায়ের এমন কোনা সম্পত্তি থাকেনা যা দিয়ে তারা ছেলেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
গরীব পরিবারের আয়তন বাড়ার সাথে সাথে অল্প জমিতে ভাগীদার বাড়ে, ফলে পরিবারে অভাব বাড়তে থাকে। এ কারণে, গরীব পরিবারের সন্তানদের মধ্যে যৌথ পরিবারে থাকার আকর্ষণ কম।
ডঃ ব্রেটন বলেন, ভারতে বহু দরিদ্র নিরক্ষর শ্রমজীবীরা বৃদ্ধ বয়সে একা থাকেন। বিশেষ করে কৃষকদের মধ্যে এই প্রবণতা অনেক বেশি। “এতেই প্রমাণিত হয় যে ভারতের আধুনিক, শহুরে এবং বিত্ত-শীল মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পরিবার কাঠামোতে তেমন প্রভাব ফেলেনি।“
তবে ভারতের পরিবার কাঠামো যে একেবারেই স্থবির হয়ে আছে তা বলা যাবেনা।ধীরে হলেও সমাজে নারীদের ক্ষমতা বাড়ছে। দেখা-শোনা করে বিয়ে হলেও, সঙ্গী নির্বাচনে নারীরা তাদের সিদ্ধান্ত দিচ্ছে। তাছাড়া, যেসব বয়স্ক বাবা-মা অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল, তারা বিবাহিত সন্তানদের সাথে থাকতে চাইছেন না।
এছাড়া, ভারতে পরিবারে সন্তান সংখ্যা কমছে। অনেক পরিবারে একটি ছেলে বা কোনো ছেলেই এখন নেই। ড. ব্রেটন মনে করেন, কম ছেলে সন্তান এবং ছেলে সন্তান বিহীন পরিবারের মধ্যে যৌথ পরিবার গঠনের আগ্রহ কমবে।
গবেষকরা বলছেন, ভবিষ্যতে হয়ত বাবা-মায়েরা বৃদ্ধ বয়সে ছেলের সাথে না থেকে নানা সাহায্যের জন্য তাদের বিবাহিতা মেয়েদের দ্বারস্থ হবেন।
তবে ড, ব্রেটন মনে করেন ভারতে শিক্ষিত এবং সম্পন্ন মানুষদের চেয়ে নিরক্ষর শ্রমজীবীরাই পরিবার কাঠামো পরিবর্তনের চালিকা শক্তি হবে।
-
-
নগরায়ণ বা শিক্ষার প্রসার ভারতের যৌথ পরিবার কাঠামোতে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি
-
ভারতে ধনী-শিক্ষিতদের চেয়ে নিরক্ষর শ্রমজীবী মানুষরাই একক পরিবারে বেশি থাকে
-
বয়স্ক বাবা-মায়েরা অনেক সময় নাতি-নাতনিদের দেখভাল করার জন্য সন্তানদের সাথে থাকেন
-
ভারতে যৌথ পরিবার এখনও অত্যন্ত শক্ত

আপনার জন্য নির্বাচিত সংবাদ
-
নিরাপদ খাদ্য: দেশি মাছ কাকিলাকে যেভাবে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা
-
জিংক সমৃদ্ধ পুষ্টি ধানের চাষে কৃষকদের জামানতবিহীন ঋণ দেবে কৃষি ব্যাংক, কী লাভ এই চাল উৎপাদন বাড়লে?
-
বাংলাদেশে বাড়ছে ইলিশ, মিয়ানমারে কেন কমছে – দা এগ্রো নিউজ
-
নিপাহ্ ভাইরাসঃ খেজুরের রস খাওয়ার আগে সতর্ক থাকতে যা করণীয়
-
ইলিশ কি মিঠা পানির মাছ হয়ে যাচ্ছে? – দা এগ্রো নিউজ
-
বাংলাদেশে ‘প্রায় বিলুপ্তি’র পথে ১০০-এর বেশি দেশীয় মাছ – দা এগ্রো নিউজ
-
বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের আবিস্কৃত ইলিশের ‘জীবন রহস্য’ কীভাবে এর উৎপাদন বাড়াবে
-
বাংলাদেশে গরুর দুধে অ্যান্টিবায়োটিক আসে কীভাবে – দা এগ্রো নিউজ
-
আপেল-স্ট্রবেরির দরকার নেই, বাঙালিরা পেয়ারা বা বরই খেলেও একই উপকার পাবেন
-
যুক্তরাষ্ট্রে এমন একটি আপেলের চাষ শুরু হয়েছে যা ‘এক বছর সতেজ থাকবে’

মেহেরপুর: পতিত ও অনুর্বর বেলে মাটির জমিতে চিনাবাদাম চাষ করে লাভবান হচ্ছেন মেহেরপুরের চাষিরা। ফলন ও বাজার দর ভালো এবং কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন এই এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাদামের চাষ।
সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা, শ্যামপুর, টেংগারমাঠ ও গোপালপুর গ্রামের অধিকাংশ জমির মাটি বেলে। ফলে এই এলাকার চাষিরা ধান, গম, পাটসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করে খুব একটা লাভবান হতে পারেন না।
ধান কাটার পর এ সব জমি সাধারণত পতিত থাকে। এজন্য ৯০ দিনের ফসল হিসেবে অল্প খরচে বাদাম চাষ করছেন এলাকার চাষিরা।
মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, জেলায় এবার বাদাম চাষ হয়েছে ১৫ হেক্টর জমিতে। এবার এক বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করতে চাষিদের খরচ হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা সেক্ষেত্রে বাদামের ফলন হয়েছে ৬ থেকে ৭ মণ। আর এ ফলনে প্রায় ২০ হাজার টাকা ঘরে তুলছেন তারা। বাজারে প্রতিমণ বাদাম বিক্রি হচ্ছে ২৭শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা গ্রামের বাদাম চাষি খাঁজা আহমেদ, কাওছার আলী ও ফিরোজ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এলাকার মাটি বেলে হওয়ায় সাধারণত সবজি, আলু ও অন্যান্য ফসল চাষ করার পর জমি পতিত থাকে। সে সময়ে চিনা বাদামের চাষ করা হয়। বাদাম চাষে খরচ কম এবং উৎপাদন ও বাজার দর ভাল। তাই দিন দিন চাষিরা তাদের পতিত জমিতে চিনা বাদামের চাষ শুরু করছেন।
এছাড়া বাদাম ছাড়ানো, শুকানোসহ যাবতীয় কাজ করে থাকেন এখানকার নারীরা। বাদামের গাছ আবার শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করছেন গৃহিণীরা।
নারী শ্রমিক সাহানা খাতুন ও জরিমন নেছা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বাদাম ছাড়ানো ও শুকানোর কাজ করে থাকি। এলাকার ২৫/৩০ জন নারী শ্রমিক এ কাজ করে আসছেন।
গৃহিণী সাজেদা খাতুন ও জামেলা খাতুন জানান, বাদামের লতা জালানি হিসেবে বেশ ভাল। তাই লতাও বিক্রি হচ্ছে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আক্তারুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, চিনা বাদামের চাষ সাধারণত পতিত জমিতে হয়ে থাকে। এলাকার চাষিরা এই জমিতে বাদামের চাষ করে বাড়তি আয় করছেন। তাই বাদাম চাষ যাতে আরও সম্প্রসারিত হয় সেজন্য কৃষি বিভাগ চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে।

সিলেট বিভাগের উচ্চমাত্রার অ্যাসিডিক জমিতে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কৃষি বিজ্ঞানিরা মৌলভীবাজারের আকবরপুরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে ফুল চাষ করে সফল হয়েছেন। এ ফুল চাষ মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে ১০০ চাষিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে কৃষি গবেষণা কেন্দ্র।
কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের তথ্যমতে, যশোরে বাণিজ্যিকভাবে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল চাষ হয়। যার বাজার দর প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। যশোরের ফুল সারাদেশের পাশাপাশি সিলেটেও আসে প্রচুর। সিলেটে ফুলের বাজার শত কোটি টাকার উপরে। কিন্তু সিলেটে ফুলের চাষ বাণিজ্যিকভাবে হয় না।

সিলেট বিভাগের মাটি অ্যাসিডিক হওয়ায় ফুল চাষ করা যাবে না, সেটাই ছিল প্রচলিক ধারণা। কিন্তু এ ধারণাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যদিয়ে ভুল প্রমাণ করেছেন মৌলভীবাজার আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের একদল গবেষক। মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস এম শরিফুজ্জামানের নেতৃত্বে উচ্চমাত্রার অ্যাসিডিটিক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ফুল চাষ করে সফল হয়েছেন তারা। এ পরীক্ষামূলক চাষে ফলনও হয়েছে ভালো। তাই সিলেট অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট অঞ্চলে অনেক জায়গা অনাবাদি ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। প্রবাসীরা দেশের বাইরে অবস্থান করায় তাদের অনেক জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকে। এ জমিকে আবাদের আওতায় আনতে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের উদ্যোগ নিয়ে আগ্রহী ১০০ চাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে আমন ধান কাটার পর এ অঞ্চলের অনেক জমি পতিত থাকে। ফলে ফুল চাষ করে অনাবাদি জমি থেকে কোটি টাকা উপার্জন সম্ভব।
বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মিরানা আক্তার সুমি জানান, চাষিরা প্রশিক্ষণ শেষে অনেক কিছু শিখেছেন। কী পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে হয়, তা জেনেছেন। ধানের চেয়ে যেহেতু ফুলের দাম বেশি, তাই ফুল চাষে তাদের আগ্রহ বাড়ছে।

ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. সরফ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভালোভাবে জমি চাষ করে নির্দেশিত মাত্রায় জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয়। অন্য ফসলের মতোই এর চাষ পদ্ধতি সহজ। বেড তৈরি করে ফুল চাষ করতে হয়। প্রতিটি বেডের দৈর্ঘ যে কোন মাপের হতে পারে। তবে প্রস্থে ১.২-১.৫ মিটার হলে ভালো।’

তিনি বলেন, ‘কলম (বীজ) লাগানো থেকে তিন মাস পর স্টিক সংগ্রহ শুরু হয়। সংগ্রহ করা যাবে পরবর্তী ২৫ দিন। গ্লাডিওলাস ৫টি জাতসহ মোট ১২টি প্রজাতির ফুলের পরীক্ষা করে আমরা সফল হয়েছি।

সবুজ বিপ্লবের সময়ে পেস্টিসাইড ব্যবহারকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জীব বৈচিত্র্য, মাটির স্বাস্থ্য ও ফসলের গুণমানতা। এখন ভেবে দেখার সময় এসেছে, এত রাসায়নিক পেস্টিসাইড ব্যবহার করা কি ঠিক হচ্ছে? এ প্রশ্ন শুধু ভারতে নয়, সারাবিশ্বের কৃষকসমাজ ও শস্যবিজ্ঞানীদের কাছে। তাই মনে হয় জৈব নিয়ন্ত্রণকে গুরুত্ব দিয়ে সুসংহত রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণ আগামী দিনে একমাত্র সমাধানের রাস্তা হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।
চলমান খরিফ মরসুমে আমাদের রাজ্যে প্রধানত ধান, খরিফ পেঁয়াজ, জুট, ইক্ষু, তিল ইত্যাদি ফসলের চাষ হয়ে থাকে। এ রাজ্যে ধানে ঝলসা রোগের আক্রমণ একটি গুরুতর বিষয়।
জৈব পদ্ধতিতে এই রোগ দমন করার একটি সহজ উপায় রয়েছে। ৫০ মিলিলিটার কেরোসিন তেলে ৮৫ গ্রাম থেঁতলানো রসুন মিশিয়ে ২৪ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এরপর ৯৫০ মিলি. জল ও ১০ মিলি. তরল সাবান মিশিয়ে ভালোভাবে নেড়ে নিয়ে বোতলে রেখে দিতে হবে। ১৯ লিটার জলের সাথে ১ ভাগ মিশ্রণ মিশিয়ে সকালে/বিকেলে স্প্রেয়ার দিয়ে আক্রান্ত গাছে স্প্রে করতে হবে।
এই মিশ্রণটি আমেরিকান বোল ওয়ার্ম, আর্মি ওয়ার্ম, পেঁয়াজ-এর চিরুনি পোকা, আলুর টিউবার মথ, রুট নট নিমাটোড (কৃমি), আখের কাণ্ড ছিদ্রকারী পোকা, ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ, ডাউনি মিলডিউ ও ধানের ঝলসা রোগ প্রতিরোধে খুবই কার্যকরী।
এছাড়া বিভিন্ন ধরণের পাতা খেকো পোকা ও জাব পোকা নিয়ন্ত্রণে ১ কেজি পেঁয়াজ থেঁতো করে ১ লিটার জলের সাথে মিশিয়ে ২৪ ঘণ্টা রেখে দেবার পর কচলিয়ে রস নিংড়ে নিতে হবে। প্রাপ্ত নির্যাসের সাথে ১০ লিটার জল মিশিয়ে আক্রান্ত ফসলে স্প্রে করতে হবে।
জৈব সার প্রয়োগ ও জৈব কীটনাশক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফসলের উৎপাদন খরচ শতকরা ২৫-৩০ শতাংশ হ্রাস করা সম্ভব। উচ্চ পুষ্টিমানসম্পন্ন প্রযুক্তিতে উৎপাদিত জৈব সার, শাকসব্জী ও অন্যান্য ফসলের প্রয়োজনীয় নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশিয়াম-এর সাথে অণুখাদ্যের যোগান দেয়।
জৈব পদ্ধতিতে উৎপন্ন কীটনাশক ও ছত্রাকনাশকগুলি ফসলে কোনওরকম দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ব্যতিরেকে, পোকা ও রোগ দমনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এতে মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও উর্বরতা দীর্ঘমেয়াদী হয়। উৎপাদিত ফসল হয় স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ।
বন্ধুপোকা মাকড়ের (পরজীবি ও পরভোজী) সংরক্ষণের জন্য জমির পাশে অব্যবহৃত জায়গায় ত্রিধারা, উঁচুটি, শালিঞ্চে ইত্যাদি আগাছা জাতীয় গাছের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
দূরদর্শী পদক্ষেপের মাধ্যমে রাসায়নিক কৃষি বর্জন করে প্রাণ বৈচিত্র্য নির্ভর জৈব কৃষির মাধ্যমে খাদ্যে সার্বভৌমত্ব আনা সম্ভব। তাই জৈব কৃষির পথে ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়ে কৃষিবিষমুক্ত, স্বাস্থ্যসম্মত সমাজ গড়ে তোলাই বাঞ্ছনীয়।

চা পানীয়টি আমাদের দেশে খুবই জনপ্রিয় একটি পানীয়। প্রিয়জনের সাথে বৈঠক থেকে শুরু করে সারাদিনের ক্লান্তি দূর করা সবেতেই চা (Tea) আমাদের নিত্যসঙ্গী। তবে এখন মানুষ আগের তুলনায় অনেক বেশী স্বাস্থ্য সচেতন। সাধারণ চায়ের জায়গায় এসেছে, গ্রীণ টি, হার্বাল টি, লেমনগ্র্যাস টি, ব্লু টি ইত্যাদি। আর প্রকারভেদের সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে টি ব্যাগের গুরুত্ব। কারণ এটি খুব অল্প সময়ে তৈরি করা যায় এবং যে কোন স্থানে এর থেকে চা বানানো যায়। অফিস ও হোটেলগুলিতে এর যথেষ্ট চাহিদাও রয়েছে। তাই টি ব্যাগ তৈরীর ব্যবসাটি হয়ে উঠতে পারে আপনার জন্য লাভদায়ক।
চা উৎপাদনকারী দেশ গুলির মধ্যে অংশ নেয় চীন, ভারত , কেনিয়া , শ্রীলঙ্কা , জাপান , ইন্দোনেশিয়া , ভিয়েতনাম, তানজেনিয়া , মালয়, বাংলাদেশ, তার্কী এবং চা পানকারী দেশ গুলির মধ্যে ইংল্যান্ড, জর্মানী, কানাডা ও আমেরিকার বেশ নাম রয়েছে।
এ কারণে বেশিরভাগ সংস্থা টি ব্যাগ বিক্রি শুরু করেছে। আপনি যদি নতুন ব্যবসা করার পরিকল্পনা করে থাকেন, তবে আপনি টি ব্যাগ মেকিং ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এটির মাধ্যমে আপনি খুব ভাল অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। যিনি তৈরী করেন, তার থেকে নিয়ে এসে আপনি বাইরে বিক্রি করতে পারেন, এতে আপনার বিনিয়োগের দরকার পড়বে না। কিন্তু যদি বেশী লাভ করতে চান, তবে বিনিয়োগ করে নিজের ব্যবসা শুরু করুন।
টি ব্যাগ ব্যবসা শুরু করার জন্য জায়গা (How to start) –
এটি শুরু করার জন্য আপনি কোনও জায়গা ভাড়া নিতে পারেন। আপনার নিজের জমি থাকলে ব্যবসার জন্য সুবিধা হবে। এমন জায়গা চয়ন করুন, যেখানে মানুষের সমাগম রয়েছে। টি ব্যাগ তৈরীর জন্য আপনাকে মেশিন ইনস্টল করতে হবে।
চা ব্যাগ ব্যবসায় বিনিয়োগ –
আপনি যদি বড় আকারে ব্যবসা শুরু করতে চান, তবে আপনাকে বেশী অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে। এর মেশিনটি যথেষ্ট ব্যয়বহুল, সুতরাং বেশী পরিমাণ রাশি বিনিয়োগের দরকার রয়েছে এই ব্যবসায়, তবে আপনি যদি ব্যাংক থেকে লোণ নেন, তবে আপনি ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
চা ব্যাগ তৈরিতে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল –
ফিল্টার পেপার –
এর ভিতরে চায়ের পাতা স্টোর করতে হবে। এই কাগজটি সুক্ষ ছিদ্রযুক্ত এবং পাতলা, পাশাপাশি সহজে ভিজে যায় না, তাই এই কাগজটি চা ব্যাগ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
চা পাতা –
আপনি যেমন প্রকারের ব্যাগ বিক্রি করতে চান, তেমন চা পাতা কিনতে হবে।
বিভিন্ন প্রকারের চা –
সাধারণ চা, গ্রীণ টি, উলং টি, ব্ল্যাক টি, হার্বাল টি
চা ব্যাগগুলিতে চা পাতা পূরণ করার প্রক্রিয়া –
চা ব্যাগ তৈরীর মেশিনের সাহায্যে প্রস্তুত চা পাতাগুলি ফিল্টার পেপারে পূরণ করতে হয়। সাধারণত প্রায় ২-৪ আউন্স চা পাতা একটি টি ব্যাগে ভরা হয়। এর পরে, একটি প্যাকিং মেশিনের সাহায্যে ব্যাগটি সিল করা হয়। টি ব্যাগের সাথে একটি সুতো সংযুক্ত থাকে।
চা ব্যাগ ব্যবসায় থেকে লাভ –
আপনি চায়ের পাতার গুণমান অনুযায়ী ব্যাগের দাম নির্ধারণ করতে পারেন। এই ব্যবসা থেকে খুব ভাল লাভ করা যায়। এর আরও বিক্রয়ের জন্য, আপনি বাজারে পাইকারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এগুলি ছাড়াও আপনি হোটেল বা অফিসের লোকের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এই ব্যবসা আপনাকে মাসে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন দিতে পারে।

ছেলে থেকে বুড়ো সবারই প্রিয় টক ঝাল কদবেল। কদবেলের আচার, কদবেল মাখা সকলেরই অত্যন্ত পছন্দের। যারা বাগান করতে পছন্দ করেন, বিশেষত টবে, তাদের জন্য কদবেল এক আদর্শ ফল। কদবেলের আকার অনেকটা টেনিস বলের মতো। শরতের শুরুতে কদবেল বাজারে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এই ফলের মন মাতানো স্বাদ বিশেষ করে মহিলাদের ভীষণই পছন্দের।
টবে কদবেল চাষের পদ্ধতি (Farming Process)
মন কাড়া স্বাদের জন্য পাকা কদবেল সবার কাছেই অত্যন্ত প্রিয়। কদবেল গাছে ফুল আসে মার্চ-এপ্রিল মাস নাগাদ। তবে ফল পাকতে সময় লাগে সেপ্টেম্বর-অক্টবর। টবে রোপনের জন্য কদবেলের কলমের চারা বেশি ভালো। কলমের চারা থেকে কয়েক বছরের মধ্যে ফুল-ফল ধরে। ছাদের টবে এই গাছের চাষ সহজেই করা যায়। জোড় কলম করে এর কলম তৈরি করা যায়। এ গাছের চাষাবাদ অনেকটা বেলের মতোই।
মাটি তৈরি (Land Preparation)
হাফ ড্রামে অথবা টবে পাঁচ সেন্টিমিটার পুরু করে ইটের খোয়া বিছিয়ে তার ওপর ১০ সেন্টিমিটার বালির স্তর দিতে হবে। ড্রামের তলার দিকে জল বার করে দেওয়ার জন্য ছিদ্র রাখতে হবে। এবার তিন ভাগ দো-আঁশ মাটির সাথে দুই ভাগ গোবর সার, ড্রামপ্রতি ২০০ গ্রাম এমওপি (পটাশ) সার, ২৫০ গ্রাম টিএসপি (ফসফেট) সার, ১ কেজি হাড়ের গুঁড়ো, ৫০ গ্রাম জিপসাম সার, ২০ গ্রাম ম্যাগেনেসিয়াম সালফেট (ম্যাগসাল) সার ও ১০ গ্রাম দস্তা সার মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে ড্রামে বা টবে ভরে হালকা করে জল দিয়ে মাটি ভিজিয়ে এক থেকে দুই সপ্তাহ রেখে দিতে হবে।
ড্রাম বা টবের ঠিক মাঝখানে কদবেলের কলম বসিয়ে কলমের গোড়ার মাটি শক্ত করে চেপে দিতে হবে। কলম লাগানোর পর গাছের গোড়ায় জল দিতে হবে। সোজা ভাবে কলম রাখতে গেলে, গোড়ার কাছাকাছি কাঠি পুঁতে তার সাথে কলম বেঁধে দিলে ভালো। শীতকাল ছাড়া বছরের যেকোনও সময় কদবেলের কলম লাগানো যায়। ছাদের ওপর রোদের মধ্যে কদবেলের গাছ রাখা উচিত। এতে গাছের ভালোই হবে।
ফলন এবং পরিচর্যা (Caring)
কলমের গাছে ফুল ফাল্গুন-চৈত্র মাসে নাগাদ আসে। শরৎকালে ফল পেকে যায়। ডালপালা ফল সংগ্রহ করার সময় কিছু ছেঁটে দেওয়া উচিত। এর ফলে পরের বছর ফলন ভালো হবে। কদবেল গাছে ফুল-ফল ভালো আনার জন্য প্রতি বছর ফল তোলা শেষ হলে গাছের গোড়ার মাটিতে ড্রামপ্রতি ১৫০ থেকে ২৫০ গ্রাম ইউরিয়া সার, ১০০ গ্রাম এমওপি সার, ১০০ গ্রাম টিএসপি সার দুই কেজি প্যাকেটের কম্পোস্ট সারের সাথে মিশিয়ে গোড়ার মাটি নিড়িয়ে তার সাথে মিশিয়ে সেচ দিতে হবে।
গাছের বৃদ্ধি ভালো হলে বছরে একবার সার দিলে হবে না। বর্ষাকালের আগেও ঠিক একই ভাবে পুনরায় সার দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে টব বা ড্রামের মাটি যাতে না শুকিয়ে যায়। টবের মাটি কখনো শুকিয়ে গেলে নিয়ম করে সেচ দিয়ে নিতে হবে।

যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশে হতে পারে সারের সংকট

বিদেশ থেকে খালি হাতে ফিরে ড্রাগন চাষে সাফল্য

নাসিরনগরে বন্যায় তলিয়ে গেল কৃষকের বাদামখেত

পানি দিতে অতিরিক্ত টাকা

কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তারা এক সঙ্গে কাজ করতে রাজি

‘শিক্ষিত কৃষক’ বলেই তাঁকে নিয়ে মানুষের আগ্রহটা বেশি

ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বীজ কিনে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত

বোরো কাটতে বাড়তি খরচ ঃ হাসি নেই কৃষকের মুখে

পেঁয়াজের ক্ষতি পুষিয়ে দিচ্ছে সাথি ফসল বাঙ্গি

নিরাপদ খাদ্য: দেশি মাছ কাকিলাকে যেভাবে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা

স্মার্ট ডিভাইসে মাছ চাষে বিপ্লব

চীনে পানিবিহীন হাঁসের খামার

কলাপাড়ায় ৩০ মণ জাটকা জব্দ

ফরিদপুরে ধানের ভালো দামে কৃষকের মুখে হাসি

ধানে পোকার আক্রমণে দিশেহারা চাষিরা

ঠাকুরগাঁওয়ে চাষ হচ্ছে ‘ব্ল্যাক রাইস’

মানুষের নিষ্ঠুরতা থেকে কুকুরকে উদ্ধার করলো গরু

হাই প্রেসার কমানোর সহজ ৫ উপায়

অসময়ের বন্যায় সব শেষ তিস্তাপাড়ের কৃষকের

পাবনায় পাঁচ মাসে ৫ কোটি টাকার শামুক বিক্রি
শীর্ষ সংবাদ
-
বাংলাদেশে ‘প্রায় বিলুপ্তি’র পথে ১০০-এর বেশি দেশীয় মাছ – দা এগ্রো নিউজ
-
মাছ চাষে স্মার্ট প্রযুক্তির উদ্ভাবন বাংলাদেশি তরুণের
-
অর্গানিক খাদ্য: বাংলাদেশে বাড়ছে চাহিদা কিন্তু মান নিশ্চিত হচ্ছে কী?
-
ভারতের কঠোর পদক্ষেপ যেভাবে বাংলাদেশের গরু খামারিদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে গেল
-
পরিবারের সদস্যদের জন্য ভেজালমুক্ত খাবার নিশ্চিত করতেই ছাদে বা বারান্দায় ফল,সবজি চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছেন মানুষ
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন