পরিবেশ
পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবে আরও ৬ প্রাণী
লেখক
জাগোনিউজ২৪.কম
বিলুপ্ত হওয়া প্রাণীর তালিকায় সর্বপ্রথম আসে ডাইনোসরের নাম। সম্ভবত হারিয়ে যাওয়া প্রাণীর তালিকায় ডাইনোসরের মতো বিকল্প আর কোনো নাম সহজে মনে আসে না। কেবল ডাইনোসর নয় গত ৫০০ মিলিয়ন বছরে ডাইনোসরের মতো পৃথিবী থেকে অন্তত চার প্রজাতির প্রাণীর সম্পূর্ণ বিলুপ্তি ঘটেছে।
এখানেই কেবল শেষ নয়। সম্পূর্ণ বিলুপ্তির পথে রয়েছে আরো ছয় প্রজাতির প্রাণী।
অতীতে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার কারণ ছিল তাদের গণমৃত্যু। কিন্তু এই সময়ে প্রাণী বিলুপ্ত হওয়ার কারণ হচ্ছে ভৌগোলিক ও জলবায়ুগত কারণ। বিজ্ঞানীদের ভাষ্য : আমরা আরও অনেক প্রাণী এই সময়ে হারিয়ে ফেলব। হারিয়ে যাওয়ার কারণগুলো আমাদেরই তৈরি।
ন্যাশনাল সায়েন্স একাডেমি পত্রিকায় সম্প্রতি একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন প্রজাতি বিলুপ্তির শঙ্কাকে ‘জৈবিক বিসর্জন’ নামে উল্লেখ করা হয়েছে।
মেক্সিকোর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও ন্যাশনাল অটোনোমাস ইউনিভার্সিটির স্থল অঞ্চলের ২৭ হাজার মেরুদণ্ডী প্রাণীর ওপর গবেষণা চালায়। মেরুদণ্ডী এ সব প্রাণীর সংখ্যা অর্ধেকে কমে এসেছে। এবং টিকে থাকা অর্ধেক মেরুদণ্ডী প্রাণীর বংশবিস্তার ৩২ শতাংশ হারে কমেছে।
একইসঙ্গে তারা ১৭৭ স্তন্যপায়ী প্রাণী নিয়ে গবেষণা চালায়। সেখানে দেখা দেয় নির্দিষ্ট ভৌগোলিক এলাকায় তাদের এত তৃতীয়াংশ হারিয়ে গেছে। এবং দুটো প্রজাতির একটির বংশবিস্তার মারাত্মক হারে কমেছে।
কিছু কিছু স্তন্যপায়ীপ্রাণী যারা একদশক-দুইদশক আগে নিরাপদে ছিলেন এখন তারা বিপদাপন্ন। সাম্প্রতিক উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ১৯৯৩ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত আফি্রকান সিংহের সংখ্যা ৪৩ শতাংশ কমেছে

বিজ্ঞানীদের ওই গবেষণার উদ্দেশ্য কেবল দুই একটি প্রজাতির বিলুপ্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া নয়। লিভিং প্লানেট ইনডেক্স এর তথ্য অনুযায়ী ৩৭০৬ প্রজাতির মেরুদণ্ডী প্রাণীর সূচক নিম্নমুখি প্রবণতায় সেই বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন।
বিজ্ঞানীদের গবেষণা বলছে, বিলুপ্ত বা বিলুপ্তির পথের প্রাণীদের মৃত্যুর হার দ্রুততগতিতে বেড়েছে। গত ১০০ বছরে ২০০ প্রজাতির মেরুদণ্ডী প্রাণীর বিলুপ্তি হয়েছে। যা প্রতিবছরে গড়ে দুইজন। কিন্তু গত ১০ হাজার বছরে এই দুইশ প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটেছে। পরিসংখ্যান বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে বিলুপ্তির হার দ্রুতগতির হচ্ছে।
প্রাণীদের এই বিলুপ্ত হওয়ার সমস্যা অপরিবর্তনীয় এবং এটি আমাদের অভিযোজন প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলবে। যার প্রভাব পড়বে মানুষের ওপর, গোটা পৃথিবীর ওপর।
বাংলাদেশে বিলুপ্ত বন্যপ্রাণী
এরইমধ্যে বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি প্রাণী। এশিয়া মহাদেশে যে তিন রকমের গন্ডার এখনো দেখা যায়, সেই ভারতীয়, সুমাত্রান আর জাভাদেশীয় গন্ডারের তিনটি প্রজাতি একসময় বহুল পরিচিত ছিল আমাদের দেশে। সিলেট অঞ্চলে দেখা যেত ভারতীয় প্রজাতিটি। সুন্দরবন ও পার্বত্য চট্টগ্রামের গহিনে পাওয়া যেত অপেক্ষাকৃত ছোট আকারের সুমাত্রান ও জাভাদেশীয় গন্ডার। কিন্তু সেটি এখন নেই।

পার্বত্য চট্টগ্রাম আর ঢাকা বিভাগের উত্তরে বাস করত গৌর বা বন্য গরু। গৃহপালিত গরুর এই পূর্বপুরুষরা আকার-আকৃতিতে বিশাল, প্রায় ছয় ফুট উঁচু এবং তদানুপাতে লম্বা। মাংসের লোভে মানুষের নির্বিচারে শিকারের কারণেই বিলুপ্ত হয়ে যায় বন্য গরু। খুব সম্ভবত বাংলাদেশের শেষ গৌরটিকে শিকার করা হয় ১৯৭১ সালে, টেকনাফের জঙ্গলে।
গবেষকদের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৪০-এর দশকেও সুন্দরবন অঞ্চলে বন্য মহিষ দেখা যেত। কাদা পানিতে থাকতে এরা পছন্দ করত। শিকার আর গৃহপালিত পশু থেকে ছড়ানো মারাত্মক সব রোগের প্রাদুর্ভাবে এরা বিলুপ্ত হয়ে যায়।
একসময় উত্তরবঙ্গ আর ভাওয়াল মধুপুরের গড়ে ময়ূর দেখা যেত। কিন্তু নির্বিচারে শিকারের ফলে অনেকটা অজান্তেই হারিয়ে গেছে এরা বাংলাদেশের প্রকৃতি থেকে। বহুদিন পর্যন্ত গবেষকদের ধারণা ছিল, ঢাকার ভাওয়ালের জঙ্গলে এখনো কিছু ময়ূর টিকে থাকতে পারে। কিন্তু পরে খোঁজখবর করে দেখা যায়, ১৯৮০-এর দিকেই এরা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। ময়ূরের আরেক জ্ঞাতি সবুজ ময়ূর বা বর্মী ময়ূর ১৯৪০-এর দশক পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামের চিরসবুজ অরণ্যে টিকে ছিল, কিন্তু এরাও পরে বিলুপ্ত হয়ে যায়।

নদীমাতৃক দেশ হওয়ায় বাংলাদেশের নদীনালা থেকে শুরু করে বদ্ধ জলাঞ্চলেও প্রচুর পরিমাণে দেখা যেত জলার কুমির। ১৩ থেকে ১৬ ফুট লম্বা এই কুমিরগুলো কিন্তু সচরাচর মানুষকে আক্রমণ করত না, কিন্তু মানুষ তা বুঝলে তো! কিছুটা ভয়ে, সেই সঙ্গে পরে কুমিরের চামড়ার রমরমা ব্যবসার কারণে মানুষ এদের মেরে শেষ করে দিয়েছে। বাংলাদেশে জলার এই কুমিরের শেষ বংশধর ছিল বাগেরহাটের খানজাহান আলীর পুকুরের প্রসিদ্ধ কুমিরগুলো। দেশের অন্যত্র পঞ্চাশের দশকের পর থেকেই এদের আর দেখা যায় না।
দুইশ বছরে হারিয়েছে তিনশ প্রজাতি
কৃতির ওপর মানুষের অপশাসন, পরিবেশ দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাবে দেশে গত দুইশ বছরে তিনশ প্রজাতির প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এরমধ্যে দেড়শ প্রজাতিই বন্যপ্রাণী। এছাড়া বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার তালিকায় রয়েছে ১৩ প্রজাতির মেরুদ- প্রাণী, ৪৭ প্রজাতির দেশী পাখি, ৮ প্রজাতির উভচর, ৬৩ প্রজাতির সরীসৃপ ও ১০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী।
বিপন্ন অবস্থায় রয়েছে ৪৩ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী ও ১০৬ প্রজাতির নলবাহী উদ্ভিদ। দেশে ১১ বছরে ৩৩৪ টি বাঘ কমেছে। খাদ্যের অভাবে কমেছে হাতির সংখ্যাও। এই তথ্য ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট বাংলাদেশ ও দ্য ওয়ার্ল্ড কনজারভেশন ইউনিয়ন,বাংলাদেশ-এর। গত বছর তারা এই পরিসংখ্যান দেয়।
বিলুপ্তির পথে ৪১ প্রজাতির পাখি
দেশের আরো ৪১ প্রজাতির পাখি বিলুপ্তির পথে। এর মধ্যে রয়েছে কালো তিতির, জলা তিতির, কালো ময়ূর, লাল ট্রোগন, পাহাড়ি নীলকণ্ঠ, মাছরাঙা ও পাকড়া ধনেশ, হুতোমপেঁচা ইত্যাদি।
বিলুপ্তির পথে ৫৪ প্রজাতির মাছ
একসময় দেশের নদ-নদী ও জলাশয়গুলোতে ২৬৬ প্রজাতির মিঠা ও ঈষৎ লোনা পানির মাছ পাওয়া যেত। এর মধ্যে ৬৬ প্রজাতির এখন কোনো অস্তিত্ব নেই। অবশিষ্ট ২০০ প্রজাতির মধ্যে ৫৪টিও বিপন্নপ্রায়। ৪৪২ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের মধ্যে চারটির অবস্থা নাজুক।
পৃথিবীর বুকে থেকে হারিয়ে যাওয়া প্রাণীরা
বিবর্তন ও ক্রমগত পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাবের ফলে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়েছে অনেক প্রাণী। এক সময় যাদের দেখা যেত সর্বদায় বিচরণ করতে আজ তারা হারিয়ে গেছে পৃথিবীর বুক থেকে। পৃথিবীতে বেশ কিছু বিশাল আকারের প্রাণী ছিল। ডাইনোসরের মতোই কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে তারা। তাদের হারিয়ে যাওয়ার পেছনে রয়েছে মানুষেরও হাত।

তাসমানিয়ান বাঘ বা Thylacine ছিল একটি পরিচিত মাংসাশী প্রাণীর নাম। বিংশ শতাব্দীতে অস্ট্রেলিয়া এবং নতুন গিনিতে ওগুলো কিছুটা দেখতে পাওয়া যেত। তবে এটাকে Tasmanian Wolf নামেও ডাকা হত। Thylacine মহাদেশের ইউরোপীয় উপনিবেশের পূর্বে অস্ট্রেলিয়া এবং পরে বিভিন্ন দ্বীপপুঞ্জে এগুলো দেখতে পাওয়া যেত। ধারণা করা হয় এটি ১৯৩৬ সাল থেকে বিলুপ্ত হয়েছে।
কাসপিয়ান টাইগার ইরান, ইরাক, আফগানিস্তান, তুরস্ক, মঙ্গোলিয়া, কাজাখস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তানে, উজবেকিস্তানে এটি পাওয়া গিয়েছিল। যা ১৯৭০ সালের দিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এই প্রজাতির বাঘটি ছিল বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম বাঘ।

আফ্রিকা মহাদেশের বিচিত্র বিলুপ্ত একটি প্রাণী হচ্ছে Quagga। এই প্রাণীটি দেখে অনেকটাই অকল্পনীয় প্রাণী মনে হয়। কিন্তু এটিও কোনো একসময় সচরাচর দেখতে পাওয়া যেত। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ প্রদেশে একবার খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল এবং যা ছিল একটি বিরল ঘটনা। এই প্রাণীটির প্রথম অর্ধেক অংশ ছিল জেব্রার মতো দেখতে কিন্তু পেছনের অংশ ছিল ঘোড়ার মতো।
ধারণা করা হয় এটি ১৮৮৩ সালের পর থেকে বিলুপ্ত হয়েছে। এটাকে ১৭৮৮ সালে প্রাণীদের একটি প্রজাতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। সর্বশেষ ১৮৭০ সালের দিকে একটি Quagga পাওয়া যায়, যেটিকে Artis Magistra zoo তে সংরণে রাখা হয়। কিন্তু সর্বশেষ পাওয়া এই প্রাণীটি ১৮৮৩ সালের ১২ আগস্ট মারা যায়।
অ্যাওরোকস : Aurochs এই প্রাণীটি কোনো একসময় ইউরোপের বিখ্যাত একটি প্রাণী ছিল। যা ভারত ও এশিয়ার আরো কিছু দেশে পাওয়া যেত। ১৫৬৪ সালে gamekeepers রাজকীয় পরিসংখ্যান অনুসারে কেবল ৩৮ প্রাণীর সংখ্যা বের করতে পেরেছিল। তবে ১৬২৭ সালে এই প্রাণীকে পূর্ণাঙ্গভাবে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছ। এ সব প্রাণী আর দেখা যায়নি তাদেরই এই পৃথিবীতে।

গ্রেট আক প্রাণীটি ছিল পেঙ্গুইনদেরই একটি প্রজাতি, যা Atlantic সমুদ্রের পাড়ের দ্বীপ ও দেশগুলোতে পাওয়া যেত। কিন্তু এগুলো আজকে বিলুপ্ত। এগুলো দাঁড়ানো অবস্থায় ৭৫ সেন্টিমিটার অথবা ৩০-৪০ ইঞ্চি হয়ে থাকত। এগুলোর ওজন ৫ কেজির মতো হয়ে থাকত। এগুলো আগে কানাডা, গ্রিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, নরওয়ে, আয়ারল্যান্ড ও ব্রিটেনে বহু সংখ্যক খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল এবং শিকারও করা হয়েছিল। তবে ১৮৪৪ সালের পর থেকে এগুলো বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এ সব প্রাণী আর দেখা যায়নি তাদেরই এই পৃথিবীতে।

বিলুপ্তির দায় কার ?
কেউ বলছেন মানুষের শিকারের কারণে এরা বিলুপ্ত হয়েছে আবার কেউ বলছেন জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এমনটি হয়েছে। এ তর্ক অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। তারা একই ধরনের প্রমাণ দেখছেন কিন্তু ভিন্ন ভিন্নভাবে সেটিকে ব্যাখ্যা করছেন।
শিক্ষাবিদ ড. জাফর ইকবাল তার এক লেখায় গত বছর বলেন, আসলে দুটি বিষয়ের কোনোটিই অযৌক্তিক নয়। দুটি তথ্যেরই যৌক্তিকতা আছে। এটা কী হতে পারে না, যে প্রাণীগুলো মানুষের অধিক শিকার ও জলবায়ু পরিবর্তন উভয় কারণেই হয়েছে?
গবেষক সুরভেল বলেছেন, ‘কোনো ঘটনার পেছনে একের অধিক কারণ থাকাটা সম্ভব।’ সুরভেল এটাও বলেন, ‘আমরা সবাই একই প্রমাণ দেখছি কিন্তু এটাকে আমরা ভিন্ন ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করছি।’ তুষার যুগের প্রাণী বিলুপ্তির পেছনের মূল কারণ এখনো সঠিকভাবে জানা যায়নি। কিন্তু বর্তমানে যে বিপুল সংখ্যক প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে তার জন্যে নিঃসন্দেহে আমরা অর্থাৎ মানুষই দায়ী।
বর্তমানে জলবায়ু খুব দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে যার মুল কারণ মানুষের কর্মকাণ্ড। যার ফলে প্রচুর পরিমাণ প্রাণী ধ্বংসের পথে চলে যাচ্ছে এবং ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
-
পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবে আরও ৬ প্রাণী
-
পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবে আরও ৬ প্রাণী
-
পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবে আরও ৬ প্রাণী
-
পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবে আরও ৬ প্রাণী
-
পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবে আরও ৬ প্রাণী
-
পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবে আরও ৬ প্রাণী
-
পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবে আরও ৬ প্রাণী
-
পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবে আরও ৬ প্রাণী

আপনার জন্য নির্বাচিত সংবাদ
-
৯৮ ফুট দীর্ঘ ডাইনোসর নিয়ে বিস্মিত বিজ্ঞানীরা!
-
ডাইনোসরের পায়ের ছাপ খুঁজে পেল ৪ বছরের শিশু!
-
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ডাইনোসরের সন্ধান
-
মানুষের পৃথিবী, ডাইনোসরের পৃথিবী
-
১২ বছরের বালক আবিষ্কার করল ডাইনোসরের কঙ্কাল
-
টিয়ার মতো দেখতে ডাইনোসর
-
ডাইনোসরের হাড়ে ক্যান্সার নিয়ে নতুন তথ্য
-
যে ডাইনোসর পিঁপড়ে বিলুপ্ত হওয়া থেকে শহরকে বাঁচিয়েছিল
-
তিতির পালনে লাভবান হওয়ার সুযোগ


শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

দেশের বিভিন্ন রাজ্যেই বর্ষার (Monsoon 2021) প্রভাবে চলছে বৃষ্টিপাত। এসময় কৃষকেরা খারিফ শস্য (Kharif Crops) বপনে তৎপর হয়ে ওঠেন। এই খরিফ মরসুমে কৃষকভাইরা সাধারণত অঞ্চলভেদে ধান, অড়হর, সোয়াবিন সহ বিভিন্ন চাষে মনযোগ দিয়ে থাকেন ৷ তবে এসব ছাড়াও, ঔষধি গুন সমৃদ্ধ (Medicinal Crops) গাছ চাষে বর্ষায় যে কতটা লাভ হতে পারে সে সম্পর্কে অনেকেই হয়তো জানেন না৷
বিশেষ করে বর্ষাকালেই এমন বহু ঔষধি গুন সম্পন্ন গাছ রয়েছে যাদের চাষ হতে পারে লাভজনক৷
বর্ষাকালে কোন কোন ঔষধি উদ্ভিদের চাষ করা যেতে পারে অথবা এই চাষ কীভাবেই বা করা যাবে সে বিষয়ে সঠিক তথ্য না পাওয়ার কারণেই অনেকের কাছে বিষয়টি অধরা৷ চলুন এই প্রতিবেদনে এমনই কিছু গাছ নিয়ে আলোচনা করা যাক যা কৃষকদের জন্য হতে পারে লাভদায়ক৷ তবে সঠিক সময়ে, সঠিক রোপন, সেচ, কীটনাশক দেওয়ার প্রয়োজন এগুলিতে, না হলে এর ওপর খারাপ প্রভাব পড়তে পারে৷
অশ্বগন্ধা –
বর্ষায় এর চাষ ভালো৷ জুন থেকে অগস্ট পর্যন্ত এর চাষ করতে পারেন৷ এর বিভিন্ন জাত রয়েছে৷ উন্নত মানের গাছের চাষে কৃষকের লাভের পরিমাণও বৃদ্ধি পেতে পারে৷ উল্লেখ্য, প্রতি হেক্টরে ৫ কিলোগ্রাম বীজ ব্যবস্থা করতে হবে৷ যদি কেউ ১ হেক্টর জমিতে অশ্বগন্ধার চাষ করতে চায় তাহলে তাকে প্রায় ৫০০ বর্গমিটারে নার্সারি তৈরি করতে হবে৷ প্রায় ১ সেন্টিমিটার গভীরে বীজ বপন করতে হবে৷
শতমূলী –
শীত বাদ দিয়ে বছরের যে কোনও সময়ে এই গাছের চাষ করতে পারেন৷ বর্ষাকালে এই চারা রোপন করলে সহজেই তা বেড়ে উঠতে থাকে৷ তবে বীজ বপনের আগে বীজ ১ দিন পর্যন্ত হালকা গরম জলে ভিজিয়ে রাখতে হয়৷
যষ্টিমধু –
জুলাই থেকে অগস্ট পর্যন্ত এর চাষ করা হয়৷ আর তাই জুন থেকেই এর প্রস্তুতি শুরু করে দেন কৃষকেরা৷ জলনিকাশি ব্যবস্থা উচ্চমানের হওয়া প্রয়োজন এই গাছ চাষের জন্য৷ মনে রাখতে হবে এর চাষের আগে জমিতে কমপক্ষে ১৫ টন গোবর সার দেওয়া প্রয়োজন, এরপরেই এটি চাষ করা উচিত৷
ঘৃতকুমারী –
এর ভালো উৎপাদনের জন্য জলনিকাশি ব্যবস্থা ঠিক রাখতে হবে৷ এই ধরনের ঔষধি গুনসম্পন্ন গাছ শীতকাল বাদ দিয়ে যে কোনও সময় চাষ করতে পারেন৷ বর্ষাকালে দূরত্ব রেখে বীজ বপন করতে হবে৷ কম সময়ের মধ্যেই ব্যবহারোপযোগী হয়ে ওঠে এগুলি৷
অগ্নিশিখা বা কলিহারি –
এটি চাষের জন্য কৃষকেরা জুন মাসেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন৷ জুলাইয়ে ভালো বৃষ্টিতে এর চাষ শুরু করা যেতে পারে৷ উল্লেখ্য, ১ হেক্টর জমির জন্য প্রায় ১০ ক্যুইন্টাল কন্দের প্রয়োজন৷ এটি চাষের আগেও জমিতে গোবর সার প্রয়োগ করে তা প্রস্তুত করে নিতে হবে৷

পৃথিবীতে ভোজ্য মসলা যতরকম আছে তারমধ্যে দারুচিনি সবথেকে উল্লেখযোগ্য। এই প্রাচীনতম মসলা বহুদিন ধরে ওষধি হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে চলেছে। এছাড়াও খাবারে স্বাদ বাড়ানো থেকে শুরু করে, পানীয় এবং তরল মশলাদার খাবারে স্বাদ বাড়ানোর জন্যও এই দারচিনির ব্যবহার হয়। এলাচ, গোলমরিচ, লবঙ্গের সাথে সাথে দারুচিনির নামও মসলা হিসেবে একই পংক্তিতে উচ্চারিত হয়। বহু কৃষক দারুচিনির চাষ করে ভীষণভাবে উপকৃত হয়েছেন। বাজারে এই দারুচিনির চাহিদা প্রচুর পরিমানে থাকায়, এই চাষে ভালো লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও সৌখিন মানুষেরাও ভালোবেসে দারুচিনির চাষ বাড়িতে করে থাকেন। দারুচিনি গাছের বাকল, ফুল, কুঁড়ি, পাতা, ফল, শেকড় সবকিছুই কাজে লেগে যায়। দারুচিনি গাছ বাড়িতে চাষ করতে গেলে ঘরে ছাদে দুই জায়গাতেই চাষ করা যায়।
মনে রাখতে হবে এই চাষ করতে গেলে উপযুক্ত পরিমানে রোদ দরকার। বাংলার জলবায়ুতে মূলত শীতকালে এই চাষ করা সবথেকে ভালো। জানুয়ারি মাসে দারুচিনি গাছে ফুল ফোটা আরম্ভ করে, এবং এই গাছের ফল পাকতে আরম্ভ করে জুলাইয়ে। সেইসময়ই ফল থেকে বীজ সংগ্রহ করে নিয়ে এসে বাগানে বা টবে রোপন করে দেওয়া উচিত।
প্রয়োজনীয় রোদ (Sunlight)
কড়া সূর্যালোক দারুচিনি জন্য প্রয়োজনীয়, তাই এটি পর্যাপ্ত রোদ পাওয়া যায় এমন জায়গায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দারুচিনি রোপন করতে গেলে রৌদ্রোজ্জ্বল স্থান যেমন জানালার ধারে, ব্যালকনি কিংবা ছাদের খালি স্থান ব্যবহার করতে হবে।
উপযুক্ত মাটি (Soil)
দারুচিনি চাষের জন্য ভাল মানের মাটি ব্যবহার করা আবশ্যক। বাগানের মাটি ব্যবহার না করাই ভালো, কেননা এতে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। অনে সময় আমরা আশেপাশ থেকে মাটি নিয়েই টব ভরে গাছ লাগানো হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সংবেদনশীল গাছগুলোতে এই উপায় কার্যকরী হয় না। নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভাল এমন মাটি ব্যবহার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে উত্তম নিষ্কাশনযুক্ত বেলে দোআঁশ মাটি ব্যবহার করা সবথেকে উত্তম। জেনে রাখা ভালো দারুচিনি খরা একদমই সহ্য করতে পারে না। মাটির বিকল্প হিসেবে ১৫% ট্রাইকোকমপোস্টযুক্ত কোকোডাস্ট ব্যবহার করা যেতে পারে।
বাইরে চাষ করার জন্য এক মিটার (৩০ সেন্টিমিটার গভীর) পর্যন্ত গর্ত করে মাটি দিয়ে পূরণ করে নিতে হবে। ঘরের ভিতরে বা ছাদবাগানের দারুচিনি চাষের জন্য একটি বড় পাত্র প্রয়োজন হবে।
রোপন (Planting)
দারুচিনির বীজ সংগ্রহও করা যায় অথবা নার্সারি থেকে দারুচিনির গাছ কিনেও আনা যায়।
বাইরে চাষের ক্ষেত্রে
দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে ১ মিটার x ১ মিটার এবং ৩০ সেমি গভীরতায় খনন করে মাটি দিয়ে গর্তটি পূরণ করতে হবে।
ঘরের মধ্যে টবে রোপনের ক্ষেত্রে
নিচে গর্ত সহ বড় সিরামিক পাত্র (৬০ x ৫০ সেমি) ব্যবহার করতে হবে। পাত্রটি মাটি বা কোকোডাস্ট দিয়ে পূরণ করে নিতে হবে। ৩০ সেন্টিমিটার গভীরতা এবং ৩০ সেন্টিমিটার প্রস্থের একটি গর্ত তৈরি করতে একটি বাগান ট্রোয়েল ব্যবহার করে নেওয়া ভালো। বীজ ব্যবহার করলে ১.৫ সেন্টিমিটার গভীর গর্ত তৈরি করে নেওয়া উচিত। এবার গাছটি গর্তের মধ্যে রেখে মাটি দিয়ে চাপা দিতে হবে। বীজ ব্যবহার করলে প্রতি ১.৫ সেমি গর্তে একটি করে বীজ পুঁততে হবে এবং মাটি দিয়ে বীজটি ঢেকে দিতে হবে।
মাটি সবসময় ভেজা রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল দিতে হবে। দারুচিনি গাছ পাত্রে রোপন করার পর, টবের নিচের গর্ত থেকে জল বের না হওয়া পর্যন্ত জল দিতে হবে। টবের উপরের ৫ সেন্টিমিটার শুকিয়ে গেলেই আবার গাছটিকে জল দিতে হবে।
গাছের পরিচর্যা (Caring)
দারুচিনি গাছে নিয়মিত সার প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম বছর ৫০ গ্রাম টিএসপি, ৭৫ গ্রাম এমওপি ও ৫০ গ্রাম ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হবে। প্রতিবছর ২-৩ কেজি ট্রাইকোকম্পোস্ট ও সার প্রয়োগ শেষে একই হারে টিএসপি, এমওপি ও ইউরিয়া দিতে হবে।
দারুচিনি প্রথম ধরতে দুই থেকে তিন বছর সময় নেয় এবং তার পরে প্রতি দুই বছর পরপরই ফসল দিতে থাকে। দারুচিনি গাছ কম করে ১০-১৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। তাই একে নিয়মিত করে ছোট রাখতে হবে। পাঁচ বছর বয়সী দারুচিনি গাছ থেকে নিয়মিত দারুচিনি সংগ্রহের ডাল পাওয়া সম্ভব। দারুচিনি ব্যবহার করার জন্য যে শাখাগুলি কাটা হবে সেগুলি থেকে বাকল তুলে নিতে হবে, বাকলগুলি ব্যবহার করার আগে জলে ভালোভাবে ভিজিয়ে নেওয়া উচিত।

পৃথিবীতে জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে, হারিয়ে যাচ্ছে বহু প্রাণী ও উদ্ভিদ বৈচিত্র। চাষবাসের জমিরও সংকুলান ঘটছে সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে। গগনচুম্বী বাড়ি ঘিরে ফেলছে সমস্ত ফাঁকা জমিন। শখ করে মানুষ খোলা জায়গায় যে গাছ লাগবে অথবা ফল-ফুলের চারা সেই উপায়ও আর নেই। গাছ লাগানোর জন্য সামান্য জায়গাও ফাঁকা থাকছে না আর। তবে আমাদের করণীয় কী? বৃক্ষরোপন কি তবে অচিরেই বন্ধ হয়ে যাবে। বেঁচে থাকার জন্য তো গাছ লাগাতে হবেই। বাড়ির একটুকরো বারান্দা অথবা ব্যালকনিতেও সুন্দর ভাবে ইচ্ছা করলে গাছ লাগানো যায়। বাড়ির ছাদেও বানানো যায় সুন্দর বাগিচা। শহরের মানুষদের জন্য ছাদ বাগানের কোনও বিকল্পও নেই। বাড়ির মধ্যেকার ব্যালকনি অথবা ছাদের একটুকরো জমিতেও, ইচ্ছা করলে টবে চাষ করা যায় বিভিন্ন ফুলের ও ফলের গাছ।
শাকসবজি, পেয়ারা, লেবু প্রভৃতি দেশীয় গাছ টবে বাড়তে দেওয়া থেকে শুরু করে বর্তমানে বহু বিদেশী গাছের চারাও মানুষ ব্যালকনি অথবা ছাদে চাষ করছেন। তার মধ্যে থাই মিষ্টি তেঁতুল টবের চাষ পদ্ধতি হিসাবে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। প্রথমত মিষ্টি তেঁতুলের চাষ করতে গেলে, নার্সারি থেকে এই বিশেষ তেঁতুলের সঠিক বীজ নিয়ে আনতে হবে। তবে থাই মিষ্টি তেঁতুলের কলম পাওয়া একটু দুষ্কর কাজ। বুঝে সঠিক চারা নিয়ে আসা বাগান মালিকের উপরেই বর্তায়।
থাই মিষ্টি তেঁতুলের ফুল থেকে ফল ধরতে প্রায় ৭ মাস সময় লাগে। বছরে দু’বার থাই মিষ্টি তেঁতুলের গাছে ফল ধরে। প্রথমবার বর্ষাকালে এবং দ্বিতীয়বার শীতকালে। এই গাছের পরিচর্যা আলাদা করে করার কোনও দরকার পড়ে না। গাছের যত্নআত্তি নিতে হয় ঠিকই, কিন্তু তা বলে, আলাদা করে কোনও বিশেষ যত্ন নিতে হয় না।
গাছ লাগানোর পদ্ধতি (Planting):
থাই মিষ্টি তেঁতুল চাষের জন্য আদর্শ মাটি হল, দো-আঁশ বা বেলে দো-আঁশ মাটি। এই দু’টি মৃত্তিকার মধ্যে যে কোনও একটি বেছে নিন। তারপর বেছে নেওয়া মাটির দুই ভাগ অংশের সাথে গোবর, ১০০ গ্রাম, টিএসপি ১০০ গ্রাম, পটাশ, ২৫০ গ্রাম, হাড়ের গুঁড়ো এবং ৫০ গ্রাম সরিষার খোল একসঙ্গে মিশিয়ে ২০ ইঞ্চি মাপের বড় টবে জল মিশিয়ে রেখে দিতে হবে। ১০ থেকে ১২ দিন পর টবের মাটি ভালো করে খুঁচিয়ে দিয়ে আরও ৪-৫ দিন রেখে দিতে হবে। ৪ থেকে ৫ দিন বাদে মিষ্টি তেঁতুলের একটি ভালো চারা ওই টবে লাগান।
পরিচর্যা(Caring):
চারা লাগানোর প্রথম কয়েক মাস তেমন যত্নের দরকার পড়বে না। অবশ্যই গাছে এই সময়টুকু পর্যাপ্ত জলের যোগান, এবং আগাছা পরিষ্কারের কাজ করতে হবে। ছয় মাস চারা লাগানোর সময়সীমা ফুরোলেই ১ মাস বাদে বাদে গাছে সরষের খোল মিশ্রিত পচা জল দিতে হবে। মনে রাখতে হবে খোল দেওয়ার আগে গাছের মাটি খুঁচিয়ে নিতে হবে।
রোগ দমন (Disease management):
সাধারণত থাই মিষ্টি তেঁতুল গাছে পোকামাকড়ের আক্রমণ দেখা যায় না। কিন্তু বর্ষাকালে অনেক সময় তেঁতুল গাছে ছত্রাক হানা দেয়। এর ফলে তেঁতুল ফেটে যায়। এই অসুবিধার থেকে গাছকে বাঁচাতে হলে, বর্ষাকাল আসার আগেই ভালো ছত্রাকনাশক ওষুধ ১০ দিন অন্তর গাছে স্প্রে করে ছড়িয়ে দিতে হবে।
বাংলার বেজায় টক তেঁতুলের সঙ্গে থাই মিষ্টি তেঁতুলের কোনও তুলনাই চলে না। অত্যন্ত মিষ্টি খেতে এই তেঁতুল থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়ায় চাষ প্রভূত পরিমাণে হলেও, আমাদের রাজ্য এই ফলের চাষ এখনও ততটা গতি পায়নি। কিন্তু আপনি আপনার ব্যালকনি অথবা ছাদে সহজেই এই থাই তেঁতুলের গাছ লাগাতে পারেন।

বেদানা খেতে কার না ভালো লাগে। ছোট থেকে বড় বেদনার প্রতি আকর্ষণ সব্বার। দানাদার এই ফলের বীজ মুখের মধ্যে দিলেই, সুমিষ্ট রোষে মন উতলা হয়ে ওঠে। স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে অত্যন্ত বলবর্ধক এই ফল, রুগীদের পথ্য হিসাবে আদর্শ। বাজারেও এর চাহিদা থাকায়, এই ফলের চাষ বহুল পরিমাণে আমাদের রাজ্যে হয়। তবে বাড়ির ছাদে এই ফলের চাষ নিয়ে অনেকেই ওয়াকিবহাল নন। সহজে, বুদ্ধিমত্ততার প্রয়োগে এই ফলের চাষ বাড়িতেও করা যায়। অনেকেই বাড়ির ছাদে ইদানিং এই ফলের চাষ নিয়ে মেতে উঠেছেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক, বাড়ির ছাদে বেদনা চাষের সহজতম পদ্ধতি। যা শিখে আপনি আপনার পাড়া-পড়শীকেও তাক লাগিয়ে দিতে পারবেন।
script data-ad-client=”ca-pub-3140114751019908″ async=”” src=”https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js”>ছাদে বেদানার চারা লাগানোর জন্য প্রথমে ভালো মানের টব সংগ্রহ করতে হবে। গাছের গোড়ায় যাতে জল না জমতে পারে, তারজন্য টবের তলায় তিন থেকে চারটি ফুটো করে নিয়ে সেগুলি স্টোন চিপস দিয়ে ভালোভাবে বুজিয়ে দিতে হবে। ছাদে রোদ পড়ে এমন জায়গায় ডালিমের টবটিকে রাখতে হবে।
প্রস্তুতি কালে বেলে দোআঁশ মাটি ২ ভাগ, গোবর ১ ভাগ, টিএসপি ৪০-৫০ গ্রাম, পটাশ ৪০-৫০ গ্রাম এবং ২০০ গ্রাম হাড়ের চূর্ণ ভালো করে মিশিয়ে টবে জল দিয়ে প্রায় ১৫ দিন রেখে দিতে হবে। পনেরটা দিন কাটলে টবের মাটি খুঁচিয়ে আলগা করে দিতে হবে। এরপর ৫ থেকে ৬ এরকম আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। এরপরেই লক্ষ্য করা যাবে টবের মাটি ঝুরঝুরে হয়ে আসবে। ঠিক সেইসময় বেদানার কলমের চারা টবে পুঁততে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, সোজা করে বসিয়ে যেন বেদানার চারা রোপণ করা হয়। সরু লাঠি দিয়ে চারাটিকে এরপর বেঁধে দেওয়া উচিত। চারা রোপণের শুরুর দিকে জল অল্প দিলেই চলবে। পরবর্তী কালে জল দেওয়ার পরিমাণ চারাতে বাড়াতে হবে। গাছের গোড়ায় কখনোই যাতে জল না জমে তাতে নজর রাখা উচিত।
বেদানা গাছের চারা লাগানোর ৪-৫ মাস হয়ে গেলে, এক মাস অন্তর সরিষার খোল পচা জল গাছে দেওয়া উচিত। সরিষার খোল ১০ দিন ভালো রূপে জলে ভিজিয়ে নিয়ে সেই পচা খোলের জল হালকা ভাবে গাছের গোড়ায় প্রয়োগ করে নিতে হবে। টবের কিছুটা মাটি ১ বছর হয়ে গেলে বদলে দিতে হবে। মাটি যখন বদলাতে হবে সেই সময়কাল বর্ষার শেষ ও শীতের আগে যাতে হয় তাতে খেয়াল রাখা উচিত। মাঝে মধ্যেই টবের মাটি খুঁচিয়ে উল্টে পাল্টে দেওয়া উচিত।
script data-ad-client=”ca-pub-3140114751019908″ async=”” src=”https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js”>সার প্রয়োগ (Fertilizer)
বেদানার চারা বসানোর আগেই টবে দেওয়া মাটির গর্তে সার দিয়ে নিতে হবে। প্রত্যেক বছর নিয়ম করে এই । গর্ত করার ৮-১০ র প্রয়োগ করা উচিত, এতে গাছের ফলনের মান উন্নত হবে। নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে সার প্রয়োগ করলে বেদনা গাছের বৃদ্ধি দ্রুত হবে।
সারের নাম সারের পরিমাণ/গর্ত
কম্পস্টের গুঁড়া ৫০০ গ্রাম
ইউরিয়া ১৫০ গ্রাম
টিএসপি ১০০ গ্রাম
এমওপি ১০০ গ্রাম
জিপসাম ৭০ গ্রাম
১ বছর বয়সের প্রতিটি গাছে গোবর ১০ কেজি, ইউরিয়া ১২৫ গ্রাম, টিএসপি ১২৫ গ্রাম এবং পটাশ সার ১২৫ গ্রাম প্রয়োগ করতে হবে। প্রতি বছর সারের মাত্রা একটু করে বাড়াতে হবে। পূর্ণ বয়স্ক ১ টি গাছে ৬০ কেজি গোবর, ১.৫ কেজি ইউরিয়া, ১.৫ কেজি টিএসপি এবং ১.৫ কেজি এমওপি (মিউরেট অব পটাশ) সার প্রয়োগ করতে হবে। ওই পরিমাণ সার ২ বারে গাছে প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম বারে মে- জুন মাসে এবং দ্বিতীয় বারে সেপ্টেম্বর- অক্টোবর মাসে গাছের গোড়ায় সারগুলি প্রয়োগ করতে হবে।
ফল সংগ্রহ: (Harvest)
৩-৪ বছর বয়স থেকেই বেদনা গাছে ফল আসতে শুরু করে। ফল পাকতে প্রায় ৬ মাসের মতো সময় লাগে। পরিপুষ্ট ফলের খোসার রঙ হলদে বাদামি বর্ণ নিলেই ফল পেড়ে নিতে হবে। ফল গাছে বেশিদিন থাকলেই তা ফেটে যেতে পারে। বেদনার খোসা অত্যন্ত শক্ত হওয়ার জন্য এই ফল অনেকদিন জমিয়ে রাখা যায়।
ফলন:(Yield)
চার-পাঁচ বছর বয়স হয়ে গেলেই ডালিম গাছ ফল দিতে শুরু করে। তবে জেনে রাখা ভালো প্রথম দিকে এই গাছ ভালো ফলন দেয় না। গাছের বয়স ৮ থেকে১০ বছর হয়ে গেলেই পরিপুষ্ট ডালিম গাছে আসতে থাকে। বয়স বাড়ার সঙ্গে ডালিম গাছের ফলনও বেড়ে যায়। সঠিক ভাবে পরিচর্যা করলে একটা বেদনা গাছ কম করে ২০০ টির মতন ফল দিতে পারে। কম করে ৩০ বছর বেদনা গাছ অত্যন্ত ভালো মানের ফলন দিতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।

যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশে হতে পারে সারের সংকট

বিদেশ থেকে খালি হাতে ফিরে ড্রাগন চাষে সাফল্য

নাসিরনগরে বন্যায় তলিয়ে গেল কৃষকের বাদামখেত

পানি দিতে অতিরিক্ত টাকা

কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তারা এক সঙ্গে কাজ করতে রাজি

‘শিক্ষিত কৃষক’ বলেই তাঁকে নিয়ে মানুষের আগ্রহটা বেশি

ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বীজ কিনে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত

বোরো কাটতে বাড়তি খরচ ঃ হাসি নেই কৃষকের মুখে

পেঁয়াজের ক্ষতি পুষিয়ে দিচ্ছে সাথি ফসল বাঙ্গি

নিরাপদ খাদ্য: দেশি মাছ কাকিলাকে যেভাবে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা

স্মার্ট ডিভাইসে মাছ চাষে বিপ্লব

চীনে পানিবিহীন হাঁসের খামার

কলাপাড়ায় ৩০ মণ জাটকা জব্দ

ফরিদপুরে ধানের ভালো দামে কৃষকের মুখে হাসি

ধানে পোকার আক্রমণে দিশেহারা চাষিরা

ঠাকুরগাঁওয়ে চাষ হচ্ছে ‘ব্ল্যাক রাইস’

মানুষের নিষ্ঠুরতা থেকে কুকুরকে উদ্ধার করলো গরু

হাই প্রেসার কমানোর সহজ ৫ উপায়

অসময়ের বন্যায় সব শেষ তিস্তাপাড়ের কৃষকের

পাবনায় পাঁচ মাসে ৫ কোটি টাকার শামুক বিক্রি
শীর্ষ সংবাদ
-
বাংলাদেশে ‘প্রায় বিলুপ্তি’র পথে ১০০-এর বেশি দেশীয় মাছ – দা এগ্রো নিউজ
-
মাছ চাষে স্মার্ট প্রযুক্তির উদ্ভাবন বাংলাদেশি তরুণের
-
অর্গানিক খাদ্য: বাংলাদেশে বাড়ছে চাহিদা কিন্তু মান নিশ্চিত হচ্ছে কী?
-
ভারতের কঠোর পদক্ষেপ যেভাবে বাংলাদেশের গরু খামারিদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে গেল
-
পরিবারের সদস্যদের জন্য ভেজালমুক্ত খাবার নিশ্চিত করতেই ছাদে বা বারান্দায় ফল,সবজি চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছেন মানুষ
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন