দিনে অন্তত দু’য়েকবার চা পান করে না, এমন মানুষ খুব কমই আছে। ক্লান্তি দূর কিংবা অতিথি আপ্যায়নেও চায়ের জুড়ি নেই। তবে চায়ের সাথে আদা ব্যবহার করতে পারেন। এতে রয়েছে দারুণ উপকারিতা।
ওজন কমায়: গরম আদা চা পান করলে পেট অনেকক্ষণ ভর্তি থাকে, ফলে বাড়তি খাওয়া অনেক কম হয়। এতে ওজন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে।
হার্ট ভালো রাখে ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে: নিয়মিত আদা চা পান করলে হার্ট ভালো থাকে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। রক্ত জমাট বাঁধা নিয়ন্ত্রণ করে, কোলেস্টরল কমিয়ে এবং রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। ছবি: সংগৃহীত
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে: আদায় অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট আছে। এটি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে ও স্ট্রেস কমায়। আদা পানির বাষ্প নিলে বন্ধ নাক খুলে যায়।
মাথা ঘোরা কমে: প্লেনে উঠলে বা পাহাড়ি রাস্তায় যদি মাথা ঘোরার সমস্যা থাকে, তা হলে আদা চা পান করলে সেটা কমে যায়।
ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে: যাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস আছে, তাদের জন্য প্রতিদিন আদা চা পান করার সুফল অনেক। কারণ এই চা এইচবিএ১সি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। মস্তিষ্ক সচল রাখে এবং অ্যালঝাইমারের মতো রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে। ক্রনিক ইনফ্লেমেশন এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস মানুষকে আরও বুড়ো করে তোলে। আর এটাই পরবর্তীকালে অ্যালঝাইমার নামক অসুখে রূপান্তরিত হয়। আদার মধ্যে উপস্থিত বায়ো-অ্যাকটিভ উপাদান এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট মস্তিষ্কের এই ইনফ্লেমেশন রোধ করে মস্তিষ্ক সচল ও সক্রিয় রাখে।
বদহজমের সমস্যা দূর করে: পেটের উপরিভাগে ব্যথা বা অস্বস্তির কারণ হলো বদহজম। আদা চা এই সমস্যা দূর করে এবং তার সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে সেটাও কম করতে সাহায্য করে। ঋতুস্রাবের সময় পেট ব্যথা কম করে। অনেক মহিলাই ঋতুস্রাবের সময় তলপেটের ব্যথায় ভোগেন। আদা চা হলো এর কার্যকরী সমাধান। আদা চায়ের সঙ্গে মধু মিশিয়ে পান করলে আরাম পাওয়া যায়। তা ছাড়া গরম পানিতে আদা দিয়ে সেই পানি তোয়ালে ভিজিয়ে তলপেটে ধরলেও উপকার পাওয়া যায়।
স্ট্রেস কমায়: আধুনিক যুগে আমরা কম-বেশি সকলেই স্ট্রেসের শিকার। আদার কড়া গন্ধ ও স্বাদ স্ট্রেস, টেনশন দুটোই দূর করে। ক্যানসার প্রতিরোধ করে। প্যানক্রিয়াস ও কোলোন ক্যানসারে দারুণ কাজ দেয় আদা চা। নিয়মিত আদা চা পানে এই জাতীয় ক্যানসারের কোষ সহজে ছড়িয়ে পড়ে না।
রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে: আদা চায়ে আছে অ্যামাইনো অ্যাসিড, ভিটামিন ও মিনারেল। এগুলো রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং কার্ডিও ভাস্কুলার সমস্যা থাকলে সেটা দূর করে। ধমনীর চারপাশে মেদ জমতেও বাধা দেয় আদা চা। এটি একটি প্রাকৃতিক পেন কিলার। পেন কিলার না খেয়ে আদা চায়ের উপরে ব্যথা উপশমের জন্য ভরসা রাখা যেতে পারে। অস্টিয়ো আরথ্রাইট্রিস, মাথা ব্যথা, ঋতুস্রাবের ব্যথা, গলা ব্যথা এবং পেশীর ব্যথার মতো নানা ব্যথার দূর করে এই চা
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন