বাংলাদেশে প্রতিবছরই কমবেশি ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দেখা যায়।
ডেঙ্গু চিকিৎসায় নতুন ধরণের একটি ওষুধের সাফল্য দেখতে পেয়েছেন বাংলাদেশি একদল গবেষক। এর আগে অ্যালট্রোমবোপাগ নামের এই ওষুধটি রক্তে প্লেটলেট (রক্তের অণুচক্রিকা) কমে গেলে অনেক দেশে ব্যবহার করা হলেও ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসায় সেটি ব্যবহার করা হয়নি।
চিকিৎসা বিষয়ক সাময়িকী দ্যা ল্যানসেট জার্নাল-এর ইক্লিনিক্যাল মেডিসিন-এ গত ২১শে নভেম্বর এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের ১২জন গবেষক ও চিকিৎসক ১০১জন ডেঙ্গু রোগীর ওপর গবেষণা করে অ্যালট্রোমবোপাগ ওষুধটির সাফল্যের চিত্র দেখতে পেয়েছেন। তাদের ২৫ মিলিগ্রাম করে ওষুধটি দেয়া হয়েছিল।
গবেষকদের একজন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সজীব চক্রবর্তী বিবিসি বাংলাকে বলছেন, “ডেঙ্গু রোগের একটি অন্যতম উপসর্গ হলো এতে রক্তের প্লেটলেট কমে যায়। কিন্তু অ্যালট্রোমবোপ্যাগ নামের একটা ওষুধ রয়েছে যা রক্তের প্লেটলেট বাড়ায়, কিন্তু ডেঙ্গু রোগে এটি কখনোই ব্যবহার করা হয়নি। তাহলে এই রোগের চিকিৎসায় সেটা কতটা কাজ করতে পারে, সেটা নিয়ে আমরা গবেষণা শুরু করি।”
আন্তর্জাতিক ওষুধ কোম্পানি নোভার্টিস ২০০৮ সালে এই ওষুধ অ্যালট্রোমবোপ্যাগ তৈরি করে যা আমেরিকার ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা FDAএর অনুমোদন লাভ করে ২০১৪ সনে। অন্যান্য ব্যাধি যেমন, লিভারের রোগে যখন প্লেটলেট কমে যায়, তখন এই ওষুধ ব্যবহার করা হয়।
ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে গষেণা করছেন ড. সজীব চক্রবর্তী
ড. সজীব চক্রবর্তী বলছেন, ”ডেঙ্গুতেও যেহেতু প্লেটলেটের সংখ্যা কমে যায়, তাই আমরা ধারণা করছিলাম যে, এই ওষুধটি সেখানেও কাজ করতে পারে। কিন্তু আমরা শতভাগ নিশ্চিত ছিলাম না। তখন আমরা এটা নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করতে শুরু করি। ”
“সেখানে আমরা যে ফলাফল দেখতে পেয়েছি, তাতে যে ডেঙ্গু রোগীরা এই ওষুধটি খেয়েছেন, আট দিনের মাথায় তাদের প্রায় ৯২ শতাংশ রোগীর প্লেটলেটের সংখ্যা স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিলো। আর যাদের ওষুধটি দেয়া হয়নি, তাদের মধ্যে মাত্র ৫৫ শতাংশের সেটা ঠিক হয়েছিল। ফলে এতে বোঝা যায়, এই ওষুধটি দিলে বেশিরভাগ রোগী সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন।” তিনি বলছেন।
”সেই সঙ্গে এই ওষুধটির কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে কিনা, সেটাও আমরা দেখেছি। কারণ অনেকের পেল্টলেট বেড়ে গেলে সেটা ক্ষতির কারণও হতে পারে। অনেক সময় রক্ত জমাট বাঁধতে পারে। কিন্তু রোগীদের ক্ষেত্রে (এই ওষুধে) এরকম কিছু পাইনি। শুধু তিন শতাংশের ক্ষেত্রে ডায়রিয়ার মতো কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পেয়েছি।”
২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই গবেষণাটি করা হয়।
তবে এখনো ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসায় এই ওষুধের ব্যবহার অনুমোদিত নয়।
বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোয় ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ অনেক বেশি।
ড. চক্রবর্তী জানান, এটি ছিল দ্বিতীয় পর্যায়ের একটি পরীক্ষা। তবে ডেঙ্গু রোগের ওপর এই ওষুধের সাফল্যের বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত করতে হলে একাধিক দেশে কয়েক হাজার মানুষের ওপর তৃতীয় ধাপের মানব পর্যায়ের পরীক্ষা করা জরুরি।
”এখনো এটা ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইনে আসেনি। কিন্তু আমাদের মতো আরও বৃহৎ পরিসরে পরীক্ষা করে সফলতা পাওয়া গেলে তখন নিশ্চয়ই এটা ডেঙ্গুর চিকিৎসার গাইডলাইনে অন্তর্ভুক্ত হবে,” তিনি বলছেন।
বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোয় ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ অনেক বেশি। গবেষকরা আশা করছেন, ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসায় কার্যকর ও সফল ওষুধ শনাক্ত করা গেলে এই অঞ্চলের অনেক মানুষ উপকৃত হবে।
বাংলাদেশের একটি ওষুধ কোম্পানি ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালসের অর্থায়নে এই গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে বলে তিনি জানান।
ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসায় নতুন ওষুধের সম্ভাবনা দেখছেন বাংলাদেশের একদল গবেষক
ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসায় নতুন ওষুধের সম্ভাবনা দেখছেন বাংলাদেশের একদল গবেষক
ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসায় নতুন ওষুধের সম্ভাবনা দেখছেন বাংলাদেশের একদল গবেষক
আরামদায়ক পোশাক পরতে হলে সুতি কাপড়ের বিকল্প নেই। কারণ সুতি হলো প্রাকৃতিক ফেব্রিক। তুলা থেকে তৈরি হয় সুতা। এরপর ওই সুতা থেকে তৈরি হয় সুতির পোশাক। তাই এই ফেব্রিকের বিশেষ যত্ন প্রয়োজন।
সুতি কাপড় ধোয়া থেকে শুরু করে ভাঁজ করা পর্যন্ত নিয়ম মানা জরুরি। না হলে কাপড়ের আয়ু কমে যায়। এটির বিশেষ যত্ন প্রয়োজন। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক সুতি কাপড়ের যত্ন নেবেন কীভাবে?
সুতি কাপড় ধোয়ার উপায়
>> সুতি কাপড়ের ফেব্রিক খুব সহজেই ছিঁড়ে যায়। তাই ঘঁষে ঘঁষে সুতির পোশাক না ধোয়াই ভালো।
>> প্রচণ্ড গরম পানিতেও কখনো ভেজাবেন না সুতির পোশাক। এতে পোশাকের রং নষ্ট হয়ে যাবে।
>> একটি সুতি কাপড় পরিধান করার একমাস পর ধোবেন না। পরার পরপরই ধুয়ে শুকিয়ে ভালোভাবে রেখে দিন।
>> যদি একবার পরেই কাচতে না চান, তবে তাকে রোদে দিতে হবে অবশ্যই। অন্তত এক ঘণ্টা রোদে দেবেন।
>> যদি সুতির পোশাকে কোনো দাগ হয়ে যায়, তবে আগে তা আলাদা করে তুলে নিন। তারপর সম্পূর্ণ জামাটি পরিষ্কার করুন।
>> সুতির পোশাকে আপনি মাড় দিতেই পারেন। তবে মাড় দেওয়ার পরই পানি ঝরিয়ে নিন।
শুকানোর সময় যা করবেন
>> খুব টানটান করে সুতির পোশাক মেলবেন না।
>> পানি ঝরিয়ে নিয়ে সুতির পোশাক মেলুন।
>> চড়া রোদে সুতির পোশাক দেবেন না। হালকা রোদে বা ছায়ায় সুতির পোশাক মেলবেন।
ইস্ত্রি করার সময় করণীয়
>> প্রথমে পোশাক উল্টে নিয়ে ইস্ত্রি করে তারপর সোজা পিঠে করুন।
আলমারিতে রাখার সময় করণীয়
>> পরিধান করার পর ভালোভাবে রোদে না শুকিয়ে বা ধুয়ে সুতির পোশাক কখনো ভাঁজ করে আলমারিতে রাখবেন না।
>> সুতির কাপড় আলমারিতে রাখার পর ওই স্থানে কিছু কালোজিরা দিয়ে রাখবেন। এতে পোশাক ভালো থাকবে। পোকা-মাকড় কাপড়ের ধারে-কাছে আসবে না।
অকালে চুল পড়ে যাওয়া ঠেকাতে অনেকেই এটা-সেটা ব্যবহার করেন। এসব করেও মাথায় নতুন চুল গজাচ্ছে না। এমন অবস্থায় অনেকেই দিশেহারা হয়ে পড়েন। মাথায় যাদের চুল কম বা টাক পড়ে গেছে; এমন মানুষেরা সব সময় দুশ্চিন্তায় থাকেন।
চুল পড়ার রয়েছে অনেক কারণ। অনিয়মিত জীবন-যাপন, বংশগতভাবে টাক, কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনীর ব্যবহার ইত্যাদি কারণে চুল পড়তে পারে। কিছু ক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাসের কারণেও চুল পড়ার সমস্যাটি বেড়ে যেতে পারে।
এ ছাড়াও দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন রোগে অতিরিক্ত চুল পড়ায় মাথায় টাক পড়তে পারে। তবে চিন্তিত না হয়ে কার্যকরী উপায়ে চুল গজানোর জন্য প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদানে ভরসা রাখুন।
তেমনই একটি উপাদান হলো পেয়ারা পাতা। নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন! পেয়ারা পাতায় আবার কীভাবে চুল গজাবে? প্রাচীনকাল থেকেই রূপচর্চায় পেয়ারা পাতা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এগুলোয় ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স রয়েছে। যা চুল পড়া ঠেকাতে পারে। একই সঙ্গে এটি চুল গজাতেও সাহায্য করে।
তাই জেনে নিন পেয়ারা পাতা দিয়ে চুল গজানোর সহজ উপায়-
প্রথমে কিছু পেয়ারা পাতা একটি পাত্রে নিয়ে পানিতে সেদ্ধ করে নিন। চুলা থেকে নামিয়ে পানি ঠান্ডা হতে দিন। এবার আপনার মাথার ত্বকে পেয়ারা পাতা সেদ্ধ পানীয় ম্যাসাজ করে ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দু’বার এ উপায় অনুসরণ করলে ফলাফল কিছুদিনের মধ্যে টের পাবেন।
যদিও অনেক কারণে চুল পড়ে মাথা টাক হতে পারে। তাই দীর্ঘদিন ধরে যদি চুল পড়তে থাকে আর মাথা টাক হওয়া শুরু হয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। পাশাপাশি এ টোটকা মেনে চুলের যত্নে পেয়ারা পাতা ব্যবহার করুন।
শারীরিক সুস্থতায় কালো চা পানের বিকল্প নেই। কালো চা আমরা সাধারণত লিকার হিসেবে (রং চা) অথবা দুধ-চিনি মিশিয়ে পান করে থাকি। তবে রং চায়ে ক্যালোরির পরিমাণ অনেক কম থাকে।
গবেষণায় দেখা গেছে, কালো চা স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। তা ছাড়া নিয়মিত কালো পান করলে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে। এমনকি যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান; তাদের জন্যও রং চা অনেক কার্যকরী। শুধু শারীরিক সুস্থতা নয় বরং ত্বকের কালো দাগ দূর করতে পারে চা।
কালো চায়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। চায়ের পলিফেনল হচ্ছে ব্যাকটেরিয়ার যম। যেকোনো জীবাণু ধ্বংসে কাজ করে কালো চায়ে থাকা উপাদানসমূহ। ত্বক ও চুলের যত্নে কালো চা ব্যবহারেই দেখবেন ম্যাজিকের মতো ফলাফল। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক রূপচর্চায় কালো চায়ের ব্যবহার-
>> চোখের নিচের বলিরেখা ও কালচে দাগ দূর করতে ব্ল্যাক টি’র ব্যবহৃত ঠান্ডা ব্যাগ চোখের উপর দিয়ে রাখুন।
>> চুলের ঝলমলে ভাব আনতে শ্যাম্পু শেষে ব্ল্যাক টি লিকার দিয়ে ধুয়ে নিন।
>> মেহেদির সঙ্গে কালো চায়ের লিকার মিশিয়ে চুলে লাগালে রঙিন আভা চলে আসবে।
>> ত্বকের কালচে দাগ দূর করতে ঠান্ডা টি ব্যাগ চেপে চেপে লাগান।
>> চুল লম্বা করতেও কালো চায়ের বিকল্প নেই! এজন্য কয়েকটি কালো চায়ের টি ব্যাগ এক কাপ পানিতে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন শ্যাম্পু শেষে চুলের গোড়ায় স্প্রে করুন। ১৫ মিনিট চুলে তোয়ালে পেঁচিয়ে রাখুন। এরপর চুল শুকিয়ে নিন।
প্রাচীনকাল থেকে উপমহাদেশের মানুষ তামার তৈজসপত্র ব্যবহার করে আসছে। বিশেষ করে পানি পানের জন্য তামার পাত্র প্রায় সব পরিবারেই ব্যবহার করা হত। তামায় আছে একাধিক গুণ, প্রতিদিন তামার পাত্রে পানি পান কীভাবে সুস্থ রাখে শরীর তা জেনে নিন।
হজম প্রক্রিয়া ঠিক রাখে: তামার পাত্রে খাবার খাওয়া, তামার গ্লাসে বা বোতলে পানি পানের ফলে হজমের সমস্যা দূর হতে পারে। কারণ তামা হজমে সাহায্য করে। এতে থাকা উপাদান ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলে, পেটের সমস্যা দূর করে, মেটাবলিজম ঠিক রাখে। তবে, মনে রাখতে হবে, লেবুর পানি বা গরম পানি যেন তামার পাত্রে না রাখা হয়।
আর্থ্রাইটিস বা বাতের সমস্যা কমায়: তামা আর্থ্রাইটিস কমাতে সাহায্য করে। এর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান গাঁটে গাঁটে ব্যথা কমায়।তামার পাত্রে পানি জমা করে রাখা বা পানি পান প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে। প্লাস্টিকের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় ও চোখধাঁধানো ডিজাইনের বোতল পাওয়া যাচ্ছে বলে, অনেকেই সেই বোতলে পানি রাখা বা পানের অভ্যাস চালু করেন। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, মানুষ আবারও পুরনো অভ্যাসে ফিরছে। এর একাধিক ভালো দিকের কথা মাথায় রেখে, আবারও তামার পাত্রে খাওয়া বা তামার গ্লাস, বোতলে পানি পান শুরু হয়েছে।
তামায় অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল, অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টস ও অ্যান্টি-কারসিনোজেনিক থাকে। যা শরীর ভালো রাখতে সাহায্য করে। তামা পানিতে আয়রনও সঞ্চার করে। পাশাপাশি এর অন্যান্য উপাদানও শরীরের একাধিক উপকার করে।
অ্যানিমিয়া দূর করতে সাহায্য করে: রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম থাকলে অ্যানিমিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদি আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকে, তাহলে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। তামা পানিতে আয়রন সঞ্চার করে, ফলে রক্তে আয়রনের মাত্রা বাড়তে পারে। তাই তামার বোতলে পানি পানে অ্যানিমিয়ার সমস্যা কমতে পারে। এর পাশাপাশি, আয়রন কম থাকলে শ্বেত রক্তকণিকাও কমতে পারে।
থাইরয়েড গ্রন্থির কাজে ভারসাম্য বজায় রাখে: শরীরে সঠিক মাত্রায় তামা থাকলে তা থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে অতিরিক্ত হরমোন নিঃসরণ আটকাতে সহায়তা করে। এবং এর কাজের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে
হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণ করে: শরীরে তামার পরিমাণ কম থাকলে তা রক্তচাপে তারতম্য ঘটায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দেয়। এবং তামা কোলেস্টেরলও নিয়ন্ত্রণে রাখে। সব মিলিয়ে হাইপারটেনশন রোধ করতে এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ফলে শরীরে তামার পরিমাণ ঠিক রাখতে তামার পাত্রে পানি পান করা যেতে পারে
আর্থ্রাইটিস বা বাতের সমস্যা কমায়: তামা আর্থ্রাইটিস কমাতে সাহায্য করে। এর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান গাঁটে গাঁটে ব্যথা কমায়।
হার্টের জন্য ভালো: ধমনীতে রক্ত চলাচল সচল রাখতে সাহায্য করে তামা। আর রক্ত চলাচল ঠিক থাকলে হার্টেও সমস্যা হয় না। ফলে হার্ট ভালো থাকে।
ত্বকে বলিরেখা পড়া রোধ করে: তামায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টস থাকে, যা নতুন কোষ গঠনে সাহায্য করে। ফলে বলিরেখা পড়ে না। ত্বকও ভালো থাকে।
এখন বিশ্বব্যাপী আলোচনা হচ্ছে এই সোনার হোটেলটি নিয়ে। কী আছে এই সোনার হোটেলে? দুবাইয়ের ‘বুর্জ আল আরব’ নামের এ হোটেলটি সম্পর্কে জানা যাক।
এই হোটেলটি বাণিজ্যিকভাবে উদ্বোধনের আগে এক ব্রিটিশ সাংবাদিক ঘুরতে এসেছিলেন। তিনি সবকিছু দেখে মুগ্ধ হয়ে বলেছিলেন, এই হোটেল বিশ্বের অন্য সব হোটেলের তুলনায় এগিয়ে। তাই এটা ‘সেভেন স্টার হোটেল’। তারপর থেকে দুবাইয়ের ‘বুর্জ আল আরব’-এর গায়ে সাতটি তারার বাতি সংযুক্ত করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
‘বুর্জ’ কথার অর্থ মিনার। ‘বুর্জ আল আরব’ হলো আরব দেশের মিনার। দুবাইয়ে পারস্য উপসাগরের উপকূলে ‘জুমেইরাহ’ হলো সাদা বালির সৈকত। সেখানে একটি কৃত্রিম দ্বীপে দাঁড়িয়ে আছে এই হোটেল। পালতোলা নৌকার মতো দেখতে এই অতিথিশালা বিশ্বের উচ্চতম হোটেলগুলোর মধ্যে অন্যতম।
৫ বছর ধরে নির্মাণের পরে ১৯৯৯ সালে খুলে দেয়া হয় বুর্জ আল আরবের দরজা। কৃত্রিম দ্বীপের উপর তৈরি করা হয়েছে বলেই সম্পূর্ণ নির্মাণ প্রক্রিয়া শেষ হতে এত সময় লেগে যায়। মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে এর যোগাযোগ হচ্ছে একটি সেতুর মাধ্যমে। তবে বিলাসবহুল হোটেলের নিজস্ব এই সেতু ব্যবহার করতে পারেন শুধুমাত্র হোটেলের কর্মী ও অতিথিরা
৬৮৯ ফুট উচ্চতার এই হোটেলের ছাদের কাছে আছে নিজস্ব হেলিপ্যাড। দুবাই বিমানবন্দর থেকে অতিথিদের হেলিকপ্টারে উড়িয়ে আনেন হোটেল কর্তৃপক্ষ। যদি কেউ সড়কপথে আসতে চান, তা হলে পাঠিয়ে দেয়া হয় রোলস রয়েস
হোটেলের ভিতের পা রাখলেই চোখ ধাঁধিয়ে যায় সোনার ছটায়। অন্দরসজ্জা, ঝাড়বাতি থেকে আসবাবপত্র— সব কিছুতেই খাঁটি সোনার উজ্জ্বল উপস্থিতি। হোটেলের সাজসজ্জার মধ্যে ২২ হাজার বর্গফুটেরও বেশি জায়গা জুড়ে সোনার হাজিরা। আয়নার ফ্রেম থেকে টেলিভিশনের বর্ডার মুখ ঢেকেছে ২৪ ক্যারেট সোনার প্রলেপে
হোটেলে বিলাসবহুল স্যুট ২০২টি। এরমধ্যে কয়েকটি থেকে পর্যটকরা দেখতে পাবেন ‘পাম জুমেইরা’-র দৃশ্য। খেজুর গাছের মতো ‘পাম জুমেইরা’ হলো কিছু কৃত্রিম দ্বীপের সমষ্টি। বিলাসবহুল হোটেল, শপিং কমপ্লেক্সসহ এই অংশ হলো দুবাই তথা বিশ্বের বিত্তবানদের অন্যতম ঠিকানা
তিটা স্যুইটের জন্য থাকেন একজন করে নির্দিষ্ট বাটলার। ওই স্যুইটের বাসিন্দাদের জন্য তিনি নিযুক্ত হন। অতিথিদের অভিবাদন জানিয়ে তিনি তাদের হোটেলের দরজা থেকে নিয়ে যান স্যুইট অবধি। এই হোটেলের সাজসজ্জা ও রীতিনীতিতে মরু সংস্কৃতির প্রভাব স্পষ্ট। তবে হোটেল নির্মাণে অনুসরণ করা হয়েছে গ্রিক স্থাপত্যও।
আগুন, বাতাস, মাটি এবং পানি- প্রকৃতির এই মূল উপাদানের প্রভাব রয়েছে স্যুইটগুলোর ভিতরের রঙে। সবচেয়ে ছোট স্যুইটের আয়তনও ১,৮৩০ বর্গফুট। একটা স্যুইট সম্পূর্ণ ঘুরে দেখতেও সময় লাগে অন্তত ৩০ মিনিট।
হোটেলের রয়্যাল স্যুটগুলো তৈরি হয়েছে একটি আস্ত ফ্লোর জুড়ে। এরকম একটি স্যুইটের আয়তন প্রায় ৮ হাজার ৪০০ বর্গফুট। রাজকীয় এই স্যুইটের মাঝে থাকে বিশাল পালঙ্ক। খাঁটি মিশরীয় সুতির চাদর বিছিয়ে থাকা পালঙ্কের উপর সিলিং জুড়ে রয়েছে বিশাল আয়না। অতিথির আরামদায়ক ঘুমের জন্য হোটেল থেকে দেয়া হয় ১৭ রকমের বালিশ।
হোটেলের ১৮তম তলায় আছে স্পা। পারস্য উপসাগরের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে সেখানে বুঁদ হয়ে থাকা যায় স্পা-এর আরামে। পাশাপাশি হোটেলে আছে একাধিক ইন্ডোর ও আউটডোর সুইমিং পুল। শুধুমাত্র মহিলা ও শিশুদের জন্য আছে আলাদা সুইমিং পুল। যুগলদের জন্য নির্দিষ্ট ইন্ডোর সুইমিং পুলে আছে চাঁদের আলোয় সাঁতার কাটার ব্যবস্থা। যদি এতেও মন না ভরে, তবে এর জন্য রয়েছে হোটেলের ব্যক্তিগত সৈকত। সেখানেও পর্যটকের জন্য হাজির হরেক বিলাস।
এই হোটেলের ৬টি রেস্তোরাঁয় সাজানো আছে বিশ্বের নানা প্রান্তের খাবার। সেগুলোর মধ্যে সবথেকে আকর্ষণীয় হল ‘গোল্ড অন ২৭’। ‘বুর্জ আল আরব’-এর ২৭তম ফ্লোরে বার সোনা দিয়ে সাজানো। বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত বারটেন্ডাররা তৈরি করেন বিশেষ পানীয়, যার রেসিপি গোপন রাখা হয়। বিশেষ রকমের পানীয় তৈরিতে আঙুর রসের সঙ্গে মেশানো হয় সোনার গুঁড়োও।
বুর্জ আল আরব-এর রেস্তোরাঁগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হরো ‘আল মুনটাহা’ এবং ‘আল মাহারা’। বিভিন্ন নামি পত্রিকার প্রচ্ছদ থেকে হলিউডের সিনেমায় জায়গা করে নিয়েছে ‘বুর্জ আল আরব’
আমেরিকার এক সংবাদসংস্থার তালিকা অনুযায়ী বিশ্বের প্রথম ১৫টি দামি হোটেলের মধ্যে বুর্জ আল আরব আছে ১২ নম্বরে। এই হোটেলে দু’জনের এক রাত কাটানোর ন্যূনতম খরচ প্রায় দেড় লাখ টাকা। ডুপ্লেক্স স্যুইটগুলোতে ১ রাত কাটানোর খরচ ৮ লাখ টাকারও বেশি।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন