বিশ্ব
বাইডেনের বিজয়ে কী ঘটবে বাকি বিশ্বে?
লেখক
জাগোনিউজ২৪.কমকানাডা
যুক্তরাষ্ট্রে বাইডেন জয়ী হওয়ায় বাড়ির পাশে যেন নতুন বন্ধু ফিরে পেয়েছেন জাস্টিন ট্রুডো।
মার্কিন নির্বাচনে যে-ই জিতুক, দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার ঘোষণা দিয়েছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। তবে ভোটে ডেমোক্র্যাটরা জেতায় অটোয়া যে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে, তা নিশ্চিন্তে বলা যায়!
ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকার সময় কানাডা-যু্ক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক কঠিন হয়ে উঠেছে। যদিও কিছু সাফল্যও রয়েছে। তারা মেক্সিকোসহ তিন দেশের মধ্যে উত্তর আমেরিকান মুক্তবাণিজ্য চুক্তি ফিরিয়ে এসেছে।তবে জাস্টিন ট্রুডো এটা পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে তিনি রাজনৈতিক যোগসূত্র অনুভব করেন। সম্প্রতি কানাডার নির্বাচনে ট্রুডোর হয়ে প্রচারণাও চালিয়েছেন এ ডেমোক্র্যাট নেতা। ফলে ওবামার ঘনিষ্ঠ সহযোগী প্রতিবেশী দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ায় দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে উষ্ণ সম্পর্ক দেখা যেতে পারে। এছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তন ও বহুপাক্ষিকতার মতো ইস্যুগুলোতেও ট্রুডোকে পাশে পাবেন জো বাইডেন।
তবে বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে কানাডার কিছু বিষয়ে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আলবার্তা-টেক্সাসের মধ্যে তেল পাইপলাইন নির্মাণের অনুমতি দিয়েছিলেন। কানাডার সংকটাপন্ন জ্বালানি খাত বাঁচাতে এ প্রকল্প বড় সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এটির বিরোধিতা করেছিলেন বাইডেন।
এছাড়া, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে রুগ্ন অর্থনীতি বাঁচাতে জো বাইডেনের শুধু দেশীয় পণ্য ক্রয় নীতিতেও বিপদে পড়তে পারে কানাডা।শেষ হলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। পপুলার ভোটে এগিয়ে থাকার পরে ইলেকটোরাল ভোটেও বিপুল ব্যবধানে বিজয়ী হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন ডেমোক্র্যাট নেতা জো বাইডেন। যদিও আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণা এখনও বাকি, তাছাড়া পরাজয় মেনে নেননি ডোনাল্ড ট্রাম্পও। তারপরও ইতোমধ্যেই বিশ্ব রাজনীতিতে বইতে শুরু করেছে পরিবর্তনের হওয়া।
বাইডেন হোয়াইট হাউসে বসার পর কেমন হতে পারে বিশ্ব পরিস্থিতি- এ নিয়ে একটি বিশদ প্রতিবেদন করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। দেখে নেয়া যাক সেই প্রতিবেদনের কিছু অংশ-চীন
অনেকেই ভাবতে পারেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পুনর্নির্বাচিত না হওয়ায় বেইজিং খুবই খুশি। চীনের সঙ্গে অভূতপূর্ব বাণিজ্যযুদ্ধ, একের পর এক নিষেধাজ্ঞা, করোনাভাইরাস মহামারির জন্য দোষারোপ- এমন অনেক কারণেই হোয়াইট হাউসের ওপর চীন সরকার ক্ষেপে থাকা স্বাভাবিক।
তবে কিছু বিশ্লেষক বলছেন, আদতে জো বাইডেন নির্বাচনে জিতে যাওয়ায় ভেতরে ভেতরে অখুশিই হয়েছে চীন। এটা ট্রাম্পের প্রতি তাদের ভালোবাসা নয়, বরং নিজেদের স্বার্থেই।
নিজ দেশে বিভাজনকারী, বিদেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী- ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বিশ্বে মার্কিন ক্ষমতার পতনের মূর্ত প্রতীক বলে মনে করে বেইজিং। ফলে ট্রাম্প আরও চার বছর ক্ষমতায় থাকলে চীনাদের রাষ্ট্রীয় স্বার্থ হাসিলে বেশ সুবিধাই হতো।
জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বড় ইস্যুগুলোতে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন জো বাইডেন। এ থেকে কিছুটা সুবিধা নেয়ার সুযোগ রয়েছে চীনের সামনে। তবে, এ ডেমোক্র্যাট নেতা যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা চীনের ওপর প্রভাব বিস্তারে ট্রাম্পের ‘একলা চলো’ নীতির চেয়ে বেশি কার্যকর হতে পারে।ভারত
যুক্তরাষ্ট্রের বহু পুরনো মিত্র ভারত। বাইডেন ক্ষমতায় আসলে সেটি পুরোপুরি বদলে যাওয়ার তেমন কোনও সম্ভবনা নেই।
তবে গত চার বছরে ট্রাম্পের সঙ্গে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যে রসায়ন ছিল, বাইডেনের ক্ষেত্রে সেটি না-ও হতে পারে।
ট্রাম্প বরাবরই মোদির কট্টর সমর্থক ছিলেন। ভারতে মুসলিম নিপীড়নের অভিযোগের বিষয়ে কখনোই মোদি সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বলেননি তিনি।তবে এ বিষয়ে সরব ছিলেন জো বাইডেন। তার প্রচারণা ওয়েবসাইটে ভারতশাসিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা পুনর্বহাল, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) কড়া সমালোচনা করা হয়েছে।
এমনকি ভারতীয় বংশোদ্ভূত সদ্য-নির্বাচিত মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসও ভারতের হিন্দুত্ব জাতীয়তাবাদী সরকারের বিভিন্ন নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।
যদিও চেন্নাইয়ে বড় হওয়া এ ডেমোক্র্যাট নেতা হোয়াইট হাউসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদের জন্য নির্বাচিত হওয়ায় প্রচণ্ড খুশি ও গর্ববোধ করছেন ভারতীয়রা।উত্তর কোরিয়া
উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন একসময় জো বাইডেনকে ‘পাগলা কুকুর’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। এখন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে খোঁচাতে হয়তো আরও সতর্ক হবেন তিনি।
কিম হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পকে দেখলেই খুশি হতেন, এটা সহজেই অনুমেয়। দুই নেতার আন্তরিক দৃশ্যমান একাধিক বৈঠক এবং হাস্যোজ্জ্বল ফটোশুট দেখে তেমনটা মনে হওয়া অস্বাভাবিক নয়। যদিও এই সময়ে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে খুবই কম। দুই পক্ষের কেউই তাদের দাবি-দাওয়া আদায় করতে পারেনি। উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি চালিয়ে গেছে, যুক্তরাষ্ট্রও একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
জো বাইডেন কিম জং উনের সঙ্গে যেকোনও আলোচনার আগে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি স্থগিত করার দাবি জানিয়েছেন।
ফলে অনেক বিশ্লেষকই মনে করছেন, বাইডেন প্রশাসন এত শিগগিরই পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে যাবে না। সেক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে উত্তপ্ত সম্পর্ক আবার ফিরে আসতে পারে।যুক্তরাজ্য
বর্ষীয়ান ডেমোক্র্যাট নেতা জো বাইডেন এবং দাপুটে ব্রেক্সিটপন্থী বরিস জনসনের মধ্যে খুব একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হতে পারে- এমনটা মনে করেন না বিশ্লেষকরা।
২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে জয়ী হওয়ার বছরেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছিল যুক্তরাজ্য। তৎকালীন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং তার বস বারাক ওবামা স্পষ্টই জানিয়েছিলেন, তারা ব্রেক্সিটের পক্ষে নন।ডোনাল্ড ট্রাম্প বরিস জনসনকে ‘ব্রিটেনের ট্রাম্প’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন, মনে আছে তো? বাইডেন এই কথার সঙ্গে একমতও হয়েছিলেন। তিনি জনসনকে ট্রাম্পের শারীরিক ও মানসিক ক্লোন বলে উল্লেখ করেছিলেন।
ফলে জো বাইডেন ব্রাসেলস, বার্লিন, প্যারিসের তুলনায় লন্ডনের সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখতে পারেন, সেটা বলাই বাহুল্য।
যদিও, যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের মধ্যে বন্ধুত্বমূলক সম্পর্ক বহুদিনের। ফলে ভিন্নমতের হলেও বাইডেন-জনসন দেশের স্বার্থে কিছু ক্ষেত্রে মতৈক্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করতে পারেন।রাশিয়া
কিছুদিন আগেই রাশিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন জো বাইডেন। এ কথা ক্রেমলিনের কানে পৌঁছাতে বাকি নেই নিশ্চয়!
বাইডেনের সঙ্গে তাদের মতপার্থক্য নতুন নয়। ২০১১ সালে ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকাকালে বাইডেন বলেছিলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জায়গায় তিনি হলে আর কখনোই নির্বাচন করতেন না। সেটাই দেশ ও নিজের জন্য ভালো হতো। পুতিন সেই কথা অবশ্যই ভুলে যাননি।ভূ-রাজনৈতিক স্বর্গ তৈরিতে বাইডেন-পুতিনের মধ্যে তেমন কোনও মিল-মোহাব্বত নেই। মস্কোর ভয়, বাইডেন ক্ষমতায় থাকা মানে ওয়াশিংটন থেকে আরও বেশি চাপ ও নিষেধাজ্ঞা নেমে আসা।
তাছাড়া, ২০১৬ সালের নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপেই ট্রাম্প জয় পেয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এবার ডেমোক্র্যাটরা হোয়াইট হাউসে ফেরার পর সেই ঘটনার শোধ নেয়ার চেষ্টা করবে না, তারই বা গ্যারান্টি কী?জার্মানি
মার্কিন নির্বাচনে জো বাইডেন জেতায় যেন হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছে জার্মানি!
পিউ রিসার্চ সেন্টারের সাম্প্রতিক এক জরিপ বলছে, জার্মানির মাত্র ১০ শতাংশ মানুষ বৈদেশিক নীতির প্রশ্নে ট্রাম্পের ওপর ভরসা করেন।
বিশ্বের যে কোনও দেশের তুলনায় জার্মানিতেই সবচেয়ে অজনপ্রিয় ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি, দেশটিতে পুতিন ও শি জিনংপিংয়েরও তার চেয়ে বেশি ভক্ত রয়েছে।প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মুক্তবাণিজ্যের ক্ষতিসাধন এবং জার্মানি অর্থনৈতিকভাবে যেসব বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করে, সেগুলো ধ্বংসের অভিযোগ রয়েছে। চীনের সঙ্গে তার বিরোধ জার্মান ব্যবসায়ীদেরও ক্ষতির মুখে ফেলেছে।
চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মেরকেলের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্কও কখনোই খুব একটা ভালো ছিল না। ফলে জার্মানরা হোয়াইট হাউস থেকে রিপাবলিকানদের বিদায়ে খুশি হয়েছে, তা নিশ্চিত।ইরান
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কিছুদিন আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, পুনর্নির্বাচিত হলে তার কাছে প্রথমে যে ফোনকল আসবে, সেটি হবে ইরানি নেতাদের কাছ থেকে।
ট্রাম্প যদি নির্বাচনে জিততেনও, তবুও ওই ফোনকল কখনো যেত না। ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সমঝোতা করা ইরানের জন্য একপ্রকার অসম্ভব, তারচেয়ে বেশি হতো অপমানজনক।
ট্রাম্পের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় ইরানের অর্থনীতি একেবারে খাদের কিনারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তারচেয়েও ভয়াবহ ব্যাপার, ইরানের একসময়ের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি ও জনপ্রিয় নেতা জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যা করিয়েছেন তিনি। সোলেইমানি হত্যার প্রতিশোধ এখনও ইরানিদের কাছে অন্যতম বড় এজেন্ডা।
তবে, জো বাইডেনের শাসনামলে আবারও আলোচনায় ফেরার সুযোগ তৈরি হয়েছে ইরানের সামনে। বাইডেনও আশ্বাস দিয়েছেন, তিনি ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তিতে ফিরে যাবেন এবং এক্ষেত্রে কূটনৈতিক পন্থা অবলম্বন করবেন।মধ্যপ্রাচ্য ও ইসরায়েল
মধ্যপ্রাচ্যের দ্বি-বিভক্ত রাজনীতিতে জোর হাওয়া লাগিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্যবাহী মিত্রদের পুরস্কৃত করেছেন, একই সময় সাজা দিয়েছেন তেহরান ঘনিষ্ঠদের।
ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকাকালে বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য নীতি যে অবস্থায় রেখে গিয়েছিলেন, এবার প্রেসিডেন্ট হয়ে সেটিকে আগের অবস্থানে ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করবেন তিনি। ইরানের ওপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ কমাতে পারেন, যোগ দিতে পারেন ২০১৫ সালের বহুজাতিক পারমাণবিক চুক্তিতে। এটাই ইসরায়েল এবং সৌদি আরব-আরব আমিরাতের মতো উপসাগরীয় দেশগুলোকে আতঙ্কিত করে তুলেছে।বাইডেনের শাসনামলে নাটকীয় পরিবর্তন আসতে পারে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানে। ট্রাম্প বরাবরই প্রবলভাবে ইসরায়েলের সমর্থন করেছেন, অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলিদের নতুন বসতি স্থাপনে উৎসাহ দিয়েছেন। এসবের জেরে আরবের একাধিক দেশের সঙ্গে ঐতিহাসিক সমঝোতা চুক্তি হয়েছে।
জো বাইডেনের শাসনামলেও সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের এই ধারা চলতে পারে। তবে তিনি উপসাগরীয় দেশগুলোর কাছে বিতর্কিত অস্ত্র বিক্রয় কমানো এবং ইসরায়েলিদের কাছ থেকে আরও বেশি ছাড় আদায় করতে পারেন। অধিকৃত ভূমিতে ইসরায়েলের বসতি স্থাপনেও আপত্তি জানাতে পারেন এ ডেমোক্র্যাট নেতা।মিসর
মিসরের সেনা-সমর্থিত প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে বেশ দহরম মহরম ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের। কিন্তু রিপাবলিকান নেতার বিদায়ে এখন হোয়াইট হাউসের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক গড়তে হবে মিসরীয় প্রেসিডেন্টকে।
সিসির সমালোচকদের অভিযোগ, মিসরে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে চোখে কালো চশমা পরে ছিল ট্রাম্প প্রশাসন।যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রতিবছর ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা পেয়েছে মিসর। ২০১৭ সালে মানবাধিকার প্রশ্নে এর সামান্য অংশ স্থগিত হলেও ওই বছরই তা ছেড়ে দেয়া হয়।
জো বাইডেনের বিজয়ে নতুন করে আশার আলো দেখতে শুরু করেছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। কর্মীদের আশা, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বিরোধীদের দমন-পীড়নের প্রশ্নে মিসরের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে।
-
বাইডেনের বিজয়ে কী ঘটবে বাকি বিশ্বে?
-
বাইডেনের বিজয়ে কী ঘটবে বাকি বিশ্বে?
-
বাইডেনের বিজয়ে কী ঘটবে বাকি বিশ্বে?
-
বাইডেনের বিজয়ে কী ঘটবে বাকি বিশ্বে?
-
বাইডেনের বিজয়ে কী ঘটবে বাকি বিশ্বে?
-
বাইডেনের বিজয়ে কী ঘটবে বাকি বিশ্বে?
-
বাইডেনের বিজয়ে কী ঘটবে বাকি বিশ্বে?
-
বাইডেনের বিজয়ে কী ঘটবে বাকি বিশ্বে?
-
বাইডেনের বিজয়ে কী ঘটবে বাকি বিশ্বে?
-
বাইডেনের বিজয়ে কী ঘটবে বাকি বিশ্বে?
-
বাইডেনের বিজয়ে কী ঘটবে বাকি বিশ্বে?

আপনার জন্য নির্বাচিত সংবাদ
-
যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশে হতে পারে সারের সংকট
-
বিদেশ থেকে খালি হাতে ফিরে ড্রাগন চাষে সাফল্য
-
নাসিরনগরে বন্যায় তলিয়ে গেল কৃষকের বাদামখেত
-
পানি দিতে অতিরিক্ত টাকা
-
কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তারা এক সঙ্গে কাজ করতে রাজি
-
‘শিক্ষিত কৃষক’ বলেই তাঁকে নিয়ে মানুষের আগ্রহটা বেশি
-
ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বীজ কিনে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত
-
বোরো কাটতে বাড়তি খরচ ঃ হাসি নেই কৃষকের মুখে
-
পেঁয়াজের ক্ষতি পুষিয়ে দিচ্ছে সাথি ফসল বাঙ্গি
-
নিরাপদ খাদ্য: দেশি মাছ কাকিলাকে যেভাবে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা


চলতি বোরো মৌসুমে সার কিনতে কৃষকদের সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা করে বেশি দিতে হয়েছে। আর সরকারকেও সার বাবদ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে বাজেটে বরাদ্দের তিন গুণের বেশি—প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশ এখন মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার আমদানি নিয়ে বিপাকে পড়েছে।
ধান, আলু ও সবজি চাষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এমওপি সারের ৬০ শতাংশ আনা হতো রাশিয়া ও বেলারুশ থেকে। ওই দুই দেশ নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়ায় এখন বাংলাদেশকে এমওপি কিনতে হচ্ছে কানাডা থেকে। বিশ্ববাজারে দাম বেড়ে যাওয়া ও আমদানিতে অনিশ্চয়তার কারণে বাংলাদেশে সারের সংকট হতে পারে। ভর্তুকির চাপ সামলাতে বাংলাদেশকে সব ধরনের সারের খুচরা মূল্য বাড়াতে হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিবিষয়ক সংস্থা ইউএসডিএর চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ‘বাংলাদেশে সার সরবরাহ ও ব্যবহারে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের এমওপি সারের ২০ শতাংশ সরবরাহ কমানো হলে সামনের বোরো মৌসুমে ধান, গম ও রবি মৌসুমের অন্যান্য ফসলের উৎপাদন ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কমতে পারে। এতে বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে।
এমনিতেই এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমাদের ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে সারের কারণে নতুন করে যাতে আর সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
এ এম এম শওকত আলী, সাবেক কৃষিসচিব
তবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, দেশে চলতি বোরো মৌসুমে নতুন করে আর সারের দরকার হবে না। সামনে আলুর মৌসুমে ইউরিয়া, এমওপিসহ অন্যান্য সারের চাহিদা বাড়বে। ওই সময়ের জন্য সার সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ কানাডা ও মধ্যপ্রাচ্যের সার সরবরাহকারী দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে।
জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কানাডা থেকে মোট আট লাখ টন এমওপি সার আমদানির উদ্যোগ নিয়েছি। এ ব্যাপারে ওই দেশের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা স্মারক হয়েছে। ফলে এই সার নিয়ে সরকারের কোনো দুশ্চিন্তা নেই। তবে সার বাবদ সরকারের বিপুল পরিমাণে ভর্তুকি বাড়ছে। এই চাপ নিয়েও সরকার ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ওই ভর্তুকি দিয়ে যাবে।’
কমানো হয়েছে চাহিদা
বাংলাদেশে চলতি অর্থবছরে ৬৯ লাখ টন রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয়েছে। এর মধ্যে ইউরিয়া, টিএসপি, ডিএপি ও এমওপি—এই চার ধরনের সার ব্যবহার হয় ৫৭ লাখ টন। আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের ওই চার ধরনের সারের চাহিদা কমিয়ে ৫৫ লাখ ৫০ হাজার টনে নামিয়ে আনা হয়েছে।
দেশে প্রয়োজনীয় সারের ৮০ শতাংশই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এর মধ্যে এমওপি সারের বড় অংশ আসে রাশিয়া ও বেলারুশ থেকে।
প্রসঙ্গত, ওই চারটি প্রধান সার কৃষকদের কাছে বিক্রির ক্ষেত্রে সরকার ভর্তুকি দিয়ে থাকে। চলতি অর্থবছরে সরকার প্রাথমিকভাবে সারে ভর্তুকি বাবদ ৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে গত ছয় মাসে সারের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। বেশির ভাগ সারের দাম তিন থেকে চার গুণ বেড়ে যাওয়ায় সরকারকে ভর্তুকির পরিমাণ ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা করতে হয়। কিন্তু অর্থবছরের শেষের দিকে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে হিসাব করে দেখা হয়েছে, ভর্তুকির পরিমাণ এবার বেড়ে কমপক্ষে ৩০ হাজার কোটি টাকা গিয়ে দাঁড়াবে।
জিপসাম, জিংক সালফেট ও অ্যামোনিয়াম সালফেট ও ম্যাগনেসিয়াম সালফেট সারে সরকার কোনো ভর্তুকি দেয় না। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কিনে ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছে তা বিক্রি করে থাকেন। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষককেও বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে।
সাবেক কৃষিসচিব এ এম এম শওকত আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এমনিতেই এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমাদের ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে সারের কারণে নতুন করে যাতে আর সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। আর সরকারের অন্যান্য খাতের ভর্তুকি কমিয়ে প্রয়োজনে সারে ভর্তুকি বাড়াতে হবে, যাতে সারের দাম কম থাকে। কারণ, কৃষকের হাতে এখন টাকা কম। বিশ্ববাজার থেকেও খাদ্য আমদানি করা সামনের দিনে আরও কঠিন হতে পারে। ফলে দেশের উৎপাদন ঠিক রাখতে সারের দাম ও জোগান ঠিক রাখা উচিত।
এগ্রোটেক
কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তারা এক সঙ্গে কাজ করতে রাজি
লেখক
প্রথম আলো
ডাচ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে দুই দেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা একসঙ্গে কাজ করতে রাজি হয়েছেন।
গতকাল সোমবার নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগে অনুষ্ঠিত কৃষি খাতের ব্যবসাবিষয়ক এক সম্মেলনে দুই দেশের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত এগ্রি বিজনেস কনক্লেভে বাংলাদেশের প্রায় ৪০জন উদ্যোক্তা ডাচ কৃষি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি প্রযুক্তি সহযোগিতা ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছে ওয়েগেনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়।
আলোচনায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা প্রযুক্তি কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিলে নেদারল্যান্ডসের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা প্রযুক্তি সহযোগিতা দিতে রাজি থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।
রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে ডাচরা প্রস্তুত এবং বাংলাদেশি উদ্যোক্তারাও তাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। এ ছাড়া ডাচ সরকার ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বীজ, পশু খাদ্য, পোলট্রি, হর্টিকালচার ও এ্যাকুয়াকালচার বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম সম্পাদন করেছে, যা ওই দেশের বেসরকারি খাতকে আরও উৎসাহিত করেছে।
আলোচনায় কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করতে তৈরি আছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্কয়ার, ইস্পাহানি এগ্রো, একে খান অ্যান্ড কোম্পানি, প্যারাগন গ্রুপ, এসিআই, জেমকন গ্রুপসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা ডাচ প্রযুক্তির প্রয়োগ সরেজমিনে দেখতে যাবেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের পোল্ট্রিখাতে সহযোগিতার আলোচনা অনেকটা এগিয়েছে উল্লেখ করে মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, দুই দেশের মধ্যে মৎস্য, পশুপালন ও হর্টিকালচারে সহযোগিতার বিপুল সম্ভাবনা আছে।
কনক্লেভ আয়োজনে প্রথমবারের মতো দূতাবাসের সঙ্গে অংশীদার হয়েছে নেদারল্যান্ডসের কৃষি মন্ত্রণালয়, নেদারল্যান্ডস এন্টারপ্রাইজ এজেন্সি, নেদারল্যান্ডস ফুড পার্টনারশিপ, ডাচ-গ্রিন-হাইজডেল্টা, লারিভ ইন্টারন্যাশনাল, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ।
কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থানকারী নেদারল্যান্ডসের আয়তন বাংলাদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের কম। ২০২১-এ কৃষিপণ্য ও খাদ্য রপ্তানি করে নেদারল্যান্ডস ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি আয় করেছে।

মেহেরপুর: পতিত ও অনুর্বর বেলে মাটির জমিতে চিনাবাদাম চাষ করে লাভবান হচ্ছেন মেহেরপুরের চাষিরা। ফলন ও বাজার দর ভালো এবং কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন এই এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাদামের চাষ।
সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা, শ্যামপুর, টেংগারমাঠ ও গোপালপুর গ্রামের অধিকাংশ জমির মাটি বেলে। ফলে এই এলাকার চাষিরা ধান, গম, পাটসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করে খুব একটা লাভবান হতে পারেন না।
ধান কাটার পর এ সব জমি সাধারণত পতিত থাকে। এজন্য ৯০ দিনের ফসল হিসেবে অল্প খরচে বাদাম চাষ করছেন এলাকার চাষিরা।
মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, জেলায় এবার বাদাম চাষ হয়েছে ১৫ হেক্টর জমিতে। এবার এক বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করতে চাষিদের খরচ হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা সেক্ষেত্রে বাদামের ফলন হয়েছে ৬ থেকে ৭ মণ। আর এ ফলনে প্রায় ২০ হাজার টাকা ঘরে তুলছেন তারা। বাজারে প্রতিমণ বাদাম বিক্রি হচ্ছে ২৭শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা গ্রামের বাদাম চাষি খাঁজা আহমেদ, কাওছার আলী ও ফিরোজ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এলাকার মাটি বেলে হওয়ায় সাধারণত সবজি, আলু ও অন্যান্য ফসল চাষ করার পর জমি পতিত থাকে। সে সময়ে চিনা বাদামের চাষ করা হয়। বাদাম চাষে খরচ কম এবং উৎপাদন ও বাজার দর ভাল। তাই দিন দিন চাষিরা তাদের পতিত জমিতে চিনা বাদামের চাষ শুরু করছেন।
এছাড়া বাদাম ছাড়ানো, শুকানোসহ যাবতীয় কাজ করে থাকেন এখানকার নারীরা। বাদামের গাছ আবার শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করছেন গৃহিণীরা।
নারী শ্রমিক সাহানা খাতুন ও জরিমন নেছা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বাদাম ছাড়ানো ও শুকানোর কাজ করে থাকি। এলাকার ২৫/৩০ জন নারী শ্রমিক এ কাজ করে আসছেন।
গৃহিণী সাজেদা খাতুন ও জামেলা খাতুন জানান, বাদামের লতা জালানি হিসেবে বেশ ভাল। তাই লতাও বিক্রি হচ্ছে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আক্তারুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, চিনা বাদামের চাষ সাধারণত পতিত জমিতে হয়ে থাকে। এলাকার চাষিরা এই জমিতে বাদামের চাষ করে বাড়তি আয় করছেন। তাই বাদাম চাষ যাতে আরও সম্প্রসারিত হয় সেজন্য কৃষি বিভাগ চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে।

সিলেট বিভাগের উচ্চমাত্রার অ্যাসিডিক জমিতে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কৃষি বিজ্ঞানিরা মৌলভীবাজারের আকবরপুরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে ফুল চাষ করে সফল হয়েছেন। এ ফুল চাষ মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে ১০০ চাষিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে কৃষি গবেষণা কেন্দ্র।
কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের তথ্যমতে, যশোরে বাণিজ্যিকভাবে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল চাষ হয়। যার বাজার দর প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। যশোরের ফুল সারাদেশের পাশাপাশি সিলেটেও আসে প্রচুর। সিলেটে ফুলের বাজার শত কোটি টাকার উপরে। কিন্তু সিলেটে ফুলের চাষ বাণিজ্যিকভাবে হয় না।

সিলেট বিভাগের মাটি অ্যাসিডিক হওয়ায় ফুল চাষ করা যাবে না, সেটাই ছিল প্রচলিক ধারণা। কিন্তু এ ধারণাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যদিয়ে ভুল প্রমাণ করেছেন মৌলভীবাজার আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের একদল গবেষক। মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস এম শরিফুজ্জামানের নেতৃত্বে উচ্চমাত্রার অ্যাসিডিটিক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ফুল চাষ করে সফল হয়েছেন তারা। এ পরীক্ষামূলক চাষে ফলনও হয়েছে ভালো। তাই সিলেট অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট অঞ্চলে অনেক জায়গা অনাবাদি ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। প্রবাসীরা দেশের বাইরে অবস্থান করায় তাদের অনেক জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকে। এ জমিকে আবাদের আওতায় আনতে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের উদ্যোগ নিয়ে আগ্রহী ১০০ চাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে আমন ধান কাটার পর এ অঞ্চলের অনেক জমি পতিত থাকে। ফলে ফুল চাষ করে অনাবাদি জমি থেকে কোটি টাকা উপার্জন সম্ভব।
বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মিরানা আক্তার সুমি জানান, চাষিরা প্রশিক্ষণ শেষে অনেক কিছু শিখেছেন। কী পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে হয়, তা জেনেছেন। ধানের চেয়ে যেহেতু ফুলের দাম বেশি, তাই ফুল চাষে তাদের আগ্রহ বাড়ছে।

ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. সরফ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভালোভাবে জমি চাষ করে নির্দেশিত মাত্রায় জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয়। অন্য ফসলের মতোই এর চাষ পদ্ধতি সহজ। বেড তৈরি করে ফুল চাষ করতে হয়। প্রতিটি বেডের দৈর্ঘ যে কোন মাপের হতে পারে। তবে প্রস্থে ১.২-১.৫ মিটার হলে ভালো।’

তিনি বলেন, ‘কলম (বীজ) লাগানো থেকে তিন মাস পর স্টিক সংগ্রহ শুরু হয়। সংগ্রহ করা যাবে পরবর্তী ২৫ দিন। গ্লাডিওলাস ৫টি জাতসহ মোট ১২টি প্রজাতির ফুলের পরীক্ষা করে আমরা সফল হয়েছি।

সবুজ বিপ্লবের সময়ে পেস্টিসাইড ব্যবহারকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জীব বৈচিত্র্য, মাটির স্বাস্থ্য ও ফসলের গুণমানতা। এখন ভেবে দেখার সময় এসেছে, এত রাসায়নিক পেস্টিসাইড ব্যবহার করা কি ঠিক হচ্ছে? এ প্রশ্ন শুধু ভারতে নয়, সারাবিশ্বের কৃষকসমাজ ও শস্যবিজ্ঞানীদের কাছে। তাই মনে হয় জৈব নিয়ন্ত্রণকে গুরুত্ব দিয়ে সুসংহত রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণ আগামী দিনে একমাত্র সমাধানের রাস্তা হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।
চলমান খরিফ মরসুমে আমাদের রাজ্যে প্রধানত ধান, খরিফ পেঁয়াজ, জুট, ইক্ষু, তিল ইত্যাদি ফসলের চাষ হয়ে থাকে। এ রাজ্যে ধানে ঝলসা রোগের আক্রমণ একটি গুরুতর বিষয়।
জৈব পদ্ধতিতে এই রোগ দমন করার একটি সহজ উপায় রয়েছে। ৫০ মিলিলিটার কেরোসিন তেলে ৮৫ গ্রাম থেঁতলানো রসুন মিশিয়ে ২৪ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এরপর ৯৫০ মিলি. জল ও ১০ মিলি. তরল সাবান মিশিয়ে ভালোভাবে নেড়ে নিয়ে বোতলে রেখে দিতে হবে। ১৯ লিটার জলের সাথে ১ ভাগ মিশ্রণ মিশিয়ে সকালে/বিকেলে স্প্রেয়ার দিয়ে আক্রান্ত গাছে স্প্রে করতে হবে।
এই মিশ্রণটি আমেরিকান বোল ওয়ার্ম, আর্মি ওয়ার্ম, পেঁয়াজ-এর চিরুনি পোকা, আলুর টিউবার মথ, রুট নট নিমাটোড (কৃমি), আখের কাণ্ড ছিদ্রকারী পোকা, ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ, ডাউনি মিলডিউ ও ধানের ঝলসা রোগ প্রতিরোধে খুবই কার্যকরী।
এছাড়া বিভিন্ন ধরণের পাতা খেকো পোকা ও জাব পোকা নিয়ন্ত্রণে ১ কেজি পেঁয়াজ থেঁতো করে ১ লিটার জলের সাথে মিশিয়ে ২৪ ঘণ্টা রেখে দেবার পর কচলিয়ে রস নিংড়ে নিতে হবে। প্রাপ্ত নির্যাসের সাথে ১০ লিটার জল মিশিয়ে আক্রান্ত ফসলে স্প্রে করতে হবে।
জৈব সার প্রয়োগ ও জৈব কীটনাশক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফসলের উৎপাদন খরচ শতকরা ২৫-৩০ শতাংশ হ্রাস করা সম্ভব। উচ্চ পুষ্টিমানসম্পন্ন প্রযুক্তিতে উৎপাদিত জৈব সার, শাকসব্জী ও অন্যান্য ফসলের প্রয়োজনীয় নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশিয়াম-এর সাথে অণুখাদ্যের যোগান দেয়।
জৈব পদ্ধতিতে উৎপন্ন কীটনাশক ও ছত্রাকনাশকগুলি ফসলে কোনওরকম দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ব্যতিরেকে, পোকা ও রোগ দমনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এতে মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও উর্বরতা দীর্ঘমেয়াদী হয়। উৎপাদিত ফসল হয় স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ।
বন্ধুপোকা মাকড়ের (পরজীবি ও পরভোজী) সংরক্ষণের জন্য জমির পাশে অব্যবহৃত জায়গায় ত্রিধারা, উঁচুটি, শালিঞ্চে ইত্যাদি আগাছা জাতীয় গাছের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
দূরদর্শী পদক্ষেপের মাধ্যমে রাসায়নিক কৃষি বর্জন করে প্রাণ বৈচিত্র্য নির্ভর জৈব কৃষির মাধ্যমে খাদ্যে সার্বভৌমত্ব আনা সম্ভব। তাই জৈব কৃষির পথে ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়ে কৃষিবিষমুক্ত, স্বাস্থ্যসম্মত সমাজ গড়ে তোলাই বাঞ্ছনীয়।

যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশে হতে পারে সারের সংকট

বিদেশ থেকে খালি হাতে ফিরে ড্রাগন চাষে সাফল্য

নাসিরনগরে বন্যায় তলিয়ে গেল কৃষকের বাদামখেত

পানি দিতে অতিরিক্ত টাকা

কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তারা এক সঙ্গে কাজ করতে রাজি

‘শিক্ষিত কৃষক’ বলেই তাঁকে নিয়ে মানুষের আগ্রহটা বেশি

ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বীজ কিনে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত

বোরো কাটতে বাড়তি খরচ ঃ হাসি নেই কৃষকের মুখে

পেঁয়াজের ক্ষতি পুষিয়ে দিচ্ছে সাথি ফসল বাঙ্গি

নিরাপদ খাদ্য: দেশি মাছ কাকিলাকে যেভাবে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা

স্মার্ট ডিভাইসে মাছ চাষে বিপ্লব

চীনে পানিবিহীন হাঁসের খামার

কলাপাড়ায় ৩০ মণ জাটকা জব্দ

ফরিদপুরে ধানের ভালো দামে কৃষকের মুখে হাসি

ধানে পোকার আক্রমণে দিশেহারা চাষিরা

ঠাকুরগাঁওয়ে চাষ হচ্ছে ‘ব্ল্যাক রাইস’

মানুষের নিষ্ঠুরতা থেকে কুকুরকে উদ্ধার করলো গরু

হাই প্রেসার কমানোর সহজ ৫ উপায়

অসময়ের বন্যায় সব শেষ তিস্তাপাড়ের কৃষকের

পাবনায় পাঁচ মাসে ৫ কোটি টাকার শামুক বিক্রি
শীর্ষ সংবাদ
-
বাংলাদেশে ‘প্রায় বিলুপ্তি’র পথে ১০০-এর বেশি দেশীয় মাছ – দা এগ্রো নিউজ
-
মাছ চাষে স্মার্ট প্রযুক্তির উদ্ভাবন বাংলাদেশি তরুণের
-
অর্গানিক খাদ্য: বাংলাদেশে বাড়ছে চাহিদা কিন্তু মান নিশ্চিত হচ্ছে কী?
-
ভারতের কঠোর পদক্ষেপ যেভাবে বাংলাদেশের গরু খামারিদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে গেল
-
পরিবারের সদস্যদের জন্য ভেজালমুক্ত খাবার নিশ্চিত করতেই ছাদে বা বারান্দায় ফল,সবজি চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছেন মানুষ
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন