আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

বিশ্ব

বালুচিস্তান: স্বাধীন মাতৃভূমির স্বপ্নের জন্য লড়ছে পাকিস্তানের যে মধ্যবিত্ত তরুণরা

সানা বালুচ লকডাউনের সময় বাড়ি ফেরেন। তারপর নিখোঁজ হয়ে যান।
সানা বালুচ লকডাউনের সময় বাড়ি ফেরেন। তারপর নিখোঁজ হয়ে যান।

বালুচিস্তানে ২০ হাজারের বেশি মানুষ উধাও হয়ে গেছে, যাদের বেশিরভাগই জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক কর্মী। অভিযোগ সামরিক বাহিনীই এর নেপথ্যে। বালুচ মধ্যবিত্তই নাকি তাদের টার্গেট, উদ্দেশ্য বালুচ জাতীয়তাবাদকে নিশ্চিহ্ণ করা। বিবিসির এম ইলিয়াস খানের প্রতিবেদন:

সানা বালুচ নিখোঁজ হওয়ার পর পেরিয়ে গেছে প্রায় তিন মাস।

গত বসন্তে আরও অনেক ছাত্রের মতো তিনিও ফিরে গিয়েছিলেন বাড়িতে। আরও অনেকের মতো তার সামনেও ছিল এক অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ।

সানা বালুচ পড়তেন ইসলামাবাদে পাকিস্তানের সেরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্নাতোকোত্তর ক্লাশের মেধাবী ছাত্র সানার জন্ম বালুচিস্তান প্রদেশের ছোট্ট এক শহর খারানে।

তাদের শহরটি ইসলামাবাদ থেকে শত শত মাইল দূরে দক্ষিণ-পশ্চিম বালুচিস্তানে। সেখানে জনবসতি খুবই কম।

গত ১১ই মে এই খারান শহরের উপকন্ঠ থেকে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে গেলেন সানা।

সানার ঘটনাটি অভিনব কিছু নয়। বালুচিস্তানে এই ঘটনা ঘটেছে আরও বহু মানুষের ভাগ্যে। প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ পাকিস্তানের এই প্রদেশটিতে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ। বালুচিস্তানে প্রাদেশিক স্বায়ত্বশাসনের দাবিতে যে আন্দোলন চলছে সেটি দমনে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী নৃশংস পথ বেছে নিয়েছে বলে অভিযোগ। তবে সামরিক বাহিনী এই অভিযোগ অস্বীকার করে।

বালুচিস্তানে যেসব সেনানিবাস আছে, সেগুলোর ভেতরে নাকি অনেক বন্দীশালা আর নির্যাতন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। পাকিস্তানের হিউম্যান রাইটস কমিশনের ভাষায়, “এসব জায়গা থেকে মানুষ নিখোঁজ হয়ে যায়, সেখানে মানুষের ওপর নির্যাতন চালানো হয়, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এসব কিছুই ঘটে আইনের আওতার বাইরে।” মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হাজারো মানুষ এভাবে নিখোঁজ হয়ে গেছেন।

সানা বালুচের ঘটনাটি জানেন এরকম কয়েকটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসিকে জানিয়েছেন, তাকে খারান শহরের এরকম একটি জায়গাতেই আটকে রাখা হয়েছে।

সানার পরিবার জানে না, কিংবা বলতে চায় না, তিনি কোথায় আছেন। সানা কোথায় আছে সেই তথ্য জানার জন্য তারা আদালতেও যায়নি। এর মানে এই নয় যে তারা সানাকে নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়।

“বালুচিস্তানে থাকলে আপনি এই কাজ করবেন না”, বলছেন একটি সূত্র।

“আপনি নীরবে অপেক্ষা করবেন, ভালো কিছু আশা করবেন। যেমনটা করেছিলেন শাহদাদ মুমতাজের বাবা-মা।”

বালুচিস্তানে স্বাধীনতার দাবিতে বিদ্রোহ দমনে সেনাবাহিনী লড়াই করছে বহু বছর ধরে
বালুচিস্তানে স্বাধীনতার দাবিতে বিদ্রোহ দমনে সেনাবাহিনী লড়াই করছে বহু বছর ধরে

শাহদাদ মুমতাজ বালুচিস্তানেরই আরেকজন ছাত্র। ২০১৫ সালের শুরুর দিকে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। তার পরিবার একেবারে চুপ করে ছিলেন। তাদের ছেলে ফিরে আসে কয়েক মাস পর।

তবে শেষ পর্যন্ত তার বেলায় কী ঘটেছিল সেটা হয়তো অন্যদের জন্য একটা ভালো শিক্ষা হতে পারে।

এ বছরের মে মাসের এক তারিখে শাহদাদ মুমতাজ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে এক গোলাগুলিতে নিহত হন। এটি ঘটেছিল সানা বালুচ নিহত হওয়ার দশদিন আগে।

বালুচিস্তানের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী, বালুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) দাবি করেছিল, শাহদাদ মুমতাজ ছিল তাদের দলের লোক। শাহদাদকে যারা চিনতেন, তারা একথা শুনে বিস্মিত হয়ে গিয়েছিলেন।

বালুচ লিবারেশন আর্মি তাদের বিবৃতিতে বলেছিল, শাহদাদ মুমতাজ মারা গেছেন “পাকিস্তান আর্মি আর তাদের দোসর ডেথ স্কোয়াডের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে।”

শাহদাদ মুমতাজ সামরিক বাহিনীর সঙ্গে এক বন্দুক যুদ্ধে নিহত হন।
শাহদাদ মুমতাজ সামরিক বাহিনীর সঙ্গে এক বন্দুক যুদ্ধে নিহত হন।

শাহদাদ মুমতাজ কি আগাগোড়াই সশস্ত্র বিদ্রোহী হওয়ার প্রস্তুতিই নিচ্ছিলেন, যা তিনি গোপন করেছিলেন তার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের কাছ থেকে? আর যদি তিনি সশস্ত্র বিদ্রোহীই হয়ে থাকেন, তাহলে তাকে যারা বন্দী করেছিল, কেন তারা তাকে ছেড়ে দিয়েছিল?

সানা বালুচও কি সেই পথেই চলেছে?

এসব প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে আছে বালুচিস্তানের সঙ্গে ইসলামাবাদের বৈরি সম্পর্কের ইতিহাসে এবং এই ইতিহাস প্রদেশটির শিক্ষিত তরুণদের মানসে যে প্রতিঘাত তৈরি করছে তার ভেতরে।

বালুচিস্তানের রয়েছে বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদ। পাকিস্তানের মোট আয়তনের ৪৪ ভাগই বালুচিস্তান। অথচ বালুচরা হচ্ছে দেশটির মোট জনসংখ্যার মাত্র ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। বালুচিস্তানের খনিজ সম্পদের আর্থিক মূল্য হিসেব করলে তা এক লাখ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে। কিন্তু কেবল এই বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদ দিয়ে ব্যাখ্যা করা যাবে না বালুচিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বন্দ্ব।

বালুচিস্তান ভৌগোলিকভাবে দক্ষিণ আফগানিস্তানের খুবই কাছে। ঐ অঞ্চলে বহু দশক ধরে সংঘাত চলছে। এই সংঘাতের প্রভাব পড়েছে বালুচিস্তানেও।

শাহদাদ মুমতাজ এবং সানা বালুচের মতো তরুণরা বেড়ে উঠেছেন এরকম এক জগতে।

শাহদাদ মুমতাজ পড়াশোনা করেছেন বালুচিস্তানের দক্ষিণে তার নিজের শহর তুরবাতের এক নামী গ্রামার স্কুলে। তিনি ছিলেন উচ্চশিক্ষিত এবং সামাজিক কাজে বেশ সক্রিয়। কাজ করতেন এইচআরসিপি নামে একটি সংগঠনে। এটি নিখোঁজ ব্যক্তিদের হদিস পাওয়ার জন্য কাজ করতো, যা কিনা বালুচিস্তানের এক বড় সমস্যা।

কিন্তু ২১০৫ সালে শাহদাদ মুমতাজ নিজেই নিখোঁজ তালিকার অংশ হয়ে গেলেন। তবে স্থানীয় এক পর্যবেক্ষকের মতে, শাহদাদ ছিলেন সেই সৌভাগ্যবানদের একজন, যিনি তার আটককারীদের বোঝাতে পেরেছিলেন, তিনি ‘ভালো হয়ে গেছেন’ এবং ‘জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে তার সক্রিয় অংশগ্রহণ এক বড় ভুল ছিল।’

২০১৬ সালে শাহদাদ মুমতাজ যখন ছাড়া পান, তখন তিনি ইসলামাবাদের কায়েদ ই আজম বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সে ভর্তি হন। বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বালুচ বন্ধুর কাছে তিনি বলেছিলেন, বন্দী অবস্থায় তার জীবনে কী ঘটেছিল।

শাহদাদ মুমতাজ ছিলেন সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী। কিন্তু তিনি যে সশস্ত্র বিদ্রোহে যোগ দিয়েছিলেন, তা সবাইকে অবাক করেছিল।
শাহদাদ মুমতাজ ছিলেন সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী। কিন্তু তিনি যে সশস্ত্র বিদ্রোহে যোগ দিয়েছিলেন, তা সবাইকে অবাক করেছিল।

“ও আমাকে বলেছিল, রাজনীতিতে জড়ানো যে কত খারাপ কাজ, বন্দী অবস্থায় তাকে মূলত সেই বার্তাই দেয়া হচ্ছিল”, বললেন শাহদাদ মুমতাজের বন্ধু এই সাবেক ছাত্র। নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে তিনি তার নামটি গোপন রাখার অনুরোধ জানালেন।

“ওরা বলতো, এগুলো বাদ দাও। পড়াশোনায় মন দাও, চাকুরি খোঁজ। কেন খামাকা শ্লোগান দিয়ে সময় নষ্ট করছো, যা থেকে কীনা পাকিস্তানের শত্রুরাই কেবল ফায়দা তুলবে?”

শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে আর মানসিক যন্ত্রণা দিয়ে এই কথাগুলো তাদের মাথায় ঢুকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হতো, বলছেন এই বন্ধু।

“তাদের লাথি মারতো, লাঠি দিয়ে পেটাতো, মেরে ফেলার কিংবা সন্মানহানির হুমকি দিত, দিনের পর দিন ঘুমাতে দিত না। তাদের কেবল ডাল খেতে দেয়া হতো।”

শাহদাদ ডাল খেতে মোটেই পছন্দ করতো না, বলছেন এই বন্ধু। কারণ ডাল খেতে গেলেই নাকি তার বন্দী জীবনের কথা মনে পড়তো।

তবে শাহদাদ মুমতাজের মনে জাতীয়তাবাদের যে শিখা প্রজ্জ্বলিত হয়েছিল, সেটি আসলে কখনোই নিভে যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ধরণের কাজ-কর্মে সক্রিয়ভাবে তিনি অংশ নিতেন, তা থেকে সেটা স্পষ্ট। তিনি যোগ দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট কাউন্সিলে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মীয় উগ্রপন্থী ছাত্রগোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘাতে তিনি আহত হয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে এক ছাত্র বিক্ষোভে অংশ নেয়ায় অন্য কিছু ছাত্রের সঙ্গে তাকেও গ্রেফতার হতে হয়েছিল।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের সঙ্গে সংঘাতে শাহদাদ আহত হয়েছিলেন
বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের সঙ্গে সংঘাতে শাহদাদ আহত হয়েছিলেন

শাহদাদ বালুচদের অধিকার নিয়ে সারাক্ষণ কথা বলতেন, প্রচারণা চালাতেন, বলছেন তার বন্ধু। তার সঙ্গে থাকতো ইতালিয়ান মার্কসবাদী তাত্ত্বিক আন্তনিও গ্রামসির বই, প্রিজন নোটবুকস। তার কাছে এটি যেন ছিল বাইবেল।

“শিক্ষকদের এবং সহপাঠীদের সঙ্গে অন্তহীন বিতর্কে শাহদাদ এই বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে ব্যাখ্যা করতেন, কিভাবে একটি আধিপত্যবাদী সংস্কৃতি চাপিয়ে দিয়ে পাকিস্তান নামের রাষ্ট্রটি বালুচদের নিজস্ব সংস্কৃতি এবং স্বাতন্ত্র্যকে ধ্বংস করছে।”

বালুচিস্তানে বহু মানুষের মধ্যেও রয়েছে এই একই ক্ষোভ। এর শেকড় প্রোথিত ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের জন্মলগ্ন থেকে। ব্রিটেন যখন ভারত ভাগ করলো, তখন উপমহাদেশের রাজা শাসিত রাজ্যগুলিকে বলা হয়েছিল, তারা পাকিস্তানে যাবে না ভারতে যাবে, নাকি আলাদা থাকবে, সেটা তারা নিজেরাই ঠিক করুক।

তখন কালাত নামের প্রদেশটি, যার বেশিরভাগটাই আজকের বালুচিস্তান, স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়। কিন্তু নয় মাস পর পাকিস্তান এটি জোর করে দখল করে নিজের অঙ্গীভূত করে।

কিন্তু এই ঘটনা থেকেই জন্ম নয় বালুচদের অধিকার রক্ষার আন্দোলন। এটি ক্রমশ ঝুঁকতে থাকে বামধারার জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের দিকে। কোন কোন ক্ষেত্রে সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনে।

বালুচিস্তানে সংঘাতের শুরু সেই থেকে। বালুচরা চায় অধিকতর স্বায়ত্বশাসন। তাদের যে বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদ, তার অধিকতর হিস্যা। বিশেষ করে তাদের গ্যাস সম্পদের।

তবে বালুচিস্তানের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী এবং তীব্র সংঘাতের সূচনা হয়েছে ২০০০ সালের শুরু থেকে। সামরিক শাসক জেনারেল পারভেজ মুশাররফ সেখানে অনেকের ভাষায় এক ‘কারচুপির নির্বাচন’ করেন। এ থেকে বিরাট রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়। ২০০৫ সালে রাজনৈতিক বিক্ষোভ সহিংস হয়ে উঠে। বালুচিস্তানের সুই এলাকায় এক নারী চিকিৎসক সৈন্যদের দ্বারা ধর্ষিত হন। কিন্তু এজন্যে কাউকে সাজা দেয়া হয়নি। এর জের ধরে যে ব্যাপক বিক্ষোভ-বিদ্রোহ শুরু হয়, তা দমনে পারভেজ মুশাররফ সেখানে হাজার হাজার সৈন্য পাঠান।

নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক নিপীড়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে
নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক নিপীড়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে

এরপর বিগত বছরগুলোতে সেখানে সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি কেবলই বেড়েছে। তৈরি করা হয়েছে আরও অনেক সেনানিবাস। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো অভিযোগ করছে,সেখানে এমনকি বেসরকারি গোয়েন্দা নেটওয়ার্কও তৈরি করা হয়েছে যাতে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সঙ্গে যারা জড়িত, বা জড়িত বলে সন্দেহ করা হয়, তাদের ধরা যায়। মানবাধিকার কর্মীদের অভিযোগ সেনাবাহিনীর হাতে এভাবে ধরা পড়া মানুষ একেবারেই হাওয়া হয়ে গেছেন। তাদের কখনো আদালতের সামনে হাজির করা হয়নি।

সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, বালুচিস্তানে এবং সীমান্তের ওপারে আফগানিস্তানে যেসব অঞ্চলে ধর্মনিরপেক্ষতার ঐতিহ্য ছিল, সেখানে তারা হীন স্বার্থে ইসলামপন্থী জঙ্গীদের অনুপ্রবেশ ঘটাচ্ছে।

সেনাবাহিনী স্থানীয় অপরাধী গোষ্ঠীগুলোকে বালুচ জাতীয়তাবাদী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আন্দোলন দমনে ব্যবহার করছে এমন অভিযোগও ব্যাপক। এই অপরাধী গোষ্ঠীগুলো এবং বন্দীশিবিরে গিয়ে ‘ভুল শোধরানো সাবেক বিদ্রোহীদের’ দিয়ে নাকি তৈরি করা হয় ‘ডেথ স্কোয়াড’। এই সশস্ত্র গ্রুপগুলো অনুচর হিসেবে কাজ করে, তারা জাতীয়তাবাদী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করে সামরিক বাহিনীকে দেয়। এরপর সামরিক বাহিনী তাদের ‘নির্মূল’ করে দেয়।

ইউরোপ-ভিত্তিক একটি মানবাধিকার সংস্থা ‘হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল অব বালুচিস্তান (এইচআরসিবি) এক হিসেবে জানিয়েছে, অন্তত ২০ হাজার রাজনৈতিক কর্মী নিখোঁজ হয়ে গেছে ২০০০ সালের পর থেকে। এদের মধ্যে ৭ হাজার মারা গেছে।

বালুচিস্তানে এধরণের নিপীড়ন-নির্যাতনের কথা পাকিস্তান সরকার বরাবর অস্বীকার করে।

বিবিসি এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করেছিল সেনাবাহিনীর মুখপাত্র এবং পাকিস্তানের মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রীর সঙ্গে। কিন্তু কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। অতীতে এ ধরণের নির্যাতন, নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনা, নির্যাতন কেন্দ্র বা বিচার বহির্ভূত হত্যার অভিযোগের ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে সামরিক বাহিনী।

অন্যদিকে বালুচিস্তানে ক্ষমতায় আছে যে বেসামরিক সরকার, তারা অতীতে শত শত রাজনৈতিক কর্মীকে এবং সন্দেহভাজন সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হত্যার জন্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর নিজেদের অর্ন্তদ্বন্দ্বকে দায়ী করে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বালুচিস্তানে অব্যাহতভাবে এই নিপীড়ন-নির্যাতনের নীতি এবং ক্ষমতাধর সামরিক বাহিনীর রাশ টেনে ধরতে পার্লামেন্ট এবং বিচার বিভাগের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যর্থতা সেখানকার জাতীয়বাদী গোষ্ঠীগুলোকে আরও চরমপন্থার দিকে ঠেলে দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিষয়ক একটি থিংকট্যাংক ‘কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যশনাল পীস‌’ ২০১৩ সালে বালুচিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল। এটিতে তারা বলেছিল, ‘পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর প্রধান টার্গেট এখন বালুচিস্তানের মধ্যবিত্ত। মনে হচ্ছে, এর উদ্দেশ্য বালুচ জাতীয়তাবাদের সব নিশানা নির্মূল করা এবং এটির যাতে পুনর্জাগরণ না ঘটে সেই সম্ভাবনাও বিনাশ করা‌।’

শাহদাদ মুমতাজ বালুচিস্তানের এই শহুরে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণীরই একজন ছিলেন।

কিন্তু যেসব ছাত্ররা তাকে চিনতেন, তারা বলছেন, কখনোই তাদের একথা মনে হয়নি যে শাহদাদ বন্দুক হাতে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লড়াই করতে যাবেন।

শাহদাদ বরং ২০১৮ সালে তার মাস্টার্স শেষ করে এমফিল কোর্সে ভর্তি হয়েছিলেন। তার আরও ইচ্ছে ছিল এক বন্ধুর সঙ্গে লাহোর যাবেন সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশ নিতে। পাকিস্তানে প্রশাসনিক উচ্চপদে যেতে হলে এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়।

তবে বন্ধুরা একথাও বলছেন, কোন কোন সময় তাদের এমনটাও মনে হয়েছে শাহদাদ যেন ভেঙ্গে পড়ছেন।

“যখন তার পরিচিত কোন রাজনৈতিক কর্মী নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছেন বা তার বিকৃত মৃতদেহ পাওয়া যাচ্ছে, যখন কোন সাংবাদিক বা শিক্ষককে হামলা চালিয়ে হত্যা করা হচ্ছে, তখন ও বলতো, ‘রাষ্ট্র কেবল বন্দুকের ভাষা বোঝে।”

বন্ধুরা শাহদাদকে শেষ দেখেছিল গত জানুয়ারির শেষে। তখন তিনি লাহোর যাচ্ছিলেন তার সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে। এরপর আর শাহদাদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হয়নি। এরপর মে মাসের এক তারিখে বালুচিস্তানের শরপারোদ এলাকায় বন্দুকযুদ্ধে তিনি মারা যান।

সানা বালুচের কাহিনীও শাহদাদ মুমতাজের কাহিনীর চাইতে আলাদা কিছু নয়। আরও শত শত বালুচ রাজনৈতিক কর্মীর কাহিনীও এরকমই।

সানা বালুচও এক বলিষ্ঠ জাতীয়তাবাদী। বিএনপি-এম দলের এক সক্রিয় সদস্য। এক কৃতি ছাত্র, বালুচ সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী। ইসলামাবাদের আল্লামা ইকবাল ওপেন ইউনিভার্সিটিতে এমফিল কোর্সে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।

সানা বালুচ গত মে মাস থেকে নিখোঁজ
সানা বালুচ গত মে মাস থেকে নিখোঁজ

তার একজন শিক্ষক বিবিসিকে জানিয়েছেন, তিনি তার এমফিল থিসিস প্রায় শেষ করে এনেছিলেন। মে মাসের শেষে তার এটি জমা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে যখন লকডাউন জারি করা হলো, তখন তাকে তার বাড়ি ফিরে যেতে হয়।

বালুচ ন্যাশনালিস্ট পার্টির (বিএনপি-এম) একটি সূত্র বলছে, খারানে ফিরে সানা বালুচ তার রাজনৈতিক কাজ শুরু করেছিলেন। তিনি স্থানীয় লোকজনকে জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার জন্য কাগজপত্র তৈরি করে দিতে সাহায্য করছিলেন। পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে লোকজনের নানা সমস্যার সমাধানে সাহায্য করছিলেন।

কিন্তু তার ভাগ্য কী ঘটবে তা এখনো স্পষ্ট নয়।

কোন প্রত্যন্ত এলাকায় খাদের মধ্যে কি তার মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া যাবে? নাকি তিনি অন্য জাতীয়তাবাদীদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তিতে রাজী হয়ে যাবেন? যা এর আগে অনেকেই করেছেন।

নাকি তিনি ‘শুধরে ভালো হয়ে‌’ ঘরে ফিরবেন, চুপচাপ বসে থাকবেন এবং এরপর একদিন শাহদাদ মুমতাজের মতো অস্ত্র হাতে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যাবেন?

এর উত্তর একমাত্র সময়ই দিতে পারবে। কিন্তু তার আগে পর্যন্ত সানা বালুচের পরিবারকে অপেক্ষাতেই থাকতে হবে।

  • সানা বালুচ গত মে মাস থেকে নিখোঁজ

    সানা বালুচ গত মে মাস থেকে নিখোঁজ

  • নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক নিপীড়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে

    নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক নিপীড়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে

  • বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের সঙ্গে সংঘাতে শাহদাদ আহত হয়েছিলেন

    বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের সঙ্গে সংঘাতে শাহদাদ আহত হয়েছিলেন

  • শাহদাদ মুমতাজ সামরিক বাহিনীর সঙ্গে এক বন্দুক যুদ্ধে নিহত হন।

    শাহদাদ মুমতাজ সামরিক বাহিনীর সঙ্গে এক বন্দুক যুদ্ধে নিহত হন।

  • বালুচিস্তানে স্বাধীনতার দাবিতে বিদ্রোহ দমনে সেনাবাহিনী লড়াই করছে বহু বছর ধরে

    বালুচিস্তানে স্বাধীনতার দাবিতে বিদ্রোহ দমনে সেনাবাহিনী লড়াই করছে বহু বছর ধরে

  • সানা বালুচ লকডাউনের সময় বাড়ি ফেরেন। তারপর নিখোঁজ হয়ে যান।

    সানা বালুচ লকডাউনের সময় বাড়ি ফেরেন। তারপর নিখোঁজ হয়ে যান।

  • শাহদাদ মুমতাজ ছিলেন সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী। কিন্তু তিনি যে সশস্ত্র বিদ্রোহে যোগ দিয়েছিলেন, তা সবাইকে অবাক করেছিল।

    শাহদাদ মুমতাজ ছিলেন সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী। কিন্তু তিনি যে সশস্ত্র বিদ্রোহে যোগ দিয়েছিলেন, তা সবাইকে অবাক করেছিল।

  • সানা বালুচ গত মে মাস থেকে নিখোঁজ
  • নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক নিপীড়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে
  • বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের সঙ্গে সংঘাতে শাহদাদ আহত হয়েছিলেন
  • শাহদাদ মুমতাজ সামরিক বাহিনীর সঙ্গে এক বন্দুক যুদ্ধে নিহত হন।
  • বালুচিস্তানে স্বাধীনতার দাবিতে বিদ্রোহ দমনে সেনাবাহিনী লড়াই করছে বহু বছর ধরে
  • সানা বালুচ লকডাউনের সময় বাড়ি ফেরেন। তারপর নিখোঁজ হয়ে যান।
  • শাহদাদ মুমতাজ ছিলেন সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী। কিন্তু তিনি যে সশস্ত্র বিদ্রোহে যোগ দিয়েছিলেন, তা সবাইকে অবাক করেছিল।
বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

এগ্রোবিজ

যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশে হতে পারে সারের সংকট

সারের সংকট
সারের সংকট
সারের সংকট

চলতি বোরো মৌসুমে সার কিনতে কৃষকদের সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা করে বেশি দিতে হয়েছে। আর সরকারকেও সার বাবদ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে বাজেটে বরাদ্দের তিন গুণের বেশি—প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশ এখন মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার আমদানি নিয়ে বিপাকে পড়েছে।

ধান, আলু ও সবজি চাষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এমওপি সারের ৬০ শতাংশ আনা হতো রাশিয়া ও বেলারুশ থেকে। ওই দুই দেশ নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়ায় এখন বাংলাদেশকে এমওপি কিনতে হচ্ছে কানাডা থেকে। বিশ্ববাজারে দাম বেড়ে যাওয়া ও আমদানিতে অনিশ্চয়তার কারণে বাংলাদেশে সারের সংকট হতে পারে। ভর্তুকির চাপ সামলাতে বাংলাদেশকে সব ধরনের সারের খুচরা মূল্য বাড়াতে হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিবিষয়ক সংস্থা ইউএসডিএর চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ‘বাংলাদেশে সার সরবরাহ ও ব্যবহারে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের এমওপি সারের ২০ শতাংশ সরবরাহ কমানো হলে সামনের বোরো মৌসুমে ধান, গম ও রবি মৌসুমের অন্যান্য ফসলের উৎপাদন ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কমতে পারে। এতে বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে।

এমনিতেই এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমাদের ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে সারের কারণে নতুন করে যাতে আর সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

এ এম এম শওকত আলী, সাবেক কৃষিসচিব

তবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, দেশে চলতি বোরো মৌসুমে নতুন করে আর সারের দরকার হবে না। সামনে আলুর মৌসুমে ইউরিয়া, এমওপিসহ অন্যান্য সারের চাহিদা বাড়বে। ওই সময়ের জন্য সার সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ কানাডা ও মধ্যপ্রাচ্যের সার সরবরাহকারী দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে।

জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কানাডা থেকে মোট আট লাখ টন এমওপি সার আমদানির উদ্যোগ নিয়েছি। এ ব্যাপারে ওই দেশের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা স্মারক হয়েছে। ফলে এই সার নিয়ে সরকারের কোনো দুশ্চিন্তা নেই। তবে সার বাবদ সরকারের বিপুল পরিমাণে ভর্তুকি বাড়ছে। এই চাপ নিয়েও সরকার ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ওই ভর্তুকি দিয়ে যাবে।’

কমানো হয়েছে চাহিদা

বাংলাদেশে চলতি অর্থবছরে ৬৯ লাখ টন রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয়েছে। এর মধ্যে ইউরিয়া, টিএসপি, ডিএপি ও এমওপি—এই চার ধরনের সার ব্যবহার হয় ৫৭ লাখ টন। আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের ওই চার ধরনের সারের চাহিদা কমিয়ে ৫৫ লাখ ৫০ হাজার টনে নামিয়ে আনা হয়েছে।

দেশে প্রয়োজনীয় সারের ৮০ শতাংশই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এর মধ্যে এমওপি সারের বড় অংশ আসে রাশিয়া ও বেলারুশ থেকে।

প্রসঙ্গত, ওই চারটি প্রধান সার কৃষকদের কাছে বিক্রির ক্ষেত্রে সরকার ভর্তুকি দিয়ে থাকে। চলতি অর্থবছরে সরকার প্রাথমিকভাবে সারে ভর্তুকি বাবদ ৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে গত ছয় মাসে সারের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। বেশির ভাগ সারের দাম তিন থেকে চার গুণ বেড়ে যাওয়ায় সরকারকে ভর্তুকির পরিমাণ ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা করতে হয়। কিন্তু অর্থবছরের শেষের দিকে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে হিসাব করে দেখা হয়েছে, ভর্তুকির পরিমাণ এবার বেড়ে কমপক্ষে ৩০ হাজার কোটি টাকা গিয়ে দাঁড়াবে।

জিপসাম, জিংক সালফেট ও অ্যামোনিয়াম সালফেট ও ম্যাগনেসিয়াম সালফেট সারে সরকার কোনো ভর্তুকি দেয় না। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কিনে ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছে তা বিক্রি করে থাকেন। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষককেও বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে।

সাবেক কৃষিসচিব এ এম এম শওকত আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এমনিতেই এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমাদের ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে সারের কারণে নতুন করে যাতে আর সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। আর সরকারের অন্যান্য খাতের ভর্তুকি কমিয়ে প্রয়োজনে সারে ভর্তুকি বাড়াতে হবে, যাতে সারের দাম কম থাকে। কারণ, কৃষকের হাতে এখন টাকা কম। বিশ্ববাজার থেকেও খাদ্য আমদানি করা সামনের দিনে আরও কঠিন হতে পারে। ফলে দেশের উৎপাদন ঠিক রাখতে সারের দাম ও জোগান ঠিক রাখা উচিত।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোটেক

কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তারা এক সঙ্গে কাজ করতে রাজি

ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি
ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি

ডাচ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে দুই দেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা একসঙ্গে কাজ করতে রাজি হয়েছেন।

গতকাল সোমবার নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগে অনুষ্ঠিত কৃষি খাতের ব্যবসাবিষয়ক এক সম্মেলনে দুই দেশের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত এগ্রি বিজনেস কনক্লেভে বাংলাদেশের প্রায় ৪০জন উদ্যোক্তা ডাচ কৃষি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি প্রযুক্তি সহযোগিতা ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছে ওয়েগেনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়।

আলোচনায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা প্রযুক্তি কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিলে নেদারল্যান্ডসের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা প্রযুক্তি সহযোগিতা দিতে রাজি থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে ডাচরা প্রস্তুত এবং বাংলাদেশি উদ্যোক্তারাও তাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। এ ছাড়া ডাচ সরকার ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বীজ, পশু খাদ্য, পোলট্রি, হর্টিকালচার ও এ্যাকুয়াকালচার বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম সম্পাদন করেছে, যা ওই দেশের বেসরকারি খাতকে আরও উৎসাহিত করেছে।

আলোচনায় কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করতে তৈরি আছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্কয়ার, ইস্পাহানি এগ্রো, একে খান অ্যান্ড কোম্পানি, প্যারাগন গ্রুপ, এসিআই, জেমকন গ্রুপসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা ডাচ প্রযুক্তির প্রয়োগ সরেজমিনে দেখতে যাবেন।

বাংলাদেশের সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের পোল্ট্রিখাতে সহযোগিতার আলোচনা অনেকটা এগিয়েছে উল্লেখ করে মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, দুই দেশের মধ্যে মৎস্য, পশুপালন ও হর্টিকালচারে সহযোগিতার বিপুল সম্ভাবনা আছে।

কনক্লেভ আয়োজনে প্রথমবারের মতো দূতাবাসের সঙ্গে অংশীদার হয়েছে নেদারল্যান্ডসের কৃষি মন্ত্রণালয়, নেদারল্যান্ডস এন্টারপ্রাইজ এজেন্সি, নেদারল্যান্ডস ফুড পার্টনারশিপ, ডাচ-গ্রিন-হাইজডেল্টা, লারিভ ইন্টারন্যাশনাল, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ।

কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থানকারী নেদারল্যান্ডসের আয়তন বাংলাদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের কম। ২০২১-এ কৃষিপণ্য ও খাদ্য রপ্তানি করে নেদারল্যান্ডস ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি আয় করেছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

পতিত জমিতে চিনাবাদাম চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষক

মেহেরপুর: পতিত ও অনুর্বর বেলে মাটির জমিতে চিনাবাদাম চাষ করে লাভবান হচ্ছেন মেহেরপুরের চাষিরা। ফলন ও বাজার দর ভালো এবং কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন এই এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাদামের চাষ। 

সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা, শ্যামপুর, টেংগারমাঠ ও গোপালপুর গ্রামের অধিকাংশ জমির মাটি বেলে। ফলে এই এলাকার চাষিরা ধান, গম, পাটসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করে খুব একটা লাভবান হতে পারেন না।

ধান কাটার পর এ সব জমি সাধারণত পতিত থাকে। এজন্য ৯০ দিনের ফসল হিসেবে অল্প খরচে বাদাম চাষ করছেন এলাকার চাষিরা।  

মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, জেলায় এবার বাদাম চাষ হয়েছে ১৫ হেক্টর জমিতে। এবার এক বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করতে চাষিদের খরচ হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা সেক্ষেত্রে বাদামের ফলন হয়েছে ৬ থেকে ৭ মণ। আর এ  ফলনে প্রায় ২০ হাজার টাকা ঘরে তুলছেন তারা। বাজারে প্রতিমণ বাদাম বিক্রি হচ্ছে ২৭শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত।  সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা গ্রামের বাদাম চাষি খাঁজা আহমেদ, কাওছার আলী ও ফিরোজ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এলাকার মাটি বেলে হওয়ায় সাধারণত সবজি, আলু ও অন্যান্য ফসল চাষ করার পর জমি পতিত থাকে। সে সময়ে চিনা বাদামের চাষ করা হয়। বাদাম চাষে খরচ কম এবং উৎপাদন ও বাজার দর ভাল। তাই দিন দিন চাষিরা তাদের পতিত জমিতে চিনা বাদামের চাষ শুরু করছেন।  

এছাড়া বাদাম ছাড়ানো, শুকানোসহ যাবতীয় কাজ করে থাকেন এখানকার নারীরা। বাদামের গাছ আবার শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করছেন গৃহিণীরা।  

নারী শ্রমিক সাহানা খাতুন ও জরিমন নেছা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বাদাম ছাড়ানো ও শুকানোর কাজ করে থাকি। এলাকার ২৫/৩০ জন নারী শ্রমিক এ কাজ করে আসছেন।  
গৃহিণী সাজেদা খাতুন ও জামেলা খাতুন জানান, বাদামের লতা জালানি হিসেবে বেশ ভাল। তাই লতাও বিক্রি হচ্ছে।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আক্তারুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, চিনা বাদামের চাষ সাধারণত পতিত জমিতে হয়ে থাকে। এলাকার চাষিরা এই জমিতে বাদামের চাষ করে বাড়তি আয় করছেন। তাই বাদাম চাষ যাতে আরও সম্প্রসারিত হয় সেজন্য কৃষি বিভাগ চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে।  

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

সিলেটে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের সম্ভাবনা

সিলেট বিভাগের উচ্চমাত্রার অ্যাসিডিক জমিতে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কৃষি বিজ্ঞানিরা মৌলভীবাজারের আকবরপুরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে ফুল চাষ করে সফল হয়েছেন। এ ফুল চাষ মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে ১০০ চাষিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে কৃষি গবেষণা কেন্দ্র।

কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের তথ্যমতে, যশোরে বাণিজ্যিকভাবে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল চাষ হয়। যার বাজার দর প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। যশোরের ফুল সারাদেশের পাশাপাশি সিলেটেও আসে প্রচুর। সিলেটে ফুলের বাজার শত কোটি টাকার উপরে। কিন্তু সিলেটে ফুলের চাষ বাণিজ্যিকভাবে হয় না।

সিলেট বিভাগের মাটি অ্যাসিডিক হওয়ায় ফুল চাষ করা যাবে না, সেটাই ছিল প্রচলিক ধারণা। কিন্তু এ ধারণাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যদিয়ে ভুল প্রমাণ করেছেন মৌলভীবাজার আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের একদল গবেষক। মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস এম শরিফুজ্জামানের নেতৃত্বে উচ্চমাত্রার অ্যাসিডিটিক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ফুল চাষ করে সফল হয়েছেন তারা। এ পরীক্ষামূলক চাষে ফলনও হয়েছে ভালো। তাই সিলেট অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট অঞ্চলে অনেক জায়গা অনাবাদি ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। প্রবাসীরা দেশের বাইরে অবস্থান করায় তাদের অনেক জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকে। এ জমিকে আবাদের আওতায় আনতে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের উদ্যোগ নিয়ে আগ্রহী ১০০ চাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে আমন ধান কাটার পর এ অঞ্চলের অনেক জমি পতিত থাকে। ফলে ফুল চাষ করে অনাবাদি জমি থেকে কোটি টাকা উপার্জন সম্ভব।

বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মিরানা আক্তার সুমি জানান, চাষিরা প্রশিক্ষণ শেষে অনেক কিছু শিখেছেন। কী পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে হয়, তা জেনেছেন। ধানের চেয়ে যেহেতু ফুলের দাম বেশি, তাই ফুল চাষে তাদের আগ্রহ বাড়ছে।

ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. সরফ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভালোভাবে জমি চাষ করে নির্দেশিত মাত্রায় জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয়। অন্য ফসলের মতোই এর চাষ পদ্ধতি সহজ। বেড তৈরি করে ফুল চাষ করতে হয়। প্রতিটি বেডের দৈর্ঘ যে কোন মাপের হতে পারে। তবে প্রস্থে ১.২-১.৫ মিটার হলে ভালো।’

তিনি বলেন, ‘কলম (বীজ) লাগানো থেকে তিন মাস পর স্টিক সংগ্রহ শুরু হয়। সংগ্রহ করা যাবে পরবর্তী ২৫ দিন। গ্লাডিওলাস ৫টি জাতসহ মোট ১২টি প্রজাতির ফুলের পরীক্ষা করে আমরা সফল হয়েছি।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

জৈব

জৈব পদ্ধতিতে ফসলের রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণ

সবুজ বিপ্লবের সময়ে পেস্টিসাইড ব্যবহারকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জীব বৈচিত্র্য, মাটির স্বাস্থ্য ও ফসলের গুণমানতা। এখন ভেবে দেখার সময় এসেছে, এত রাসায়নিক পেস্টিসাইড ব্যবহার করা কি ঠিক হচ্ছে? এ প্রশ্ন শুধু ভারতে নয়, সারাবিশ্বের কৃষকসমাজ ও শস্যবিজ্ঞানীদের কাছে। তাই মনে হয় জৈব নিয়ন্ত্রণকে গুরুত্ব দিয়ে সুসংহত রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণ আগামী দিনে একমাত্র সমাধানের রাস্তা হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।

চলমান খরিফ মরসুমে আমাদের রাজ্যে প্রধানত ধান, খরিফ পেঁয়াজ, জুট, ইক্ষু, তিল ইত্যাদি ফসলের চাষ হয়ে থাকে। এ রাজ্যে ধানে ঝলসা রোগের আক্রমণ একটি গুরুতর বিষয়।

জৈব পদ্ধতিতে এই রোগ দমন করার একটি সহজ উপায় রয়েছে। ৫০ মিলিলিটার কেরোসিন তেলে ৮৫ গ্রাম থেঁতলানো রসুন মিশিয়ে ২৪ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এরপর ৯৫০ মিলি. জল ও ১০ মিলি. তরল সাবান মিশিয়ে ভালোভাবে নেড়ে নিয়ে বোতলে রেখে দিতে হবে। ১৯ লিটার জলের সাথে ১ ভাগ মিশ্রণ মিশিয়ে সকালে/বিকেলে স্প্রেয়ার দিয়ে আক্রান্ত গাছে স্প্রে করতে হবে।

এই মিশ্রণটি আমেরিকান বোল ওয়ার্ম, আর্মি ওয়ার্ম, পেঁয়াজ-এর চিরুনি পোকা, আলুর টিউবার মথ, রুট নট নিমাটোড (কৃমি), আখের কাণ্ড ছিদ্রকারী পোকা, ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ, ডাউনি মিলডিউ ও ধানের ঝলসা রোগ প্রতিরোধে খুবই কার্যকরী।

এছাড়া বিভিন্ন ধরণের পাতা খেকো পোকা ও জাব পোকা নিয়ন্ত্রণে ১ কেজি পেঁয়াজ থেঁতো করে ১ লিটার জলের সাথে মিশিয়ে ২৪ ঘণ্টা রেখে দেবার পর কচলিয়ে রস নিংড়ে নিতে হবে। প্রাপ্ত নির্যাসের সাথে ১০ লিটার জল মিশিয়ে আক্রান্ত ফসলে স্প্রে করতে হবে।

জৈব সার প্রয়োগ ও জৈব কীটনাশক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফসলের উৎপাদন খরচ শতকরা ২৫-৩০ শতাংশ হ্রাস করা সম্ভব। উচ্চ পুষ্টিমানসম্পন্ন প্রযুক্তিতে উৎপাদিত জৈব সার, শাকসব্জী ও অন্যান্য ফসলের প্রয়োজনীয় নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশিয়াম-এর সাথে অণুখাদ্যের যোগান দেয়।

জৈব পদ্ধতিতে উৎপন্ন কীটনাশক ও ছত্রাকনাশকগুলি ফসলে কোনওরকম দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ব্যতিরেকে, পোকা ও রোগ দমনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এতে মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও উর্বরতা দীর্ঘমেয়াদী হয়। উৎপাদিত ফসল হয় স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ।

বন্ধুপোকা মাকড়ের (পরজীবি ও পরভোজী) সংরক্ষণের জন্য জমির পাশে অব্যবহৃত জায়গায় ত্রিধারা, উঁচুটি, শালিঞ্চে ইত্যাদি আগাছা জাতীয় গাছের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।

দূরদর্শী পদক্ষেপের মাধ্যমে রাসায়নিক কৃষি বর্জন করে প্রাণ বৈচিত্র্য নির্ভর জৈব কৃষির মাধ্যমে খাদ্যে সার্বভৌমত্ব আনা সম্ভব। তাই জৈব কৃষির পথে ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়ে কৃষিবিষমুক্ত, স্বাস্থ্যসম্মত সমাজ গড়ে তোলাই বাঞ্ছনীয়।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@theagronews.com, theagronewsbd@gmail.com