আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

বাংলাদেশ

পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক গভীর হতে যে পাঁচটি বাধা

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান

পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর প্রায় অর্ধশত বছর হতে চললেও দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নতি হয়নি।

যদিও বুধবারের এক ফোনালাপের বরাতে জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশের সাথে গভীর সম্পর্ক চায় পাকিস্তান।

কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের চোখে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের প্রকাশ্য অবস্থান এবং বিচারের বিরোধিতা করায় দুই দেশের সম্পর্ক একবারে তলানিতে রয়েছে।

স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশের সাথে পাকিস্তানের সম্পর্ক খারাপ থেকে খারাপতর হয়েছে, এমনটিই ধারণা পাকিস্তানে নিযুক্ত সাবেক বাংলাদেশের হাই কমিশনার সোহরাব হোসেনের।

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পতাকা
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পতাকা

তিনি বলেন, “বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে পাকিস্তানের বিরোধিতার পর সেই অবস্থা আরও বেশি খারাপ হয়েছে।”

দুদেশের মধ্যে যেটুকু সম্পর্ক আছে সেটাকে ‘উপরে উপরে’ বলে মনে করেন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের গবেষক আফসান চৌধুরী।

তার মতে, “বাংলাদেশের সঙ্গে তো পাকিস্তানের কোন সম্পর্কই নেই”।

“বিশেষ করে ‘৭১ এর পরে এই সম্পর্ক গাঢ় হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। বিশেষ করে আমাদের প্রজন্ম যতদিন থাকবে তারা তো ‘৭১ এর স্মৃতি নিয়েই বেঁচে আছে।”

“বাংলাদেশের সাথে পাকিস্তানের সম্পর্ক ভালও হবে না, খারাপও হবে না। সম্পর্ক ভীষণ খারাপ হওয়া থেকে একটু কম খারাপ হতে পারে, কিন্তু ভাল হবে না।”

প্রশ্ন দেখা দেয় যে, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের মধ্যে শীতল সম্পর্কের পেছনে কী কী ইস্যু রয়েছে?

১. ভারতের সাথে সম্পর্ক

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের পথে এ দুটি দেশের সাথে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সম্পর্ক কেমন সেটিও বেশ প্রভাব বিস্তার করে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

একদিকে যেমন ভারতের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে বলে পরিচিতি রয়েছে, ঠিক তার বিপরীতে ভারতের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্র হচ্ছে পাকিস্তান। এই ত্রিমুখী সম্পর্ক বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ককেও প্রভাবিত করে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

আফসান চৌধুরী বলেন, “আমাদের যে দেশের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক, যার সাথে ওঠা বসা বেশি, অর্থাৎ ভারত, তার উপর অনেকটা নির্ভরশীল।”

তিনি বলেন, ভারতের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে বাংলাদেশের। আবার দুদেশের সাধারণ নদীর পানি বণ্টন নিয়ে দ্বন্দ্বও রয়েছে। তবে এগুলোর পরও ভারত ছাড়া অন্য কোন দেশের সাথে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা এখনো পর্যন্ত হয়নি।

“পাকিস্তানের সাথে ভারতের রাজনৈতিক সম্পর্ক। ভারতের সামনে পাকিস্তান কোন শক্তিই না, তবে সমস্যা হচ্ছে পাকিস্তানের সাথে চীন রয়েছে।”

ভারতের সাথে চীনের সম্পর্ক বৈরী হয়ে গেছে। চীন চেষ্টা করছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে যে ভারত বিরোধিতা রয়েছে সেটাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করা।

দুদেশের সম্পর্কে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের ক্ষত এখনো বড় কাঁটা হয়ে আছে।
দুদেশের সম্পর্কে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের ক্ষত এখনো বড় কাঁটা হয়ে আছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক রুকসানা কিবরিয়া বলেন, বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্ক একরকম, আবার ভারতের সাথে পাকিস্তানের সম্পর্ক আরেক রকম। চীনের বিষয়ে বাংলাদেশ-পাকিস্তান এক মেরুতে থাকলেও ভারতের সাথে সে সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই দুটি দেশ বিপরীত মেরুতে রয়েছে।

“এই দেশগুলোর মধ্যে সুসম্পর্ক নয়, বরং দ্বন্দ্ব রয়েছে।”

২. বাণিজ্য

বিশ্ব বাণিজ্যে ভারতের চেয়ে অনেক বেশি প্রভাব রয়েছে চীনের। আর পাকিস্তানের সমর্থনে রয়েছে চীন। দেশটির সাথে বাংলাদেশেরও সুসম্পর্ক চলছে।

এই পরিস্থিতি পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক গভীর করতে পারে কি?

আফসান চৌধুরীর বক্তব্য, “হবে না। কারণ পাকিস্তানকে আসলে আমাদের কোন দরকার নাই।”

“পাকিস্তানের সাথে ট্রেড হবে না। আমাদের ট্রেড স্বাভাবিকভাবেই হবে ভারতের সাথে।”

তিনি বলেন, “পাকিস্তানের সাথে বাণিজ্য নাই, পড়তে যাই না, অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্যও যাই না। তাহলে সম্পর্ক উন্নয়ন করে লাভ কী?”

এছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের আমদানি বিষয়ক সম্পর্ক থাকলেও রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে এসব দেশের উপর নির্ভরশীল নয়। বরং বাংলাদেশ রপ্তানি করে থাকে ইউরোপের দেশগুলোতে।

৩. বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে পাকিস্তানের বিরোধিতার প্রতি সমর্থন রয়েছে।

মি. চৌধুরীর চোখে, “এখানে পাকিস্তানের দালালি করেছে এর চেয়ে বড় পাপ আর বাংলাদেশে নাই। যে দেশকে আমরা রাজনৈতিকভাবে পাপিষ্ঠ দেশ বলে মনে করছি, অন্য সব রাজনৈতিক দল, বিএনপি-কে বলছি পাকিস্তানপন্থী, জামাতকে বলছি পাকিস্তানপন্থী, যুদ্ধাপরাধীদের বলছি সবই তো পাকিস্তানকেন্দ্রিক। সেখানে পাকিস্তানের সাথে কিভাবে সুসম্পর্ক হবে আমাদের?”

তিনি মনে করেন ইমরান খানের সাথে শেখ হাসিনার কথা হলেই সেটি সুসম্পর্ক বয়ে আনবে না।

৪. ক্ষমা প্রার্থনা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রুকসানা কিবরিয়া বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বরাবরই চেয়েছে যে পাকিস্তান তাদের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাক। কিন্তু পাকিস্তান সেটা কখনো করেনি।

১৯৭৪ সালে সিমলা চুক্তির পর যে আলোচনা শুরু হয়েছিল তাতে পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়, আর বাংলাদেশ এবং ভারত পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দীদের ফেরত পাঠানো শুরু করে।

এই ঘটনার কারণেই পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে এবং দেশটির কাছে দুঃখ প্রকাশ করতে বাধ্য হয়েছিল।

এক ত্রিপক্ষীয় আলোচনায় সবার সম্মতিতে যে চুক্তি হয়, তাতে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।

চুক্তির বিবরণ অনুযায়ী, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন যে, দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো বাংলাদেশের জনগণের কাছে অনুরোধ করেছেন যেন তারা তাদের (পাকিস্তানকে) ক্ষমা করে দেন এবং অতীতের কথা ভুলে গিয়ে সামনে এগিয়ে যান।

তবে বাংলাদেশ বলে যে, ওই ক্ষমা চাওয়া যথাযথ হয়নি।

“ওরা দুঃখ প্রকাশ করেছিল, ক্ষমা চায়নি”, বলেন আফসান চৌধুরী।

“ভূট্টো দুঃখ প্রকাশ করেছিল। কারণ ওদের উদ্দেশ্য বাংলাদেশ ছিল না। এটা ছিল ইন্ডিয়া। ইন্ডিয়া বলেছিল যে তুমি অন্তত কিছু বল, তা না হলে আমরা তোমার সাথে কী করবো।”

মি. চৌধুরীর মতে, একাত্তরের এর যুদ্ধটা আমাদের জন্য মুক্তিযুদ্ধ হলেও সেটা ভারত কিংবা পাকিস্তান কারো জন্যই মুক্তিযুদ্ধ ছিল না।

পাকিস্তানের পক্ষে মাফ চাওয়া সম্ভব না। কারণ মাফ চাইতে হলে সেনাবাহিনীর হয়ে মাফ চাইতে হবে। আর পাকিস্তানের শাসন ব্যবস্থায় এখনো অনেক বড় অংশ সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

“সেই সেনাবাহিনীর হয়ে কেউ ক্ষমা চাইবে, কোন সিভিলিয়ান বা আর্মি, সে তো টিকতে পারবে না। তাই ক্ষমা চাওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না,” তিনি বলেন।

জুলফিকার আলী ভূট্টো বলেছিলেন যে, যুদ্ধে এতো বেশি মানুষ মারা গিয়েছে তার জন্য তিনি খুবই দুঃখিত। কিন্তু মাফ করে দিয়েন-এই কথাটি কাঠামোগতভাবে বলা সম্ভব নয়।

৫. আটকে পড়া পাকিস্তানি নাগরিক

বাংলাদেশে আটকে পড়া পাকিস্তানি বা উর্দুভাষী জনগণের সংখ্যা ৫ লাখের ওপরে, যাদের মধ্যে সাড়ে তিন লাখের বসবাস বিভিন্ন এলাকায় শরণার্থী ক্যাম্পে।

যেসব পাকিস্তানি নাগরিক বাংলাদেশে আটকে পড়ে তাদেরকে পাকিস্তানে চলে যাওয়ার বিষয়ে সুযোগ দেয়া হয়েছিল স্বাধীনতার পর পর।

কিন্তু সে বিষয়টিও বাস্তবতা পায়নি। বাংলাদেশ থেকে নিজেদের আটকে পড়া নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়নি পাকিস্তান।

এ বিষয়ে রুকসানা কিবরিয়া বলেন, “১৯৪৭ সালের ভারত বিভাগের পর যে অবস্থার সৃষ্টি হয় তাতে পাকিস্তানে একটি বিশাল মুহাজির জনগোষ্ঠী রয়েছে। বিশেষ করে করাচিতে। সেজন্য তারা আরেক দল মুহাজির জনগোষ্ঠী পাকিস্তানে ফিরিয়ে নিতে উৎসাহী না।”

এর পেছনে একটি রাজনৈতিক অর্থনৈতিক কারণ রয়েছে বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এই শিক্ষক।

পাকিস্তানে নিযুক্ত সাবেক বাংলাদেশি হাই কমিশনার সোহরাব হোসেন বলেন, দুটি দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে হলে সে দুটি দেশের মধ্যে যেসব ইস্যু থাকে সেগুলোকে সামনে এনে সমাধান করতে হয়।

আর এগুলো হতে হলে কূটনৈতিক আলোচনা, পদক্ষেপের দরকার হয়।

যুদ্ধের বিষয়ে ক্ষমা চাওয়া, অ্যাসেট রিভিশন বা দুই দেশের সম্পদের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার মতো বিষয়গুলো সম্পর্ক উন্নয়নে বড় বাধা বলে মনে করেন তিনি।

তিনি মনে করেন, পাকিস্তান যদি বাংলাদেশের সাথে যেসব ইস্যু আছে সেগুলো তুলে ধরে পদক্ষেপ নেয় তাহলে সম্পর্ক উন্নয়ন হতে পারে বলে মনে করেন সাবেক এই হাই কমিশনার।

“তারা যদি আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করে তাহলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন না হওয়ার কোন কারণ দেখছি না, বরং উন্নয়ন হওয়ার কথা,” তিনি বলেন।

  • দুদেশের সম্পর্কে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের ক্ষত এখনো বড় কাঁটা হয়ে আছে।

    দুদেশের সম্পর্কে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের ক্ষত এখনো বড় কাঁটা হয়ে আছে।

  • বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পতাকা

    বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পতাকা

  • বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান

    বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান

  • দুদেশের সম্পর্কে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের ক্ষত এখনো বড় কাঁটা হয়ে আছে।
  • বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পতাকা
  • বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান
বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

এগ্রোবিজ

পতিত জমিতে চিনাবাদাম চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষক

মেহেরপুর: পতিত ও অনুর্বর বেলে মাটির জমিতে চিনাবাদাম চাষ করে লাভবান হচ্ছেন মেহেরপুরের চাষিরা। ফলন ও বাজার দর ভালো এবং কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন এই এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাদামের চাষ। 

সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা, শ্যামপুর, টেংগারমাঠ ও গোপালপুর গ্রামের অধিকাংশ জমির মাটি বেলে। ফলে এই এলাকার চাষিরা ধান, গম, পাটসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করে খুব একটা লাভবান হতে পারেন না।

ধান কাটার পর এ সব জমি সাধারণত পতিত থাকে। এজন্য ৯০ দিনের ফসল হিসেবে অল্প খরচে বাদাম চাষ করছেন এলাকার চাষিরা।  

মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, জেলায় এবার বাদাম চাষ হয়েছে ১৫ হেক্টর জমিতে। এবার এক বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করতে চাষিদের খরচ হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা সেক্ষেত্রে বাদামের ফলন হয়েছে ৬ থেকে ৭ মণ। আর এ  ফলনে প্রায় ২০ হাজার টাকা ঘরে তুলছেন তারা। বাজারে প্রতিমণ বাদাম বিক্রি হচ্ছে ২৭শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত।  সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা গ্রামের বাদাম চাষি খাঁজা আহমেদ, কাওছার আলী ও ফিরোজ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এলাকার মাটি বেলে হওয়ায় সাধারণত সবজি, আলু ও অন্যান্য ফসল চাষ করার পর জমি পতিত থাকে। সে সময়ে চিনা বাদামের চাষ করা হয়। বাদাম চাষে খরচ কম এবং উৎপাদন ও বাজার দর ভাল। তাই দিন দিন চাষিরা তাদের পতিত জমিতে চিনা বাদামের চাষ শুরু করছেন।  

এছাড়া বাদাম ছাড়ানো, শুকানোসহ যাবতীয় কাজ করে থাকেন এখানকার নারীরা। বাদামের গাছ আবার শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করছেন গৃহিণীরা।  

নারী শ্রমিক সাহানা খাতুন ও জরিমন নেছা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বাদাম ছাড়ানো ও শুকানোর কাজ করে থাকি। এলাকার ২৫/৩০ জন নারী শ্রমিক এ কাজ করে আসছেন।  
গৃহিণী সাজেদা খাতুন ও জামেলা খাতুন জানান, বাদামের লতা জালানি হিসেবে বেশ ভাল। তাই লতাও বিক্রি হচ্ছে।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আক্তারুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, চিনা বাদামের চাষ সাধারণত পতিত জমিতে হয়ে থাকে। এলাকার চাষিরা এই জমিতে বাদামের চাষ করে বাড়তি আয় করছেন। তাই বাদাম চাষ যাতে আরও সম্প্রসারিত হয় সেজন্য কৃষি বিভাগ চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে।  

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

সিলেটে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের সম্ভাবনা

সিলেট বিভাগের উচ্চমাত্রার অ্যাসিডিক জমিতে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কৃষি বিজ্ঞানিরা মৌলভীবাজারের আকবরপুরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে ফুল চাষ করে সফল হয়েছেন। এ ফুল চাষ মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে ১০০ চাষিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে কৃষি গবেষণা কেন্দ্র।

কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের তথ্যমতে, যশোরে বাণিজ্যিকভাবে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল চাষ হয়। যার বাজার দর প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। যশোরের ফুল সারাদেশের পাশাপাশি সিলেটেও আসে প্রচুর। সিলেটে ফুলের বাজার শত কোটি টাকার উপরে। কিন্তু সিলেটে ফুলের চাষ বাণিজ্যিকভাবে হয় না।

সিলেট বিভাগের মাটি অ্যাসিডিক হওয়ায় ফুল চাষ করা যাবে না, সেটাই ছিল প্রচলিক ধারণা। কিন্তু এ ধারণাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যদিয়ে ভুল প্রমাণ করেছেন মৌলভীবাজার আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের একদল গবেষক। মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস এম শরিফুজ্জামানের নেতৃত্বে উচ্চমাত্রার অ্যাসিডিটিক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ফুল চাষ করে সফল হয়েছেন তারা। এ পরীক্ষামূলক চাষে ফলনও হয়েছে ভালো। তাই সিলেট অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট অঞ্চলে অনেক জায়গা অনাবাদি ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। প্রবাসীরা দেশের বাইরে অবস্থান করায় তাদের অনেক জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকে। এ জমিকে আবাদের আওতায় আনতে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের উদ্যোগ নিয়ে আগ্রহী ১০০ চাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে আমন ধান কাটার পর এ অঞ্চলের অনেক জমি পতিত থাকে। ফলে ফুল চাষ করে অনাবাদি জমি থেকে কোটি টাকা উপার্জন সম্ভব।

বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মিরানা আক্তার সুমি জানান, চাষিরা প্রশিক্ষণ শেষে অনেক কিছু শিখেছেন। কী পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে হয়, তা জেনেছেন। ধানের চেয়ে যেহেতু ফুলের দাম বেশি, তাই ফুল চাষে তাদের আগ্রহ বাড়ছে।

ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. সরফ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভালোভাবে জমি চাষ করে নির্দেশিত মাত্রায় জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয়। অন্য ফসলের মতোই এর চাষ পদ্ধতি সহজ। বেড তৈরি করে ফুল চাষ করতে হয়। প্রতিটি বেডের দৈর্ঘ যে কোন মাপের হতে পারে। তবে প্রস্থে ১.২-১.৫ মিটার হলে ভালো।’

তিনি বলেন, ‘কলম (বীজ) লাগানো থেকে তিন মাস পর স্টিক সংগ্রহ শুরু হয়। সংগ্রহ করা যাবে পরবর্তী ২৫ দিন। গ্লাডিওলাস ৫টি জাতসহ মোট ১২টি প্রজাতির ফুলের পরীক্ষা করে আমরা সফল হয়েছি।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

জৈব

জৈব পদ্ধতিতে ফসলের রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণ

সবুজ বিপ্লবের সময়ে পেস্টিসাইড ব্যবহারকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জীব বৈচিত্র্য, মাটির স্বাস্থ্য ও ফসলের গুণমানতা। এখন ভেবে দেখার সময় এসেছে, এত রাসায়নিক পেস্টিসাইড ব্যবহার করা কি ঠিক হচ্ছে? এ প্রশ্ন শুধু ভারতে নয়, সারাবিশ্বের কৃষকসমাজ ও শস্যবিজ্ঞানীদের কাছে। তাই মনে হয় জৈব নিয়ন্ত্রণকে গুরুত্ব দিয়ে সুসংহত রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণ আগামী দিনে একমাত্র সমাধানের রাস্তা হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।

চলমান খরিফ মরসুমে আমাদের রাজ্যে প্রধানত ধান, খরিফ পেঁয়াজ, জুট, ইক্ষু, তিল ইত্যাদি ফসলের চাষ হয়ে থাকে। এ রাজ্যে ধানে ঝলসা রোগের আক্রমণ একটি গুরুতর বিষয়।

জৈব পদ্ধতিতে এই রোগ দমন করার একটি সহজ উপায় রয়েছে। ৫০ মিলিলিটার কেরোসিন তেলে ৮৫ গ্রাম থেঁতলানো রসুন মিশিয়ে ২৪ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এরপর ৯৫০ মিলি. জল ও ১০ মিলি. তরল সাবান মিশিয়ে ভালোভাবে নেড়ে নিয়ে বোতলে রেখে দিতে হবে। ১৯ লিটার জলের সাথে ১ ভাগ মিশ্রণ মিশিয়ে সকালে/বিকেলে স্প্রেয়ার দিয়ে আক্রান্ত গাছে স্প্রে করতে হবে।

এই মিশ্রণটি আমেরিকান বোল ওয়ার্ম, আর্মি ওয়ার্ম, পেঁয়াজ-এর চিরুনি পোকা, আলুর টিউবার মথ, রুট নট নিমাটোড (কৃমি), আখের কাণ্ড ছিদ্রকারী পোকা, ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ, ডাউনি মিলডিউ ও ধানের ঝলসা রোগ প্রতিরোধে খুবই কার্যকরী।

এছাড়া বিভিন্ন ধরণের পাতা খেকো পোকা ও জাব পোকা নিয়ন্ত্রণে ১ কেজি পেঁয়াজ থেঁতো করে ১ লিটার জলের সাথে মিশিয়ে ২৪ ঘণ্টা রেখে দেবার পর কচলিয়ে রস নিংড়ে নিতে হবে। প্রাপ্ত নির্যাসের সাথে ১০ লিটার জল মিশিয়ে আক্রান্ত ফসলে স্প্রে করতে হবে।

জৈব সার প্রয়োগ ও জৈব কীটনাশক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফসলের উৎপাদন খরচ শতকরা ২৫-৩০ শতাংশ হ্রাস করা সম্ভব। উচ্চ পুষ্টিমানসম্পন্ন প্রযুক্তিতে উৎপাদিত জৈব সার, শাকসব্জী ও অন্যান্য ফসলের প্রয়োজনীয় নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশিয়াম-এর সাথে অণুখাদ্যের যোগান দেয়।

জৈব পদ্ধতিতে উৎপন্ন কীটনাশক ও ছত্রাকনাশকগুলি ফসলে কোনওরকম দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ব্যতিরেকে, পোকা ও রোগ দমনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এতে মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও উর্বরতা দীর্ঘমেয়াদী হয়। উৎপাদিত ফসল হয় স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ।

বন্ধুপোকা মাকড়ের (পরজীবি ও পরভোজী) সংরক্ষণের জন্য জমির পাশে অব্যবহৃত জায়গায় ত্রিধারা, উঁচুটি, শালিঞ্চে ইত্যাদি আগাছা জাতীয় গাছের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।

দূরদর্শী পদক্ষেপের মাধ্যমে রাসায়নিক কৃষি বর্জন করে প্রাণ বৈচিত্র্য নির্ভর জৈব কৃষির মাধ্যমে খাদ্যে সার্বভৌমত্ব আনা সম্ভব। তাই জৈব কৃষির পথে ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়ে কৃষিবিষমুক্ত, স্বাস্থ্যসম্মত সমাজ গড়ে তোলাই বাঞ্ছনীয়।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

টি ব্যাগের ব্যবসা করে আয় করুন প্রচুর অর্থ

চা পানীয়টি আমাদের দেশে খুবই জনপ্রিয় একটি পানীয়। প্রিয়জনের সাথে বৈঠক থেকে শুরু করে সারাদিনের ক্লান্তি দূর করা সবেতেই চা (Tea) আমাদের নিত্যসঙ্গী। তবে এখন মানুষ আগের তুলনায় অনেক বেশী স্বাস্থ্য সচেতন। সাধারণ চায়ের জায়গায় এসেছে, গ্রীণ টি, হার্বাল টি, লেমনগ্র্যাস টি, ব্লু টি ইত্যাদি। আর প্রকারভেদের সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে টি ব্যাগের গুরুত্ব। কারণ এটি খুব অল্প সময়ে তৈরি করা যায় এবং যে কোন স্থানে এর থেকে চা বানানো যায়। অফিস ও হোটেলগুলিতে এর যথেষ্ট চাহিদাও রয়েছে। তাই টি ব্যাগ তৈরীর ব্যবসাটি হয়ে উঠতে পারে আপনার জন্য লাভদায়ক।

চা উৎপাদনকারী দেশ গুলির মধ্যে অংশ নেয় চীন, ভারত , কেনিয়া , শ্রীলঙ্কা , জাপান , ইন্দোনেশিয়া , ভিয়েতনাম, তানজেনিয়া , মালয়, বাংলাদেশ, তার্কী এবং চা পানকারী দেশ গুলির মধ্যে ইংল্যান্ড, জর্মানী, কানাডা ও আমেরিকার বেশ নাম রয়েছে।

এ কারণে বেশিরভাগ সংস্থা টি ব্যাগ বিক্রি শুরু করেছে। আপনি যদি নতুন ব্যবসা করার পরিকল্পনা করে থাকেন, তবে আপনি টি ব্যাগ মেকিং ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এটির মাধ্যমে আপনি খুব ভাল অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। যিনি তৈরী করেন, তার থেকে নিয়ে এসে আপনি বাইরে বিক্রি করতে পারেন, এতে আপনার বিনিয়োগের দরকার পড়বে না। কিন্তু যদি বেশী লাভ করতে চান, তবে বিনিয়োগ করে নিজের ব্যবসা শুরু করুন।

টি ব্যাগ ব্যবসা শুরু করার জন্য জায়গা (How to start) –

এটি শুরু করার জন্য আপনি কোনও জায়গা ভাড়া নিতে পারেন। আপনার নিজের জমি থাকলে ব্যবসার জন্য সুবিধা হবে। এমন জায়গা চয়ন করুন, যেখানে মানুষের সমাগম রয়েছে। টি ব্যাগ তৈরীর জন্য আপনাকে মেশিন ইনস্টল করতে হবে।

চা ব্যাগ ব্যবসায় বিনিয়োগ –

আপনি যদি বড় আকারে ব্যবসা শুরু করতে চান, তবে আপনাকে বেশী অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে। এর মেশিনটি যথেষ্ট ব্যয়বহুল, সুতরাং বেশী পরিমাণ রাশি বিনিয়োগের দরকার রয়েছে এই ব্যবসায়, তবে আপনি যদি ব্যাংক থেকে লোণ নেন, তবে আপনি ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

চা ব্যাগ তৈরিতে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল –

ফিল্টার পেপার –

এর ভিতরে চায়ের পাতা স্টোর করতে হবে। এই কাগজটি সুক্ষ ছিদ্রযুক্ত এবং পাতলা, পাশাপাশি সহজে ভিজে যায় না, তাই এই কাগজটি চা ব্যাগ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

চা পাতা –

আপনি যেমন প্রকারের ব্যাগ বিক্রি করতে চান, তেমন চা পাতা কিনতে হবে।

বিভিন্ন প্রকারের চা –

সাধারণ চা, গ্রীণ টি, উলং টি, ব্ল্যাক টি, হার্বাল টি

চা ব্যাগগুলিতে চা পাতা পূরণ করার প্রক্রিয়া –

চা ব্যাগ তৈরীর মেশিনের সাহায্যে প্রস্তুত চা পাতাগুলি ফিল্টার পেপারে পূরণ করতে হয়। সাধারণত প্রায় ২-৪ আউন্স চা পাতা একটি টি ব্যাগে ভরা হয়। এর পরে, একটি প্যাকিং মেশিনের সাহায্যে ব্যাগটি সিল করা হয়। টি ব্যাগের সাথে একটি সুতো সংযুক্ত থাকে।

চা ব্যাগ ব্যবসায় থেকে লাভ –

আপনি চায়ের পাতার গুণমান অনুযায়ী ব্যাগের দাম নির্ধারণ করতে পারেন। এই ব্যবসা থেকে খুব ভাল লাভ করা যায়। এর আরও বিক্রয়ের জন্য, আপনি বাজারে পাইকারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এগুলি ছাড়াও আপনি হোটেল বা অফিসের লোকের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এই ব্যবসা আপনাকে মাসে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন দিতে পারে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ছাদকৃষি

সহজ পদ্ধতিতে টবে করুন কদবেল চাষ

ছেলে থেকে বুড়ো সবারই প্রিয় টক ঝাল কদবেল। কদবেলের আচার, কদবেল মাখা সকলেরই অত্যন্ত পছন্দের। যারা বাগান করতে পছন্দ করেন, বিশেষত টবে, তাদের জন্য কদবেল এক আদর্শ ফল। কদবেলের আকার অনেকটা টেনিস বলের মতো। শরতের শুরুতে কদবেল বাজারে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এই ফলের মন মাতানো স্বাদ বিশেষ করে মহিলাদের ভীষণই পছন্দের।

টবে কদবেল চাষের পদ্ধতি (Farming Process)

মন কাড়া স্বাদের জন্য পাকা কদবেল সবার কাছেই অত্যন্ত প্রিয়। কদবেল গাছে ফুল আসে মার্চ-এপ্রিল মাস নাগাদ। তবে ফল পাকতে সময় লাগে সেপ্টেম্বর-অক্টবর। টবে রোপনের জন্য কদবেলের কলমের চারা বেশি ভালো। কলমের চারা থেকে কয়েক বছরের মধ্যে ফুল-ফল ধরে। ছাদের টবে এই গাছের চাষ সহজেই করা যায়। জোড় কলম করে এর কলম তৈরি করা যায়। এ গাছের চাষাবাদ অনেকটা বেলের মতোই।

মাটি তৈরি (Land Preparation)

হাফ ড্রামে অথবা টবে পাঁচ সেন্টিমিটার পুরু করে ইটের খোয়া বিছিয়ে তার ওপর ১০ সেন্টিমিটার বালির স্তর দিতে হবে। ড্রামের তলার দিকে জল বার করে দেওয়ার জন্য ছিদ্র রাখতে হবে। এবার তিন ভাগ দো-আঁশ মাটির সাথে দুই ভাগ গোবর সার, ড্রামপ্রতি ২০০ গ্রাম এমওপি (পটাশ) সার, ২৫০ গ্রাম টিএসপি (ফসফেট) সার, ১ কেজি হাড়ের গুঁড়ো, ৫০ গ্রাম জিপসাম সার, ২০ গ্রাম ম্যাগেনেসিয়াম সালফেট (ম্যাগসাল) সার ও ১০ গ্রাম দস্তা সার মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে ড্রামে বা টবে ভরে হালকা করে জল দিয়ে মাটি ভিজিয়ে এক থেকে দুই সপ্তাহ রেখে দিতে হবে।

ড্রাম বা টবের ঠিক মাঝখানে কদবেলের কলম বসিয়ে কলমের গোড়ার মাটি শক্ত করে চেপে দিতে হবে। কলম লাগানোর পর গাছের গোড়ায় জল দিতে হবে। সোজা ভাবে কলম রাখতে গেলে, গোড়ার কাছাকাছি কাঠি পুঁতে তার সাথে কলম বেঁধে দিলে ভালো। শীতকাল ছাড়া বছরের যেকোনও সময় কদবেলের কলম লাগানো যায়। ছাদের ওপর রোদের মধ্যে কদবেলের গাছ রাখা উচিত। এতে গাছের ভালোই হবে।

ফলন এবং পরিচর্যা (Caring)

কলমের গাছে ফুল ফাল্গুন-চৈত্র মাসে নাগাদ আসে। শরৎকালে ফল পেকে যায়। ডালপালা ফল সংগ্রহ করার সময় কিছু ছেঁটে দেওয়া উচিত। এর ফলে পরের বছর ফলন ভালো হবে। কদবেল গাছে ফুল-ফল ভালো আনার জন্য প্রতি বছর ফল তোলা শেষ হলে গাছের গোড়ার মাটিতে ড্রামপ্রতি ১৫০ থেকে ২৫০ গ্রাম ইউরিয়া সার, ১০০ গ্রাম এমওপি সার, ১০০ গ্রাম টিএসপি সার দুই কেজি প্যাকেটের কম্পোস্ট সারের সাথে মিশিয়ে গোড়ার মাটি নিড়িয়ে তার সাথে মিশিয়ে সেচ দিতে হবে।

গাছের বৃদ্ধি ভালো হলে বছরে একবার সার দিলে হবে না। বর্ষাকালের আগেও ঠিক একই ভাবে পুনরায় সার দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে টব বা ড্রামের মাটি যাতে না শুকিয়ে যায়। টবের মাটি কখনো শুকিয়ে গেলে নিয়ম করে সেচ দিয়ে নিতে হবে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@theagronews.com, theagronewsbd@gmail.com