দৈনন্দিন
করোনাভাইরাস: বাংলাদেশে লকডাউনের কারণে কী কী পরিবর্তন এসেছে?

করোনাভাইরাস সংক্রমণের লাগাম টানতে বাংলাদেশে অঘোষিত লকডাউন চালু হয় গত ২৬শে মার্চ।
এর আগেই অবশ্য বন্ধ করে দেয়া হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। লকডাউনে মানুষকে বলা হয় ঘরে থাকতে। জরুরি কাজে বাইরে বের হলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করার নির্দেশ আসে।
জীবন যাত্রার সাথে যুক্ত হয় নতুন কিছু অভ্যাস। যার মধ্যে রয়েছে বার বার সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়া, চোখে-মুখে-নাকে হাত না দেয়া ইত্যাদি।
এগুলো তো গেলো নিতান্তই ব্যক্তিগত জীবনের কিছু পরিবর্তন। এছাড়াও এমন কিছু পরিবর্তন এসেছে যা হয়তো এক মাস আগে মানুষ চিন্তাও করতো না। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাড়িতে বসে অফিস করা।
এ ধরণের পরিবর্তনকে অনেকে ইতিবাচকভাবে দেখলেও অনেকে আবার বলছেন যে, বন্দী জীবনে হাঁপিয়ে উঠছেন তারা।
আসলে ব্যক্তিগত, পারিবারিক আর নাগরিক জীবনে মানুষ কী ধরণের পরিবর্তনের মুখে পড়েছেন এই এক মাসে?
দৈনন্দিন জীবনে পরিবর্তন
স্কুল-কলেজসহ সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে লকডাউন শুরু হওয়ার বেশ আগে থেকেই বাড়িতেই রয়েছে শিশু-কিশোররা।
অনেক শিশু রয়েছেন যারা বাড়িতে থাকতে থাকতে অনেকটা হাঁপিয়ে উঠেছে। অনেকেই চাইছে স্কুলে ফিরতে।
এমন অভিজ্ঞতার কথা জানাচ্ছিলেন ফারজানা খালিদ যার ৫ বছর বয়সী এক সন্তান রয়েছে।
“ও প্রায় প্রতিদিনই জিজ্ঞেস করে যে স্কুল খুলবে কবে,” তিনি বলেন।
একটি ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিতে কাজ করেন অদিতি পাল। তিনি বলেন, লকডাউনের কারণে সবচেয়ে বড় যে পরিবর্তনটি এসেছে সেটি হচ্ছে বাসায় বসে অফিস করতে হচ্ছে।
সেই সাথে বাসার নানা কাজও করতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে কাজের চাপটা একটু বেড়ে গেছে বলে জানান তিনি।
“আমি যখন কাজ করছি, তখন আমার স্বামী আমার বেবিটাকে দেখাশুনা করছে। আমার শাশুড়িও অনেক হেল্প করছেন।”
তবে জীবন যাত্রায় পরিবর্তনটা আরো প্রকট হচ্ছে যখন ভাইরাসের সংক্রমণ দমনে সতর্কতামূলক পদক্ষেপগুলো নেয়া হচ্ছে।

অদিতি পাল বলেন, এখন ঘরের খাবার শেষ না হয়ে গেলে সেগুলো কিনতে বাইরে যাওয়া হয় না।
আর বাইরে গেলেও ঘরে ফিরে সেগুলো জীবাণুমুক্ত করা, এবং যে বাইরে যায় তাকেও গোসল করতে হয়- এই পরিবর্তনগুলোই অনেক বেশি চোখে পড়ার মতো বলে জানান অদিতি পাল।
পরিবেশগত পরিবর্তন
বিশ্বের বহু দেশই বলেছে, যে লকডাউনের কারণে মানুষ ঘরে থাকায় এবং বিভিন্ন ধরণের কল-কারখানা বন্ধ থাকায় কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কমে গেছে। স্যাটেলাইট ইমেজেও দেখানো হয়েছিল যে, চীনে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে।
বাংলাদেশে কি এমন ধরণের পরিবর্তন এসেছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে নগর পরিকল্পনাবিদ ও প্রকৌশলী ইকবাল হাবিব বলেন, পরিবর্তনের কথা যদি বলতে হয় তাহলে বলতেই হবে যে, বায়ুদূষণ নগরীতে অস্বাভাবিকভাবে কমেছে। সমুদ্র কিনারাগুলোতে ডলফিন লুকোচুরি করছে।
“খেয়াল করলে দেখবেন, নগর জুড়ে পাখি এবং প্রজাপতি যেন ফিরে এসেছে।”
শব্দ দূষণের হাত থেকে সমস্ত শহর বিরাট পরিত্রাণ পেয়েছে। বেশ কদিন ধরে বৃষ্টি হওয়ার কারণে যে ধুলা ছিল সেটাও কমেছে।
তবে তার মধ্যে লকডাউনের কারণে মানুষকে ঘরে ঢুকিয়ে ফেলা হয়েছে। এটা আসলে আসল উন্নতি নয়। কারণ মানুষ ছাড়া পরিবেশের ভারসাম্য সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি।

জলগুলো তাকিয়ে দেখলে দেখা যাবে যে সেগুলো পরিশোধনের পথে চলে যাচ্ছে। তার মতে, জল শুধু বর্জ্য ফেলার মাধ্যমেই দূষণ করা হয় না বরং যান চলাচল ও অন্যান্য উপায়েও মানুষ জল দূষণ করে থাকে।
মি. হাবিব বলেন, গাছ গুলোর দিকে তাকালে দেখা যায় যে, সেগুলো কি গাঢ় সবুজ। মনে হয় যেন কেউ পরিষ্কার করে রেখে গেছে। আসলে তা নয়। বরং বাতাসে ধুলার পরিমাণ কমে গেছে।
“একজন ভোক্তা হিসেবে আমরা এগুলো লক্ষ্য করতে পারি।”
তিনি জানান, গ্রামে গ্রামে ক্ষেতে-খামারে সাদা বক ফিরে এসেছে। এর থেকেও বোঝা যায় যে, পরিবেশ তার নিজস্ব ভারসাম্য তৈরির চেষ্টা করছে।
অর্থনীতিতে পরিবর্তন
লকডাউনের কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকলে কী পরিমাণ ক্ষয়-ক্ষতি হয় এ বিষয়ে গবেষণা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ।
বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, ২০১৮-১৯ সালের জিডিপি-কে ভিত্তি হিসেবে ধরে এই গবেষণা করা হয়েছে।
তারা তাদের গবেষণায় যে বিষয়টি দেখেছেন তা হলো, লকডাউনের কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকলে প্রতিদিন ৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা ক্ষতি হয়।
তিনি বলেন, একটা দেশের অর্থনীতির তিনটি বড় খাত রয়েছে। কৃষি, শিল্প ও সেবা খাত।
করোনাভাইরাসের কারণে কৃষি খাতে কোন ধরণের উৎপাদন ব্যাহত হয়নি। অর্থাৎ, ফসল ক্ষতি হয়নি, মাছেরও ক্ষতি হয়নি বা কোন ধরণের গবাদি পশুও মারা যায়নি। যেটি হয়েছে সেটি হচ্ছে পণ্যের দাম পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ হাট-বাজারে ক্রেতাদের সমাগম কম। এই গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে দামের কতটা পড়তি হয়েছে।
তাদের মতে, কৃষিতে প্রতিদিন ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ২০০ কোটি টাকার মতো।

তবে মি. হামিদ জানান, তাদের এই গবেষণাটি আরো ১০ থেকে ১৫ দিন আগে করা হয়েছে। দিন বাড়ার সাথে ক্ষতির এই পরিমাণ আরো বাড়বে বলে জানান তিনি।
শিল্প খাতের ক্ষেত্রে শুধু ওষুধ আর খাদ্য পণ্য ছাড়া আর তেমন কোন অংশ খোলা নেই। সেখানেও ক্ষতির পরিমাণ কম নয়। সেটা প্রতিদিন প্রায় এক হাজার একশ ৩১ কোটি টাকার মতো।
সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে সেবা খাতে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবহন খাত। সব ধরণের সড়ক, নৌ, বিমান ও রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
তবে বেকারত্বের বিষয়ে এখনই কোন ধরণের মন্তব্য করা যাবে না বলে জানান গবেষক মি. হামিদ।
তার মতে, যেহেতু মানুষ ছুটিতে রয়েছে তাই ছুটি শেষ হওয়ার আগে বলা যাবে না যে কারা আসলে চাকরি হারাচ্ছেন বা বেকার হয়ে পড়ছেন। এটার জন্য লকডাউন শেষ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
রেমিটেন্সে ধাক্কা
স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল হামিদ বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে পুরো বিশ্বই যেহেতু কার্যত অচল হয়ে পড়েছে তাই যত দিন পর্যন্ত না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে তত দিন পর্যন্ত প্রবাসীদের আয় স্বাভাবিক হবে না।
আর একই কারণে মারাত্মক প্রভাব পড়তে যাচ্ছে রেমিটেন্স আয়ের ক্ষেত্রেও।
তিনি বলেন, “রেমিটেন্সের ক্ষেত্রে আমরা একটা বড় ধাক্কা খেতে যাচ্ছি।”
রেমিটেন্স নির্ভর করে যে, কী পরিমাণ জনশক্তি বিদেশে যাচ্ছে এবং কী পরিমাণ জনশক্তি ফিরে আসছে। এই দুই হারের মধ্যে যদি প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক হয়, তাহলে রেমিটেন্স আয় ভাল হয়। আর যদি যাওয়ার তুলনায় ফিরে আসার হার বেশি হয় তাহলে রেমিটেন্স আয় কমে যায়।
রেমিটেন্স কমে যাওয়ার এই ধাক্কা কত বড় হবে তা নির্ভর করবে যেসব দেশে বাংলাদেশি জনশক্তি রয়েছে সেসব দেশে অর্থনীতি কত দ্রুত স্বাভাবিক হয় তার উপর। সেই সাথে প্রতিষেধক কত দ্রুত আবিষ্কার হচ্ছে সে বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, “প্রতিষেধক আবিষ্কার না হলে কোন দেশই আর নতুন করে জনশক্তি নিতে চাইবে না। কারণ তারা চাইবে না যে, জনশক্তির সাথে সাথে ভাইরাসটিও তাদের দেশে নতুন করে ছড়িয়ে পড়ুক।”
ধর্মীয় রীতি-নীতি
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য ধর্মীয় সমাবেশসহ সব ধরণের জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

মসজিদে জামায়াতে নামাজ আদায়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এমনকি রমজান মাসে তারাবির নামাজও ঘরে পড়তে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে বরগুনার জেলার পাথরঘাটা উপজেলা জামে মসজিদে ইমামতি করেন মোহাম্মদ নুরে আলম।
তিনি বলেন, এখন আর মানুষ জামায়াতে নামাজ পড়তে আসে না। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা তো আছেই, সাথে মানুষও রোগ থেকে বাঁচতে সচেতন হয়েছে বলে জানান তিনি।
“এখন তো মসজিদে ১০-১২ জন ঢোকার পর কেচি গেইট (কোলাপসিবেল গেইট) বন্ধ করে দেয়া হয়,” বলেন মি. আলম।
দৈনন্দিন
নারকেলেও রয়েছে প্রচুর পুষ্টি, এর তৈরি হচ্ছে ওষুধ, জেনে নিন নারকেলের ঔষধি গুণ সম্পর্কে

নারকেল, আমাদের রাজ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ফল প্রচুর উপকারী আমাদের শরীরের জন্য৷ শুধুমাত্র ফল নয়, এই গাছটির সমস্ত অংশই, তা সে পাতাই হোক বা ফলের খোল, ছিবড়েই হোক বা মূল গাছ – সমস্তটাই ব্যবহার্য, যে কারণে এটিকে কল্পবৃক্ষ বা কল্পতরু হিসাবেও অভিহিত করা হয়। ভোজ্য তেল হিসাবেও আমাদের দেশের দক্ষিণের, বিশেষত সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে এর ব্যবহার বহুল প্রচলিত। নারকেল গাছকে বলা হয়ে থাকে ট্রি অব লাইফ৷ এর ঔষধি গুনের (Medicinal Benefits of Coconut) জন্যও এর চাহিদা প্রচুর৷ বিশ্বব্যাপী খাবার, পানীয়, ঘর সাজানোর জিনিসপত্র তৈরি, ওষুধ তৈরিতে নারকেল ব্যবহৃত হয়ে থাকে৷
নারকেলের বিজ্ঞানসম্মত নাম Cocos nucifera. এর ভিতরের জল, নরম শাঁস, দুধ, তেল, বাইরের শক্ত আবরণ এ সবকিছুই ব্যবহৃত হয়৷ নারকেলের (Nutritional Value of Coconut) মধ্যে বিদ্যমান বিভিন্ন ভিটামিন, মিনারেল আমাদের শরীরকে বহু রোগের হাত থেকে (Benefits of Coconut) রক্ষা করে৷ এই প্রতিবেদনে সেই বিষয়েই তুলে ধরা হল৷
নারকেলের স্বাস্থ্যগুণ (Health Benefits) –
নারকেল শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে৷ ফলে বিভিন্ন সমস্যা থেকে হার্ট সুরক্ষিত থাকে৷
নারকেল আমাদের হজম শক্তি বাড়িয়ে তোলে৷ নারকেল খেলে ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকে বলে দাবি করা হয়৷
নারকেলের মধ্যে থাকা মিনারেলস্ আমাদের হাড়ের শক্তি বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয়৷ এতে বিদ্যমান ক্যালসিয়াম আমাদের হাড়কে যেমন মজবুত করে তেমনই দাঁতের ক্ষয় রোধ করে দাঁত ভালো রাখতে সাহায্য করে৷
নিয়মিত নারকেল খেলে ত্বক ভালো থাকে৷ ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি পায়৷ বলিরেখা পড়াকে আটকাতে সাহায্য করে নারকেল৷
নারকেলের তেলেও রয়েছে প্রচুর গুন৷ তাই ঘরে ঘরে নারকেলের তেলের ব্যবহার আজও একইভাবে হয়ে চলেছে৷ এই তেল ব্যবহারে আমাদের শুষ্ক ত্বক যেমন নরম থাকে, তেমনই চুল মজবুত হয়৷ নারকেলের তেল লিভারের সমস্যা হ্রাস করে এবং হজমে সাহায্য করে৷
বিভিন্ন ক্ষত এবং জ্বালা কমাতে নারকেল তেলের জুড়ি মেলা ভার৷ শীতকালে আমাদের ত্বককে ফেটে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে নারকেলের তেল৷
ডায়াবেটিস-এর সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের জন্য যেমন এটি উপকারী তেমনই অ্যালজাইমার্স-এর হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এই নারকেল তেল৷
আমাদের শরীরের আভ্যন্তরীণ শক্তি বৃদ্ধি থেকে শুরু করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও নারকেল তেলের ভূমিকা রয়েছে৷
বিভিন্ন সংক্রমণের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করতে সাহায্য করে নারকেলের তেল৷ থাইরয়েড-এর সমস্যা হোক বা স্ট্রেচ মার্ক দূরীকরণ, নারকেলের তেলের ওপর অনেকেই ভরসা করেন৷
তবে নারকেল তেল বেশি ব্যবহার করলে সমস্যা হতে পারে৷ অ্যালার্জি থেকে ডায়েরিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে৷ তাই নিয়মিত নির্দিষ্ট পরিমাণে নারকেল এবং নারকেল তেলের ব্যবহার আমাদের শরীরকে বহু সমস্যা থেকে রক্ষা করে থাকে৷
দৈনন্দিন
জেনে নিন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে লাল শাক ঠিক কতটা জরুরী

লাল শাক মূলত শাক হিসেবেই গরম ভাতে এটি খাওয়া হয়৷ আবার স্যালাডেও অনেকে এই লাল শাক (Red Spinach) ব্যবহার করে থাকেন৷ বিভিন্ন শাকের মধ্যে এই লাল শাক তার স্বাদে, সৌন্দর্য্যে এবং গুনে নিজের স্বতন্ত্র্য জায়গা করে নিয়েছে বহু আগেই৷
লাল শাক এর গুনের জন্যই এই শাকের চাহিদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ আবার এর চাষেও খুব বেশি পরিশ্রম করতে হয় না৷ স্বল্প সময়েই তা খাওয়ার বা বিক্রয়ের উপযুক্ত হয়ে ওঠে৷
আবার বাড়ির বারান্দা বা ছাদেও এর চাষ এতো সহজে হয় যে অনেকেই লাল শাক টবে চাষ করে থাকেন৷ লালচে গোলাপি রঙের এই শাক শুধু শীত নয়, বর্তমানে এই শাক সারা বছরই পাওয়া যায় এবং এর চাষও সারা বছর হয়ে থাকে৷ এবার দেখে নেওয়া যাক যে শাকের এতো চাহিদা তার উপকারিতা সম্পর্কে৷
১০০ গ্রাম লাল শাকে রয়েছে (Nutritional Value of Red Spinach) –
১০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১ গ্রাম ডায়েটারি ফাইবার, ৪.৬ গ্রাম প্রোটিন, ১.৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন এ, ৮০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ৪২ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ৩৪০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ৩৬৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১১১ মিলিগ্রাম ফসফরাস প্রভৃতি৷
লাল শাকের উপকারিতা (Benefits of Red Spinach) –
লাল শাকের বিদ্যমান ফাইবার আমাদের পরিপাকক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান জোগায়৷ এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও সাহায্য করে৷
লাল শাকে উপস্থিত অ্যামাইনো অ্যাসিড, লোহা, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, একত্রে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিকে প্রতিহত করে বলে দাবি করা হয়৷
লাল শাকে বিদ্যমান লোহা, রক্তাল্পতার সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে৷ রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়৷ সেই সঙ্গে রক্ত সঞ্চালনাতেও সহায়তা করে৷
লাল শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই, কে, লোহা, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম৷ আর এইসব উপাদান আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে৷
এছাড়া হাড় মজবুত করতে এবং কোলেস্টোরল নিয়ন্ত্রণ করতেও লাল শাকের ভূমিকা অনস্বীকার্য৷ সেই হার্টের সুরক্ষাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে লাল শাক৷
ভিটামিন ই আমাদের চোখের জন্য খুব প্রয়োজনীয় এবং লাল শাক থেকে তা প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়৷ এর পাশাপাশি চুল এবং ত্বককেও সুরক্ষা প্রদান করে লাল শাকের মধ্যে উপস্থিত বিভিন্ন উপাদান৷
দৈনন্দিন
জেনে নিন পদ্মের যত ওষুধি গুণ

বেনজীর আহমেদ সিদ্দিকী
বাংলাদেশে সাধারণত বর্ষার শেষে এবং শরতের শুরুতে বিল-ঝিল, পুকুরে সন্ধ্যার ঠিক আগমুহূর্ত থেকে ফুটতে শুরু করে মনোমুগ্ধকর জলজ ফুলের রানি ‘পদ্ম’! সারারাত ধরেই একে একে পাল্লা দিয়ে সৌরভ ছড়িয়ে ফুটতে থাকে পদ্মফুল। তাই এক বিল বা পুকুর পদ্ম যেন গভীর সৌন্দর্যের আধার। তবে কালের পরিক্রমায় বাংলাদেশে পদ্ম বিল ও পুকুর অনেক কমে এসেছে।
জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার ঘাগুটিয়ার পদ্মের বিল, ফরিদপুরের বিল গজারিয়া ও সদরের ঝিলটুলি এলাকায় সিভিল সার্জনের সরকারি বাসভবনের পুকুর, নরসিংদীর পলাশ উপজেলার রাবান এলাকার বিল, ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার খইলাপুরী বিল, গোপালগঞ্জের করপাড়ার বলাকইর বিল, গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার জাদুরতাইর ও ঝারাবর্ষা বিল, নাটোরের বড়াই গ্রামের বিল, রাজশাহীর মোহনপুরের সাবাই বিল, নড়াইলের রামগর চরের বিল এবং বরিশালের বিআইডব্লিউটিএ’র পুকুরে বসে পদ্মের মেলা।

কমল, শতদল, সহস্রদল, উৎপল, মৃণাল, পঙ্কজ, অব্জ, অম্বুজ, নীরজ, সরোজ, সররুহ, নলিনী, অরবিন্দ, ইন্দিরা, কুমুদ ইত্যাদি সমার্থক নামের পদ্ম সৌন্দর্য, বিশুদ্ধতা ও পবিত্রতার প্রতীক। পদ্মের সৌন্দর্য ও বৈচিত্র মানুষকে প্রবলভাবে আকৃষ্ট করে, তাই বাংলা প্রবাদেও পাওয়া যায় ‘কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন’।
প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে পদ্মের ব্যবহার হয়ে আসছে। উপমহাদেশে পদ্মফুলের একেক স্তরের পাপড়ি ধর্মীয় শিক্ষা বা সংস্কারে বিভিন্ন অর্থ বহন করে। হিন্দু বা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে পদ্ম জীবন, উর্বরতা ও পবিত্রতার প্রতীক। হিন্দু ধর্মমতে, নারায়ণের নাভি থেকে নির্গত পদ্ম ব্রহ্মার আসন আর শ্বেতপদ্ম বিদ্যার দেবী সরস্বতীর আসন।

হিন্দু ধর্মে বলা হয়, প্রত্যেক মানুষের মাঝেই পদ্মের পবিত্র আত্মা রয়েছে। অনেকে বিশ্বাস করেন, পদ্মফুলের কুঁড়ি যেমন কোমল, ঈশ্বরের স্পর্শ আর দর্শনও সেরকম। পদ্মকে পবিত্র বলে মনে করে বৌদ্ধরাও। পদ্মফুলকে অনেক দেশে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ভাগ্যের প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হয়। গোলাপি পদ্ম গৌতম বুদ্ধের কিংবদন্তির ইতিহাস মনে করিয়ে দেয়।
পদ্মফুল নিয়ে একধরনের মিথ আছে, এর সৌরভে না-কি সাপ চলে আসে এবং পাতার আড়ালে লুকিয়ে ফুলের সৌরভ উপভোগ করে। বিষয়টি মিথ হলেও একেবারেই ফেলনা নয়। আসলে সাপ আসে ইঁদুরের লোভে। পদ্মফুলের গোড়ায় এর বীজ (পদ্ম খোঁচা) হয়। এই বীজ খেতে ইঁদুর আসে। আর তাকে ধরতে মাঝে মাঝে আগমন ঘটে সাপের।

পদ্মের বীজ বেশ সুস্বাদু, ফ্যাট, মিনারেল ও ট্রেস উপাদানযুক্ত। যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এ বীজ দ্রুত ক্ষুধা নিবারণ করতে পারে। তাই ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় এ বীজ খেয়ে কয়েকদিন না খেয়ে থাকত গেরিলা এবং সাধারণ মানুষ। এ ছাড়া পদ্মের আছে অনেক ওষুধি গুণাবলী। ভেষজ ও আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে নিম্নোক্ত গুণাগুণ পাওয়া যায়-
১. শ্বেতী বা ভিটিলিগো রোগে পদ্মপাতার নির্যাসের কার্যকারিতা আছে।
২. পদ্মের পাতা শরীরের নানা ধরনের প্রদাহ ও জ্বরের তাপমাত্রা কমাতে প্রাচীনকালে ব্যবহৃত হতো।
৩. এখনো অনেক গ্রামে গেলে দেখা যায়, জ্বর হলে বাচ্চাদের পদ্মপাতায় শুইয়ে রাখতে।
৪. অর্শ্ব বা গেজ রোগে পদ্মপাতা ও মূল ব্যবহৃত হয়।
৫. পদ্মের পাপড়ির নির্যাস হৃদশূলের (এনজাইনা পেকটোরিস) যন্ত্রণা কমায়।
৬. প্রসবের পর মায়েদের নাড়ি সরে এলে (প্রোলাপ্স অব ইউটেরাস) সারাতে ভূমিকা রাখে।
৭. শুষ্ক কাশি নিরাময়ে বাসক পাতা ও মধুর সাথে পদ্মের মূল ও কেশর ভালো কার্যকারিতা দেয়।
৮. নারীদের অনিয়মিত ঋতুস্রাবে পদ্মের মূল ও বীজ বেশ কাজের।
৯. পদ্মবীজ দেহের ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশনে সহায়তা করে।
১০. পদ্মবীজের প্রোটিন ও কার্বহাইড্রেট ডায়াবেটিস আক্রান্তদের জন্য উপকারী।
১১. পদ্মবীজ দেহের ওজন কমাতে সহায়তা করে।
১২. এর বীজ গ্যাস্ট্রাইটিস ও রক্তপাতজনিত সমস্যা দূর করতে সহায়ক।
১৩. পদ্ম মধু থেকে চোখের ওষুধ তৈরি হয়।
১৪. ত্বক সুন্দর করতে পদ্মপাতা, ফুলের পাপড়ি ও বীজের নানা ভূমিকা আছে।
১৫. ‘সুগন্ধি’ বা ‘অ্যারোমা’ হিসেবে প্রসাধনী শিল্পে পদ্ম ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
একসময় গ্রামবাংলার হাট-বাজারে গুঁড়া মসলা, গুড়, চিনি, লবণ, অন্য জিনিসপত্র এবং বিভিন্ন মেলায় বাতাসা, মোয়া, মুড়ি, মুড়কি, নাড়ু, লাড্ডু ইত্যাদি পদ্মপাতায় সুন্দরভাবে বেঁধে বিক্রি করা হতো। সহজলভ্য ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় এর ব্যবহার ছিল অসাধারণ। এখনো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায় প্রথাগত নিয়ম অনুযায়ী পদ্মপাতায় খাবার পরিবেশন করা হয়। দৈনন্দিন নানা কাজে এর পাতা ও ফুল ব্যবহার করা হয়।
দৈনন্দিন
এই সময়ে সুস্থ থাকতে চান? ডায়েটে অবশ্যই রাখুন কিসমিস

আপনি যদি সুস্থ থাকতে চান তবে শীঘ্রই আপনার ডায়েটে কিসমিস অন্তর্ভুক্ত করুন। প্রত্যেকেরই প্রতিদিন সীমিত পরিমাণে কিসমিস খাওয়া উচিত। এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। কিসমিস খাওয়ার ফলে অনেক রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। আজ আমরা এই নিবন্ধে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব।
script data-ad-client=”ca-pub-3140114751019908″ async=”” src=”https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js”>শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে –
কিসমিস খাওয়ার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও দৃঢ় হয়, তাই আপনি যদি ভাইরাসের আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকতে চান, তবে প্রতিদিন এটি গ্রহণ করুন।
শরীরে শক্তি যোগান দেয় –
কিসমিসে পর্যাপ্ত পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট থাকে। এই কার্বোহাইড্রেট আর এর মিষ্টত্ব শরীরকে শক্তি জোগায়। এতে কর্মক্ষমতা বাড়ে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী –
script data-ad-client=”ca-pub-3140114751019908″ async=”” src=”https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js”>ডায়াবেটিস রোগীদের কিসমিস খাওয়া উচিত। এটি তাদের জন্য খুব উপকারী। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তবে মনে রাখবেন, ডায়াবেটিক রোগীদের সীমিত পরিমাণে কিসমিস খাওয়া উচিত। যাদের রক্তাল্পতা রয়েছে, সেই সকল মানুষের প্রতিদিন কিসমিস খাওয়া উচিত। এর দ্বারা অ্যানিমিয়া কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবেন আপনি।
ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধি থেকে রক্ষা করতে সহায়ক –
script data-ad-client=”ca-pub-3140114751019908″ async=”” src=”https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js”>প্রতিদিন কিসমিস খেলে ক্যান্সারের কোষের বৃদ্ধি রোধ হয়। আপনি যদি সুস্থ ও ফিট রাখতে চান তবে অবশ্যই আপনার ডায়েটে কিসমিস অন্তর্ভুক্ত করুন। এর প্রতিদিনের গ্রহণ অনেক রোগ প্রতিরোধ করে।
যকৃতের জন্য উপকারী –
কিসমিস লিভারের জন্য খুব উপকারী। এটি লিভারকে সুস্থ রাখে, তাই লিভারের রোগীদের প্রতিদিন কিসমিস খাওয়া উচিত।
দৈনন্দিন
ফুলকপির মজাদার রেসিপি

ফুলকপিতে আছে ওজন কমানো ও হজমশক্তি বাড়ানোর জন্য ফাইবার; আছে কোলাইন, যা স্মৃতিশক্তির জন্য প্রয়োজন। এ ছাড়া অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানে পূর্ণ এই ফুলকপি। এতে রয়েছে ক্যানসার প্রতিরোধী গুণ। ফলে প্রতিদিনের খাবারে শীতকালীন এই সবজির গুরুত্ব আছে অনেক।
বিভিন্নভাবে ফুলকপি খাওয়া যায়। শুধু একটু উদ্ভাবনী চিন্তার প্রয়োগেই ফুলকপি দিয়ে বানানো যায় সুস্বাদু সব খাবার। ফুলকপি দিয়ে বানানো খাবার একই সঙ্গে সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ।
রেসিপি দিয়েছেন জিনাত নাজিয়া, সেলিনা আক্তার ও শুভাগতা গুহরায়।বিজ্ঞাপন
ফুলকপির ভাজা ভাত
উপকরণ
ফুলকপি ১টি (মাঝারি), ডিম ৩টি (তেলে দিয়ে ঝুরি করে নিন), মুরগির বুকের মাংস ১ কাপ (কিউব করে কাটা), বরবটি ১ কাপ, গাজর ১ কাপ, ময়দা ২ টেবিল চামচ, সাদা গোলমরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, পেঁয়াজপাতা পরিমাণমতো, লবণ পরিমাণমতো, তেল/ঘি/বাটার অয়েল ৩ টেবিল চামচ, ম্যাগি সস ২ চা-চামচ।

প্রণালি
ফুলকপি পরিষ্কার করে ধুয়ে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। প্যানে তেল দিয়ে মুরগির মাংস দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করুন। গাজর ও বরবটি দিতে হবে। সয়া সস, গোলমরিচের গুঁড়া দিয়ে লবণ দিন। ভালো করে মেশাতে হবে। তারপর ব্লেন্ড করা ফুলকপি দিয়ে আরও কিছুক্ষণ নাড়ুন। ভালো করে মিশিয়ে পেঁয়াজপাতা ছড়িয়ে পরিবেশন করতে হবে।
বেকড ফুলকপির রোস্ট
উপকরণ
আস্ত ফুলকপি ১টি, মিহি থেঁতলানো রসুন ১ টেবিল চামচ, জলপাইয়ের তেল সিকি কাপ, শর্ষে পেস্ট ২ টেবিল চামচ, লেবুর মিহি খোসা ১ চা-চামচ, গোলমরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, পাপরিকা আধা চা-চামচ, মেশানো হার্বস ১ চা-চামচ, লেবুর রস ২ চা-চামচ, মধু দেড় টেবিল চামচ, গ্রেট করা পনির সিকি কাপ, লবণ সিকি চা-চামচ।

প্রণালি
আস্ত ফুলকপির পাশের ডাঁটাগুলো কেটে ধুয়ে রাখুন। একটি বড় হাঁড়িতে অনেকটা পানি দিয়ে চুলায় বসান। ২ টেবিল চামচ লবণ দিন এবং পানি ফুটে উঠলে আস্ত ফুলকপি দিয়ে দিন। ২ মিনিট রেখে তুলে নিন। কিচেন টাওয়েল দিয়ে খুব ভালো করে মুছে নিন। ওভেন ২২০ ডিগ্রিতে ১০ মিনিটের জন্য প্রিহিটে দিন। একটি বাটিতে থেঁতলানো রসুন, জলপাইয়ের তেল, শর্ষে পেস্ট, গোলমরিচগুঁড়া, মেশানো হার্বস, লেবুর রস, মধু, পাপরিকা, লেবুর খোসা, লবণ একসঙ্গে খুবভালো করে মিশিয়ে ড্রেসিং তৈরি করে নিন। ফুলকপির ওপর ড্রেসিং ব্রাশ করে ১ ঘণ্টা রেখে দিন। এবার ফুলকপির ওপর গ্রেট করা চিজ ছড়িয়ে প্রিহিটেড ওভেনে বেক করুন ৪০ মিনিট। ওভেন থেকে বের করে ওপরে ড্রেসিং ছড়িয়ে গরম-গরম পরিবেশন করুন।বিজ্ঞাপন
ফুলকপির ক্রিম স্যুপ
উপকরণ
চিকেন স্টক ৩ কাপ, ফুলকপির টুকরা ২ কাপ, মাশরুমকুচি ২ টেবিল চামচ, রসুনকুচি ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজকুচি ৩ টেবিল চামচ, দুধ আধা কাপ, ময়দা ২ টেবিল চামচ, মাখন ৫০ গ্রাম, কুকিং ক্রিম এক কাপের ৩ ভাগের ১ ভাগ, সাদা গোলমরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লেবুর রস সামান্য ও পার্সলেকুচি ১ টেবিল চামচ।

প্রণালি
প্রথমে চুলায় অর্ধেক মাখন দিয়ে রসুন সামান্য ভেজে নিন। পেঁয়াজকুচি দিয়ে একটু ভেজে ফুলকপির টুকরাগুলো দিয়ে দিতে হবে। ফুলকপি খুব ভালো করে ভেজে নিন। ভালো করে ভাজা হলে ১ কাপ চিকেন স্টক দিয়ে দিন। ফুলকপি নরম হয়ে এলে নামিয়ে একটু ঠান্ডা করে ব্লেন্ড করে পেস্ট করে রাখুন। আবার প্যান দিয়ে বাকি মাখন ও মাশরুম দিয়ে একটু ভেজে নিন। ময়দা দিয়ে ভেজে নিন। ময়দার রং পরিবর্তন হলে দুধ দিয়ে খুব ঘন ঘন নাড়তে থাকুন। এরপর একে একে চিকেন স্টক, ফুলকপির পেস্ট দিয়ে দ্রুত নাড়তে থাকুন। ফুটে উঠলে ক্রিম ও গোলমরিচের গুঁড়া দিন। হয়ে এলে নামানোর আগে পার্সলেকুচি ও লেবুর রস দিয়ে নামিয়ে নিন। পরিবেশন করুন গরম-গরম।
মচমচে ফুলকপি
উপকরণ
ফুলকপির ফুল ১০-১২টি, সবুজ ক্যাপসিকাম ১টি, গাজর ১টি, আলু ১টি, ডিম ২টি, কর্নফ্লাওয়ার ও চালের গুঁড়া আধা কাপ করে, গোলমরিচের গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, চাট মসলার গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, লবণ, পানি, কাঁচা মরিচকুচি পরিমাণমতো, আদা ও রসুনকুচি ১ চা-চামচ করে, টমেটো, চিলি ও সয়া সস ২ টেবিল চামচ করে, মাখন আধা কাপ, ভাজার জন্য তেল পরিমাণমতো।

প্রণালি
ফুটানো লবণপানিতে ফুলকপিগুলো এক মিনিট ফুটিয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। একইভাবে লম্বা করে কেটে আলু, ক্যাপসিকাম ও গাজর অল্প সেদ্ধ করে নিন। এবার ফুলকপিতে ডিম, কর্নফ্লাওয়ার, চালের গুঁড়া, গোলমরিচ ও চাট মসলা দিয়ে ভালোভাবে মেখে ডুবোতেলে ফুলগুলো ভেজে তুলে রাখুন। এবার ওই প্যানে মাখন গরম করে আদা ও রসুন ফোড়ন দিয়ে সস ও কাঁচা মরিচকুচি দিয়ে অল্প পানি দিয়ে কষান। কষানো হলে সেদ্ধ সবজি দিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রেখে ভাজা ফুলকপি দিয়ে হালকা হাতে নেড়ে নিন। নামিয়ে পরিবেশন করুন।
ফুলকপির পাকোড়া
উপকরণ
ফুলকপি ১টা, চালের গুঁড়া সিকি কাপ, বেসন সিকি কাপ, মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ, হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ, গরমমসলার গুঁড়া সিকি চা-চামচ, গোলমরিচের গুঁড়া সিকি চা-চামচ, ব্রেড ক্রাম্ব ২ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো ও তেল প্রয়োজনমতো (ডুবোতেলে ভাজার জন্য)।

প্রণালি
ফুলকপির ফুলগুলো একটা একটা করে খুলে নিন এবং লবণপানিতে ভাপিয়ে নিন। একটা চালনিতে ফুলকপির টুকরাগুলো ঢেলে পানি ঝরতে দিন। এবার একটা পাত্রে সব মসলা, চালের গুঁড়া ও বেসন নিয়ে আন্দাজমতো পানি মিশিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। ফুলকপিগুলো চালের মিশ্রণে ভালো করে মেখে নিন। এবার বিস্কুটের গুঁড়া দিয়ে মাখিয়ে নিন। একটা কড়াইয়ে তেল গরম করে ফুলকপির টুকরাগুলো ভাজুন। গাঢ় বাদামি রং হলে তেল থেকে তুলে নিন এবং সসের সঙ্গে গরম-গরম পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন