পরিবেশ
বৈরি আবহাওয়ার জন্য আমরা কতটা তৈরি?
লেখক
জাগোনিউজ২৪.কম
সাধন সরকার
বৈরি আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাবে অতিবৃষ্টি, দীর্ঘ বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বজ্রপাত যেন পিছু ছাড়ছে না। সম্প্রতি কয়েক দফায় বন্যায় বাংলাদেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের বিস্তীর্ণ জনপদ প্লাবিত হয়েছে। জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। বন্যায় ব্রহ্মপুত্র, মেঘনা ও গঙ্গা-পদ্মা অববাহিকার পানি একসাথে বেড়ে বন্যাকে স্থায়িত্ব দিয়েছে।
সাম্প্রতিক বন্যার সাথে ১৯৮৮, ১৯৯৮ ও ১৯৯৯ বন্যার তুলনা করলেও বেশি বলা হবে না! গত প্রায় ১০০ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আঘাত হানে। ধারণা করা হচ্ছে, গত দুই দশকে বিশ্বের তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেছে। বাংলাদেশের মতো দেশে জলাভূমি ও বনভূমির পরিমাণ কমে যাওয়ায় বিপদ আরও বাড়ছে। বাড়তি তাপ জমা হচ্ছে সাগরে। বিশ্বজুড়ে আবহাওয়ার এই চরমভাবাপন্ন ও ক্ষুদ্ধ আচরণে বদলে যাচ্ছে পৃথিবীর চিরচেনা রূপ। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। অতিরিক্ত তাপমাত্রার কবলে পড়ে অষ্ট্রেলিয়া, ইউক্রেন ও ব্রাজিলে দেখা দিয়েছে দাবানল।
আবহাওয়া অধিদপ্তর, সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য মতে, বাংলাদেশে ১৯৬০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৪০টিরও বেশি ঘূর্ণিঝড় আঘাত এনেছে। মে মাসে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত হানার পরিমাণ বেশি। বিগত তথ্য বলছে, দেশে প্রতি ৭ থেকে ১০ বছর পরপর একটি বড় বন্যা হয়েছে। কিন্তু গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশে একের অধিক বন্যা হয়ে গেছে। চট্টগ্রাম বিভাগে বৃষ্টিপাত ক্রমাগত বাড়ছে।
আবার দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বৃষ্টিপাত কমে আসার ফলে বাড়ছে লবণাক্ততা। পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ ও হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থান হওয়ায় বন্যা এদেশে স্বাভাবিক, তবে কয়েক বছর ধরে নানাবিধ প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাংলাদেশের পিছু ছাড়ছে না। মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমনটি হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। সাম্প্রতিক সময়ে বজ্রপাত বাংলাদেশে যেন প্রধান দুর্যোগগুলোর একটি হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত ছয় মাসে ২২৫ জন বজ্রপাতে মারা গেছে। যেখানে ২০১৯ সালে সারা বছরে মারা গিয়েছিল ২৩১ জন। গত ১০ বছরে বজ্রপাতে মারা গিয়েছে প্রায় ৩ হাজার জনের মতো।
বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড়ে সুন্দরবনই সবসময় বাংলাদেশকে আগলে রেখেছে। গত দুই দশকে বাংলাদেশ দুর্যোগ মোকাবিলার যে সক্ষমতা অর্জন করেছে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তার চেয়ে আরও কয়েকগুণ প্রাকৃতিক দুর্যোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমনটি হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশে দেশে দেখা দিচ্ছে নানা ধরনের দুর্যোগ। জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তনের প্রধান কারণ মাত্রাতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণ তথা বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগের কারণে প্রত্যেকটি দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সব দেশ বা স্বল্পোন্নত দেশসমূহ কিন্তু জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের জন্য দায়ী নয়, আর দায়ী থাকলেও তার প্রভাব নগণ্য। যেসব দেশ কার্বন নিঃসরণে সবচেয়ে কম দায়ী তারাই জলবায়ু পরিবর্তনগত দুর্যোগের সবচেয়ে বেশি শিকার!
উন্নত দেশসমূহের মাত্রাতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণের ফলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে, মেরু অঞ্চলের বরফ গলছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। সম্প্রতি জাতিসংঘ তাদের এক সতর্কবার্তায় বলেছে, ২০১৫ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত এই পাঁচ বছর ছিল পৃথিবীর উষ্ণতম বছর। ‘সায়েন্স অ্যাডভাইজরি গ্রুপে’র বরাত দিয়ে জাতিসংঘ বলেছে, শিল্পযুগের (১৮৫০ থেকে ১৯০০) আগের তুলনায় ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এ সময়ের গড় তাপমাত্রা ১.৫ সেলসিয়াস বেশি। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১৮ সালে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের নিঃসরণের হার ২ শতাংশ বেড়েছে। এর ফলে ২০১৮ সাল ২ হাজার ৭০০ কোটি টন কার্বন-ডাই- অক্সাইডের নিঃসরণের রেকর্ড ছুঁয়েছে। তথ্যে আরও বলা হয়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১৯৯৩ সাল থেকে গড়ে ৩ দশমিক ২ মিলিমিটার হারে বেড়েছে। আর ২০১৪ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত এই বৃদ্ধির হার ছিল ৫ মিলিমিটারে ঠেকেছে ।
করোনা-কালে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কমে গেলেও আবার তা বাড়তে শুরু করেছে। করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে চলতি বছরের জলবায়ু সম্মেলনও পিছিয়ে গেছে। ২০১৫ সালে জলবায়ু সম্মেলনে হওয়া ‘প্যারিস চুক্তি’ মানতে উন্নত দেশসমূহ এখনও একমত হতে পারছে না! যেভাবে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে তাতে করে আগামীতে সমগ্র মানবজাতির জন্য কী অপেক্ষা করছে তা কেউ-ই বলতে পারছে না! তবে ২০৫০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে সমগ্র মানবজাতির জন্য খারাপ কিছু অপেক্ষা করছে বলে ধরে নেওয়া যায়! জলবায়ুজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশসমূহের জন্য উন্নত দেশসমূহ প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অর্থায়ন দিতেও গড়িমসি করছে। সম্প্রতি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে পৃথিবীকে রক্ষার দাবিতে সোচ্চার হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পরিবেশকর্মীরা।
জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক আন্তসরকারি প্যানেলের (আইপিসিসি) নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিমালয় থেকে শুরু করে আ্যান্টর্কটিকাজুড়ে বরফ ও হিমবাহের স্তূপ দ্রুত হারে গলে যাচ্ছে। মূলত গ্রিনহাউস গ্যাসের উদ্গীরণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এই ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। আবার সমুদ্রের লবণাক্ততার বিরূপ প্রভাব বাষ্পীভবনের হারকে বাড়িয়ে দিয়েও সমগ্র পানিচক্রের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ফলে দেখা দিচ্ছে প্রকৃতির বিরূপ প্রভাব। জাতিসংঘের শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট দুর্যোগে বাংলাদেশে প্রায় ২ কোটির মতো শিশুর জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে (যদিও এর মধ্যে রোহিঙ্গা শিশুরাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে)। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, উপকূলীয় লবণাক্ততাসহ নানা কারণে এসব শিশু ঝুঁকিতে রয়েছে।
উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড়ে ১৯৭০ সালে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ৩ লাখ এবং ১৯৯১ সালে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে। বাংলাদেশ যদিও আগের থেকে দুর্যোগ মোকাবিলায় বর্তমানে বহুগুণ সক্ষমতা অর্জন করেছে। আবার জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ নিজের মতো করে কাজ করে যাচ্ছে।
মূলত মানুষের নানাবিধ কর্মকাণ্ডের ফলে পরিবেশে যে তাপ তৈরি হয় তার প্রায় সবটাই সমুদ্র শুষে নেয়। তাই বরফ গলার হার আগের থেকে বেড়েই চলেছে, বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা! জলবায়ু দুর্যোগের শিকার হয়ে দেশে দেশে মানুষ উদ্বাস্তু হচ্ছে। তাই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্ব নেতাদের এখনই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কেননা জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে উপকূলীয় দেশসমূহে মানুষের জীবনযাত্রার ওপর ব্যাপকভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বিশ্ব অর্থনীতির গতি ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে। মানুষে মানুষে বৈষম্য তথা অসমতা তৈরি হচ্ছে। এখনই বাংলাদেশসহ সব দেশকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে অগ্রসর হতে হবে।
আগামী দিনের খরা, দাবদাহ ও হিমবাহ গলনের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। বিশ্বের প্রতিটি দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কিশোর-তরুণ জনগোষ্ঠীকে বৃক্ষরোপণের প্রতি উৎসাহিত করতে হবে। পলিথিন-প্লাস্টিকের ব্যবহার যথাসম্ভব কমিয়ে আনতে হবে। মনে রাখতে হবে, প্রায় সাড়ে ৭৫০ কোটি মানুষের এই সুন্দর পৃথিবী অযাচিত কর্মকাণ্ডের ফলে একটু একটু করে আমরা যদি অনিরাপদ করে তুলি তাহলে তার বিরূপ প্রভাব ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর মারাত্মকভাবে পড়বে।
আপনার জন্য নির্বাচিত সংবাদ
-
নিরাপদ খাদ্য: দেশি মাছ কাকিলাকে যেভাবে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা
-
নিপাহ্ ভাইরাসঃ খেজুরের রস খাওয়ার আগে সতর্ক থাকতে যা করণীয়
-
ফুল চাষে যেসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে
-
চন্দ্রমল্লিকা চাষের নিয়ম-কানুন
-
আলু থেকে জন্ম নেবে গোলাপ গাছ
-
সিলেটে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের সম্ভাবনা
-
জারবেরা চাষে কোটিপতি আনোয়ার
-
এই ফুলগাছগুলো লাগাতে পারেন
-
ট্রে আর টবে ফুল চাষ করে মাসে ৫০ হাজার আয় করছেন যে যুবক
-
বেকারত্ব দূর করতে ফুল চাষ


শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

দেশের বিভিন্ন রাজ্যেই বর্ষার (Monsoon 2021) প্রভাবে চলছে বৃষ্টিপাত। এসময় কৃষকেরা খারিফ শস্য (Kharif Crops) বপনে তৎপর হয়ে ওঠেন। এই খরিফ মরসুমে কৃষকভাইরা সাধারণত অঞ্চলভেদে ধান, অড়হর, সোয়াবিন সহ বিভিন্ন চাষে মনযোগ দিয়ে থাকেন ৷ তবে এসব ছাড়াও, ঔষধি গুন সমৃদ্ধ (Medicinal Crops) গাছ চাষে বর্ষায় যে কতটা লাভ হতে পারে সে সম্পর্কে অনেকেই হয়তো জানেন না৷
বিশেষ করে বর্ষাকালেই এমন বহু ঔষধি গুন সম্পন্ন গাছ রয়েছে যাদের চাষ হতে পারে লাভজনক৷
বর্ষাকালে কোন কোন ঔষধি উদ্ভিদের চাষ করা যেতে পারে অথবা এই চাষ কীভাবেই বা করা যাবে সে বিষয়ে সঠিক তথ্য না পাওয়ার কারণেই অনেকের কাছে বিষয়টি অধরা৷ চলুন এই প্রতিবেদনে এমনই কিছু গাছ নিয়ে আলোচনা করা যাক যা কৃষকদের জন্য হতে পারে লাভদায়ক৷ তবে সঠিক সময়ে, সঠিক রোপন, সেচ, কীটনাশক দেওয়ার প্রয়োজন এগুলিতে, না হলে এর ওপর খারাপ প্রভাব পড়তে পারে৷
অশ্বগন্ধা –
বর্ষায় এর চাষ ভালো৷ জুন থেকে অগস্ট পর্যন্ত এর চাষ করতে পারেন৷ এর বিভিন্ন জাত রয়েছে৷ উন্নত মানের গাছের চাষে কৃষকের লাভের পরিমাণও বৃদ্ধি পেতে পারে৷ উল্লেখ্য, প্রতি হেক্টরে ৫ কিলোগ্রাম বীজ ব্যবস্থা করতে হবে৷ যদি কেউ ১ হেক্টর জমিতে অশ্বগন্ধার চাষ করতে চায় তাহলে তাকে প্রায় ৫০০ বর্গমিটারে নার্সারি তৈরি করতে হবে৷ প্রায় ১ সেন্টিমিটার গভীরে বীজ বপন করতে হবে৷
শতমূলী –
শীত বাদ দিয়ে বছরের যে কোনও সময়ে এই গাছের চাষ করতে পারেন৷ বর্ষাকালে এই চারা রোপন করলে সহজেই তা বেড়ে উঠতে থাকে৷ তবে বীজ বপনের আগে বীজ ১ দিন পর্যন্ত হালকা গরম জলে ভিজিয়ে রাখতে হয়৷
যষ্টিমধু –
জুলাই থেকে অগস্ট পর্যন্ত এর চাষ করা হয়৷ আর তাই জুন থেকেই এর প্রস্তুতি শুরু করে দেন কৃষকেরা৷ জলনিকাশি ব্যবস্থা উচ্চমানের হওয়া প্রয়োজন এই গাছ চাষের জন্য৷ মনে রাখতে হবে এর চাষের আগে জমিতে কমপক্ষে ১৫ টন গোবর সার দেওয়া প্রয়োজন, এরপরেই এটি চাষ করা উচিত৷
ঘৃতকুমারী –
এর ভালো উৎপাদনের জন্য জলনিকাশি ব্যবস্থা ঠিক রাখতে হবে৷ এই ধরনের ঔষধি গুনসম্পন্ন গাছ শীতকাল বাদ দিয়ে যে কোনও সময় চাষ করতে পারেন৷ বর্ষাকালে দূরত্ব রেখে বীজ বপন করতে হবে৷ কম সময়ের মধ্যেই ব্যবহারোপযোগী হয়ে ওঠে এগুলি৷
অগ্নিশিখা বা কলিহারি –
এটি চাষের জন্য কৃষকেরা জুন মাসেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন৷ জুলাইয়ে ভালো বৃষ্টিতে এর চাষ শুরু করা যেতে পারে৷ উল্লেখ্য, ১ হেক্টর জমির জন্য প্রায় ১০ ক্যুইন্টাল কন্দের প্রয়োজন৷ এটি চাষের আগেও জমিতে গোবর সার প্রয়োগ করে তা প্রস্তুত করে নিতে হবে৷

পৃথিবীতে ভোজ্য মসলা যতরকম আছে তারমধ্যে দারুচিনি সবথেকে উল্লেখযোগ্য। এই প্রাচীনতম মসলা বহুদিন ধরে ওষধি হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে চলেছে। এছাড়াও খাবারে স্বাদ বাড়ানো থেকে শুরু করে, পানীয় এবং তরল মশলাদার খাবারে স্বাদ বাড়ানোর জন্যও এই দারচিনির ব্যবহার হয়। এলাচ, গোলমরিচ, লবঙ্গের সাথে সাথে দারুচিনির নামও মসলা হিসেবে একই পংক্তিতে উচ্চারিত হয়। বহু কৃষক দারুচিনির চাষ করে ভীষণভাবে উপকৃত হয়েছেন। বাজারে এই দারুচিনির চাহিদা প্রচুর পরিমানে থাকায়, এই চাষে ভালো লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও সৌখিন মানুষেরাও ভালোবেসে দারুচিনির চাষ বাড়িতে করে থাকেন। দারুচিনি গাছের বাকল, ফুল, কুঁড়ি, পাতা, ফল, শেকড় সবকিছুই কাজে লেগে যায়। দারুচিনি গাছ বাড়িতে চাষ করতে গেলে ঘরে ছাদে দুই জায়গাতেই চাষ করা যায়।
মনে রাখতে হবে এই চাষ করতে গেলে উপযুক্ত পরিমানে রোদ দরকার। বাংলার জলবায়ুতে মূলত শীতকালে এই চাষ করা সবথেকে ভালো। জানুয়ারি মাসে দারুচিনি গাছে ফুল ফোটা আরম্ভ করে, এবং এই গাছের ফল পাকতে আরম্ভ করে জুলাইয়ে। সেইসময়ই ফল থেকে বীজ সংগ্রহ করে নিয়ে এসে বাগানে বা টবে রোপন করে দেওয়া উচিত।
প্রয়োজনীয় রোদ (Sunlight)
কড়া সূর্যালোক দারুচিনি জন্য প্রয়োজনীয়, তাই এটি পর্যাপ্ত রোদ পাওয়া যায় এমন জায়গায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দারুচিনি রোপন করতে গেলে রৌদ্রোজ্জ্বল স্থান যেমন জানালার ধারে, ব্যালকনি কিংবা ছাদের খালি স্থান ব্যবহার করতে হবে।
উপযুক্ত মাটি (Soil)
দারুচিনি চাষের জন্য ভাল মানের মাটি ব্যবহার করা আবশ্যক। বাগানের মাটি ব্যবহার না করাই ভালো, কেননা এতে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। অনে সময় আমরা আশেপাশ থেকে মাটি নিয়েই টব ভরে গাছ লাগানো হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সংবেদনশীল গাছগুলোতে এই উপায় কার্যকরী হয় না। নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভাল এমন মাটি ব্যবহার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে উত্তম নিষ্কাশনযুক্ত বেলে দোআঁশ মাটি ব্যবহার করা সবথেকে উত্তম। জেনে রাখা ভালো দারুচিনি খরা একদমই সহ্য করতে পারে না। মাটির বিকল্প হিসেবে ১৫% ট্রাইকোকমপোস্টযুক্ত কোকোডাস্ট ব্যবহার করা যেতে পারে।
বাইরে চাষ করার জন্য এক মিটার (৩০ সেন্টিমিটার গভীর) পর্যন্ত গর্ত করে মাটি দিয়ে পূরণ করে নিতে হবে। ঘরের ভিতরে বা ছাদবাগানের দারুচিনি চাষের জন্য একটি বড় পাত্র প্রয়োজন হবে।
রোপন (Planting)
দারুচিনির বীজ সংগ্রহও করা যায় অথবা নার্সারি থেকে দারুচিনির গাছ কিনেও আনা যায়।
বাইরে চাষের ক্ষেত্রে
দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে ১ মিটার x ১ মিটার এবং ৩০ সেমি গভীরতায় খনন করে মাটি দিয়ে গর্তটি পূরণ করতে হবে।
ঘরের মধ্যে টবে রোপনের ক্ষেত্রে
নিচে গর্ত সহ বড় সিরামিক পাত্র (৬০ x ৫০ সেমি) ব্যবহার করতে হবে। পাত্রটি মাটি বা কোকোডাস্ট দিয়ে পূরণ করে নিতে হবে। ৩০ সেন্টিমিটার গভীরতা এবং ৩০ সেন্টিমিটার প্রস্থের একটি গর্ত তৈরি করতে একটি বাগান ট্রোয়েল ব্যবহার করে নেওয়া ভালো। বীজ ব্যবহার করলে ১.৫ সেন্টিমিটার গভীর গর্ত তৈরি করে নেওয়া উচিত। এবার গাছটি গর্তের মধ্যে রেখে মাটি দিয়ে চাপা দিতে হবে। বীজ ব্যবহার করলে প্রতি ১.৫ সেমি গর্তে একটি করে বীজ পুঁততে হবে এবং মাটি দিয়ে বীজটি ঢেকে দিতে হবে।
মাটি সবসময় ভেজা রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল দিতে হবে। দারুচিনি গাছ পাত্রে রোপন করার পর, টবের নিচের গর্ত থেকে জল বের না হওয়া পর্যন্ত জল দিতে হবে। টবের উপরের ৫ সেন্টিমিটার শুকিয়ে গেলেই আবার গাছটিকে জল দিতে হবে।
গাছের পরিচর্যা (Caring)
দারুচিনি গাছে নিয়মিত সার প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম বছর ৫০ গ্রাম টিএসপি, ৭৫ গ্রাম এমওপি ও ৫০ গ্রাম ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হবে। প্রতিবছর ২-৩ কেজি ট্রাইকোকম্পোস্ট ও সার প্রয়োগ শেষে একই হারে টিএসপি, এমওপি ও ইউরিয়া দিতে হবে।
দারুচিনি প্রথম ধরতে দুই থেকে তিন বছর সময় নেয় এবং তার পরে প্রতি দুই বছর পরপরই ফসল দিতে থাকে। দারুচিনি গাছ কম করে ১০-১৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। তাই একে নিয়মিত করে ছোট রাখতে হবে। পাঁচ বছর বয়সী দারুচিনি গাছ থেকে নিয়মিত দারুচিনি সংগ্রহের ডাল পাওয়া সম্ভব। দারুচিনি ব্যবহার করার জন্য যে শাখাগুলি কাটা হবে সেগুলি থেকে বাকল তুলে নিতে হবে, বাকলগুলি ব্যবহার করার আগে জলে ভালোভাবে ভিজিয়ে নেওয়া উচিত।

পৃথিবীতে জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে, হারিয়ে যাচ্ছে বহু প্রাণী ও উদ্ভিদ বৈচিত্র। চাষবাসের জমিরও সংকুলান ঘটছে সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে। গগনচুম্বী বাড়ি ঘিরে ফেলছে সমস্ত ফাঁকা জমিন। শখ করে মানুষ খোলা জায়গায় যে গাছ লাগবে অথবা ফল-ফুলের চারা সেই উপায়ও আর নেই। গাছ লাগানোর জন্য সামান্য জায়গাও ফাঁকা থাকছে না আর। তবে আমাদের করণীয় কী? বৃক্ষরোপন কি তবে অচিরেই বন্ধ হয়ে যাবে। বেঁচে থাকার জন্য তো গাছ লাগাতে হবেই। বাড়ির একটুকরো বারান্দা অথবা ব্যালকনিতেও সুন্দর ভাবে ইচ্ছা করলে গাছ লাগানো যায়। বাড়ির ছাদেও বানানো যায় সুন্দর বাগিচা। শহরের মানুষদের জন্য ছাদ বাগানের কোনও বিকল্পও নেই। বাড়ির মধ্যেকার ব্যালকনি অথবা ছাদের একটুকরো জমিতেও, ইচ্ছা করলে টবে চাষ করা যায় বিভিন্ন ফুলের ও ফলের গাছ।
শাকসবজি, পেয়ারা, লেবু প্রভৃতি দেশীয় গাছ টবে বাড়তে দেওয়া থেকে শুরু করে বর্তমানে বহু বিদেশী গাছের চারাও মানুষ ব্যালকনি অথবা ছাদে চাষ করছেন। তার মধ্যে থাই মিষ্টি তেঁতুল টবের চাষ পদ্ধতি হিসাবে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। প্রথমত মিষ্টি তেঁতুলের চাষ করতে গেলে, নার্সারি থেকে এই বিশেষ তেঁতুলের সঠিক বীজ নিয়ে আনতে হবে। তবে থাই মিষ্টি তেঁতুলের কলম পাওয়া একটু দুষ্কর কাজ। বুঝে সঠিক চারা নিয়ে আসা বাগান মালিকের উপরেই বর্তায়।
থাই মিষ্টি তেঁতুলের ফুল থেকে ফল ধরতে প্রায় ৭ মাস সময় লাগে। বছরে দু’বার থাই মিষ্টি তেঁতুলের গাছে ফল ধরে। প্রথমবার বর্ষাকালে এবং দ্বিতীয়বার শীতকালে। এই গাছের পরিচর্যা আলাদা করে করার কোনও দরকার পড়ে না। গাছের যত্নআত্তি নিতে হয় ঠিকই, কিন্তু তা বলে, আলাদা করে কোনও বিশেষ যত্ন নিতে হয় না।
গাছ লাগানোর পদ্ধতি (Planting):
থাই মিষ্টি তেঁতুল চাষের জন্য আদর্শ মাটি হল, দো-আঁশ বা বেলে দো-আঁশ মাটি। এই দু’টি মৃত্তিকার মধ্যে যে কোনও একটি বেছে নিন। তারপর বেছে নেওয়া মাটির দুই ভাগ অংশের সাথে গোবর, ১০০ গ্রাম, টিএসপি ১০০ গ্রাম, পটাশ, ২৫০ গ্রাম, হাড়ের গুঁড়ো এবং ৫০ গ্রাম সরিষার খোল একসঙ্গে মিশিয়ে ২০ ইঞ্চি মাপের বড় টবে জল মিশিয়ে রেখে দিতে হবে। ১০ থেকে ১২ দিন পর টবের মাটি ভালো করে খুঁচিয়ে দিয়ে আরও ৪-৫ দিন রেখে দিতে হবে। ৪ থেকে ৫ দিন বাদে মিষ্টি তেঁতুলের একটি ভালো চারা ওই টবে লাগান।
পরিচর্যা(Caring):
চারা লাগানোর প্রথম কয়েক মাস তেমন যত্নের দরকার পড়বে না। অবশ্যই গাছে এই সময়টুকু পর্যাপ্ত জলের যোগান, এবং আগাছা পরিষ্কারের কাজ করতে হবে। ছয় মাস চারা লাগানোর সময়সীমা ফুরোলেই ১ মাস বাদে বাদে গাছে সরষের খোল মিশ্রিত পচা জল দিতে হবে। মনে রাখতে হবে খোল দেওয়ার আগে গাছের মাটি খুঁচিয়ে নিতে হবে।
রোগ দমন (Disease management):
সাধারণত থাই মিষ্টি তেঁতুল গাছে পোকামাকড়ের আক্রমণ দেখা যায় না। কিন্তু বর্ষাকালে অনেক সময় তেঁতুল গাছে ছত্রাক হানা দেয়। এর ফলে তেঁতুল ফেটে যায়। এই অসুবিধার থেকে গাছকে বাঁচাতে হলে, বর্ষাকাল আসার আগেই ভালো ছত্রাকনাশক ওষুধ ১০ দিন অন্তর গাছে স্প্রে করে ছড়িয়ে দিতে হবে।
বাংলার বেজায় টক তেঁতুলের সঙ্গে থাই মিষ্টি তেঁতুলের কোনও তুলনাই চলে না। অত্যন্ত মিষ্টি খেতে এই তেঁতুল থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়ায় চাষ প্রভূত পরিমাণে হলেও, আমাদের রাজ্য এই ফলের চাষ এখনও ততটা গতি পায়নি। কিন্তু আপনি আপনার ব্যালকনি অথবা ছাদে সহজেই এই থাই তেঁতুলের গাছ লাগাতে পারেন।

বেদানা খেতে কার না ভালো লাগে। ছোট থেকে বড় বেদনার প্রতি আকর্ষণ সব্বার। দানাদার এই ফলের বীজ মুখের মধ্যে দিলেই, সুমিষ্ট রোষে মন উতলা হয়ে ওঠে। স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে অত্যন্ত বলবর্ধক এই ফল, রুগীদের পথ্য হিসাবে আদর্শ। বাজারেও এর চাহিদা থাকায়, এই ফলের চাষ বহুল পরিমাণে আমাদের রাজ্যে হয়। তবে বাড়ির ছাদে এই ফলের চাষ নিয়ে অনেকেই ওয়াকিবহাল নন। সহজে, বুদ্ধিমত্ততার প্রয়োগে এই ফলের চাষ বাড়িতেও করা যায়। অনেকেই বাড়ির ছাদে ইদানিং এই ফলের চাষ নিয়ে মেতে উঠেছেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক, বাড়ির ছাদে বেদনা চাষের সহজতম পদ্ধতি। যা শিখে আপনি আপনার পাড়া-পড়শীকেও তাক লাগিয়ে দিতে পারবেন।
script data-ad-client=”ca-pub-3140114751019908″ async=”” src=”https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js”>ছাদে বেদানার চারা লাগানোর জন্য প্রথমে ভালো মানের টব সংগ্রহ করতে হবে। গাছের গোড়ায় যাতে জল না জমতে পারে, তারজন্য টবের তলায় তিন থেকে চারটি ফুটো করে নিয়ে সেগুলি স্টোন চিপস দিয়ে ভালোভাবে বুজিয়ে দিতে হবে। ছাদে রোদ পড়ে এমন জায়গায় ডালিমের টবটিকে রাখতে হবে।
প্রস্তুতি কালে বেলে দোআঁশ মাটি ২ ভাগ, গোবর ১ ভাগ, টিএসপি ৪০-৫০ গ্রাম, পটাশ ৪০-৫০ গ্রাম এবং ২০০ গ্রাম হাড়ের চূর্ণ ভালো করে মিশিয়ে টবে জল দিয়ে প্রায় ১৫ দিন রেখে দিতে হবে। পনেরটা দিন কাটলে টবের মাটি খুঁচিয়ে আলগা করে দিতে হবে। এরপর ৫ থেকে ৬ এরকম আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। এরপরেই লক্ষ্য করা যাবে টবের মাটি ঝুরঝুরে হয়ে আসবে। ঠিক সেইসময় বেদানার কলমের চারা টবে পুঁততে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, সোজা করে বসিয়ে যেন বেদানার চারা রোপণ করা হয়। সরু লাঠি দিয়ে চারাটিকে এরপর বেঁধে দেওয়া উচিত। চারা রোপণের শুরুর দিকে জল অল্প দিলেই চলবে। পরবর্তী কালে জল দেওয়ার পরিমাণ চারাতে বাড়াতে হবে। গাছের গোড়ায় কখনোই যাতে জল না জমে তাতে নজর রাখা উচিত।
বেদানা গাছের চারা লাগানোর ৪-৫ মাস হয়ে গেলে, এক মাস অন্তর সরিষার খোল পচা জল গাছে দেওয়া উচিত। সরিষার খোল ১০ দিন ভালো রূপে জলে ভিজিয়ে নিয়ে সেই পচা খোলের জল হালকা ভাবে গাছের গোড়ায় প্রয়োগ করে নিতে হবে। টবের কিছুটা মাটি ১ বছর হয়ে গেলে বদলে দিতে হবে। মাটি যখন বদলাতে হবে সেই সময়কাল বর্ষার শেষ ও শীতের আগে যাতে হয় তাতে খেয়াল রাখা উচিত। মাঝে মধ্যেই টবের মাটি খুঁচিয়ে উল্টে পাল্টে দেওয়া উচিত।
script data-ad-client=”ca-pub-3140114751019908″ async=”” src=”https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js”>সার প্রয়োগ (Fertilizer)
বেদানার চারা বসানোর আগেই টবে দেওয়া মাটির গর্তে সার দিয়ে নিতে হবে। প্রত্যেক বছর নিয়ম করে এই । গর্ত করার ৮-১০ র প্রয়োগ করা উচিত, এতে গাছের ফলনের মান উন্নত হবে। নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে সার প্রয়োগ করলে বেদনা গাছের বৃদ্ধি দ্রুত হবে।
সারের নাম সারের পরিমাণ/গর্ত
কম্পস্টের গুঁড়া ৫০০ গ্রাম
ইউরিয়া ১৫০ গ্রাম
টিএসপি ১০০ গ্রাম
এমওপি ১০০ গ্রাম
জিপসাম ৭০ গ্রাম
১ বছর বয়সের প্রতিটি গাছে গোবর ১০ কেজি, ইউরিয়া ১২৫ গ্রাম, টিএসপি ১২৫ গ্রাম এবং পটাশ সার ১২৫ গ্রাম প্রয়োগ করতে হবে। প্রতি বছর সারের মাত্রা একটু করে বাড়াতে হবে। পূর্ণ বয়স্ক ১ টি গাছে ৬০ কেজি গোবর, ১.৫ কেজি ইউরিয়া, ১.৫ কেজি টিএসপি এবং ১.৫ কেজি এমওপি (মিউরেট অব পটাশ) সার প্রয়োগ করতে হবে। ওই পরিমাণ সার ২ বারে গাছে প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম বারে মে- জুন মাসে এবং দ্বিতীয় বারে সেপ্টেম্বর- অক্টোবর মাসে গাছের গোড়ায় সারগুলি প্রয়োগ করতে হবে।
ফল সংগ্রহ: (Harvest)
৩-৪ বছর বয়স থেকেই বেদনা গাছে ফল আসতে শুরু করে। ফল পাকতে প্রায় ৬ মাসের মতো সময় লাগে। পরিপুষ্ট ফলের খোসার রঙ হলদে বাদামি বর্ণ নিলেই ফল পেড়ে নিতে হবে। ফল গাছে বেশিদিন থাকলেই তা ফেটে যেতে পারে। বেদনার খোসা অত্যন্ত শক্ত হওয়ার জন্য এই ফল অনেকদিন জমিয়ে রাখা যায়।
ফলন:(Yield)
চার-পাঁচ বছর বয়স হয়ে গেলেই ডালিম গাছ ফল দিতে শুরু করে। তবে জেনে রাখা ভালো প্রথম দিকে এই গাছ ভালো ফলন দেয় না। গাছের বয়স ৮ থেকে১০ বছর হয়ে গেলেই পরিপুষ্ট ডালিম গাছে আসতে থাকে। বয়স বাড়ার সঙ্গে ডালিম গাছের ফলনও বেড়ে যায়। সঠিক ভাবে পরিচর্যা করলে একটা বেদনা গাছ কম করে ২০০ টির মতন ফল দিতে পারে। কম করে ৩০ বছর বেদনা গাছ অত্যন্ত ভালো মানের ফলন দিতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।

যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশে হতে পারে সারের সংকট

বিদেশ থেকে খালি হাতে ফিরে ড্রাগন চাষে সাফল্য

নাসিরনগরে বন্যায় তলিয়ে গেল কৃষকের বাদামখেত

পানি দিতে অতিরিক্ত টাকা

কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তারা এক সঙ্গে কাজ করতে রাজি

‘শিক্ষিত কৃষক’ বলেই তাঁকে নিয়ে মানুষের আগ্রহটা বেশি

ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বীজ কিনে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত

বোরো কাটতে বাড়তি খরচ ঃ হাসি নেই কৃষকের মুখে

পেঁয়াজের ক্ষতি পুষিয়ে দিচ্ছে সাথি ফসল বাঙ্গি

নিরাপদ খাদ্য: দেশি মাছ কাকিলাকে যেভাবে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা

স্মার্ট ডিভাইসে মাছ চাষে বিপ্লব

চীনে পানিবিহীন হাঁসের খামার

কলাপাড়ায় ৩০ মণ জাটকা জব্দ

ফরিদপুরে ধানের ভালো দামে কৃষকের মুখে হাসি

ধানে পোকার আক্রমণে দিশেহারা চাষিরা

ঠাকুরগাঁওয়ে চাষ হচ্ছে ‘ব্ল্যাক রাইস’

মানুষের নিষ্ঠুরতা থেকে কুকুরকে উদ্ধার করলো গরু

হাই প্রেসার কমানোর সহজ ৫ উপায়

অসময়ের বন্যায় সব শেষ তিস্তাপাড়ের কৃষকের

পাবনায় পাঁচ মাসে ৫ কোটি টাকার শামুক বিক্রি
শীর্ষ সংবাদ
-
বাংলাদেশে ‘প্রায় বিলুপ্তি’র পথে ১০০-এর বেশি দেশীয় মাছ – দা এগ্রো নিউজ
-
মাছ চাষে স্মার্ট প্রযুক্তির উদ্ভাবন বাংলাদেশি তরুণের
-
অর্গানিক খাদ্য: বাংলাদেশে বাড়ছে চাহিদা কিন্তু মান নিশ্চিত হচ্ছে কী?
-
ভারতের কঠোর পদক্ষেপ যেভাবে বাংলাদেশের গরু খামারিদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে গেল
-
পরিবারের সদস্যদের জন্য ভেজালমুক্ত খাবার নিশ্চিত করতেই ছাদে বা বারান্দায় ফল,সবজি চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছেন মানুষ
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন