বিশ্ব
বাইডেনের বিজয়ে কী ঘটবে বাকি বিশ্বে?
কানাডা
যুক্তরাষ্ট্রে বাইডেন জয়ী হওয়ায় বাড়ির পাশে যেন নতুন বন্ধু ফিরে পেয়েছেন জাস্টিন ট্রুডো।
মার্কিন নির্বাচনে যে-ই জিতুক, দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার ঘোষণা দিয়েছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। তবে ভোটে ডেমোক্র্যাটরা জেতায় অটোয়া যে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে, তা নিশ্চিন্তে বলা যায়!
ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকার সময় কানাডা-যু্ক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক কঠিন হয়ে উঠেছে। যদিও কিছু সাফল্যও রয়েছে। তারা মেক্সিকোসহ তিন দেশের মধ্যে উত্তর আমেরিকান মুক্তবাণিজ্য চুক্তি ফিরিয়ে এসেছে।তবে জাস্টিন ট্রুডো এটা পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে তিনি রাজনৈতিক যোগসূত্র অনুভব করেন। সম্প্রতি কানাডার নির্বাচনে ট্রুডোর হয়ে প্রচারণাও চালিয়েছেন এ ডেমোক্র্যাট নেতা। ফলে ওবামার ঘনিষ্ঠ সহযোগী প্রতিবেশী দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ায় দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে উষ্ণ সম্পর্ক দেখা যেতে পারে। এছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তন ও বহুপাক্ষিকতার মতো ইস্যুগুলোতেও ট্রুডোকে পাশে পাবেন জো বাইডেন।
তবে বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে কানাডার কিছু বিষয়ে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আলবার্তা-টেক্সাসের মধ্যে তেল পাইপলাইন নির্মাণের অনুমতি দিয়েছিলেন। কানাডার সংকটাপন্ন জ্বালানি খাত বাঁচাতে এ প্রকল্প বড় সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এটির বিরোধিতা করেছিলেন বাইডেন।
এছাড়া, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে রুগ্ন অর্থনীতি বাঁচাতে জো বাইডেনের শুধু দেশীয় পণ্য ক্রয় নীতিতেও বিপদে পড়তে পারে কানাডা।শেষ হলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। পপুলার ভোটে এগিয়ে থাকার পরে ইলেকটোরাল ভোটেও বিপুল ব্যবধানে বিজয়ী হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন ডেমোক্র্যাট নেতা জো বাইডেন। যদিও আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণা এখনও বাকি, তাছাড়া পরাজয় মেনে নেননি ডোনাল্ড ট্রাম্পও। তারপরও ইতোমধ্যেই বিশ্ব রাজনীতিতে বইতে শুরু করেছে পরিবর্তনের হওয়া।
বাইডেন হোয়াইট হাউসে বসার পর কেমন হতে পারে বিশ্ব পরিস্থিতি- এ নিয়ে একটি বিশদ প্রতিবেদন করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। দেখে নেয়া যাক সেই প্রতিবেদনের কিছু অংশ-চীন
অনেকেই ভাবতে পারেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পুনর্নির্বাচিত না হওয়ায় বেইজিং খুবই খুশি। চীনের সঙ্গে অভূতপূর্ব বাণিজ্যযুদ্ধ, একের পর এক নিষেধাজ্ঞা, করোনাভাইরাস মহামারির জন্য দোষারোপ- এমন অনেক কারণেই হোয়াইট হাউসের ওপর চীন সরকার ক্ষেপে থাকা স্বাভাবিক।
তবে কিছু বিশ্লেষক বলছেন, আদতে জো বাইডেন নির্বাচনে জিতে যাওয়ায় ভেতরে ভেতরে অখুশিই হয়েছে চীন। এটা ট্রাম্পের প্রতি তাদের ভালোবাসা নয়, বরং নিজেদের স্বার্থেই।
নিজ দেশে বিভাজনকারী, বিদেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী- ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বিশ্বে মার্কিন ক্ষমতার পতনের মূর্ত প্রতীক বলে মনে করে বেইজিং। ফলে ট্রাম্প আরও চার বছর ক্ষমতায় থাকলে চীনাদের রাষ্ট্রীয় স্বার্থ হাসিলে বেশ সুবিধাই হতো।
জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বড় ইস্যুগুলোতে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন জো বাইডেন। এ থেকে কিছুটা সুবিধা নেয়ার সুযোগ রয়েছে চীনের সামনে। তবে, এ ডেমোক্র্যাট নেতা যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা চীনের ওপর প্রভাব বিস্তারে ট্রাম্পের ‘একলা চলো’ নীতির চেয়ে বেশি কার্যকর হতে পারে।ভারত
যুক্তরাষ্ট্রের বহু পুরনো মিত্র ভারত। বাইডেন ক্ষমতায় আসলে সেটি পুরোপুরি বদলে যাওয়ার তেমন কোনও সম্ভবনা নেই।
তবে গত চার বছরে ট্রাম্পের সঙ্গে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যে রসায়ন ছিল, বাইডেনের ক্ষেত্রে সেটি না-ও হতে পারে।
ট্রাম্প বরাবরই মোদির কট্টর সমর্থক ছিলেন। ভারতে মুসলিম নিপীড়নের অভিযোগের বিষয়ে কখনোই মোদি সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বলেননি তিনি।তবে এ বিষয়ে সরব ছিলেন জো বাইডেন। তার প্রচারণা ওয়েবসাইটে ভারতশাসিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা পুনর্বহাল, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) কড়া সমালোচনা করা হয়েছে।
এমনকি ভারতীয় বংশোদ্ভূত সদ্য-নির্বাচিত মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসও ভারতের হিন্দুত্ব জাতীয়তাবাদী সরকারের বিভিন্ন নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।
যদিও চেন্নাইয়ে বড় হওয়া এ ডেমোক্র্যাট নেতা হোয়াইট হাউসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদের জন্য নির্বাচিত হওয়ায় প্রচণ্ড খুশি ও গর্ববোধ করছেন ভারতীয়রা।উত্তর কোরিয়া
উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন একসময় জো বাইডেনকে ‘পাগলা কুকুর’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। এখন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে খোঁচাতে হয়তো আরও সতর্ক হবেন তিনি।
কিম হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পকে দেখলেই খুশি হতেন, এটা সহজেই অনুমেয়। দুই নেতার আন্তরিক দৃশ্যমান একাধিক বৈঠক এবং হাস্যোজ্জ্বল ফটোশুট দেখে তেমনটা মনে হওয়া অস্বাভাবিক নয়। যদিও এই সময়ে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে খুবই কম। দুই পক্ষের কেউই তাদের দাবি-দাওয়া আদায় করতে পারেনি। উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি চালিয়ে গেছে, যুক্তরাষ্ট্রও একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
জো বাইডেন কিম জং উনের সঙ্গে যেকোনও আলোচনার আগে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি স্থগিত করার দাবি জানিয়েছেন।
ফলে অনেক বিশ্লেষকই মনে করছেন, বাইডেন প্রশাসন এত শিগগিরই পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে যাবে না। সেক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে উত্তপ্ত সম্পর্ক আবার ফিরে আসতে পারে।যুক্তরাজ্য
বর্ষীয়ান ডেমোক্র্যাট নেতা জো বাইডেন এবং দাপুটে ব্রেক্সিটপন্থী বরিস জনসনের মধ্যে খুব একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হতে পারে- এমনটা মনে করেন না বিশ্লেষকরা।
২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে জয়ী হওয়ার বছরেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছিল যুক্তরাজ্য। তৎকালীন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং তার বস বারাক ওবামা স্পষ্টই জানিয়েছিলেন, তারা ব্রেক্সিটের পক্ষে নন।ডোনাল্ড ট্রাম্প বরিস জনসনকে ‘ব্রিটেনের ট্রাম্প’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন, মনে আছে তো? বাইডেন এই কথার সঙ্গে একমতও হয়েছিলেন। তিনি জনসনকে ট্রাম্পের শারীরিক ও মানসিক ক্লোন বলে উল্লেখ করেছিলেন।
ফলে জো বাইডেন ব্রাসেলস, বার্লিন, প্যারিসের তুলনায় লন্ডনের সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখতে পারেন, সেটা বলাই বাহুল্য।
যদিও, যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের মধ্যে বন্ধুত্বমূলক সম্পর্ক বহুদিনের। ফলে ভিন্নমতের হলেও বাইডেন-জনসন দেশের স্বার্থে কিছু ক্ষেত্রে মতৈক্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করতে পারেন।রাশিয়া
কিছুদিন আগেই রাশিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন জো বাইডেন। এ কথা ক্রেমলিনের কানে পৌঁছাতে বাকি নেই নিশ্চয়!
বাইডেনের সঙ্গে তাদের মতপার্থক্য নতুন নয়। ২০১১ সালে ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকাকালে বাইডেন বলেছিলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জায়গায় তিনি হলে আর কখনোই নির্বাচন করতেন না। সেটাই দেশ ও নিজের জন্য ভালো হতো। পুতিন সেই কথা অবশ্যই ভুলে যাননি।ভূ-রাজনৈতিক স্বর্গ তৈরিতে বাইডেন-পুতিনের মধ্যে তেমন কোনও মিল-মোহাব্বত নেই। মস্কোর ভয়, বাইডেন ক্ষমতায় থাকা মানে ওয়াশিংটন থেকে আরও বেশি চাপ ও নিষেধাজ্ঞা নেমে আসা।
তাছাড়া, ২০১৬ সালের নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপেই ট্রাম্প জয় পেয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এবার ডেমোক্র্যাটরা হোয়াইট হাউসে ফেরার পর সেই ঘটনার শোধ নেয়ার চেষ্টা করবে না, তারই বা গ্যারান্টি কী?জার্মানি
মার্কিন নির্বাচনে জো বাইডেন জেতায় যেন হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছে জার্মানি!
পিউ রিসার্চ সেন্টারের সাম্প্রতিক এক জরিপ বলছে, জার্মানির মাত্র ১০ শতাংশ মানুষ বৈদেশিক নীতির প্রশ্নে ট্রাম্পের ওপর ভরসা করেন।
বিশ্বের যে কোনও দেশের তুলনায় জার্মানিতেই সবচেয়ে অজনপ্রিয় ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি, দেশটিতে পুতিন ও শি জিনংপিংয়েরও তার চেয়ে বেশি ভক্ত রয়েছে।প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মুক্তবাণিজ্যের ক্ষতিসাধন এবং জার্মানি অর্থনৈতিকভাবে যেসব বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করে, সেগুলো ধ্বংসের অভিযোগ রয়েছে। চীনের সঙ্গে তার বিরোধ জার্মান ব্যবসায়ীদেরও ক্ষতির মুখে ফেলেছে।
চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মেরকেলের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্কও কখনোই খুব একটা ভালো ছিল না। ফলে জার্মানরা হোয়াইট হাউস থেকে রিপাবলিকানদের বিদায়ে খুশি হয়েছে, তা নিশ্চিত।ইরান
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কিছুদিন আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, পুনর্নির্বাচিত হলে তার কাছে প্রথমে যে ফোনকল আসবে, সেটি হবে ইরানি নেতাদের কাছ থেকে।
ট্রাম্প যদি নির্বাচনে জিততেনও, তবুও ওই ফোনকল কখনো যেত না। ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সমঝোতা করা ইরানের জন্য একপ্রকার অসম্ভব, তারচেয়ে বেশি হতো অপমানজনক।
ট্রাম্পের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় ইরানের অর্থনীতি একেবারে খাদের কিনারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তারচেয়েও ভয়াবহ ব্যাপার, ইরানের একসময়ের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি ও জনপ্রিয় নেতা জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যা করিয়েছেন তিনি। সোলেইমানি হত্যার প্রতিশোধ এখনও ইরানিদের কাছে অন্যতম বড় এজেন্ডা।
তবে, জো বাইডেনের শাসনামলে আবারও আলোচনায় ফেরার সুযোগ তৈরি হয়েছে ইরানের সামনে। বাইডেনও আশ্বাস দিয়েছেন, তিনি ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তিতে ফিরে যাবেন এবং এক্ষেত্রে কূটনৈতিক পন্থা অবলম্বন করবেন।মধ্যপ্রাচ্য ও ইসরায়েল
মধ্যপ্রাচ্যের দ্বি-বিভক্ত রাজনীতিতে জোর হাওয়া লাগিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্যবাহী মিত্রদের পুরস্কৃত করেছেন, একই সময় সাজা দিয়েছেন তেহরান ঘনিষ্ঠদের।
ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকাকালে বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য নীতি যে অবস্থায় রেখে গিয়েছিলেন, এবার প্রেসিডেন্ট হয়ে সেটিকে আগের অবস্থানে ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করবেন তিনি। ইরানের ওপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ কমাতে পারেন, যোগ দিতে পারেন ২০১৫ সালের বহুজাতিক পারমাণবিক চুক্তিতে। এটাই ইসরায়েল এবং সৌদি আরব-আরব আমিরাতের মতো উপসাগরীয় দেশগুলোকে আতঙ্কিত করে তুলেছে।বাইডেনের শাসনামলে নাটকীয় পরিবর্তন আসতে পারে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানে। ট্রাম্প বরাবরই প্রবলভাবে ইসরায়েলের সমর্থন করেছেন, অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলিদের নতুন বসতি স্থাপনে উৎসাহ দিয়েছেন। এসবের জেরে আরবের একাধিক দেশের সঙ্গে ঐতিহাসিক সমঝোতা চুক্তি হয়েছে।
জো বাইডেনের শাসনামলেও সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের এই ধারা চলতে পারে। তবে তিনি উপসাগরীয় দেশগুলোর কাছে বিতর্কিত অস্ত্র বিক্রয় কমানো এবং ইসরায়েলিদের কাছ থেকে আরও বেশি ছাড় আদায় করতে পারেন। অধিকৃত ভূমিতে ইসরায়েলের বসতি স্থাপনেও আপত্তি জানাতে পারেন এ ডেমোক্র্যাট নেতা।মিসর
মিসরের সেনা-সমর্থিত প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে বেশ দহরম মহরম ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের। কিন্তু রিপাবলিকান নেতার বিদায়ে এখন হোয়াইট হাউসের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক গড়তে হবে মিসরীয় প্রেসিডেন্টকে।
সিসির সমালোচকদের অভিযোগ, মিসরে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে চোখে কালো চশমা পরে ছিল ট্রাম্প প্রশাসন।যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রতিবছর ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা পেয়েছে মিসর। ২০১৭ সালে মানবাধিকার প্রশ্নে এর সামান্য অংশ স্থগিত হলেও ওই বছরই তা ছেড়ে দেয়া হয়।
জো বাইডেনের বিজয়ে নতুন করে আশার আলো দেখতে শুরু করেছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। কর্মীদের আশা, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বিরোধীদের দমন-পীড়নের প্রশ্নে মিসরের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে।
এগ্রোবিজ
পতিত জমিতে চিনাবাদাম চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষক

মেহেরপুর: পতিত ও অনুর্বর বেলে মাটির জমিতে চিনাবাদাম চাষ করে লাভবান হচ্ছেন মেহেরপুরের চাষিরা। ফলন ও বাজার দর ভালো এবং কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন এই এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাদামের চাষ।
সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা, শ্যামপুর, টেংগারমাঠ ও গোপালপুর গ্রামের অধিকাংশ জমির মাটি বেলে। ফলে এই এলাকার চাষিরা ধান, গম, পাটসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করে খুব একটা লাভবান হতে পারেন না।
ধান কাটার পর এ সব জমি সাধারণত পতিত থাকে। এজন্য ৯০ দিনের ফসল হিসেবে অল্প খরচে বাদাম চাষ করছেন এলাকার চাষিরা।
মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, জেলায় এবার বাদাম চাষ হয়েছে ১৫ হেক্টর জমিতে। এবার এক বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করতে চাষিদের খরচ হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা সেক্ষেত্রে বাদামের ফলন হয়েছে ৬ থেকে ৭ মণ। আর এ ফলনে প্রায় ২০ হাজার টাকা ঘরে তুলছেন তারা। বাজারে প্রতিমণ বাদাম বিক্রি হচ্ছে ২৭শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা গ্রামের বাদাম চাষি খাঁজা আহমেদ, কাওছার আলী ও ফিরোজ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এলাকার মাটি বেলে হওয়ায় সাধারণত সবজি, আলু ও অন্যান্য ফসল চাষ করার পর জমি পতিত থাকে। সে সময়ে চিনা বাদামের চাষ করা হয়। বাদাম চাষে খরচ কম এবং উৎপাদন ও বাজার দর ভাল। তাই দিন দিন চাষিরা তাদের পতিত জমিতে চিনা বাদামের চাষ শুরু করছেন।
এছাড়া বাদাম ছাড়ানো, শুকানোসহ যাবতীয় কাজ করে থাকেন এখানকার নারীরা। বাদামের গাছ আবার শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করছেন গৃহিণীরা।
নারী শ্রমিক সাহানা খাতুন ও জরিমন নেছা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বাদাম ছাড়ানো ও শুকানোর কাজ করে থাকি। এলাকার ২৫/৩০ জন নারী শ্রমিক এ কাজ করে আসছেন।
গৃহিণী সাজেদা খাতুন ও জামেলা খাতুন জানান, বাদামের লতা জালানি হিসেবে বেশ ভাল। তাই লতাও বিক্রি হচ্ছে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আক্তারুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, চিনা বাদামের চাষ সাধারণত পতিত জমিতে হয়ে থাকে। এলাকার চাষিরা এই জমিতে বাদামের চাষ করে বাড়তি আয় করছেন। তাই বাদাম চাষ যাতে আরও সম্প্রসারিত হয় সেজন্য কৃষি বিভাগ চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে।
এগ্রোবিজ
সিলেটে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের সম্ভাবনা

সিলেট বিভাগের উচ্চমাত্রার অ্যাসিডিক জমিতে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কৃষি বিজ্ঞানিরা মৌলভীবাজারের আকবরপুরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে ফুল চাষ করে সফল হয়েছেন। এ ফুল চাষ মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে ১০০ চাষিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে কৃষি গবেষণা কেন্দ্র।
কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের তথ্যমতে, যশোরে বাণিজ্যিকভাবে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল চাষ হয়। যার বাজার দর প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। যশোরের ফুল সারাদেশের পাশাপাশি সিলেটেও আসে প্রচুর। সিলেটে ফুলের বাজার শত কোটি টাকার উপরে। কিন্তু সিলেটে ফুলের চাষ বাণিজ্যিকভাবে হয় না।

সিলেট বিভাগের মাটি অ্যাসিডিক হওয়ায় ফুল চাষ করা যাবে না, সেটাই ছিল প্রচলিক ধারণা। কিন্তু এ ধারণাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যদিয়ে ভুল প্রমাণ করেছেন মৌলভীবাজার আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের একদল গবেষক। মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস এম শরিফুজ্জামানের নেতৃত্বে উচ্চমাত্রার অ্যাসিডিটিক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ফুল চাষ করে সফল হয়েছেন তারা। এ পরীক্ষামূলক চাষে ফলনও হয়েছে ভালো। তাই সিলেট অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট অঞ্চলে অনেক জায়গা অনাবাদি ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। প্রবাসীরা দেশের বাইরে অবস্থান করায় তাদের অনেক জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকে। এ জমিকে আবাদের আওতায় আনতে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের উদ্যোগ নিয়ে আগ্রহী ১০০ চাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে আমন ধান কাটার পর এ অঞ্চলের অনেক জমি পতিত থাকে। ফলে ফুল চাষ করে অনাবাদি জমি থেকে কোটি টাকা উপার্জন সম্ভব।
বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মিরানা আক্তার সুমি জানান, চাষিরা প্রশিক্ষণ শেষে অনেক কিছু শিখেছেন। কী পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে হয়, তা জেনেছেন। ধানের চেয়ে যেহেতু ফুলের দাম বেশি, তাই ফুল চাষে তাদের আগ্রহ বাড়ছে।

ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. সরফ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভালোভাবে জমি চাষ করে নির্দেশিত মাত্রায় জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয়। অন্য ফসলের মতোই এর চাষ পদ্ধতি সহজ। বেড তৈরি করে ফুল চাষ করতে হয়। প্রতিটি বেডের দৈর্ঘ যে কোন মাপের হতে পারে। তবে প্রস্থে ১.২-১.৫ মিটার হলে ভালো।’

তিনি বলেন, ‘কলম (বীজ) লাগানো থেকে তিন মাস পর স্টিক সংগ্রহ শুরু হয়। সংগ্রহ করা যাবে পরবর্তী ২৫ দিন। গ্লাডিওলাস ৫টি জাতসহ মোট ১২টি প্রজাতির ফুলের পরীক্ষা করে আমরা সফল হয়েছি।
জৈব
জৈব পদ্ধতিতে ফসলের রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণ

সবুজ বিপ্লবের সময়ে পেস্টিসাইড ব্যবহারকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জীব বৈচিত্র্য, মাটির স্বাস্থ্য ও ফসলের গুণমানতা। এখন ভেবে দেখার সময় এসেছে, এত রাসায়নিক পেস্টিসাইড ব্যবহার করা কি ঠিক হচ্ছে? এ প্রশ্ন শুধু ভারতে নয়, সারাবিশ্বের কৃষকসমাজ ও শস্যবিজ্ঞানীদের কাছে। তাই মনে হয় জৈব নিয়ন্ত্রণকে গুরুত্ব দিয়ে সুসংহত রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণ আগামী দিনে একমাত্র সমাধানের রাস্তা হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।
চলমান খরিফ মরসুমে আমাদের রাজ্যে প্রধানত ধান, খরিফ পেঁয়াজ, জুট, ইক্ষু, তিল ইত্যাদি ফসলের চাষ হয়ে থাকে। এ রাজ্যে ধানে ঝলসা রোগের আক্রমণ একটি গুরুতর বিষয়।
জৈব পদ্ধতিতে এই রোগ দমন করার একটি সহজ উপায় রয়েছে। ৫০ মিলিলিটার কেরোসিন তেলে ৮৫ গ্রাম থেঁতলানো রসুন মিশিয়ে ২৪ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এরপর ৯৫০ মিলি. জল ও ১০ মিলি. তরল সাবান মিশিয়ে ভালোভাবে নেড়ে নিয়ে বোতলে রেখে দিতে হবে। ১৯ লিটার জলের সাথে ১ ভাগ মিশ্রণ মিশিয়ে সকালে/বিকেলে স্প্রেয়ার দিয়ে আক্রান্ত গাছে স্প্রে করতে হবে।
এই মিশ্রণটি আমেরিকান বোল ওয়ার্ম, আর্মি ওয়ার্ম, পেঁয়াজ-এর চিরুনি পোকা, আলুর টিউবার মথ, রুট নট নিমাটোড (কৃমি), আখের কাণ্ড ছিদ্রকারী পোকা, ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ, ডাউনি মিলডিউ ও ধানের ঝলসা রোগ প্রতিরোধে খুবই কার্যকরী।
এছাড়া বিভিন্ন ধরণের পাতা খেকো পোকা ও জাব পোকা নিয়ন্ত্রণে ১ কেজি পেঁয়াজ থেঁতো করে ১ লিটার জলের সাথে মিশিয়ে ২৪ ঘণ্টা রেখে দেবার পর কচলিয়ে রস নিংড়ে নিতে হবে। প্রাপ্ত নির্যাসের সাথে ১০ লিটার জল মিশিয়ে আক্রান্ত ফসলে স্প্রে করতে হবে।
জৈব সার প্রয়োগ ও জৈব কীটনাশক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফসলের উৎপাদন খরচ শতকরা ২৫-৩০ শতাংশ হ্রাস করা সম্ভব। উচ্চ পুষ্টিমানসম্পন্ন প্রযুক্তিতে উৎপাদিত জৈব সার, শাকসব্জী ও অন্যান্য ফসলের প্রয়োজনীয় নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশিয়াম-এর সাথে অণুখাদ্যের যোগান দেয়।
জৈব পদ্ধতিতে উৎপন্ন কীটনাশক ও ছত্রাকনাশকগুলি ফসলে কোনওরকম দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ব্যতিরেকে, পোকা ও রোগ দমনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এতে মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও উর্বরতা দীর্ঘমেয়াদী হয়। উৎপাদিত ফসল হয় স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ।
বন্ধুপোকা মাকড়ের (পরজীবি ও পরভোজী) সংরক্ষণের জন্য জমির পাশে অব্যবহৃত জায়গায় ত্রিধারা, উঁচুটি, শালিঞ্চে ইত্যাদি আগাছা জাতীয় গাছের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
দূরদর্শী পদক্ষেপের মাধ্যমে রাসায়নিক কৃষি বর্জন করে প্রাণ বৈচিত্র্য নির্ভর জৈব কৃষির মাধ্যমে খাদ্যে সার্বভৌমত্ব আনা সম্ভব। তাই জৈব কৃষির পথে ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়ে কৃষিবিষমুক্ত, স্বাস্থ্যসম্মত সমাজ গড়ে তোলাই বাঞ্ছনীয়।
এগ্রোবিজ
টি ব্যাগের ব্যবসা করে আয় করুন প্রচুর অর্থ

চা পানীয়টি আমাদের দেশে খুবই জনপ্রিয় একটি পানীয়। প্রিয়জনের সাথে বৈঠক থেকে শুরু করে সারাদিনের ক্লান্তি দূর করা সবেতেই চা (Tea) আমাদের নিত্যসঙ্গী। তবে এখন মানুষ আগের তুলনায় অনেক বেশী স্বাস্থ্য সচেতন। সাধারণ চায়ের জায়গায় এসেছে, গ্রীণ টি, হার্বাল টি, লেমনগ্র্যাস টি, ব্লু টি ইত্যাদি। আর প্রকারভেদের সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে টি ব্যাগের গুরুত্ব। কারণ এটি খুব অল্প সময়ে তৈরি করা যায় এবং যে কোন স্থানে এর থেকে চা বানানো যায়। অফিস ও হোটেলগুলিতে এর যথেষ্ট চাহিদাও রয়েছে। তাই টি ব্যাগ তৈরীর ব্যবসাটি হয়ে উঠতে পারে আপনার জন্য লাভদায়ক।
চা উৎপাদনকারী দেশ গুলির মধ্যে অংশ নেয় চীন, ভারত , কেনিয়া , শ্রীলঙ্কা , জাপান , ইন্দোনেশিয়া , ভিয়েতনাম, তানজেনিয়া , মালয়, বাংলাদেশ, তার্কী এবং চা পানকারী দেশ গুলির মধ্যে ইংল্যান্ড, জর্মানী, কানাডা ও আমেরিকার বেশ নাম রয়েছে।
এ কারণে বেশিরভাগ সংস্থা টি ব্যাগ বিক্রি শুরু করেছে। আপনি যদি নতুন ব্যবসা করার পরিকল্পনা করে থাকেন, তবে আপনি টি ব্যাগ মেকিং ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এটির মাধ্যমে আপনি খুব ভাল অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। যিনি তৈরী করেন, তার থেকে নিয়ে এসে আপনি বাইরে বিক্রি করতে পারেন, এতে আপনার বিনিয়োগের দরকার পড়বে না। কিন্তু যদি বেশী লাভ করতে চান, তবে বিনিয়োগ করে নিজের ব্যবসা শুরু করুন।
টি ব্যাগ ব্যবসা শুরু করার জন্য জায়গা (How to start) –
এটি শুরু করার জন্য আপনি কোনও জায়গা ভাড়া নিতে পারেন। আপনার নিজের জমি থাকলে ব্যবসার জন্য সুবিধা হবে। এমন জায়গা চয়ন করুন, যেখানে মানুষের সমাগম রয়েছে। টি ব্যাগ তৈরীর জন্য আপনাকে মেশিন ইনস্টল করতে হবে।
চা ব্যাগ ব্যবসায় বিনিয়োগ –
আপনি যদি বড় আকারে ব্যবসা শুরু করতে চান, তবে আপনাকে বেশী অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে। এর মেশিনটি যথেষ্ট ব্যয়বহুল, সুতরাং বেশী পরিমাণ রাশি বিনিয়োগের দরকার রয়েছে এই ব্যবসায়, তবে আপনি যদি ব্যাংক থেকে লোণ নেন, তবে আপনি ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
চা ব্যাগ তৈরিতে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল –
ফিল্টার পেপার –
এর ভিতরে চায়ের পাতা স্টোর করতে হবে। এই কাগজটি সুক্ষ ছিদ্রযুক্ত এবং পাতলা, পাশাপাশি সহজে ভিজে যায় না, তাই এই কাগজটি চা ব্যাগ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
চা পাতা –
আপনি যেমন প্রকারের ব্যাগ বিক্রি করতে চান, তেমন চা পাতা কিনতে হবে।
বিভিন্ন প্রকারের চা –
সাধারণ চা, গ্রীণ টি, উলং টি, ব্ল্যাক টি, হার্বাল টি
চা ব্যাগগুলিতে চা পাতা পূরণ করার প্রক্রিয়া –
চা ব্যাগ তৈরীর মেশিনের সাহায্যে প্রস্তুত চা পাতাগুলি ফিল্টার পেপারে পূরণ করতে হয়। সাধারণত প্রায় ২-৪ আউন্স চা পাতা একটি টি ব্যাগে ভরা হয়। এর পরে, একটি প্যাকিং মেশিনের সাহায্যে ব্যাগটি সিল করা হয়। টি ব্যাগের সাথে একটি সুতো সংযুক্ত থাকে।
চা ব্যাগ ব্যবসায় থেকে লাভ –
আপনি চায়ের পাতার গুণমান অনুযায়ী ব্যাগের দাম নির্ধারণ করতে পারেন। এই ব্যবসা থেকে খুব ভাল লাভ করা যায়। এর আরও বিক্রয়ের জন্য, আপনি বাজারে পাইকারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এগুলি ছাড়াও আপনি হোটেল বা অফিসের লোকের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এই ব্যবসা আপনাকে মাসে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন দিতে পারে।
ছাদকৃষি
সহজ পদ্ধতিতে টবে করুন কদবেল চাষ

ছেলে থেকে বুড়ো সবারই প্রিয় টক ঝাল কদবেল। কদবেলের আচার, কদবেল মাখা সকলেরই অত্যন্ত পছন্দের। যারা বাগান করতে পছন্দ করেন, বিশেষত টবে, তাদের জন্য কদবেল এক আদর্শ ফল। কদবেলের আকার অনেকটা টেনিস বলের মতো। শরতের শুরুতে কদবেল বাজারে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এই ফলের মন মাতানো স্বাদ বিশেষ করে মহিলাদের ভীষণই পছন্দের।
টবে কদবেল চাষের পদ্ধতি (Farming Process)
মন কাড়া স্বাদের জন্য পাকা কদবেল সবার কাছেই অত্যন্ত প্রিয়। কদবেল গাছে ফুল আসে মার্চ-এপ্রিল মাস নাগাদ। তবে ফল পাকতে সময় লাগে সেপ্টেম্বর-অক্টবর। টবে রোপনের জন্য কদবেলের কলমের চারা বেশি ভালো। কলমের চারা থেকে কয়েক বছরের মধ্যে ফুল-ফল ধরে। ছাদের টবে এই গাছের চাষ সহজেই করা যায়। জোড় কলম করে এর কলম তৈরি করা যায়। এ গাছের চাষাবাদ অনেকটা বেলের মতোই।
মাটি তৈরি (Land Preparation)
হাফ ড্রামে অথবা টবে পাঁচ সেন্টিমিটার পুরু করে ইটের খোয়া বিছিয়ে তার ওপর ১০ সেন্টিমিটার বালির স্তর দিতে হবে। ড্রামের তলার দিকে জল বার করে দেওয়ার জন্য ছিদ্র রাখতে হবে। এবার তিন ভাগ দো-আঁশ মাটির সাথে দুই ভাগ গোবর সার, ড্রামপ্রতি ২০০ গ্রাম এমওপি (পটাশ) সার, ২৫০ গ্রাম টিএসপি (ফসফেট) সার, ১ কেজি হাড়ের গুঁড়ো, ৫০ গ্রাম জিপসাম সার, ২০ গ্রাম ম্যাগেনেসিয়াম সালফেট (ম্যাগসাল) সার ও ১০ গ্রাম দস্তা সার মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে ড্রামে বা টবে ভরে হালকা করে জল দিয়ে মাটি ভিজিয়ে এক থেকে দুই সপ্তাহ রেখে দিতে হবে।
ড্রাম বা টবের ঠিক মাঝখানে কদবেলের কলম বসিয়ে কলমের গোড়ার মাটি শক্ত করে চেপে দিতে হবে। কলম লাগানোর পর গাছের গোড়ায় জল দিতে হবে। সোজা ভাবে কলম রাখতে গেলে, গোড়ার কাছাকাছি কাঠি পুঁতে তার সাথে কলম বেঁধে দিলে ভালো। শীতকাল ছাড়া বছরের যেকোনও সময় কদবেলের কলম লাগানো যায়। ছাদের ওপর রোদের মধ্যে কদবেলের গাছ রাখা উচিত। এতে গাছের ভালোই হবে।
ফলন এবং পরিচর্যা (Caring)
কলমের গাছে ফুল ফাল্গুন-চৈত্র মাসে নাগাদ আসে। শরৎকালে ফল পেকে যায়। ডালপালা ফল সংগ্রহ করার সময় কিছু ছেঁটে দেওয়া উচিত। এর ফলে পরের বছর ফলন ভালো হবে। কদবেল গাছে ফুল-ফল ভালো আনার জন্য প্রতি বছর ফল তোলা শেষ হলে গাছের গোড়ার মাটিতে ড্রামপ্রতি ১৫০ থেকে ২৫০ গ্রাম ইউরিয়া সার, ১০০ গ্রাম এমওপি সার, ১০০ গ্রাম টিএসপি সার দুই কেজি প্যাকেটের কম্পোস্ট সারের সাথে মিশিয়ে গোড়ার মাটি নিড়িয়ে তার সাথে মিশিয়ে সেচ দিতে হবে।
গাছের বৃদ্ধি ভালো হলে বছরে একবার সার দিলে হবে না। বর্ষাকালের আগেও ঠিক একই ভাবে পুনরায় সার দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে টব বা ড্রামের মাটি যাতে না শুকিয়ে যায়। টবের মাটি কখনো শুকিয়ে গেলে নিয়ম করে সেচ দিয়ে নিতে হবে।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন