বাংলাদেশ
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি: বিবিসি বাংলার জরিপে সপ্তম স্থানে জগদীশ চন্দ্র বসু- ভারতীয় উপমহাদেশে বিজ্ঞান চর্চ্চার জনক
লেখক
বিবিসি বাংলা
দু’হাজার চার সালে বিবিসি বাংলা একটি ‘শ্রোতা জরিপ’-এর আয়োজন করে। বিষয়টি ছিলো – সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি কে? তিরিশ দিনের ওপর চালানো জরিপে শ্রোতাদের ভোটে নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ ২০জনের জীবন নিয়ে বিবিসি বাংলায় বেতার অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয় ২০০৪-এর ২৬শে মার্চ থেকে ১৫ই এপ্রিল পর্যন্ত।
বিবিসি বাংলার সেই জরিপে শ্রোতাদের মনোনীত শীর্ষ কুড়িজন বাঙালির তালিকায় সপ্তম স্থানে আসেন জগদীশ চন্দ্র বসু। আজ তাঁর জীবন-কথা।
বৈজ্ঞানিক জগদীশ চন্দ্র বসুর অবদান মানব সভ্যতার অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। তিনি একাধারে পদার্থবিজ্ঞান এবং উদ্ভিদবিদ্যায় অসামান্য অবদান রেখে নিজের নাম শুধু বাঙালির ইতিহাসে নয়, পৃথিবীর ইতিহাসেও স্বর্ণাক্ষরে লিখে গিয়েছেন।
বিজ্ঞানের একজন অমর প্রতিভা জগদীশ চন্দ্র বসু প্রথম মাইক্রোওয়েভ প্রযুক্তির ওপর সফল গবেষণা করেন যার ফলশ্রুতিতে আবিষ্কৃত হয় রেডিও।
তাঁর উল্লেখযেযাগ্য আবিষ্কারের মধ্যে রয়েছে মাইক্রোওয়েভ রিসিভার ও ট্রান্সমিটারের উন্নয়ন, এবং ক্রেসকোগ্রাফ যন্ত্র যা দিয়ে গাছের বৃদ্ধি নিখুঁতভাবে পরিমাপ করা যায় । উদ্ভিদের জীবনচক্র তিনি প্রমাণ করেছিলেন।
জগদীশ চন্দ্র বসুর জন্ম ১৮৫৮ সালের ৩০শে নভেম্বর ময়মনসিংহে। তাঁর পরিবারের আদি বাসস্থান ছিল ঢাকা থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে বিক্রমপুরের রাঢ়িখালে।
তিনি তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু করেছিলেন ফরিদপুরের একটি স্কুল থেকে। এরপর ১১ বছর বয়সে তিনি কলকাতা চলে যান এবং সেখানে সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ১৮৭৫ সালে এন্ট্রাস পাশ করেন।
বিজ্ঞানের স্নাতক হন তিনি ১৮৭৯ সালে এবং এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য চলে যান ইংল্যাণ্ডে। ইংল্যাণ্ডের কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাকৃতিক বিজ্ঞান বিষয়ে বি.এ. পাশ করেন। ১৮৮৪ সালে লণ্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এস.সি. ডিগ্রি লাভ করেন।

ইংল্যাণ্ড থেকে স্বদেশে ফেরার পর তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক হিসাবে যোগ দেন।
বৈদ্যুতিক তরঙ্গের ওপর তাঁর গবেষণার কাজ তিনি শুরু করেন ১৮৯৪ সালে। এর ফলশ্রুতিতে ১৮৯৬ সালে লণ্ডন ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টর অফ সায়েন্স উপাধি পান।
জগদীশ চন্দ্র বসুকে বলা হয় ভারতীয় উপমহাদেশে বিজ্ঞান চর্চ্চার জনক। বাংলাদেশের উদ্ভিদ বিজ্ঞানী দ্বিজেন শর্মা মনে করেন বেতার যন্ত্রের প্রথম উদ্ভাবক হিসাবে তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
“যদিও বেতারের আবিষ্কারক হিসাবে বিশ্বে স্বীকৃতি লাভ করেছিলেন মার্কনি, কারণ জগদীশ বসু এটার আবিষ্কারকে নিজের নামে পেটেন্ট করেননি। এ কারণেই এই আবিষ্কারের জন্য তাঁর দাবি স্বীকৃত হয়নি,” বলেন দ্বিজেন শর্মা।
বেতার কাজ করে বৈদ্যুতিক চুম্বক তরঙ্গের ভিত্তিতে, যে তরঙ্গ নিয়ে জগদীশ বসু গবেষণা করেছিলেন। যদিও তাঁর আগে এবং তাঁর সময়ে এই তরঙ্গ নিয়ে গবেষণার কাজ করছিলেন মার্কনিসহ বিভিন্ন দেশে একাধিক বিজ্ঞানী। কিন্তু কলকাতার বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠান বসু বিজ্ঞান মন্দিরের গবেষক ড. দিবাকর সেন বিবিসি বাংলাকে বলেন জগদীশ বসুই প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন অতি ক্ষুদ্র তরঙ্গ বা মাইক্রোওয়েভ।

“মাইক্রোওয়েভ আবিষ্কারের ব্যাপারটা ছিল খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। আজকের দিনে মহাকাশ বিজ্ঞানে, চিকিৎসা বিজ্ঞানে, টেলিভিশন সম্প্রচারে এবং বিভিন্ন যন্ত্রপাতিতে মাইক্রোওয়েভ কাজে লাগে। কম্যুনিকেশনের (যোগাযোগ) ক্ষেত্রে আরও বিশেষ করে এই তরঙ্গ কাজে লাগে।”
“দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় যখন সাবমেরিন এলো, রাডার এলো, তখন মানুষ বুঝতে পারল এই মাইক্রোওয়েভের গুরুত্ব কতখানি। তিনি যখন এই আবিষ্কার করেছিলেন, তখন তার কোন ব্যবহারিক প্রয়োগ ছিল না। মার্কনি এবং তদানীন্তন বিজ্ঞানীরা যোগাযোগের জন্য যে বৈদ্যুতিক তরঙ্গ ব্যবহার করেছিলেন তা তারা করেছিলেন লঙ্গার ওয়েভ (দীর্ঘ তরঙ্গ) ব্যবহার করে- মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করে নয়।”
অর্থাৎ জগদীশ বসুর আবিষ্কার ছিল অতি ক্ষুদ্র বেতার তরঙ্গ, যার থেকে তৈরি হয়েছে আজকের মাইক্রোওয়েভ, যা পরবর্তীতে ‘সলিড স্টেট ফিজিক্স’-এর বিকাশে সাহায্য করেছিল। পরে তিনি পদার্থ বিজ্ঞানের আরও গুরুত্বপূর্ণ নানা আবিষ্কার করেন যেমন ‘ডিটেক্টর’, ‘রিসিভার’ ইত্যাদি।
“চৌকো মুখ ফানেল আকৃতির একটি হর্ন অ্যান্টেনা তিনি আবিষ্কার করেছিলেন, যা আজ বিশ্বে যুদ্ধকালীন যোগাযোগ, বা রাডার যোগাযোগের জন্য অপরিহার্য। এছাড়াও অনেক ধরনের রিসিভার উনি তৈরি করেছিলেন যা আজও বহুল ব্যবহৃত,” বলেছেন ড. দিবাকর সেন।
আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানের অত্যন্ত দুরূহ বিষয়ে তাঁর আবিষ্কার নিয়ে ইংল্যাণ্ডে বক্তৃতা দিয়ে বিশ্ব-খ্যাত বহু বিজ্ঞানীকে চমকে দিয়েছিলেন জগদীশ চন্দ্র বসু। লণ্ডনের একটি দৈনিক পত্রিকা ডেইলি এক্সপ্রেস তাঁকে গ্যালিলিও-নিউটনের সমকক্ষ বিজ্ঞানীর স্বীকৃতি দিয়েছিল।

কিন্তু পদার্থ বিজ্ঞানে এমন অসাধারণ অবদান সত্ত্বেও জগদীশ চন্দ্র বসু সারা বিশ্বে খ্যাতিলাভ করেছিলেন উদ্ভিদবিজ্ঞানী হিসাবে।
ড. দিবাকর সেন বলেন জগদীশ বসু আদৌ উদ্ভিদবিজ্ঞানী ছিলেন না। কিন্তু ওয়্যারলেস রিসিভিং ইন্সট্রুমেন্ট (তার-বিহীন গ্রাহক যন্ত্র) নিয়ে কাজ করতে করতে তিনি একটা অদ্ভুত জিনিস দেখলেন।
“তিনি দেখলেন একটা টিনের তারকে মোচড় দিলে তার ভেতরে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম মাত্রায় যেমন বিদ্যুত তরঙ্গ তৈরি হয়, তেমনই আঘাত করলে গাছের ভেতরেও একই ধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়, একই ঘটনা ঘটে প্রাণী দেহেও। উনি তখন প্রশ্ন তুললেন তাহলে জীবনের সংজ্ঞা কী হবে? এবং এখান থেকেই জন্ম নিল আধুনিক জৈব-পদার্থ বিজ্ঞান।”
জনপ্রিয় ধারণা হল তিনি সবার আগে আবিষ্কার করেছিলেন গাছপালার প্রাণ আছে। উদ্ভিদবিজ্ঞানী দ্বিজেন শর্মা বলেছেন অতি প্রাচীন কাল থেকে ভারতবর্ষের মানুষ বিশ্বাস করতো গাছ একটা জীবন্ত স্বত্ত্বা। একই বিশ্বাস ছিল অ্যারিস্টটলেরও। তাহলে জগদীশ বসুর আবিষ্কারে নতুনত্ব কোথায় ছিল?
“গাছের যে প্রাণ আছে তার কিছু স্থূল লক্ষ্মণ সম্পর্কে মানুষ জানত, যেমন গাছ জন্ম নেয়, বড় হয়, একদিন মরেও যায়। কিন্তু বাইরের কোন উদ্দীপক বস্তু ব্যবহার করলে বা গাছকে আঘাত করলে গাছ কীভাবে সাড়া দেয়, সেটা জগদীশ বসু যন্ত্রের সাহায্যে প্রমাণ করে দেখান, যা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা আবিষ্কার,” বলেন ড. শর্মা।

গাছ যে বাইরের আঘাতে বা তাকে উত্তেজিত করলে তাতে সাড়া দেয় সেটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণ করার জন্য জগদীশ বসু সূক্ষ্ম সব যন্ত্র্র সাধারণ কারিগর দিয়ে তৈরি করেছিলেন যেগুলি কলকাতার বসু বিজ্ঞান মন্দিরে সংরক্ষিত রয়েছে।
এমন একটি যন্ত্র তৈরি করেছিলেন তিনি যা দিয়ে দেখিয়েছিলেন একটা গাছ এক সেকেণ্ডে কতটা বাড়ে। তাঁর আবিষ্কৃত ‘ক্রেসকোগ্রাফ’ যন্ত্র উদ্ভিদদেহের সামান্য সাড়াকে লক্ষগুণ বৃদ্ধি করে প্রদর্শনের ক্ষমতা রাখত।
তাঁর গবেষণা জড় ও জীব জগত সম্পর্কে মানুষের ধারণা বদলে দিয়েছিল।
“তিনি বলেছিলেন জড় এবং জীব জগতের মধ্যে পার্থক্য খুবই সামান্য। এতই সামান্য যেখানে জড় পদার্থ জীবের মত আবার জীব জড় পদার্থের মত ব্যবহার করে,” বলেছেন ড. দ্বিজেন শর্মা।
জগদীশ বসু ১৮৯৯ থেকে ১৯০৭ সাল পর্যন্ত জীব ও জড় বস্তুর প্রতিক্রিয়ার ওপর গবেষণার কাজ করেছিলেন।
গবেষক ড. দিবাকর সেন বলেন জগদীশ চন্দ্র বসু ভারতে বিজ্ঞান চর্চ্চা ও গবেষণার প্রসার ঘটাতে কলকাতায় ১৯১৭ সালে যে বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেটি সম্ভবত ভারতের অন্যতম সবচেয়ে প্রাচীন বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র।
এই কেন্দ্র ভারতের বহু নামকরা বিজ্ঞানীকে গবেষণার কাজে অনুপ্রাণিত করেছিল যেমন সিভি রামান, মেঘনাদ সাহা, সত্যেন্দ্রনাথ বোস, প্রফুল্ল চন্দ্র রায় প্রমুখ।

ড. দ্বিজেন শর্মা বলেন জগদীশ চন্দ্র বসু সবার আগে বিজ্ঞান বিষয়ে বাংলায় লিখেছিলেন, যা এখনও বাংলা ভাষায় লেখা আদর্শ বিজ্ঞান বিষয়ক বই হিসাবে বিবেচিত। তার মতে তাঁর ‘অব্যক্ত’ গ্রন্থের লেখাগুলো “বিজ্ঞান এবং সাহিত্যের একটি অপূর্ব সংশ্লেষ”।
“আমার ধারণায় বিজ্ঞান বিষয়ে বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও জনপ্রিয় গ্রন্থ তাঁর এই বই।”
বিজ্ঞানও যে একটা সংস্কৃতি সেটা প্রমাণ করে গেছেন জগদীশ চন্দ্র বসু, বলেছেন ড. দ্বিজেন শর্মা, “তিনি আমাদের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী। বিজ্ঞানে তাঁর অবদান সেই অর্থে একটা বিরাট মূল্যবান সাংস্কৃতিক অবদান।”
জগদীশ চন্দ্র বসু মারা যান কলকাতায় ১৯৩৭ সালের ২৩শে নভেম্বর।
মুন্সীগঞ্জের রাঢ়িখালে তাঁর পৈত্রিক বাড়িটি ১৯৯৪ সালে একটি স্কুল ও কলেজে পরিণত করা হয়, যার বর্তমান নাম সার জগদীশ চন্দ্র বসু ইন্সটিটিউশন ও কলেজ। কলেজ ভবনটির ঠিক মাঝখানে অবস্থিত একতলা বাড়িটি হচ্ছে জগদীশ চন্দ্র বসুর আদি বাড়ি। বাড়িটিতে জগদীশ চন্দ্র বসুর স্মৃতি রক্ষার্থে তাঁর ছবি, তাঁর লেখা চিঠি ইত্যাদি দিয়ে একটি সংরক্ষণাগার তৈরি করা হয়েছে।
আপনার জন্য নির্বাচিত সংবাদ
-
নিরাপদ খাদ্য: দেশি মাছ কাকিলাকে যেভাবে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা
-
জিংক সমৃদ্ধ পুষ্টি ধানের চাষে কৃষকদের জামানতবিহীন ঋণ দেবে কৃষি ব্যাংক, কী লাভ এই চাল উৎপাদন বাড়লে?
-
নিপাহ্ ভাইরাসঃ খেজুরের রস খাওয়ার আগে সতর্ক থাকতে যা করণীয়
-
বাংলাদেশে বাড়ছে ইলিশ, মিয়ানমারে কেন কমছে – দা এগ্রো নিউজ
-
ইলিশ কি মিঠা পানির মাছ হয়ে যাচ্ছে? – দা এগ্রো নিউজ
-
বাংলাদেশে ‘প্রায় বিলুপ্তি’র পথে ১০০-এর বেশি দেশীয় মাছ – দা এগ্রো নিউজ
-
বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের আবিস্কৃত ইলিশের ‘জীবন রহস্য’ কীভাবে এর উৎপাদন বাড়াবে
-
বাংলাদেশে গরুর দুধে অ্যান্টিবায়োটিক আসে কীভাবে – দা এগ্রো নিউজ
-
আপেল-স্ট্রবেরির দরকার নেই, বাঙালিরা পেয়ারা বা বরই খেলেও একই উপকার পাবেন
-
যুক্তরাষ্ট্রে এমন একটি আপেলের চাষ শুরু হয়েছে যা ‘এক বছর সতেজ থাকবে’

মেহেরপুর: পতিত ও অনুর্বর বেলে মাটির জমিতে চিনাবাদাম চাষ করে লাভবান হচ্ছেন মেহেরপুরের চাষিরা। ফলন ও বাজার দর ভালো এবং কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন এই এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাদামের চাষ।
সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা, শ্যামপুর, টেংগারমাঠ ও গোপালপুর গ্রামের অধিকাংশ জমির মাটি বেলে। ফলে এই এলাকার চাষিরা ধান, গম, পাটসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করে খুব একটা লাভবান হতে পারেন না।
ধান কাটার পর এ সব জমি সাধারণত পতিত থাকে। এজন্য ৯০ দিনের ফসল হিসেবে অল্প খরচে বাদাম চাষ করছেন এলাকার চাষিরা।
মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, জেলায় এবার বাদাম চাষ হয়েছে ১৫ হেক্টর জমিতে। এবার এক বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করতে চাষিদের খরচ হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা সেক্ষেত্রে বাদামের ফলন হয়েছে ৬ থেকে ৭ মণ। আর এ ফলনে প্রায় ২০ হাজার টাকা ঘরে তুলছেন তারা। বাজারে প্রতিমণ বাদাম বিক্রি হচ্ছে ২৭শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা গ্রামের বাদাম চাষি খাঁজা আহমেদ, কাওছার আলী ও ফিরোজ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এলাকার মাটি বেলে হওয়ায় সাধারণত সবজি, আলু ও অন্যান্য ফসল চাষ করার পর জমি পতিত থাকে। সে সময়ে চিনা বাদামের চাষ করা হয়। বাদাম চাষে খরচ কম এবং উৎপাদন ও বাজার দর ভাল। তাই দিন দিন চাষিরা তাদের পতিত জমিতে চিনা বাদামের চাষ শুরু করছেন।
এছাড়া বাদাম ছাড়ানো, শুকানোসহ যাবতীয় কাজ করে থাকেন এখানকার নারীরা। বাদামের গাছ আবার শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করছেন গৃহিণীরা।
নারী শ্রমিক সাহানা খাতুন ও জরিমন নেছা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বাদাম ছাড়ানো ও শুকানোর কাজ করে থাকি। এলাকার ২৫/৩০ জন নারী শ্রমিক এ কাজ করে আসছেন।
গৃহিণী সাজেদা খাতুন ও জামেলা খাতুন জানান, বাদামের লতা জালানি হিসেবে বেশ ভাল। তাই লতাও বিক্রি হচ্ছে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আক্তারুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, চিনা বাদামের চাষ সাধারণত পতিত জমিতে হয়ে থাকে। এলাকার চাষিরা এই জমিতে বাদামের চাষ করে বাড়তি আয় করছেন। তাই বাদাম চাষ যাতে আরও সম্প্রসারিত হয় সেজন্য কৃষি বিভাগ চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে।

সিলেট বিভাগের উচ্চমাত্রার অ্যাসিডিক জমিতে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কৃষি বিজ্ঞানিরা মৌলভীবাজারের আকবরপুরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে ফুল চাষ করে সফল হয়েছেন। এ ফুল চাষ মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে ১০০ চাষিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে কৃষি গবেষণা কেন্দ্র।
কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের তথ্যমতে, যশোরে বাণিজ্যিকভাবে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল চাষ হয়। যার বাজার দর প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। যশোরের ফুল সারাদেশের পাশাপাশি সিলেটেও আসে প্রচুর। সিলেটে ফুলের বাজার শত কোটি টাকার উপরে। কিন্তু সিলেটে ফুলের চাষ বাণিজ্যিকভাবে হয় না।

সিলেট বিভাগের মাটি অ্যাসিডিক হওয়ায় ফুল চাষ করা যাবে না, সেটাই ছিল প্রচলিক ধারণা। কিন্তু এ ধারণাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যদিয়ে ভুল প্রমাণ করেছেন মৌলভীবাজার আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের একদল গবেষক। মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস এম শরিফুজ্জামানের নেতৃত্বে উচ্চমাত্রার অ্যাসিডিটিক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ফুল চাষ করে সফল হয়েছেন তারা। এ পরীক্ষামূলক চাষে ফলনও হয়েছে ভালো। তাই সিলেট অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট অঞ্চলে অনেক জায়গা অনাবাদি ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। প্রবাসীরা দেশের বাইরে অবস্থান করায় তাদের অনেক জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকে। এ জমিকে আবাদের আওতায় আনতে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের উদ্যোগ নিয়ে আগ্রহী ১০০ চাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে আমন ধান কাটার পর এ অঞ্চলের অনেক জমি পতিত থাকে। ফলে ফুল চাষ করে অনাবাদি জমি থেকে কোটি টাকা উপার্জন সম্ভব।
বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মিরানা আক্তার সুমি জানান, চাষিরা প্রশিক্ষণ শেষে অনেক কিছু শিখেছেন। কী পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে হয়, তা জেনেছেন। ধানের চেয়ে যেহেতু ফুলের দাম বেশি, তাই ফুল চাষে তাদের আগ্রহ বাড়ছে।

ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. সরফ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভালোভাবে জমি চাষ করে নির্দেশিত মাত্রায় জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয়। অন্য ফসলের মতোই এর চাষ পদ্ধতি সহজ। বেড তৈরি করে ফুল চাষ করতে হয়। প্রতিটি বেডের দৈর্ঘ যে কোন মাপের হতে পারে। তবে প্রস্থে ১.২-১.৫ মিটার হলে ভালো।’

তিনি বলেন, ‘কলম (বীজ) লাগানো থেকে তিন মাস পর স্টিক সংগ্রহ শুরু হয়। সংগ্রহ করা যাবে পরবর্তী ২৫ দিন। গ্লাডিওলাস ৫টি জাতসহ মোট ১২টি প্রজাতির ফুলের পরীক্ষা করে আমরা সফল হয়েছি।

সবুজ বিপ্লবের সময়ে পেস্টিসাইড ব্যবহারকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জীব বৈচিত্র্য, মাটির স্বাস্থ্য ও ফসলের গুণমানতা। এখন ভেবে দেখার সময় এসেছে, এত রাসায়নিক পেস্টিসাইড ব্যবহার করা কি ঠিক হচ্ছে? এ প্রশ্ন শুধু ভারতে নয়, সারাবিশ্বের কৃষকসমাজ ও শস্যবিজ্ঞানীদের কাছে। তাই মনে হয় জৈব নিয়ন্ত্রণকে গুরুত্ব দিয়ে সুসংহত রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণ আগামী দিনে একমাত্র সমাধানের রাস্তা হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।
চলমান খরিফ মরসুমে আমাদের রাজ্যে প্রধানত ধান, খরিফ পেঁয়াজ, জুট, ইক্ষু, তিল ইত্যাদি ফসলের চাষ হয়ে থাকে। এ রাজ্যে ধানে ঝলসা রোগের আক্রমণ একটি গুরুতর বিষয়।
জৈব পদ্ধতিতে এই রোগ দমন করার একটি সহজ উপায় রয়েছে। ৫০ মিলিলিটার কেরোসিন তেলে ৮৫ গ্রাম থেঁতলানো রসুন মিশিয়ে ২৪ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এরপর ৯৫০ মিলি. জল ও ১০ মিলি. তরল সাবান মিশিয়ে ভালোভাবে নেড়ে নিয়ে বোতলে রেখে দিতে হবে। ১৯ লিটার জলের সাথে ১ ভাগ মিশ্রণ মিশিয়ে সকালে/বিকেলে স্প্রেয়ার দিয়ে আক্রান্ত গাছে স্প্রে করতে হবে।
এই মিশ্রণটি আমেরিকান বোল ওয়ার্ম, আর্মি ওয়ার্ম, পেঁয়াজ-এর চিরুনি পোকা, আলুর টিউবার মথ, রুট নট নিমাটোড (কৃমি), আখের কাণ্ড ছিদ্রকারী পোকা, ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ, ডাউনি মিলডিউ ও ধানের ঝলসা রোগ প্রতিরোধে খুবই কার্যকরী।
এছাড়া বিভিন্ন ধরণের পাতা খেকো পোকা ও জাব পোকা নিয়ন্ত্রণে ১ কেজি পেঁয়াজ থেঁতো করে ১ লিটার জলের সাথে মিশিয়ে ২৪ ঘণ্টা রেখে দেবার পর কচলিয়ে রস নিংড়ে নিতে হবে। প্রাপ্ত নির্যাসের সাথে ১০ লিটার জল মিশিয়ে আক্রান্ত ফসলে স্প্রে করতে হবে।
জৈব সার প্রয়োগ ও জৈব কীটনাশক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফসলের উৎপাদন খরচ শতকরা ২৫-৩০ শতাংশ হ্রাস করা সম্ভব। উচ্চ পুষ্টিমানসম্পন্ন প্রযুক্তিতে উৎপাদিত জৈব সার, শাকসব্জী ও অন্যান্য ফসলের প্রয়োজনীয় নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশিয়াম-এর সাথে অণুখাদ্যের যোগান দেয়।
জৈব পদ্ধতিতে উৎপন্ন কীটনাশক ও ছত্রাকনাশকগুলি ফসলে কোনওরকম দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ব্যতিরেকে, পোকা ও রোগ দমনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এতে মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও উর্বরতা দীর্ঘমেয়াদী হয়। উৎপাদিত ফসল হয় স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ।
বন্ধুপোকা মাকড়ের (পরজীবি ও পরভোজী) সংরক্ষণের জন্য জমির পাশে অব্যবহৃত জায়গায় ত্রিধারা, উঁচুটি, শালিঞ্চে ইত্যাদি আগাছা জাতীয় গাছের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
দূরদর্শী পদক্ষেপের মাধ্যমে রাসায়নিক কৃষি বর্জন করে প্রাণ বৈচিত্র্য নির্ভর জৈব কৃষির মাধ্যমে খাদ্যে সার্বভৌমত্ব আনা সম্ভব। তাই জৈব কৃষির পথে ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়ে কৃষিবিষমুক্ত, স্বাস্থ্যসম্মত সমাজ গড়ে তোলাই বাঞ্ছনীয়।

চা পানীয়টি আমাদের দেশে খুবই জনপ্রিয় একটি পানীয়। প্রিয়জনের সাথে বৈঠক থেকে শুরু করে সারাদিনের ক্লান্তি দূর করা সবেতেই চা (Tea) আমাদের নিত্যসঙ্গী। তবে এখন মানুষ আগের তুলনায় অনেক বেশী স্বাস্থ্য সচেতন। সাধারণ চায়ের জায়গায় এসেছে, গ্রীণ টি, হার্বাল টি, লেমনগ্র্যাস টি, ব্লু টি ইত্যাদি। আর প্রকারভেদের সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে টি ব্যাগের গুরুত্ব। কারণ এটি খুব অল্প সময়ে তৈরি করা যায় এবং যে কোন স্থানে এর থেকে চা বানানো যায়। অফিস ও হোটেলগুলিতে এর যথেষ্ট চাহিদাও রয়েছে। তাই টি ব্যাগ তৈরীর ব্যবসাটি হয়ে উঠতে পারে আপনার জন্য লাভদায়ক।
চা উৎপাদনকারী দেশ গুলির মধ্যে অংশ নেয় চীন, ভারত , কেনিয়া , শ্রীলঙ্কা , জাপান , ইন্দোনেশিয়া , ভিয়েতনাম, তানজেনিয়া , মালয়, বাংলাদেশ, তার্কী এবং চা পানকারী দেশ গুলির মধ্যে ইংল্যান্ড, জর্মানী, কানাডা ও আমেরিকার বেশ নাম রয়েছে।
এ কারণে বেশিরভাগ সংস্থা টি ব্যাগ বিক্রি শুরু করেছে। আপনি যদি নতুন ব্যবসা করার পরিকল্পনা করে থাকেন, তবে আপনি টি ব্যাগ মেকিং ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এটির মাধ্যমে আপনি খুব ভাল অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। যিনি তৈরী করেন, তার থেকে নিয়ে এসে আপনি বাইরে বিক্রি করতে পারেন, এতে আপনার বিনিয়োগের দরকার পড়বে না। কিন্তু যদি বেশী লাভ করতে চান, তবে বিনিয়োগ করে নিজের ব্যবসা শুরু করুন।
টি ব্যাগ ব্যবসা শুরু করার জন্য জায়গা (How to start) –
এটি শুরু করার জন্য আপনি কোনও জায়গা ভাড়া নিতে পারেন। আপনার নিজের জমি থাকলে ব্যবসার জন্য সুবিধা হবে। এমন জায়গা চয়ন করুন, যেখানে মানুষের সমাগম রয়েছে। টি ব্যাগ তৈরীর জন্য আপনাকে মেশিন ইনস্টল করতে হবে।
চা ব্যাগ ব্যবসায় বিনিয়োগ –
আপনি যদি বড় আকারে ব্যবসা শুরু করতে চান, তবে আপনাকে বেশী অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে। এর মেশিনটি যথেষ্ট ব্যয়বহুল, সুতরাং বেশী পরিমাণ রাশি বিনিয়োগের দরকার রয়েছে এই ব্যবসায়, তবে আপনি যদি ব্যাংক থেকে লোণ নেন, তবে আপনি ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
চা ব্যাগ তৈরিতে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল –
ফিল্টার পেপার –
এর ভিতরে চায়ের পাতা স্টোর করতে হবে। এই কাগজটি সুক্ষ ছিদ্রযুক্ত এবং পাতলা, পাশাপাশি সহজে ভিজে যায় না, তাই এই কাগজটি চা ব্যাগ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
চা পাতা –
আপনি যেমন প্রকারের ব্যাগ বিক্রি করতে চান, তেমন চা পাতা কিনতে হবে।
বিভিন্ন প্রকারের চা –
সাধারণ চা, গ্রীণ টি, উলং টি, ব্ল্যাক টি, হার্বাল টি
চা ব্যাগগুলিতে চা পাতা পূরণ করার প্রক্রিয়া –
চা ব্যাগ তৈরীর মেশিনের সাহায্যে প্রস্তুত চা পাতাগুলি ফিল্টার পেপারে পূরণ করতে হয়। সাধারণত প্রায় ২-৪ আউন্স চা পাতা একটি টি ব্যাগে ভরা হয়। এর পরে, একটি প্যাকিং মেশিনের সাহায্যে ব্যাগটি সিল করা হয়। টি ব্যাগের সাথে একটি সুতো সংযুক্ত থাকে।
চা ব্যাগ ব্যবসায় থেকে লাভ –
আপনি চায়ের পাতার গুণমান অনুযায়ী ব্যাগের দাম নির্ধারণ করতে পারেন। এই ব্যবসা থেকে খুব ভাল লাভ করা যায়। এর আরও বিক্রয়ের জন্য, আপনি বাজারে পাইকারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এগুলি ছাড়াও আপনি হোটেল বা অফিসের লোকের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এই ব্যবসা আপনাকে মাসে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন দিতে পারে।

ছেলে থেকে বুড়ো সবারই প্রিয় টক ঝাল কদবেল। কদবেলের আচার, কদবেল মাখা সকলেরই অত্যন্ত পছন্দের। যারা বাগান করতে পছন্দ করেন, বিশেষত টবে, তাদের জন্য কদবেল এক আদর্শ ফল। কদবেলের আকার অনেকটা টেনিস বলের মতো। শরতের শুরুতে কদবেল বাজারে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এই ফলের মন মাতানো স্বাদ বিশেষ করে মহিলাদের ভীষণই পছন্দের।
টবে কদবেল চাষের পদ্ধতি (Farming Process)
মন কাড়া স্বাদের জন্য পাকা কদবেল সবার কাছেই অত্যন্ত প্রিয়। কদবেল গাছে ফুল আসে মার্চ-এপ্রিল মাস নাগাদ। তবে ফল পাকতে সময় লাগে সেপ্টেম্বর-অক্টবর। টবে রোপনের জন্য কদবেলের কলমের চারা বেশি ভালো। কলমের চারা থেকে কয়েক বছরের মধ্যে ফুল-ফল ধরে। ছাদের টবে এই গাছের চাষ সহজেই করা যায়। জোড় কলম করে এর কলম তৈরি করা যায়। এ গাছের চাষাবাদ অনেকটা বেলের মতোই।
মাটি তৈরি (Land Preparation)
হাফ ড্রামে অথবা টবে পাঁচ সেন্টিমিটার পুরু করে ইটের খোয়া বিছিয়ে তার ওপর ১০ সেন্টিমিটার বালির স্তর দিতে হবে। ড্রামের তলার দিকে জল বার করে দেওয়ার জন্য ছিদ্র রাখতে হবে। এবার তিন ভাগ দো-আঁশ মাটির সাথে দুই ভাগ গোবর সার, ড্রামপ্রতি ২০০ গ্রাম এমওপি (পটাশ) সার, ২৫০ গ্রাম টিএসপি (ফসফেট) সার, ১ কেজি হাড়ের গুঁড়ো, ৫০ গ্রাম জিপসাম সার, ২০ গ্রাম ম্যাগেনেসিয়াম সালফেট (ম্যাগসাল) সার ও ১০ গ্রাম দস্তা সার মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে ড্রামে বা টবে ভরে হালকা করে জল দিয়ে মাটি ভিজিয়ে এক থেকে দুই সপ্তাহ রেখে দিতে হবে।
ড্রাম বা টবের ঠিক মাঝখানে কদবেলের কলম বসিয়ে কলমের গোড়ার মাটি শক্ত করে চেপে দিতে হবে। কলম লাগানোর পর গাছের গোড়ায় জল দিতে হবে। সোজা ভাবে কলম রাখতে গেলে, গোড়ার কাছাকাছি কাঠি পুঁতে তার সাথে কলম বেঁধে দিলে ভালো। শীতকাল ছাড়া বছরের যেকোনও সময় কদবেলের কলম লাগানো যায়। ছাদের ওপর রোদের মধ্যে কদবেলের গাছ রাখা উচিত। এতে গাছের ভালোই হবে।
ফলন এবং পরিচর্যা (Caring)
কলমের গাছে ফুল ফাল্গুন-চৈত্র মাসে নাগাদ আসে। শরৎকালে ফল পেকে যায়। ডালপালা ফল সংগ্রহ করার সময় কিছু ছেঁটে দেওয়া উচিত। এর ফলে পরের বছর ফলন ভালো হবে। কদবেল গাছে ফুল-ফল ভালো আনার জন্য প্রতি বছর ফল তোলা শেষ হলে গাছের গোড়ার মাটিতে ড্রামপ্রতি ১৫০ থেকে ২৫০ গ্রাম ইউরিয়া সার, ১০০ গ্রাম এমওপি সার, ১০০ গ্রাম টিএসপি সার দুই কেজি প্যাকেটের কম্পোস্ট সারের সাথে মিশিয়ে গোড়ার মাটি নিড়িয়ে তার সাথে মিশিয়ে সেচ দিতে হবে।
গাছের বৃদ্ধি ভালো হলে বছরে একবার সার দিলে হবে না। বর্ষাকালের আগেও ঠিক একই ভাবে পুনরায় সার দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে টব বা ড্রামের মাটি যাতে না শুকিয়ে যায়। টবের মাটি কখনো শুকিয়ে গেলে নিয়ম করে সেচ দিয়ে নিতে হবে।

যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশে হতে পারে সারের সংকট

বিদেশ থেকে খালি হাতে ফিরে ড্রাগন চাষে সাফল্য

নাসিরনগরে বন্যায় তলিয়ে গেল কৃষকের বাদামখেত

পানি দিতে অতিরিক্ত টাকা

কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তারা এক সঙ্গে কাজ করতে রাজি

‘শিক্ষিত কৃষক’ বলেই তাঁকে নিয়ে মানুষের আগ্রহটা বেশি

ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বীজ কিনে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত

বোরো কাটতে বাড়তি খরচ ঃ হাসি নেই কৃষকের মুখে

পেঁয়াজের ক্ষতি পুষিয়ে দিচ্ছে সাথি ফসল বাঙ্গি

নিরাপদ খাদ্য: দেশি মাছ কাকিলাকে যেভাবে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা

স্মার্ট ডিভাইসে মাছ চাষে বিপ্লব

চীনে পানিবিহীন হাঁসের খামার

কলাপাড়ায় ৩০ মণ জাটকা জব্দ

ফরিদপুরে ধানের ভালো দামে কৃষকের মুখে হাসি

ধানে পোকার আক্রমণে দিশেহারা চাষিরা

ঠাকুরগাঁওয়ে চাষ হচ্ছে ‘ব্ল্যাক রাইস’

মানুষের নিষ্ঠুরতা থেকে কুকুরকে উদ্ধার করলো গরু

হাই প্রেসার কমানোর সহজ ৫ উপায়

অসময়ের বন্যায় সব শেষ তিস্তাপাড়ের কৃষকের

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন