ফল
গাছে ধরেছে টকমিষ্টি স্বাদের ‘জাম্বুরা’
লেখক
বাংলা নিউজ ২৪
মৌলভীবাজার: শখের বাগানে স্বাদের জাম্বুরা গাছের পাতার সামনে কিংবা আড়ালে দারুণ সৌন্দর্য ছড়িয়ে ঝুলে আছে। মাঝারি আকারের এ গাছগুলো ফলদ সাফল্যে মুখর।তবে আধখাওয়া মাটিতে পড়ে থাকা জাম্বুরা বলে দেয়- এখানে দিবাচর কাঠবিড়ালি কিংবা নিশাচর বাদুড়ের বেশ আনাগোনা। এসব প্রাণীরা পুরোটা খেতে পারে না, ফল নষ্ট করে বেশি। এ ফলের বাগানেও তার নমুনা পাওয়া গেল।
জাম্বুরা ঠাণ্ডাজনিত জ্বর-সর্দিসহ নানা রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এর ইংরেজি নাম Pomelo এবং বৈজ্ঞানিক নাম Citrus maxima।
শ্রীমঙ্গলের ফলদ বৃক্ষের শৌখিন চাষি আব্দুল মুহিত মুরাদ বাংলানিউজকে বলেন, জাম্বুরা অত্যন্ত সুস্বাদু ফল। কিন্তু পাকতে হবে। পারিপক্ক হওয়ার আগে জাম্বুরা খেলে কিন্তু সেই স্বাদটা পাবেন না। তাই অপেক্ষা করতেই হবে – গাছে না পাকা পর্যন্ত।
তার ফল-বাগানে জাম্বুরার প্রজাতি সম্পর্কে তিনি বলেন, আমার এখানে মোট ৪ জাতের জাম্বুরা আছে। একটা প্রজাতি হলো বারি-২, এটি ২০০৮ সালে লাগানো হয়। বিটিআরআইয়ের দুটি প্রজাতি, এগুলো ২০১০ সালে লাগিয়েছিলাম এবং অপরটি আমার গ্রামের বাড়ির জাম্বুরা গাছ, যেটি ২০১৪ সালে লাগানো হয়েছে।
ফলন বেশি হয় বারি-২ জাতের গাছে। গাছ ভরে জাম্বুরা ধরে। বারি-২ হলো বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গাছ। ১৫টি জাম্বুরা গাছের মধ্যে ১৩টি গাছে ফল ধরেছে। অবশিষ্ট দুটো গাছ চারার গাছ, নতুন লাগানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তবে গাছে জাম্বুরা ধরলেও এখনো পাকেনি। চারার গাছ থেকে ফলন আসতে দুই থেকে তিন বছর সময় লেগে যায়। জাম্বুরা বছরে একবার ধরে। জাম্বুরা পাকে কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে। মাল্টা ফলের সঙ্গে জাম্বুরা পাকে।
মুরাদ দুঃখ প্রকাশ করে জানান, কম করে হলেও চলতি মৌসুমে প্রায় একশত জাম্বুরা নষ্ট করে ফেলেছে কাঠবিড়ালি।

লোকাল প্রজাতির সম্পর্কে তিনি বলেন, আমার গ্রামের বাড়ি গোলাপগঞ্জে উৎপন্ন দেশি প্রজাতির যে জাম্বুরার বীজ থেকে সংগ্রহ করে এনে শ্রীমঙ্গলের ফলের বাগানে ৪/৫ বছর আগে লাগিয়েছিলাম, সে গাছগুলোর ফল খুবই সুস্বাদু। ভালোভাবে পাকলে কমলার থেকেও এটি উন্নত। এই জাম্বুরা সিলেটি লোকাল ফল। আমাদের এলাকার পাহাড়ি অঞ্চলে যে জাম্বুরাগুলো হয়– এগুলো কিন্তু খুবই টেস্টি হয়। মাটির একটা বিষয় আছে। সব রকম মাটিতে কিন্তু সব ফল ভালো হয় না। বাগানের মাল্টার সঙ্গে এরও বাণিজ্যিক চিন্তা রয়েছে আমার, বলেন শৌখিন ফলচাষি মুরাদ।
বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট সিলেটের আঞ্চলিক প্রধান (ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা) ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, ১০০ গ্রাম খাদ্যযোগ্য জাম্বুরাতে রয়েছে- খাদ্যশক্তি ৩৮ কিলোক্যালরি, প্রোটিন ০.৫ গ্রাম, স্নেহ ০.৩ গ্রাম এবং শর্করা ৮.৫ গ্রাম, খাদ্যআঁশ ১ গ্রাম, থায়ামিন ০.০৩৪ মিলিগ্রাম, খনিজলবণ ০.২০ গ্রাম, রিবোফ্লেভিন ০.০২৭ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন ০.২২ মিলিগ্রাম। এছাড়াও ভিটামিন বি-২ ০.০৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-৬ ০.০৩৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-সি ১০৫ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ১২০ মাইক্রগ্রাম, আয়রন ০.২ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩৭ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ৬ মিলিগ্রাম, ম্যাংগানিজ ০.০১৭ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১৭ মিলিগ্রাম, পাটাশিয়াম ২১৬ মিলিগ্রাম এবং সোডিয়াম ১ মিলিগ্রাম রয়েছে।
জাম্বুর আমাদের সবার পরিচিত অত্যন্ত পুষ্টিসম্পন্ন মৌসুমি ফল। এটি উচ্চ পরিমাণে ভিটামিন-সি এবং ভিটামিন-বি উপাদানের পাশাপাশি বিটা ক্যারোটিন এবং ফলিত এসিডের উৎস। এ উপাদানগুলো গর্ভবতী মায়েদের জন্য উপকারি, বলেন ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
-
মাঝারি আকারের গাছে জাম্বুরার বাহার
-
গাছে ধরেছে টকমিষ্টি স্বাদের ‘জাম্বুরা’

আপনার জন্য নির্বাচিত সংবাদ
-
গাছের ডাক্তার
-
সখীপুরে কাটা পড়ছে সামাজিক বনায়নের ১১ হাজার গাছ
-
কৃষিতে আমাদের ব্যাপক উন্নয়ন বিশ্বের নজর কেড়েছে : প্রধানমন্ত্রী
-
আগাম আলুতে কৃষকের হাসি
-
আমন-আউশের মধ্যবর্তী সময়ে সরিষা চাষে কৃষকের বাড়তি আয়
-
মাগুরায় শীতকালীন সবজির ব্যাপক ফলন, দামও বেশি
-
লাভের আশায় আগাম আলু চাষে ব্যস্ত কৃষক
-
ভোলায় আখের বাম্পার ফলন
-
আশ্বিন-কার্তিকে আর অভাব নেই কৃষকের
-
খাগড়াছড়িতে দেশি-উপসী জাতের মরিচে লাভবান কৃষক


ফল গাছে প্রচুর পরিমাণে ফুল-ফল উৎপাদনক্ষম শাখা-প্রশাখার সংখ্যা বাড়ানো এবং ফলের গুণগতমান বৃদ্ধি করতে ছাঁটাইয়ের বিকল্প নেই। আমাদের দেশের শহর-নগর-গ্রামে যেদিকেই তাকানো যায় ফলের গাছ চোখে পড়বেই। এসব গাছের অধিকাংশই প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা। খুব কমসংখ্যক ফলগাছ অঙ্গ ছাঁটাইয়ের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে বৃদ্ধির সুযোগ পায়। ফলগাছ রোপণই আসল কথা নয়।
রোপণ থেকে শুরু করে ফল ধারণ পযর্ন্ত ফল গাছের বিভিন্ন অঙ্গ ছাঁটাই ফল গাছ ব্যবস্থাপনার একটি অন্যতম কাজ। মূলত দুটি উদ্দেশ্যে ফল গাছের অঙ্গ ছাঁটাই করা হয়। প্রথমত, অফলন্ত ফলগাছকে একটি নিদির্ষ্ট আকার আকৃতি দেয়া, দ্বিতীয়ত, অফলন্ত ও ফলন্ত ফলগাছের অপ্রয়োজনীয় দুবর্ল, চিকন, নরম, ভাঙ্গা ও মরা ডাল-পালা এবং রোগ ও পোকা আক্রান্ত ডালপালা ছাঁটাই করে গাছের ভেতরের দিকে আলো-বাতাস চলাচল স্বাভাবিক রাখা। এ দুটি উদ্দেশ্য ছাড়াও আরো কিছু কারণে ফল গাছ ছাঁটাই করতে হয়। যেমন-

১. ফলগাছটি যদি মাতৃর্গাছ হয়, তাহলে ভবিষ্যতে ফলগাছ থেকে বেশি পরিমাণে সায়ন উৎপাদন করা।
২. ফল গাছে প্রচুর পরিমাণে ফুল-ফল উৎপাদনক্ষম শাখা-প্রশাখার সংখ্যা বাড়ানো এবং ফলের গুণগতমান বৃদ্ধি করা।
৩. ঝড় বা প্রবল বাতাসে যেন ফলগাছ সহজে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে জন্য গাছকে সুগঠিত ও মজবুত অবকাঠামো প্রদান করা।
৪. ফল গাছের বিভিন্ন পরিচর্যার যেমন- বালাইনাশক স্প্রে করা, সায়ন সংগ্রহ করা ইত্যাদি কাজ সহজ করা।
৫. যেসব ফল গাছে ফল ধারণ সমস্যা আছে, সেসব গাছের ফল ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে নতুন শাখা-প্রশাখা গজানোর ব্যবস্থা করা।
৬. এক বছর পর পর যেসব গাছে ফল ধরে সেসব গাছের একান্তর ক্রমিক ফলনের প্রভাব কমানো বা ফল ধরার ব্যবস্থা করা।
৭. যেসব শাখা-প্রশাখা অন্য শাখা-প্রশাখার ভেতরে ঢুকে যায় বা নিন্মমুখী হয় সেগুলো ছাঁটাই করে গাছকে ঝোপালো অবস্থা থেকে মুক্ত রাখা।

ফল গাছের বিভিন্ন অঙ্গ যেমন,- ডাল, পাতা, ছাল বা বাকল, ফুল, ফল ও শিকড় বিভিন্ন কৌশলে ভিন্ন ভিন্ন ফল গাছের বিভিন্ন বয়সে জাত ও বৃদ্ধির স্বভাব অনুযায়ী ছাঁটাই করতে হয়। ফল ধরার আগেই ফল গাছের কাঠামোগত আকৃতি গড়ে তোলার উদ্দেশ্য হচ্ছে গাছের শীর্ষ ছাঁটাই করে গাছকে খাটো রাখা।
এতে গাছে সার প্রয়োগ, সেচ প্রদান, স্প্রে করা এবং সহজে ফল সংগ্রহসহ অন্যান্য পরিচর্যা করা যায়। এ ছাড়া গাছে যদি ৪ থেকে ৭টি শাখা-প্রশাখা থাকে তাহলে গাছ যান্ত্রিকভাবেও দৃঢ় ও খোলা-মেলা হয়।
গাছের ভেতরের দিকে এমন কিছু শাখা-প্রশাখা গজায় যেগুলো থেকে কোন ফলন পাওয়া যায় না, সেগুলোও ছাঁটাই করা উচিত। কোন কোন ফল গাছের গোড়ার দিকে কিছু কিছু কুশি বা নতুন শাখা বের হতে দেখা যায়, সেগুলো নিয়মিতভাবে ছাঁটাই করতে হয়। যেমন- ডালিম, পেয়ারা, লেবু ও কাঁঠাল গাছের গোড়ায় দুই-তিন সপ্তাহ পর পর বের হওয়া কুশিগুলো ছাঁটাই করতে হয়।
ছাঁটাই করার সময় লক্ষ্য রাখতে হয়, গাছের সতেজতা কেমন, বয়স কত এবং জাত ও বৃদ্ধির স্বভাব কেমন। কম বয়সী ফল গাছে যথাসম্ভব কম ছাঁটাই বা হালকা ছাঁটাই করতে হয়। তবে কম বা বেশি যে বয়সেরই হোক না কেন গাছে মরা বা ডাঙ্গা এবং রোগ-পোকা আক্রান্ত শাখা-প্রশাখা ছাঁটাইয়ের সময় কিছুটা সুস্থ অংশসহ ছাঁটাই করতে হয়। মূল কাণ্ড এবং মোটা শাখা কখনোই ছাঁটাই করা ঠিক নয়।
বড় মোটা শাখা কাটার সময় নিদির্ষ্ট জায়গা থেকে প্রায় ১ ফুট বা ৩০ সেন্টিমিটার দূরে নিচের দিক থেকে কাটা শুরু করতে হয়। কাটার গভীরতা নিভর্র করে কাটা শাখার অংশ নিচের দিকে বেঁকে আসা পযর্ন্ত। এর পর শাখার উপরের দিকে প্রথম কাটার স্থান থেকে ১ ইঞ্চি বা আড়াই সেন্টিমিটার দূরে দ্বিতীয় কাটা দিতে হয়। এতে কাটা শাখা বাকল বা ছালের সাথে ঝুলে থাকে না।

কাটা জায়গায় আলকাতরা বা ছত্রাকনাশক লাগাতে হয়। চিকন শাখাও নিচের দিক থেকে কাটলে অকতির্ত অংশের ছাল বা বাকল উঠে আসে না। কাটার সময় সুস্থ-সবল কুঁড়ি বা পবর্সন্ধির ঠিক উপরেই শাখা কাটা উচিত। তবে গাছের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের জন্য শাখার কুঁড়ি বা পবর্সন্ধির নিচেই কাটতে হয়।
ফল গাছ ছাঁইয়ের জন্য নিদির্ষ্ট সময় ও মৌসুমের প্রতি অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হয়। কারণ অসময়ে ছাঁটাই করলে সুফল পাওয়ার বদলে গাছে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত ফলন নাও পাওয়া যেতে পারে। বষার্র শেষে এবং শীতের আগে ফল গাছে ছাঁটাই করা উচিত। তবে ফল সংগ্রহের পরই ছাঁটাই করা সবচেয়ে ভালো।
গাছে ফুল আসার আগে আগে বা ফল ধরা অবস্থায় শাখা-প্রশাখা ছাঁটাই করা ঠিক নয়। তবে নিদির্ষ্টসংখ্যক ফলধারণ নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে অতিরিক্ত ফুল ও ফল ছাঁটাই করা যেতে পারে। এ ছাড়া খরা, দীর্ঘ শুকনো মৌসুম বা শীতের সময় কখনোই ছাঁটাই করা উচিত নয়। বষার্র সময় বিশেষ করে বৃষ্টির দিনে ছাঁটাই না করাই ভালো।
আমাদের দেশে বিভিন্ন মৌসুমে বিভিন্ন ফল পাওয়া যায়। এসব ফল গাছ থেকে সংগ্রহ করার পর অথবা শীতের আগেই অথবা যদি প্রয়োজন দেখা দেয়, তাহলে অঙ্গ ছাঁটাই করা হয়। এতে সুস্থ-সবল ফল গাছ থেকে ভালো ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কয়েকটি জনপ্রিয় ও প্রচলিত ফলগাছের অঙ্গ ছাঁটাই সম্পর্কে সবারই কিছুটা ধারণা থাকা প্রয়োজন।


দেশের সব জায়গায়ই মৌসুমি ফলগাছে অনেক রোগ ও পোকা-মাকড়ের সমস্যা ছাড়াও বেশকিছু সাধারণ সমস্যা দেখা যায়। সেসব সমস্যার মধ্যে প্রধান প্রধান কিছু সমস্যা ও তার প্রতিকারে কী করণীয় সেসব বিষয়ে জানা থাকলে সহজেই প্রতিরোধ করা যায়।
বাংলাদেশে জনপ্রিয় ফলের মধ্যে আম, কাঁঠাল, লিচু, পেয়ারা, কুল, নারিকেল, কলা, পেঁপে, লেবু, আমড়া, বেল, কতবেল, জামরুল, লটকন, জলপাই অন্যতম। এসব ফলে সাধারণত যেসব সমস্যা দেখা যায় সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- অনিয়মিত ফল ধারণ, ফল ঝরেপড়া রোগ এবং পোকা-মাকড়ের উপদ্রব।
বাংলাদেশে প্রায় ৫০ ধরনের দেশি-বিদেশি ফলের চাষ হয়। এসব ফলের অর্ধেকেরও বেশি ফল পাওয়া যায় গরমকালে অর্থাৎ এপ্রিল মাস থেকে শুরু করে আগস্ট মাস পর্যন্ত সময়ের মধ্যে। বর্ষার পর শীতের শুরুতে বা শীতেও বেশকিছু ফল পাওয়া যায়। আবার এ সময়ের মধ্যে গরমকালের ফলগাছগুলোয় মুকুল বা ফুল বা কুঁড়ি আসাও শুরু হয়।
এসব ফলগাছে অনেক রোগ ও পোকা-মাকড়ের সমস্যা ছাড়াও আরো বেশকিছু সমস্যা দেখা যায়। সেসব সমস্যার মধ্যে প্রধান কিছু সমস্যা ও সমস্যার প্রতিকারে কি কি করণীয় সে বিষয়ে জানা থাকলে সহজেই প্রতিরোধ করা যায়।
অনিয়মিত ফল ধারণ সমস্যাটি প্রধানত দেখা যায় আমগাছে। নিয়মমাফিক ছাঁটাই ও সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ এবং প্রয়োজনীয় সেচ প্রদান করে এ সমস্যা অনেকটাই দূর করা যায়। কোথাও কোথাও বিশেষ কিছু হরমোন ব্যবহার করে প্রতি বছর ফল ধরানোর ব্যবস্থা করা হয়। এটি একটি সাময়িক ব্যবস্থা, এতে গাছের বেশ ক্ষতি হয় ও দ্রুত গাছ ফল ধারণক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ না করলে বা মাটিতে বোরনের ঘাটতি হলে বা মাটিতে রসের অভাব হলে বা বাতাসের আর্দ্রতা কম ও তাপমাত্রা বেশি হলে অনেক সময় ফলের মুকুল ও গুটি ঝরা সমস্যা দেখা যায়। আম, লিচু, পেয়ারায় ফল ঝরা সমস্যা বেশি দেখা যায়। বোরনের অভাবে পেঁপে, নারিকেলের গুটিও ঝরে পড়ে। প্রতি লিটার পানিতে ১ থেকে ২ মিলিলিটার হারে বোরিক এসিড বা সলুবর মিশিয়ে স্প্রে করলে সুফল পাওয়া যায়।
নারিকেলের ভেতরে অনেক সময় পানি হয় না বা নারিকেল ফেটে যায়। এটি গাছে পটাশের অভাবজনিত কারণে হয়। নিয়মিত বছরে দুবার সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগের সময় পটাশ কিছু পরিমাণে বেশি প্রয়োগ করলে এ সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। বিভিন্ন ফলে বিভিন্ন রোগের কারণে ফল উৎপাদন কমে যায় বা ফলনে বিপর্যয় দেখা দেয়।

ফলগাছের কচি পাতায় ফোস্কা পড়া রোগ বা এনথ্রাকনোজ রোগ দেখা দিলে কচি পাতা কালো হয়ে কুঁকড়ে যায় এবং গাছের শাখার বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়। আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, কলায় এনথ্রাকনোজ রোগ দেখা যায়। এ রোগে প্রথমে পাতা আক্রান্ত হলেও পরে তা কচি শাখা বা ডালে আগামরা ও পরে ফলে ফলপচা হিসেবে দেখা যায়। মেনকোজেব বা প্রপিকোনাজল জাতীয় ছত্রাকনাশক স্প্রে করে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
আম ও কাঁঠাল গাছের পাতা লাল মরিচা রোগে প্রথমে বাদামি রং ধারণ করে পরে কালো হয়ে ছোট ছোট ছিদ্র হয়ে যায়। কপার যুক্ত ছত্রাকনাশক স্প্রে করে লালমরিচা রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ফলগাছে সাদাগুঁড়া রোগ বেশ সমস্যার সৃষ্টি করে। আম ও কুল গাছে যখন ফুল আসে এবং ফল যখন কচি অবস্থায় থাকে তখন সাদাগুঁড়া রোগে ফলের বেশ ক্ষতি হয়ে থাকে। ৮০% সালফার জাতীয় ছত্রাকনাশক স্প্রে করে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
কাঁঠালের মুচিপচা একটি সাধারণ সমস্যা মনে হলেও অনেক সময় এ কারণে গাছে কাঁঠালের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায়। আসলে পুরুষ মুচিগুলোতে একটা নির্দিষ্ট সময় পরে পরাগরেণু নষ্ট হয়ে পচন শুরু হয়। কাঁঠাল গাছে বয়স অনুযায়ী সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ এবং ফল সংগ্রহের পর পুরোনো মরা, চিকন ও গাছের ভেতরের দিকের ডাল হালকা ছাঁটাই করলে গাছে পুরুষ ও স্ত্রী মুচি মোটামুটি একই সময়ে আসে এবং পরাগায়নের মাধ্যমে ফল ধারণ হয়।
এ ছাড়া নির্দিষ্ট সময়ের পর পচামুচি গাছ ও গাছের নিচ থেকে সংগ্রহ করে পুঁতে ফেলতে হয়। পেয়ারা, লেবু ফল স্ক্যাব ও ক্যাংকার রোগে আক্রান্ত দেখা যায়। স্ক্যাব ও ক্যাংকার রোগে ফলে দাগ পড়ে ও ক্ষত তৈরি হয়। এতে ফলের বাজারমূল্য কমে যায়। কপার যুক্ত ছত্রাকনাশক স্প্রে করে লালমরিচা রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

আম, কাঁঠাল, লিচু, কুল, ডালিম ও পেয়ারাসহ অনেক ফলেই ফল ছিদ্রকারী পোকার উপদ্রব দেখা যায়। ফল যখন ছোট থাকে তখন পোকা ফলের গায়ে ডিম পেড়ে যায় এবং ডিম থেকে কীড়া বের হয়েই কচি ফলের ভেতরে ঢুকে শাঁস খেয়ে নষ্ট করে। গাছের মরা বাকল, ডাল ও গাছের নিচের আবর্জনার মধ্যে এ পোকার কীড়া সুপ্তকাল কাটায়।
এ জন্য ফল সংগ্রহের পর ছাঁটাইয়ের মাধ্যমে গাছের ভেতরে আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করলে এবং গাছের নিচের আবর্জনা ও আগাছা পরিষ্কার করলে এ পোকার বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কচি ফল আক্রান্ত হলে ও ঝরে পড়লে গাছে প্রতি লিটার পানির সঙ্গে ২ মিলিলিটার হারে ফেনিট্রথিয়ন জাতীয় কীটনাশক ১৫ দিন পর পর দুইবার স্প্রে করতে হয়। কাঁঠাল গাছে এ সমস্যা দেখা দিলে ঘন হয়ে থাকা কাঁঠাল ফল ছাঁটাই করে পাতলা করে দিলে এ পোকার আক্রমণ কমে।
আম যখন পুষ্ট হয় তখন ফলে মাছি ও পোকার আক্রমণ দেখা যায়। এ মাছি ও পোকার আক্রমণে প্রায় সংগ্রহযোগ্য আম নষ্ট হয়ে যায়। নষ্ট বা পোকা আক্রান্ত ফল সংগ্রহ করে মাটিতে গর্ত করে পুঁতে ফেলতে হয়। বিষটোপ বা ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে এ পোকা কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। গ্রীষ্মকালে গরম বেশি পড়লে লিচু ও নারিকেল গাছে মাকড়ের সমস্যা দেখা যায়।
লিচুর পাতা বাদামি রংয়ের হয়ে কুঁকড়ে যায়। পাতার নিচের দিকে মখমলের মতো হয়। ৮০% সালফার জাতীয় ছত্রাকনাশক স্প্রে করলে মাকড় নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কলার বিটল পোকা থেকে ফলকে রক্ষা করতে কাঁদি বের হওয়ার পর পরই ফলের কচি অবস্থায় সাদা বা নীল রংয়ের পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হয়।
পেয়ারা গাছের পাতার নিচে সাদামাছি পোকা জালের মতো আস্তরণ তৈরি করে পাতা থেকে রস চুষে খায়। এতে পাতা বিবর্ণ হয়ে ঝরে পড়ে ও গাছ দুর্বল হয়। আক্রান্ত গাছে ফুল ও ফল কম হয়। প্রাথমিক অবস্থায় পাতা ছিঁড়ে পায়ের তলায় পিষে এ পোকা মেরে ফেলা যায়। আক্রমণ বেশি হলে সামান্য কেরোসিন মিশ্রিত পানি পাতার নিচের দিকে খুব জোরে স্প্রে করে এ পোকা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এ পোকা আলোক ফাঁদ স্থাপন করেও মেরে ফেলা যায়।

ফল গাছে প্রচুর পরিমাণে ফুল-ফল উৎপাদনক্ষম শাখা-প্রশাখার সংখ্যা বাড়ানো এবং ফলের গুণগতমান বৃদ্ধি করতে ছাঁটাইয়ের বিকল্প নেই। আমাদের দেশের শহর-নগর-গ্রামে যেদিকেই তাকানো যায় ফলের গাছ চোখে পড়বেই। এসব গাছের অধিকাংশই প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা। খুব কমসংখ্যক ফলগাছ অঙ্গ ছাঁটাইয়ের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে বৃদ্ধির সুযোগ পায়। ফলগাছ রোপণই আসল কথা নয়।
রোপণ থেকে শুরু করে ফল ধারণ পযর্ন্ত ফল গাছের বিভিন্ন অঙ্গ ছাঁটাই ফল গাছ ব্যবস্থাপনার একটি অন্যতম কাজ। মূলত দুটি উদ্দেশ্যে ফল গাছের অঙ্গ ছাঁটাই করা হয়। প্রথমত, অফলন্ত ফলগাছকে একটি নিদির্ষ্ট আকার আকৃতি দেয়া, দ্বিতীয়ত, অফলন্ত ও ফলন্ত ফলগাছের অপ্রয়োজনীয় দুবর্ল, চিকন, নরম, ভাঙ্গা ও মরা ডাল-পালা এবং রোগ ও পোকা আক্রান্ত ডালপালা ছাঁটাই করে গাছের ভেতরের দিকে আলো-বাতাস চলাচল স্বাভাবিক রাখা। এ দুটি উদ্দেশ্য ছাড়াও আরো কিছু কারণে ফল গাছ ছাঁটাই করতে হয়। যেমন-

১. ফলগাছটি যদি মাতৃর্গাছ হয়, তাহলে ভবিষ্যতে ফলগাছ থেকে বেশি পরিমাণে সায়ন উৎপাদন করা।
২. ফল গাছে প্রচুর পরিমাণে ফুল-ফল উৎপাদনক্ষম শাখা-প্রশাখার সংখ্যা বাড়ানো এবং ফলের গুণগতমান বৃদ্ধি করা।
৩. ঝড় বা প্রবল বাতাসে যেন ফলগাছ সহজে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে জন্য গাছকে সুগঠিত ও মজবুত অবকাঠামো প্রদান করা।
৪. ফল গাছের বিভিন্ন পরিচর্যার যেমন- বালাইনাশক স্প্রে করা, সায়ন সংগ্রহ করা ইত্যাদি কাজ সহজ করা।
৫. যেসব ফল গাছে ফল ধারণ সমস্যা আছে, সেসব গাছের ফল ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে নতুন শাখা-প্রশাখা গজানোর ব্যবস্থা করা।
৬. এক বছর পর পর যেসব গাছে ফল ধরে সেসব গাছের একান্তর ক্রমিক ফলনের প্রভাব কমানো বা ফল ধরার ব্যবস্থা করা।
৭. যেসব শাখা-প্রশাখা অন্য শাখা-প্রশাখার ভেতরে ঢুকে যায় বা নিন্মমুখী হয় সেগুলো ছাঁটাই করে গাছকে ঝোপালো অবস্থা থেকে মুক্ত রাখা।

ফল গাছের বিভিন্ন অঙ্গ যেমন,- ডাল, পাতা, ছাল বা বাকল, ফুল, ফল ও শিকড় বিভিন্ন কৌশলে ভিন্ন ভিন্ন ফল গাছের বিভিন্ন বয়সে জাত ও বৃদ্ধির স্বভাব অনুযায়ী ছাঁটাই করতে হয়। ফল ধরার আগেই ফল গাছের কাঠামোগত আকৃতি গড়ে তোলার উদ্দেশ্য হচ্ছে গাছের শীর্ষ ছাঁটাই করে গাছকে খাটো রাখা।
এতে গাছে সার প্রয়োগ, সেচ প্রদান, স্প্রে করা এবং সহজে ফল সংগ্রহসহ অন্যান্য পরিচর্যা করা যায়। এ ছাড়া গাছে যদি ৪ থেকে ৭টি শাখা-প্রশাখা থাকে তাহলে গাছ যান্ত্রিকভাবেও দৃঢ় ও খোলা-মেলা হয়।
গাছের ভেতরের দিকে এমন কিছু শাখা-প্রশাখা গজায় যেগুলো থেকে কোন ফলন পাওয়া যায় না, সেগুলোও ছাঁটাই করা উচিত। কোন কোন ফল গাছের গোড়ার দিকে কিছু কিছু কুশি বা নতুন শাখা বের হতে দেখা যায়, সেগুলো নিয়মিতভাবে ছাঁটাই করতে হয়। যেমন- ডালিম, পেয়ারা, লেবু ও কাঁঠাল গাছের গোড়ায় দুই-তিন সপ্তাহ পর পর বের হওয়া কুশিগুলো ছাঁটাই করতে হয়।
ছাঁটাই করার সময় লক্ষ্য রাখতে হয়, গাছের সতেজতা কেমন, বয়স কত এবং জাত ও বৃদ্ধির স্বভাব কেমন। কম বয়সী ফল গাছে যথাসম্ভব কম ছাঁটাই বা হালকা ছাঁটাই করতে হয়। তবে কম বা বেশি যে বয়সেরই হোক না কেন গাছে মরা বা ডাঙ্গা এবং রোগ-পোকা আক্রান্ত শাখা-প্রশাখা ছাঁটাইয়ের সময় কিছুটা সুস্থ অংশসহ ছাঁটাই করতে হয়। মূল কাণ্ড এবং মোটা শাখা কখনোই ছাঁটাই করা ঠিক নয়।
বড় মোটা শাখা কাটার সময় নিদির্ষ্ট জায়গা থেকে প্রায় ১ ফুট বা ৩০ সেন্টিমিটার দূরে নিচের দিক থেকে কাটা শুরু করতে হয়। কাটার গভীরতা নিভর্র করে কাটা শাখার অংশ নিচের দিকে বেঁকে আসা পযর্ন্ত। এর পর শাখার উপরের দিকে প্রথম কাটার স্থান থেকে ১ ইঞ্চি বা আড়াই সেন্টিমিটার দূরে দ্বিতীয় কাটা দিতে হয়। এতে কাটা শাখা বাকল বা ছালের সাথে ঝুলে থাকে না।

কাটা জায়গায় আলকাতরা বা ছত্রাকনাশক লাগাতে হয়। চিকন শাখাও নিচের দিক থেকে কাটলে অকতির্ত অংশের ছাল বা বাকল উঠে আসে না। কাটার সময় সুস্থ-সবল কুঁড়ি বা পবর্সন্ধির ঠিক উপরেই শাখা কাটা উচিত। তবে গাছের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের জন্য শাখার কুঁড়ি বা পবর্সন্ধির নিচেই কাটতে হয়।
ফল গাছ ছাঁইয়ের জন্য নিদির্ষ্ট সময় ও মৌসুমের প্রতি অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হয়। কারণ অসময়ে ছাঁটাই করলে সুফল পাওয়ার বদলে গাছে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত ফলন নাও পাওয়া যেতে পারে। বষার্র শেষে এবং শীতের আগে ফল গাছে ছাঁটাই করা উচিত। তবে ফল সংগ্রহের পরই ছাঁটাই করা সবচেয়ে ভালো।
গাছে ফুল আসার আগে আগে বা ফল ধরা অবস্থায় শাখা-প্রশাখা ছাঁটাই করা ঠিক নয়। তবে নিদির্ষ্টসংখ্যক ফলধারণ নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে অতিরিক্ত ফুল ও ফল ছাঁটাই করা যেতে পারে। এ ছাড়া খরা, দীর্ঘ শুকনো মৌসুম বা শীতের সময় কখনোই ছাঁটাই করা উচিত নয়। বষার্র সময় বিশেষ করে বৃষ্টির দিনে ছাঁটাই না করাই ভালো।
আমাদের দেশে বিভিন্ন মৌসুমে বিভিন্ন ফল পাওয়া যায়। এসব ফল গাছ থেকে সংগ্রহ করার পর অথবা শীতের আগেই অথবা যদি প্রয়োজন দেখা দেয়, তাহলে অঙ্গ ছাঁটাই করা হয়। এতে সুস্থ-সবল ফল গাছ থেকে ভালো ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কয়েকটি জনপ্রিয় ও প্রচলিত ফলগাছের অঙ্গ ছাঁটাই সম্পর্কে সবারই কিছুটা ধারণা থাকা প্রয়োজন।

পটুয়াখালীতে হঠাৎ করেই নারিকেল গাছসহ বিভিন্ন গাছের সবুজ পাতা সাদা হয়ে যাচ্ছে। এতে কৃষকদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। তবে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
পটুয়াখালী সদর উপজেলার তেলিখালী এলাকার বাসিন্দা আবদুল মজিদ বলেন, গত দুই মাস যাবৎ হঠাৎ করেই নারিকেল গাছসহ বিভিন্ন ফল গাছের সবুজ পাতা প্রথমে সাদা এরপর একেবারে কালো হয়ে মারা যাচ্ছে।
গলাচিপার কলাগাছিয়া এলাকার বাসিন্দা নিমাই চক্রবর্তী বলেন, এ জীবনে এখন পর্যন্ত পাতা সাদা হতে দেখিনি। পাতায় পোকা হয়েছে। কিন্তু কৃষি বিভাগের কোনো কর্মকর্তা আমাদের কোনো পরামর্শ দেয়নি। অনেক গাছের পাতা মরে যাচ্ছে। একটা অজানা আতঙ্ক কাজ করছে।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মার্জিন আরা মুক্তা বলেন, সম্প্রতি নারিকেল গাছসহ বিভিন্ন ফল গাছে কালো রঙের আবরণ তৈরি হয়েছে। এটি মূলত কোনো রোগ নয়, এটি একটি পোকার আক্রমণ।
ক্ষতিকারক পোকাটির নাম রুগোজ স্পাইরালিং হোয়াইট ফ্লাই। এটি আকৃতিতে ছোট হয়। এরা মূলত পাতার রস শুষে খায়। পরে গাছের পাতার নিচে সাদা মোমের আস্তরণ পড়ে। সেখানেই এরা ডিম পাড়ে ও সেখান থেকে বের হয়।

যেহেতু এরা রস শুষে খায় ফলে পাতা কালো রঙের হয়ে যায়। ফলে পাতার সালোকসংশ্লেষণ ব্যাহত হওয়ার কারণে পাতা এবং গাছটি ধীরে ধীরে শুকিয়ে মারা যেতে পারে।
পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক হৃদয়েশ্বর দত্ত বলেন, কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। এর আক্রমণ দেখা দেয়া মাত্রই হাই প্রেশারে সাবান পানি স্প্রে করতে হবে। এর পরবর্তীতে কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ছত্রাকনাশক ও বালাইনাশক ব্যবহারের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।

নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে নানা বাধ্যবাধকতার আওতায় আসছেন খাদ্যপণ্যের ব্যবসায়ীরা। এজন্য ‘নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩’ অনুযায়ী ‘নিরাপদ খাদ্য (খাদ্য ব্যবসায়ীর বাধ্যবাধকতা) প্রবিধানমালা, ২০২০’ প্রণয়ন করেছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।
নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে ব্যবসায়ীরা খাদ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে যেসব কাজ করতে বাধ্য থাকবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে এই প্রবিধানমালায়।
এতে বলা হয়েছে, খাদ্য ব্যবসায়ীদের তাদের পণ্যে ব্যবহার করা রাসায়নিকের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য-প্রমাণক সংরক্ষণ করতে হবে। খাদ্য উৎপাদনের কাঁচামালের বিষয়েও তথ্য-প্রমাণক সংরক্ষণ করতে হবে তাদের। খাদ্য ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনতে কর্তৃপক্ষকে জানাতে বাধ্য থাকবেন ব্যবসায়ীরা। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনার জন্য কর্মীদের প্রশিক্ষণও দিতে হবে। প্রবিধানের শর্ত পালন করতে ব্যর্থ হলে খাদ্য ব্যবসায়ীকে পড়তে হবে শাস্তির মুখে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইউম সরকার জাগো নিউজকে বলেন, ‘২০১৩ সালের নিরাপদ খাদ্য আইনে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে ব্যবসায়ীরা কী করবেন তা বলা ছিল। তবে সেটা ছিল সংক্ষিপ্ত আকারে। এখন আমরা বিস্তারিত প্রক্রিয়া বলে দিয়েছি প্রবিধানমালায়। এগুলো মানতে তারা বাধ্য থাকবেন। না মানলে আমরা আমাদের ফোর্স অ্যাপ্লাই করব। মূল আইনে শাস্তির বিষয়টি রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রবিধানমালার কারণে আমাদের তদারকি কিংবা এনফোর্সমেন্টের কাজ আরও সহজ হবে। কারণ আগে ব্যবসায়ীরা বলতেন প্রসেস জানি না, কীভাবে করব। এখন আর তারা সেটা বলতে পারবেন না।’
আমদানি ও বিক্রয় সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডসহ খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, প্রস্তুতকরণ, মোড়কজাতকরণ, পরিবহন, গুদামজাতকরণ, বিতরণ, প্রদর্শন ও বিপণনের সব পর্যায়ের জন্য এই প্রবিধানমালা প্রযোজ্য হবে।

খাদ্যে-ভেজালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় রাস্তায় নেমেছে দেশের সচেতন সমাজ
প্রবিধানমালায় বলা হয়েছে, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে খাদ্য ব্যবসায়ীদের খাদ্য প্রস্তুত বা প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে অনুমোদিত রাসায়নিক ব্যবহার করতে হবে। প্রিজারভেটিভ বা রঞ্জক বা ঘ্রাণ সৃষ্টিকারী রাসায়নিক বা ব্যবহৃত অন্য যে কোনো রাসায়নিকের নাম, বৈজ্ঞানিক সংকেত, রাসায়নিক কোড, পরিমাণ, গ্রেড, বিশুদ্ধতা, উৎপাদনকারী ও রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের নাম এবং ঠিকানা, উৎস স্থান বা দেশ, উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ, খাদ্যে ব্যবহারের উপযুক্ততা ইত্যাদি তথ্য নথিভুক্ত করে প্রত্যেক ব্যাচভিত্তিক তথ্য ও প্রমাণক সংরক্ষণ করবেন খাদ্য ব্যবসায়ীরা।
উৎপাদন বা আমদানি করা খাদ্যে অনুমোদিত রাসায়নিক বা ভারী ধাতু বা তেজস্ক্রিয় পদার্থ বা রঞ্জক বা সুগন্ধি বা ক্ষতিকর অণুজীব ইত্যাদির উপস্থিতি বা মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি রয়েছে কি-না তা শনাক্তে স্বীকৃত পরীক্ষাগারে খাদ্যের নমুনা বিশ্লেষণ করে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন সংরক্ষণ করবেন খাদ্য ব্যবসায়ীরা। এছাড়া খাদ্যের মান নির্ধারিত পর্যায়ে রয়েছে কি-না, ব্যবসায়ীরা তা স্বীকৃত খাদ্য পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করাবেন এবং সন্তোষজনক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে খাদ্য বা খাদ্যপণ্য বাজারজাত করবেন।
ব্যবসায়ী খাদ্যের মেয়াদ নির্ধারণের ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করবেন এবং যার ভিত্তিতে খাদ্যের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে, সেই বিশ্লেষণ প্রতিবেদন বা তথ্যাদি ও প্রমাণক সংরক্ষণ করবেন। তবে আমদানি করা খাদ্যপণ্যের মেয়াদ মূল প্রস্তুতকারী নির্ধারণ করবেন।
ব্যবসায়ী খাদ্য ব্যবসা পরিচালনা সংশ্লিষ্ট প্রমাণক ও দলিলাদি হালনাগাদ করবেন এবং কর্তৃপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী পেশ করতে হবে বলে প্রবিধানমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
খাদ্য ব্যবসায়ী কাঁচামাল চিহ্নিতকরণ, প্রক্রিয়াকরণ, উৎপাদন, আমদানি, সরবরাহ ও বিক্রয় কার্যক্রম যাচাইয়ের প্রয়োজনীয় প্রমাণক সংরক্ষণ করবেন এবং অন্য কোনো ব্যবসায়ীর কাছ থেকে খাদ্য বা খাদ্য উপকরণ (কাঁচামাল), মৎস্যখাদ্য, পশুখাদ্য বা খাদ্য বা মৎস্য ও পশুখাদ্যের সংযোজক দ্রব্য ইত্যাদি সরবরাহ বা গ্রহণ করলে তা চিহ্নিত করার জন্য প্রমাণক সংরক্ষণ করবেন।
খাদ্য ব্যবসায়ীকে অন্য কোনো ব্যবসায়ীর কাছ থেকে খাদ্য বা খাদ্যপণ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে খাদ্য ব্যবসায়ীর নাম ও ঠিকানা; খাদ্যের যথাযথ বিবরণ; খাদ্যের পরিমাণ, লট, ব্যাচ, চালান (যা প্রযোজ্য) শনাক্ত করার স্মারক ইত্যাদি; প্রত্যেকটি লেনদেন বা সরবরাহের তারিখ; সংশ্লিষ্ট অন্যান্য তথ্য প্রমাণক হিসেবে সংরক্ষণ করতে হবে।
খাদ্য ব্যবসায়ীর অন্য কোনো ব্যবসায়ীকে খাদ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে খাদ্য ব্যবসায়ীর নাম ও ঠিকানা; খাদ্যের যথাযথ বিবরণ; খাদ্যের পরিমাণ; লট, ব্যাচ, চালান (যা প্রযোজ্য) শনাক্ত করার স্মারক ইত্যাদি; প্রত্যেকটি লেনদেন বা সরবরাহের তারিখ; সংশ্লিষ্ট অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে।
খাদ্য প্রস্তুত বা প্রক্রিয়াকরণের পদ্ধতি পরিবর্তন বা কারিগরি বিচ্যুতি সংশোধন, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের নিয়ন্ত্রণ ধাপ সম্পর্কিত তথ্যাদি এবং খাদ্যদ্রব্যের বিশেষ সংরক্ষণ, সরবরাহ বা বিতরণ ও ব্যবহারের প্রমাণক সংরক্ষণ করতে হবে।
খাদ্য ব্যবসায়ী এসব প্রমাণক বা তথ্য খাদ্যপণ্যের মেয়াদ উত্তীর্ণের পর কমপক্ষে তিন মাস পর্যন্ত এবং খাদ্য ব্যবসার অন্যান্য তথ্য বা প্রমাণক পাঁচ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করবেন।
প্রবিধানমালায় আরও বলা হয়েছে, খাদ্য ব্যবসায়ীকে নিশ্চিত করতে হবে যে, খাদ্য ব্যবসায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং আইন ও বিধি-বিধান ও নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে থাকেন। খাদ্য ব্যবসায়ীকে তার কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। একই সঙ্গে প্রশিক্ষণের হালনাগাদ তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে।
খাদ্য ব্যবসায়ীকে নিশ্চিত করতে হবে, খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুত ও স্থানান্তর বা পরিবহনের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের যথাযথ প্রশিক্ষণ রয়েছে এবং যে কাজে তারা নিয়োজিত সেই কাজে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণ সম্পর্কিত জ্ঞান ও দক্ষতার প্রতিফলন ঘটিয়ে থাকেন।

ভেজাল ও মানহীন পণ্য বিক্রির কারণে সম্প্রতি রাজধানীর চকবাজারের সামি স্টোরকে জরিমানা করা হয়
খাদ্য ব্যবসায়ীকে খাদ্যের বিশেষ সংরক্ষণ ব্যবস্থা (খাদ্য হিমায়িত, শীতলীকৃত, বায়ুনিরোধকৃত, নিয়ন্ত্রিত বা পরিবর্তিত গ্যাসীয় ইত্যাদি কারিগরি বা প্রযুক্তিগত পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে সংরক্ষণ) নিশ্চিত করতে হবে এবং এই বিশেষ সংরক্ষিত খাদ্য সরবরাহ বা বিতরণ ও বিক্রির ক্ষেত্রে একই প্রকারের বা সমজাতীয় কারিগরি বা প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা বজায় রাখতে হবে।
যদি কোনো খাদ্য ব্যবসায়ী তার খাদ্য ব্যবস্থাপনায় বা খাদ্য ব্যবসায়ে পদ্ধতিগত বা প্রকৃতিগত বা প্রযুক্তিগত কোনো সংস্কার বা পরিবর্তন সাধন করেন বা করার উদ্যোগ নেন, তাহলে এই পরিবর্তনের বিষয়টি পরিদর্শনের জন্য কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনকালে পরিদর্শক বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে, খাদ্য ব্যবসায়ী বা তার কোনো প্রতিনিধি, খাদ্যকর্মী বা কর্মচারী এই প্রবিধানমালার প্রযোজ্য শর্ত পালন করছেন না, তাহলে ওই খাদ্য ব্যবসায়ীকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শর্ত পালনের জন্য নোটিশ দেবেন।
এরপরও শর্ত পালনে ব্যর্থ হলে খাদ্য ব্যবসায়ীকে সতর্ক করে নোটিশ দেবেন। এরপরও শর্ত পালনে ব্যর্থ হলে তা নিরাপদ খাদ্যবিরোধী কাজ বলে গণ্য হবে। কোনো খাদ্য ব্যবসায়ী নোটিশে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে করণীয় পদক্ষেপ বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে পরিদর্শক বা কর্তৃপক্ষ তার খাদ্য ব্যবসা পরিচালনার লাইসেন্স বা নিবন্ধন সনদ বাতিল করার জন্য সংশ্লিষ্ট নিবন্ধক বা লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করবেন। একই সঙ্গে বিষয়টি তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানাবেন বলে প্রবিধানমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ভোক্তাকে জানানোর উদ্দেশ্যে পরিদর্শকের দেয়া সব নোটিশ খাদ্যপণ্যের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে প্রদর্শন করতে হবে।

যে কারণে ফল গাছের অঙ্গ ছাঁটাই করবেন

ফুলচাষে আলো দেখাচ্ছে ‘ড্রিপ ইরিগেশন পদ্ধতি’

চড়ুইভাতির রান্নাবাটি

ঝাল–লবণ বেশি হয়ে গেলে

ফুলকপির মজাদার রেসিপি

এক বাড়িতে ৪৩ মৌচাক, মিলছে লাখ টাকার মধু

স্বাদে-ঘ্রাণে অনন্য কাপাসিয়ার গুড়

হালতি বিলে পানিতে তলিয়ে আছে ২৫০ হেক্টর জমি

ধানের দাম কমলে চালের দাম বাড়ে?

অল্প সময়ে বড় হচ্ছে মাছ, লাভও বেশি

বিস্ময় কিশোর রাব্বির সমুদ্রজয়ের গল্প

‘কালো সোনা’ চাষে ব্যস্ত ফরিদপুরের চাষিরা, বাম্পার ফলনের আশা

পাটকাঠির ছাইয়ের কেজি ৬০ টাকা, আশা দেখছেন কৃষকরা

৬ বছর ধরে পাখির বাসা তৈরি করছেন তারা

আপনার সন্তানের ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আনার ৭টি উপায়

গ্রাফটিং পদ্ধতিতে বছরব্যাপী টমেটো চাষ

মাওয়ায় ৩৪ হাজার টাকায় বিক্রি হলো ‘বিরল’ বাঘাইড়

বারোমাসি তরমুজ

নীচু জমিতে উৎপাদন হচ্ছে শত শত টন মাছ

রাজশাহীতে ডা. এরিনা ও ডা. এ বি এম মনসুর রহমান দম্পতির ছাদকৃষি

বিকলাঙ্গ হয়েও পান না প্রতিবন্ধী ভাতা, থাকছেন ভাঙা ঘরে

ছাগলের দৌড় প্রতিযোগিতা, প্রথম পুরস্কার মোবাইল

হাট-বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে বন্যপাখি

কার্পজাতীয় মাছ চাষের নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন

৪৮ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের টাইম স্কেলের মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ

অনলাইনে নারীদের কৃষিপণ্য

শ্বাসযন্ত্রের সবচেয়ে মারাত্মক রোগ ফুসফুস ক্যানসার

গলাব্যথা কেন হয়

পিঠ ও কোমরব্যথার কারণ ও প্রতিকার

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন