আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

ফল

ধান ছেড়ে তামাক, আম, মাছ চাষ

চট্টগ্রামের পটিয়ায় কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করছেন ইউএনও হাবিবুল হাসান গতকাল দুপুরে
চট্টগ্রামের পটিয়ায় কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করছেন ইউএনও হাবিবুল হাসান গতকাল দুপুরে

উত্তরের জেলাগুলোর মধ্যে রংপুরে বাড়ছে তামাকের চাষ। বগুড়া ও রাজশাহীতে সবজি আর নওগাঁয় আম চাষে ঝুঁকছেন কৃষক। সিরাজগঞ্জের কৃষক ধান চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। তাঁরা কৃষিজমি কেটে পুকুর তৈরি করছেন। মাছ চাষে আগ্রহ বাড়ছে সেখানকার মানুষের। গত চার–পাঁচ বছরে দেশের প্রধান ধান উৎপাদনকারী এলাকা উত্তরের জনপদে অনেকটা নীরবে এই পরিবর্তন ঘটে চলেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, দেশের উত্তরাঞ্চলে ধারাবাহিকভাবে ধানের উৎপাদন কমছে। এ বছর কৃষক ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় এই প্রবণতা আরও বাড়তে পারে। নওগাঁয় গত চার বছরে ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ও ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ কমেছে। জেলার ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে এ বছর আম চাষ হয়েছে। রংপুরে আম চাষের জমি ২ হাজার ৯৫০ হেক্টর থেকে বেড়ে ৩ হাজার ১২৫ হেক্টর হয়েছে। বগুড়ায় পাঁচ বছরে ধানের জমি কমেছে ১ হাজার হেক্টর।

অন্যদিকে সিরাজগঞ্জ জেলায় ছোট-বড় মিলে প্রায় ১৮ হাজার ৮৪৬টি পুকুর রয়েছে। জেলায় রায়পুর ও তাড়াশ উপজেলায় পুকুরের সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। প্রতিবছর ২০ থেকে ২৫টি পুকুর খনন করা হচ্ছে। জেলায় মাছের উৎপাদন ২০১১-১২ সালে ছিল ৫৩ হাজার ৯৮০ টন। চলতি বছর তা বেড়ে ৬৮ হাজার ৪০০ টন হবে বলে আশা করছেন মৎস্য কর্মকর্তারা।

উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বেশি ধান উৎপাদনকারী জেলা নওগাঁ। সেখান থেকে এখন কেউ বগুড়া হয়ে নাটোর, পাবনা দিয়ে সিরাজগঞ্জে যাওয়ার সময় ধানের জমিতে ভুট্টা, তিল ও সবজির চাষ দেখতে পাবেন। বিশেষ করে এসব এলাকায় আম, লিচু, ভুট্টা ও মাছের চাষ দ্রুত বাড়ছে। চলনবিলের নিচু জমিতে সারি সারি পুকুরে যে মাছ চাষ হচ্ছে, বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে তা তিন-চার ঘণ্টার মধ্যে রাজধানীতে চলে আসছে। সবজি ও মাছচাষিরা ভালো দামও পাচ্ছেন। তাঁদের উৎপাদিত পণ্য প্রতি রাতে ট্রাকে করে চলে আসছে রাজধানীতে।

ফল ও সবজির উৎপাদন বৃদ্ধিকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এতে দেশের মানুষের পুষ্টির চাহিদা মিটবে; বিশেষ করে ফলের প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা স্থাপনে সরকার উৎসাহ দেবে। একই সঙ্গে এসব খাদ্যের গুণগত মান বাড়ানোর ব্যাপারেও গুরুত্ব দেওয়া হবে।

ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, উদ্বৃত্ত চাল রপ্তানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদে ধান রাখার গুদাম নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

উত্তরাঞ্চলের কৃষির পরিবর্তন নিয়ে গবেষণা করা সংস্থাগুলো বলছে, ধানের দাম না পাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য এই পরিবর্তন (অন্য ফসলের চাষে ঝুঁকে পড়া) আরও বড় ধরনের ঝুঁকি নিয়ে আসতে পারে। এর কারণ হিসেবে তাঁদের যুক্তি, সবজি ও ফল সংরক্ষণের যথাযথ ব্যবস্থা দেশে গড়ে ওঠেনি। এ ছাড়া কোনো বছর উৎপাদন অনেক বেশি হলে কিংবা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে দামের বড় ধরনের পতন ঘটে।

সম্প্রতি বগুড়া, রংপুরসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের কৃষকেরা আলু নিয়ে বিপদে পড়েছেন। গত শীতেও সবজিচাষিরা উৎপাদিত সবজি পানির দামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। গত বছর আম পাকার মৌসুমে ঝড়ের কবলে পড়ে বিপুল পরিমাণ আম অকালে ঝরে পড়ে। এতে চাষিদের বড় অংশ লোকসানে আম বিক্রি করতে বাধ্য হন। ধান ছাড়া অন্য ফসলের সংরক্ষণের ব্যবস্থা আরও দুর্বল। ধান গোলায় বা বিভিন্ন গুদামে সংরক্ষণ সম্ভব। কিন্তু অন্যান্য ফল ও ফসলগুলো দ্রুত পচনশীল। ফলে তা দ্রুত বিক্রি করতে না পারলে লোকসানের পরিমাণ অনেক বেশি হয়।

ধান–চালের দাম কমে যাওয়ায় ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দেশে ধানের উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে কমে যায়। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) দেশের ১১টি জেলার বোরো ধান চাষ নিয়ে জরিপ চালিয়ে এ তথ্য পায়। ‘খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার ওপর ধানের জমি হ্রাসের কারণ বিশ্লেষণ’ শীর্ষক ওই জরিপে কৃষক কেন ধানের দাম পাচ্ছেন না এবং ধান উৎপাদনে তাঁরা কেন উৎসাহ হারাচ্ছেন—এর একটি বিশ্লেষণ জরিপে উঠে আসে। তাতে তাঁরা কৃষকের ধান চাষে নিরুৎসাহের প্রধান কারণ হিসেবে বিগত বছরগুলোতে বোরো ধানের দাম কমে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। আমন ও আউশ মৌসুমের তুলনায় বোরো মৌসুমে বাজারে ধানের অত্যধিক জোগান থাকায় বাজারদর নিয়ন্ত্রণ কিছুটা কষ্টকর। ফড়িয়া ও মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যের কারণে প্রকৃত কৃষকেরা সরকারের ধার্য করা ধানের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন।

২০১৭ সালে হাওরে ফসলহানির পর মোটা চালের দাম কেজিতে ৫০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এতে প্রতি মণ ধানের দাম এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত হয়। কিন্তু পরের দুই বছর ধানের উৎপাদন বাড়লে দাম কমে যায়। এ বছর বোরো মৌসুমে ধানের দাম না পাওয়ায় পরের মৌসুমগুলোতে ধান চাষে কৃষকের আগ্রহ ও ক্ষমতা কমে যাবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদেরা।

বাংলাদেশের কৃষি খাত নিয়ে ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (ইফপ্রি) করা এক জরিপে দেখা যায়, দেশের ৩৭ শতাংশ কৃষক শুধু নিজের জমিতে চাষ করেন এবং ১৮ শতাংশ কৃষক অন্যের জমি টাকার বিনিময়ে ইজারা নিয়ে চাষ করে থাকেন। সরকারি হিসাবে এ বছর প্রতি কেজি ধানের উৎপাদন খরচ পড়েছে ৩৫ টাকা আর বাজারে প্রতি কেজি ধান বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৪ টাকা।

ইফপ্রির হিসাবে, ধানের দাম কমে যাওয়ায় ভূমিহীন ৩৬ শতাংশ এবং অন্যের জমি অর্থের বিনিময়ে ইজারা নেওয়া ১৮ শতাংশ কৃষক সবচেয়ে বেশি বিপদে আছেন।

ইফপ্রির কান্ট্রি ডিরেক্টর আখতার আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, হতদরিদ্র ও ভূমিহীন যেসব কৃষক এবার ধান চাষ করেছেন, তাঁদেরকে জরুরি ভিত্তিতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় সহযোগিতা দিতে হবে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কৃষি অর্থনীতি বাংলাদেশের মতোই, তারা কৃষকের কাছ থেকে পাঁচ–ছয় লাখ টন ধান সংগ্রহ করে। বাংলাদেশে কৃষকের কাছ থেকে কেনা হয় দেড় লাখ টন। সরকার কৃষকের কাছ থেকে যত বেশি ধান সংগ্রহ করবে, গরিব কৃষকের বিপদ তত কমবে।

বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

এগ্রোবিজ

বিদেশ থেকে খালি হাতে ফিরে ড্রাগন চাষে সাফল্য

বাগানে চাষ করা ড্রাগন হাতে মিরাজুল ইসলাম
বাগানে চাষ করা ড্রাগন হাতে মিরাজুল ইসলাম

মিরাজুল ইসলাম (৩৩)। ১০ বছর সৌদি আরবে ছিলেন। আকামা জটিলতায় খালি হাতে দেশে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। এক বছর বেকার থাকার পর ইউটিউবে পতিত জমিতে ড্রাগন চাষের ভিডিও দেখেন। বাবার কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে নেমে পড়েন ড্রাগন চাষে। দেড় বছরের ব্যবধানে এখন উপজেলার সবচেয়ে বড় ড্রাগন বাগান তাঁর। এ বছর খরচ বাদে আট থেকে নয় লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার ইন্দুরকানি গ্রামের বাসিন্দা মিরাজুল। উপজেলার টগরা গ্রামে দেড় একর জমিতে তিনি ড্রাগনের বাগান তৈরি করেছেন। তাঁর বাগানে এখন সাড়ে তিন হাজার ড্রাগন ফলের গাছ আছে।

মিরাজুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক হিসেবে ১০ বছর সৌদিতে কাজ করে ২০১৯ সালে দেশে ফেরেন তিনি। আকামা সমস্যার কারণে শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। কিছু একটা করবেন বলে ভাবছিলেন। একদিন ইউটিউবে ড্রাগন চাষের ভিডিও দেখতে পান। সেই থেকে ড্রাগন চাষে আগ্রহ জন্মে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে দেড় একর পতিত জমি ড্রাগন চাষের উপযোগী করেন। গাজীপুর থেকে ৬০ টাকা দরে ৬০০ চারা নিয়ে আসেন। বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে শুরু করেন চাষাবাদ। পরের বছর জুনে ফল পাওয়া শুরু করেন।

ড্রাগনের বাগান করতে মিরাজুলের খরচ হয়েছিল ছয় থেকে সাত লাখ টাকা। ইতিমধ্যে ফল বিক্রি করে তাঁর খরচ উঠে গেছে। সাধারণত মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গাছে ফল আসে। বছরে ছয় থেকে সাতবার পাকা ড্রাগন সংগ্রহ করা যায়। এখন পরিপক্ব ও রোগমুক্ত গাছের শাখা কেটে নিজেই চারা তৈরি করেন। ড্রাগন চাষের পাশাপাশি বাগানে চুইঝাল, এলাচ, চায়না লেবুসহ মৌসুমি সবজি চাষ করেন। এ ছাড়া ড্রাগনের চারাও উৎপাদন করে বিক্রি করেন তিনি।

মিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বাগানের বেশির ভাগ গাছে এ বছর ফল ধরেছে। গত মঙ্গলবার বাগান থেকে দেড় টন ফল সংগ্রহ করেছেন। ২৫০ টাকা কেজি দরে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পাইকারদের কাছে বিক্রি করেছেন। স্থানীয় বাজারে ৩০০ টাকা কেজি দরে ড্রাগন বিক্রি হয়। নভেম্বর পর্যন্ত আরও পাঁচ–ছয়বার বাগান থেকে ফল তোলা যাবে। আশা করছেন, খরচ বাদে এবার আট থেকে নয় লাখ টাকা লাভ থাকবে।

মিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমার বাগান থেকে চারা নিয়ে অনেকে বাড়িতে ও ছাদে ছোট পরিসরে ড্রাগনের বাগান করেছেন। আমি এ পর্যন্ত ৪০ টাকায় দেড় হাজার চারা বিক্রি করেছি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্ণ বয়সের একটি ড্রাগনের চারা রোপণের পর ২৫ বছর পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। এর মৃত্যুঝুঁকি নেই বললেই চলে। তবে কয়েক দিন পরপর সেচ দিতে হয়। বৃষ্টির পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হয়। ড্রাগন ফল চাষে রাসায়নিক সার দিতে হয় না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইশরাতুন্নেছা বলেন, মিরাজুল ইসলামকে ড্রাগন চাষে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে আসছে কৃষি বিভাগ। উপজেলায় তাঁর বাগানটি সবচেয়ে বড়। তিনি নিরলস পরিশ্রম করে ছোট থেকে বাগানটি বড় করেছেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোটেক

কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তারা এক সঙ্গে কাজ করতে রাজি

ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি
ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি

ডাচ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে দুই দেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা একসঙ্গে কাজ করতে রাজি হয়েছেন।

গতকাল সোমবার নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগে অনুষ্ঠিত কৃষি খাতের ব্যবসাবিষয়ক এক সম্মেলনে দুই দেশের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত এগ্রি বিজনেস কনক্লেভে বাংলাদেশের প্রায় ৪০জন উদ্যোক্তা ডাচ কৃষি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি প্রযুক্তি সহযোগিতা ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছে ওয়েগেনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়।

আলোচনায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা প্রযুক্তি কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিলে নেদারল্যান্ডসের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা প্রযুক্তি সহযোগিতা দিতে রাজি থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে ডাচরা প্রস্তুত এবং বাংলাদেশি উদ্যোক্তারাও তাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। এ ছাড়া ডাচ সরকার ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বীজ, পশু খাদ্য, পোলট্রি, হর্টিকালচার ও এ্যাকুয়াকালচার বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম সম্পাদন করেছে, যা ওই দেশের বেসরকারি খাতকে আরও উৎসাহিত করেছে।

আলোচনায় কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করতে তৈরি আছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্কয়ার, ইস্পাহানি এগ্রো, একে খান অ্যান্ড কোম্পানি, প্যারাগন গ্রুপ, এসিআই, জেমকন গ্রুপসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা ডাচ প্রযুক্তির প্রয়োগ সরেজমিনে দেখতে যাবেন।

বাংলাদেশের সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের পোল্ট্রিখাতে সহযোগিতার আলোচনা অনেকটা এগিয়েছে উল্লেখ করে মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, দুই দেশের মধ্যে মৎস্য, পশুপালন ও হর্টিকালচারে সহযোগিতার বিপুল সম্ভাবনা আছে।

কনক্লেভ আয়োজনে প্রথমবারের মতো দূতাবাসের সঙ্গে অংশীদার হয়েছে নেদারল্যান্ডসের কৃষি মন্ত্রণালয়, নেদারল্যান্ডস এন্টারপ্রাইজ এজেন্সি, নেদারল্যান্ডস ফুড পার্টনারশিপ, ডাচ-গ্রিন-হাইজডেল্টা, লারিভ ইন্টারন্যাশনাল, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ।

কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থানকারী নেদারল্যান্ডসের আয়তন বাংলাদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের কম। ২০২১-এ কৃষিপণ্য ও খাদ্য রপ্তানি করে নেদারল্যান্ডস ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি আয় করেছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

পেঁয়াজের ক্ষতি পুষিয়ে দিচ্ছে সাথি ফসল বাঙ্গি

পেঁয়াজ তুলে নেওয়ার পর পুরো জমি ভরে গেছে বাঙ্গিগাছে। ফলন হয়েছে ভালো। পাবনার বেড়া উপজেলার বড়শিলা গ্রামে গত শুক্রবার
পেঁয়াজ তুলে নেওয়ার পর পুরো জমি ভরে গেছে বাঙ্গিগাছে। ফলন হয়েছে ভালো। পাবনার বেড়া উপজেলার বড়শিলা গ্রামে গত শুক্রবার

পাবনার বেড়া উপজেলার বড়শিলা গ্রামের কৃষক সাইদুল ইসলাম তাঁর দুই বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করে এবার প্রায় ৪০ হাজার টাকা লোকসান দিয়েছেন। অথচ পেঁয়াজের জমিতেই সাথি ফসল হিসেবে লাগানো বাঙ্গি থেকে তিনি ৫০ হাজার টাকার মতো লাভ করবেন বলে আশা করছেন। এই বাঙ্গি আবাদে তাঁর কোনো খরচ হয়নি। ফলে পেঁয়াজ আবাদের ক্ষতি পুষিয়ে যাচ্ছে।

সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘বাঙ্গি আবাদ কইর‌্যা যে টাকা পাইল্যাম তা হলো আমাগরে ঈদের বোনাস। পেঁয়াজের দাম না পাওয়ায় আমরা (কৃষকেরা) যে ক্ষতির মধ্যে পড়িছিল্যাম, বাঙ্গিতে তা পুষায়া গেছে। এই কয়েক দিনে ১২ হাজার টাকার বাঙ্গি বেচছি। সব মিলায়া ৫০ হাজার টাকার বাঙ্গি বেচার আশা করতেছি।’

সাইদুল ইসলামের মতো পাবনার বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার অনেক কৃষক এবার পেঁয়াজের সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে বাঙ্গির আবাদ করেন। কৃষকেরা পেঁয়াজ আবাদ করতে গিয়ে বিঘায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করেছিলেন। সেই হিসাবে প্রতি মণ পেঁয়াজ উৎপাদনে তাঁদের খরচ হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকার বেশি। কিন্তু বাজারে সেই পেঁয়াজ কৃষকেরা বিক্রি করতে পেরেছেন প্রতি মণ ৬০০ থেকে ৮৫০ টাকায়। এতে প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদে কৃষকদের এবার ২০ হাজার টাকার বেশি লোকসান হয়েছে।

কৃষকেরা বলেন, পেঁয়াজের জমিতে সাথি ফসল হিসেবে বাঙ্গি, মিষ্টিকুমড়া, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। জমিতে পেঁয়াজ লাগানোর পর তা কিছুটা বড় হলে এর ফাঁকে ফাঁকে এসব সাথি ফসল লাগানো হয়। পেঁয়াজের জন্য যে সার, কীটনাশক, সেচ দেওয়া হয়, তা থেকেই সাথি ফসলের সব চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। ফলে সাথি ফসলের জন্য বাড়তি কোনো খরচ হয় না।

কৃষকেরা বলেন, বাঙ্গিতেই কৃষকের লাভ হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। রমজান মাস হওয়ায় এখন বাঙ্গির চাহিদা ও দাম দুই-ই বেশি।

সাঁথিয়ার শহীদনগর গ্রামের কৃষক আজমত আলী জানান, তাঁর জমিসহ এই এলাকার জমি থেকে ৮ থেকে ১০ দিন হলো বাঙ্গি উঠতে শুরু করেছে। এবার বাঙ্গির ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। বাজারে এসব বাঙ্গি আকারভেদে প্রতিটি ৬০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমন দাম থাকলে এক বিঘা থেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকার বাঙ্গি বিক্রি হবে।

সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জীব কুমার গোস্বামী বলেন, পেঁয়াজের সঙ্গে সাথি ফসলের আবাদ কৃষকদের মধ্যে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এ ব্যাপারে তাঁরাও কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

কাঁঠালের আইসক্রিম জ্যাম ও চিপস

জাতীয় ফল কাঁঠালের জ্যাম, চাটনি ও চিপস উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএআরআই) শস্য সংগ্রহের প্রযুক্তি বিভাগের একদল গবেষক। তাঁরা কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত করে মোট ১২টি প্যাকেট ও বোতলজাত পণ্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।

গত শনিবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসে অবস্থিত বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিনা) ‘কাঁঠালের সংগ্রহত্তোর ক্ষতি প্রশমন ও বাজারজাতকরণ কৌশল’ শীর্ষক কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব তথ্য জানান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. গোলাম ফেরদৌস চৌধুরী। কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) অর্থায়নে এবং নিউভিশন সলিউশন্স লিমিটেডের সহযোগিতায় গবেষণা প্রকল্পটি পরিচালিত হয়।

কর্মশালায় ড. মো. গোলাম ফেরদৌস চৌধুরী বলেন, ‘এই প্রকল্পের আওতায় আমরা কাঁঠালের প্রক্রিয়াজাত করে মুখরোচক ১২টি প্যাকেট ও বোতলজাত পণ্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এসব পণ্য উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। কাঁঠালের জ্যাম, আচার, চাটনি, চিপস, কাটলেট, আইসক্রিম, দই, ভর্তা, কাঁঠাল স্বত্ব, রেডি টু কুক কাঁঠাল, ফ্রেশ কাট পণ্যসহ আরও বিভিন্ন ধরনের প্যাকেটজাত পণ্য তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। প্রক্রিয়াজাত পণ্যগুলো ঘরে রেখে সারা বছর খাওয়া যাবে। কাঁঠাল থেকে এসব পণ্য উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা কমানো সম্ভব বলে মনে করছেন গবেষক।’

কর্মশালায় নিউভিশন সলিউশন্স লিমিটেডের মুখ্য পরিদর্শক তারেক রাফি ভূঁইয়া বলেন, উদ্ভাবিত পণ্যগুলো বাজারজাত করার জন্য নিউভিশন কোম্পানি বিএআরআইয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। ময়মনসিংহসহ বাংলাদেশের কয়েকটি জেলা ও উপজেলা শহরে পণ্যগুলো বিপণনের কাজ চলছে।

কর্মশালায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের শস্য সংগ্রহোত্তর প্রযুক্তি বিভাগের বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. হাফিজুল হক খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। সম্মানিত অতিথি ছিলেন কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের সিনিয়র স্পেশালিস্ট (ফিল্ড ক্রপস) ড. নরেশ চন্দ্র দেব বর্মা। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আবু হানিফ। উপস্থিত ছিলেন নিউভিশন সলিউশন্স লিমিটেডের প্রকল্প ম্যানেজার কায়সার আলম।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ফল

কমলা চাষে সার ব্যবস্থাপনা, সেচ, আগাছা ব্যবস্থাপনা ও ফসল তোলা- দা এগ্রো নিউজ

কমলা

সার ব্যবস্থাপনা:  প্রতি গর্তে ১০০ গ্রাম ইউরিয়া সার, ১০০ গ্রাম টিএসপি সার ও এমওপি সার ১০০ গ্রাম প্রয়োগ করতে হয়।

সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা:  চারা গাছের গোড়ায় মাঝে মাঝে পানি সেচ দিতে হবে। বর্ষাকালে গাছের গোড়ায় যাতে পানি না জমে সেজন্য পানি নিকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তাছাড়া কমলা গাছের আগাছা দমন করতে হবে।

ফসল তোলা: মধ্য কার্তিক থেকে মধ্য পৌষ মাসে ফল সংগ্রহ করতে হয়।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@agronewstoday.com, theagronewsbd@gmail.com