আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

ফসল

দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি

দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি
দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি

করোনাকালীন স্থবিরতার মধ্যে দীর্ঘায়িত বন্যার আঘাত। ক্ষতিগ্রস্ত ৩৭ জেলা। এসব জেলার প্রায় ১৩ লাখ বিঘা জমির ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। নষ্ট হওয়া ফসলের মধ্যে রয়েছে— ধান, আমন বীজতলা, সবজি, ভুট্টা, তিল, মরিচ, চীনাবাদাম, পান, পাট, কলা, লেবু ও আখ। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, দেশ কি খাদ্যসংকটের মুখে পড়তে যাচ্ছে?

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) বলছে, বাংলাদেশে আপাতত খাদ্যঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই। তাদের গবেষণায় দেখানো হয়েছে, চালের উৎপাদন গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩.৫৪ ভাগ বেড়েছে। গত বোরো ও আমন মৌসুমের উদ্বৃত্ত উৎপাদন থেকে হিসাব করে জুন পর্যন্ত দেশের ভেতরে ২০.৩১ মিলিয়ন টন চাল ছিল। আগামী নভেম্বর পর্যন্ত চাহিদা মেটানোর পরও ৫.৫৫ মিলিয়ন টন চাল দেশের ভেতরে উদ্বৃত্ত থাকবে। নভেম্বর পর্যন্ত ১৬.৫০ কোটি মানুষের চাহিদা মেটানোর পরও ৩৬-৭৮ দিনের চাল উদ্বৃত্ত থাকবে।

নভেম্বরের মধ্যে দেশের ফুড বাস্কেটে নতুনভাবে আউশ ও আমনের উৎপাদন যুক্ত হবে। ফলে বাংলাদেশে আপাতত খাদ্যঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই— বলছে ব্রি।

দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি
দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি

ব্রি’র উদ্যোগে রোববার (৯ আগস্ট) সকালে অনুষ্ঠিত চলমান করোনা পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের খাদ্যনিরাপত্তা এবং খাদ্য সংকটের শঙ্কা শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এই গবেষণা তথ্য প্রকাশ করে ব্রি।

প্রধান অতিথি হিসেবে এতে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। সম্মানিত অতিথি ও মুখ্য আলোচক ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ও সিনিয়র সচিব (সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ) ড. শামসুল আলম।

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, খাদ্যশস্য আমদানির আগে কৃষকের স্বার্থ ও ভোক্তার স্বার্থ বিবেচনায় রাখতে হবে। কারণ, কৃষক না বাঁচলে দেশ বাঁচবে না। বিষয়টি অনুধাবন করতে হবে আগে। তিনি আরও বলেন, খাদ্য মজুতের বিষয়টি আগে থেকেই ভালোভাবে সার্ভে করে দেখতে হবে; যাতে দুর্যোগকালীন যথার্থ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। এক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে খাদ্যশস্য আমদানিও করা হবে।

দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি
দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, চলতি মৌসুমে বন্যাপীড়িত অঞ্চলগুলোতে খাদ্যের আবাদে কতটা ক্ষতি হয়েছে তা তাৎক্ষণিক পর্যালোচনা করে খাদ্য আমদানির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। মন্ত্রী বলেন, চালের বাজারদর কৃষক ও ভোক্তার স্বার্থে যথাযথ রাখতে সরকার, কৃষক ও মিলার মালিকদের সঙ্গে যৌথভাবে উদ্যোগ নেয়ার এখনই সময়। এছাড়া সারের প্রাপ্যতা ও ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, বীজের সরবরাহ ঠিক রাখা, ফসল বোনা থেকে শুরু করে ভোক্তার কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত সময়ে প্রতিদিনের পরিস্থিতি মূল্যায়ন ও তদারকি করতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ পারমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও অংশ নেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম, কৃষি মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক কর্মসম্পাদন ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ পুলের সদস্য ড. আব্দুস সাত্তার মণ্ডল, এমিরিটাস অধ্যাপক ড. এস এম নাজমুল ইসলাম, কৃষিবিদ মো. হামিদুর রহমান এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ‎প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান।

ওয়েবিনার আয়োজনের উদ্দেশ্য ছিল, কোভিড-১৯ সময়কালীন খাদ্যনিরাপত্তা পরিস্থিতি, ধানের উৎপাদন এবং বাজারজাতকরণে গৃহীত পদক্ষেপ পর্যালোচনা এবং উৎপাদনে বৃদ্ধিতে ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণ করা। কোভিড-১৯ কালীন ও তৎপরবর্তী দেশের খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে কয়েকটি দেশি-বিদেশি সংস্থার বরাত দিয়ে অনেক বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচারিত হচ্ছে, যা জনমনে এবং পলিসি লেভেলে অস্বস্তি তৈরি করছে। ব্রি মনে করে, এই ওয়েবিনার দেশের খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে উদ্ভূত সব বিভ্রান্তি নিরসন করবে।

দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি
দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি

ওয়েবিনারে বলা হয়, ব্রি মধ্য এপ্রিল থেকে মধ্য জুলাই পর্যন্ত পাঁচটি গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এগুলোর মধ্যে হাওরের ধানকাটার শ্রমিক ও যান্ত্রিকীকরণের ভূমিকা, সুপার-সাইক্লোন আম্ফানের প্রভাব নিরূপণ, ধান-চালের মজুত পরিস্থিতি এবং বাজারমূল্যে এর প্রভাব, ৬৪ জেলায় কৃষকের মাঠের ফসল কাটা এবং আউশ আবাদ পরিস্থিতি নিয়ে র‌্যাপিড সার্ভের মাধ্যমে করোনাকালীন গবেষণা পরিচালনা করা হয়। এসব গবেষণার ফল বিশ্লেষণে ৬৪টি জেলায় ব্রি কর্তৃক ১০৪৮টি এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক ২ লাখ ১৩ হাজার ৮৬৯টি ফসল কর্তনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এই সার্ভে কার্যক্রমে দেশের ৩৮টি জেলার ৫৭টি উপজেলা এবং ফলন কর্তনে ৬৪টি জেলা অন্তর্ভুক্ত ছিল।

ওয়েবিনারে বিগত ১০ বছরে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ধান উৎপাদনকারী দেশগুলোর উৎপাদন চিত্র তুলে ধরে বলা হয়, ২০১০ সালে যেখানে চাল উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল চতুর্থ। বর্তমানে সরকারের কৃষিবান্ধব নীতি, গবেষণা ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়াকে পেছনে ফেলে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে, যা বাংলাদেশের জন্য বিশাল একটি অর্জন এবং খাদ্যনিরাপত্তায় মাইলফলক। যদিও ইউএসডিএ ধানের উৎপাদন নিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছিল যে, গত বছরের তুলনায় উৎপাদন ০.২৮ ভাগ কমে যাবে, কিন্তু বাস্তবে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩৮.৭ মিলিয়ন টনে উন্নীত হয়েছে।

ব্রির জরিপ থেকে দেখা গেছে, ফলন, আবাদকৃত এলাকা, উৎপাদন ও চালের অভ্যন্তরীণ মজুত পরিস্থিতি বিবেচনায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর সব কৃষি অঞ্চলে ধানের ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এ বৃদ্ধির হার সারাদেশে গড়ে শতকরা ৮.৪ ভাগ। ডিএই’র ৬৪ জেলার ক্রপ-কাট এর ফলাফল থেকে দেখা যাচ্ছে, ধানের ফলন গড়ে ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে ব্রি’র ১০৪৮টি কৃষকের মাঠে ক্রপ-কাট এর ফলাফল থেকে দেখা যাচ্ছে যে, সারাদেশে ধানের ফলন গড়ে ২.৮ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে।

দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি
দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি

গত দুই বছর ধানের দাম ক্রমাগত হারে কম থাকায় এ বছর বোরো আবাদি জমির পরিমাণ কিছুটা কমেছে, যা গত বছরের তুলনায় শতকরা ০.৭১ ভাগ। অন্যদিকে এ বছর বোরো ধানের দাম বেশি থাকায় কৃষক আউশ চাষে ঝুঁকেছে। ফলে গত বছরের তুলনায় প্রায় ১৮ ভাগ বেশি জমিতে আউশ ধান আবাদ হয়েছে।

ব্রি’র গবেষণায় দেখা যায়, চালের উৎপাদন গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩.৫৪ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরপক্ষে, ডিএই’র ক্রপ-কাটের তথ্য অনুযায়ী ৩.১৮ শতাংশ এবং ব্রি’র ক্রপ-কাট অনুযায়ী ৩.৯৪ শতাংশ চালের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। বোরো মৌসুমে এ বছর চালের উৎপাদন হয়েছে ২০.২৬ মিলিয়ন টন, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩.৫৮ শতাংশ বেশি। এই উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভালো আবহাওয়া, উপযুক্ত ব্যবস্থাপনা, দাম কমানোর ফলে ডিএপি সারের ব্যবহার বৃদ্ধি, ব্রি-ডিএই যৌথ উদ্যোগে ১৪টি কৃষি অঞ্চলে আঞ্চলিক কর্মশালা, বোরো মৌসুমের শুরুতে কৃষক প্রশিক্ষণ এবং কৃষি যান্ত্রিকীকরণে সরকারের ত্বরিত পদক্ষেপ সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।

আউশের উৎপাদন বিবেচনা করলে এ বছর আমাদের আউশের প্রত্যাশিত উৎপাদন হবে ৩.৫৬ মিলিয়ন টন। কিন্তু ইতোমধ্যে দেশের প্রায় ৩১টি জেলা বন্যা দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। বন্যার ফলে আউশের প্রত্যাশিত উৎপাদন কিছুটা কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বিসিআর ক্যালকুলেট করে দেখা গেছে, এবার বোরো ধান চাষ লাভজনক ছিল। ধানকাটা মৌসুমে কাঁচা ধানের দাম গত বছরের তুলনায় বেশি থাকায় কৃষকের মোট আয় শতকরা ১৬.৭ ভাগ বেড়েছে। বোরো ধানচাষীদের তথ্য মতে, এ বছর তারা গড়ে বিঘাপ্রতি ১ হাজার ৬০৪ টাকা লাভ করেছেন, যেখানে গত বছর তাদের লোকসান গুনতে হয়েছিল। এ বছর কর্তনকালীন এবং এক থেকে দুই মাসের মধ্যে কৃষক গত বছরের তুলনায় কম পরিমাণ ধান বাজারে বিক্রি করেছেন। একদিকে ভবিষ্যৎ খাদ্য ঘাটতির শঙ্কা অন্যদিকে ধানের দাম বেশি থাকায় অল্প ধান বেঁচেই কৃষক কৃষি ও পরিবারের খরচ বহন করতে পেরেছেন। অধিকন্তু বেশি দামের আশায় ধান মজুত করার প্রবণতা বাড়তে দেখা গেছে।

দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি
দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি

ধান-চালের মজুত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, ধানের ক্ষেত্রে গত বছর জুন মাসে কৃষকের গোলায় মোট মজুতের ২০ শতাংশ ধান ছিল, যা এ বছর একই সময় প্রায় ২৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। বিশেষ করে করোনাকালীন অধিক লাভের আশায় একধরনের নতুন ‘Market Actor’ যোগ হয়েছে, যারা এ সময় ধানে বিনিয়োগকে নিরাপদ মনে করছে। এসব কারণে এ বছর মিলারদের ধান মজুতের পরিমাণ গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম ছিল।

অন্যদিকে চাল মজুতের বেলায় দেখা যায় যে, ভোক্তাশ্রেণি ভবিষ্যৎ খাদ্যঘাটতির শঙ্কা থেকে আতঙ্কিত হয়ে বেশি পরিমাণ চাল মজুত করেছেন। অপরপক্ষে, সরকারসহ (গত বছর জুন পর্যন্ত সরকারি মজুত ছিল ১২.৫৬ লাখ টন, যা এবার কমে ৯.২৭ লাখ টনে দাঁড়িয়েছে) অন্যান্য চাল ব্যবসায়ীরা গত বছরের তুলনায় কম পরিমাণে চাল মজুত করেছেন। সার্বিকভাবে বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে ধান-চাল মজুতের প্রবণতা কিছুটা বেশি থাকলেও সরবরাহ চেইন বিঘ্নিত হয়নি।

চাল উৎপাদন খরচের ক্ষেত্রে মৌসুমে বিদ্যমান সর্বনিম্ন দামে মিলাররা যে ধান ক্রয় করেন সেটি থেকে কেজিপ্রতি চাল উৎপাদনে ২৭.৮৬ টাকা খরচ হয়। অন্যদিকে সর্বোচ্চ দাম বিবেচনায় দেখা যায়, কেজিপ্রতি চাল উৎপাদনে ৩৫.৮০ টাকা খরচ হয়। গড় বিবেচনায় এক কেজি চাল উৎপাদনে ৩২.৩৪ টাকা ব্যয় হয়। এখানে উল্লেখ্য যে, বিদ্যুৎ বিল, যানবাহন ও শ্রমিক খরচ বাড়ার কারণে এ বছর মিলিং খরচ ৮.৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। খরচ বাড়লেও এটা স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয় যে, সরকার ঘোষিত দামে চাল বিক্রি করে মিলাররা লাভবান হচ্ছেন।

  • দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি

    দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি

  • দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি

    দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি

  • দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি

    দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি

  • দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি

    দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি

  • দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি

    দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি

  • দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি

    দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি

  • দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি
  • দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি
  • দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি
  • দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি
  • দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি
  • দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই : ব্রি
বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

এগ্রোবিজ

যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশে হতে পারে সারের সংকট

সারের সংকট
সারের সংকট
সারের সংকট

চলতি বোরো মৌসুমে সার কিনতে কৃষকদের সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা করে বেশি দিতে হয়েছে। আর সরকারকেও সার বাবদ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে বাজেটে বরাদ্দের তিন গুণের বেশি—প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশ এখন মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার আমদানি নিয়ে বিপাকে পড়েছে।

ধান, আলু ও সবজি চাষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এমওপি সারের ৬০ শতাংশ আনা হতো রাশিয়া ও বেলারুশ থেকে। ওই দুই দেশ নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়ায় এখন বাংলাদেশকে এমওপি কিনতে হচ্ছে কানাডা থেকে। বিশ্ববাজারে দাম বেড়ে যাওয়া ও আমদানিতে অনিশ্চয়তার কারণে বাংলাদেশে সারের সংকট হতে পারে। ভর্তুকির চাপ সামলাতে বাংলাদেশকে সব ধরনের সারের খুচরা মূল্য বাড়াতে হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিবিষয়ক সংস্থা ইউএসডিএর চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ‘বাংলাদেশে সার সরবরাহ ও ব্যবহারে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের এমওপি সারের ২০ শতাংশ সরবরাহ কমানো হলে সামনের বোরো মৌসুমে ধান, গম ও রবি মৌসুমের অন্যান্য ফসলের উৎপাদন ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কমতে পারে। এতে বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে।

এমনিতেই এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমাদের ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে সারের কারণে নতুন করে যাতে আর সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

এ এম এম শওকত আলী, সাবেক কৃষিসচিব

তবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, দেশে চলতি বোরো মৌসুমে নতুন করে আর সারের দরকার হবে না। সামনে আলুর মৌসুমে ইউরিয়া, এমওপিসহ অন্যান্য সারের চাহিদা বাড়বে। ওই সময়ের জন্য সার সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ কানাডা ও মধ্যপ্রাচ্যের সার সরবরাহকারী দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে।

জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কানাডা থেকে মোট আট লাখ টন এমওপি সার আমদানির উদ্যোগ নিয়েছি। এ ব্যাপারে ওই দেশের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা স্মারক হয়েছে। ফলে এই সার নিয়ে সরকারের কোনো দুশ্চিন্তা নেই। তবে সার বাবদ সরকারের বিপুল পরিমাণে ভর্তুকি বাড়ছে। এই চাপ নিয়েও সরকার ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ওই ভর্তুকি দিয়ে যাবে।’

কমানো হয়েছে চাহিদা

বাংলাদেশে চলতি অর্থবছরে ৬৯ লাখ টন রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয়েছে। এর মধ্যে ইউরিয়া, টিএসপি, ডিএপি ও এমওপি—এই চার ধরনের সার ব্যবহার হয় ৫৭ লাখ টন। আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের ওই চার ধরনের সারের চাহিদা কমিয়ে ৫৫ লাখ ৫০ হাজার টনে নামিয়ে আনা হয়েছে।

দেশে প্রয়োজনীয় সারের ৮০ শতাংশই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এর মধ্যে এমওপি সারের বড় অংশ আসে রাশিয়া ও বেলারুশ থেকে।

প্রসঙ্গত, ওই চারটি প্রধান সার কৃষকদের কাছে বিক্রির ক্ষেত্রে সরকার ভর্তুকি দিয়ে থাকে। চলতি অর্থবছরে সরকার প্রাথমিকভাবে সারে ভর্তুকি বাবদ ৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে গত ছয় মাসে সারের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। বেশির ভাগ সারের দাম তিন থেকে চার গুণ বেড়ে যাওয়ায় সরকারকে ভর্তুকির পরিমাণ ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা করতে হয়। কিন্তু অর্থবছরের শেষের দিকে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে হিসাব করে দেখা হয়েছে, ভর্তুকির পরিমাণ এবার বেড়ে কমপক্ষে ৩০ হাজার কোটি টাকা গিয়ে দাঁড়াবে।

জিপসাম, জিংক সালফেট ও অ্যামোনিয়াম সালফেট ও ম্যাগনেসিয়াম সালফেট সারে সরকার কোনো ভর্তুকি দেয় না। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কিনে ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছে তা বিক্রি করে থাকেন। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষককেও বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে।

সাবেক কৃষিসচিব এ এম এম শওকত আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এমনিতেই এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমাদের ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে সারের কারণে নতুন করে যাতে আর সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। আর সরকারের অন্যান্য খাতের ভর্তুকি কমিয়ে প্রয়োজনে সারে ভর্তুকি বাড়াতে হবে, যাতে সারের দাম কম থাকে। কারণ, কৃষকের হাতে এখন টাকা কম। বিশ্ববাজার থেকেও খাদ্য আমদানি করা সামনের দিনে আরও কঠিন হতে পারে। ফলে দেশের উৎপাদন ঠিক রাখতে সারের দাম ও জোগান ঠিক রাখা উচিত।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

পানি দিতে অতিরিক্ত টাকা

পানি দিতে অতিরিক্ত টাকা
পানি দিতে অতিরিক্ত টাকা

ঠাকুরগাঁওয়ে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) একটি গভীর নলকূপের সেচের পানি সরবরাহে কৃষকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে। ভুক্তভোগী কৃষকদের কাছ থেকে পাওয়া এমন অভিযোগের তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছে বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বড় বালিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

ভুক্তভোগী কৃষকেরা বলছেন, সেচের পানির জন্য প্রিপেইড কার্ডের বাইরে কোনো টাকা দেওয়ার নিয়ম নেই। কিন্তু বিএমডিএর ১০৮ নম্বর গভীর নলকূপের অপারেটরের দায়িত্বে থাকা বিউটি বেগমের স্বামী আকতারুজ্জামান বোরো ধান চাষের জন্য প্রতি বিঘার জন্য ১ হাজার ২০০ টাকা ও অন্য মৌসুমে ৩০০ টাকা নেন। ১০ বছর ধরে তিনি এভাবেই বাণিজ্য করে আসছেন।

সম্প্রতি রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বিএমডিএর গভীর নলকূপ থেকে খেতে সেচের পানি পেতে হয়রানির শিকার দুই কৃষকের মৃত্যুর ঘটনা দেশজুড়ে আলোচিত হয়।

ঠাকুরগাঁও জেলায় বিএমডিএর ১ হাজার ৪৩১টি গভীর নলকূপ রয়েছে। এর মধ্যে সচল ১ হাজার ৪১৮টি। সেচের আওতায় ৭৬ হাজার ৫০০ পরিবারের জমি রয়েছে ৫৩ হাজার ৫০০ হেক্টর।

* সেচের পানির জন্য প্রিপেইড কার্ডের বাইরে কোনো টাকা দেওয়ার নিয়ম নেই। * সেচের আওতায় ৭৬ হাজার ৫০০ পরিবারের জমি আছে। * কৃষকদের নলকূপের আবেদন পেলে যাচাই করে স্কিম তৈরি করা হয়।

বিএমডিএ সূত্রে জানা গেছে, কৃষকদের নলকূপের আবেদন পেলে যাচাই করে স্কিম তৈরি করা হয়। এরপর সমবায়ের ভিত্তিতে অংশীদারি ফি বাবদ এক লাখ টাকা জমা দিতে হয়। এই নলকূপ পরিচালনার জন্য বিএমডিএ একজন অপারেটর নিয়োগ দেন। প্রিপেইড মিটারিং পদ্ধতিতে কৃষকের নিজ নামে প্রিপেইড কার্ড থাকতে হয়। সেই কার্ড থেকে প্রতি ঘণ্টায় সেচের পানির জন্য ন্যূনতম ১১০ টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেটে নেওয়া হয়। এর বাইরে অতিরিক্ত কোনো টাকা দেওয়ার নিয়ম নেই।

বড় বালিয়া এলাকার কৃষকেরা জানান, ২০১১ সালের দিকে বড় বালিয়া মণ্ডলপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. আকতারুজ্জামান এলাকায় গভীর নলকূপ স্থাপনের উদ্যোগ নেন। ফি হিসেবে এক লাখ জমা দেওয়ার নিয়ম থাকলেও কোনো কৃষক সেটা দিতে এগিয়ে আসেননি। ফলে আকতারুজ্জামান, দাউদুল ইসলাম ও জোবায়দুর রহমান মিলে অংশীদারি ফি দেন। আকতারুজ্জামানের ৮০ শতাংশ টাকা থাকায় গভীর নলকূপের নিয়ন্ত্রণ তিনিই পান। অপারেটর হিসেবে নিয়োগ পান তাঁর স্ত্রী বিউটি বেগম। যদিও কৃষকেরা আকতারুজ্জামানকেই অপারেটর হিসেবে জানতেন।

সেচের পানি পেতে হয়রানির শিকার হয়ে সদর উপজেলার বড় বালিয়া এলাকার ৫০ জন কৃষক গত ১৭ এপ্রিল বিএমডিএ সহকারী প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ দেন। সেখানে গিয়ে কৃষক ও অপারেটরের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।

ভুক্তভোগী কৃষকেরা বলেন, ২০১২ সালে নলকূপটি চালু হলে আওতাধীন কৃষকের কাছ থেকে আকতারুজ্জামান সেচের পানির জন্য প্রিপেইড কার্ডের অতিরিক্ত টাকা আদায় শুরু করেন। আর সেই টাকা থেকে তিনি মাঝেমধ্যে অন্য দুই অংশীদারকে কিছু টাকা ভাগ দেন।

ভুক্তভোগী কৃষক মো. শাহজাহান আলী বলেন, গভীর নলকূপটির আওতায় তাঁর ১০ বিঘা জমি রয়েছে। কার্ডের বাইরে টাকা দেওয়ার নিয়ম না থাকলেও আকতারুজ্জামানকে প্রতি বিঘায় সেচের জন্য ১ হাজার ২০০ টাকা দিতে হয়। এই টাকা না দিলে তিনি পানি দেন না।

ওই নলকূপের আওতায় চার বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করছেন কৃষক মো. হেলাল। তিনি অতিরিক্ত টাকা না দেওয়ায় অপারেটর খেতে পানি দেননি। এতে জমি ফেটে যায়। পরে তিনি শ্যালো ইঞ্জিন দিয়ে জমিতে সেচ দিয়ে খেত রক্ষা করেছেন।

আরেক ভুক্তভোগী মোকলেসুর রহমান বলেন, ১০ বছর ধরে সেচের পানির জন্য অতিরিক্ত টাকা দিয়ে আসছেন। এখন বিরক্ত হয়ে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। এরপরও কোনো বিচার পাননি।

এ বিষয়ে মো. আকতারুজ্জামান বলেন, তিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর দেখেন গ্রামে কোনো গভীর নলকূপ নেই। পরে বিএমডিএ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে নলকূপটি স্থাপন করেন। কৃষকেরা অংশীদারত্বের টাকা দিতে রাজি না হলে তিনি বিএমডিএকে জানান। সে সময় তাঁরা টাকা দিয়ে দিতে পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘পরে আপনি টাকাটা ধীরে ধীরে তুলে নেবেন।’ সেই পরামর্শেই সেচের পানি বাবদ প্রিপেইড কার্ডের অতিরিক্ত কিছু টাকা তিনি নিচ্ছেন। জোর করে কিছু নিচ্ছেন না।

বিএমডিএ ঠাকুরগাঁও কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগটি যাচাই করে সত্যতা পাওয়া গেছে। নলকূপটি সুষ্ঠুভাবে চালানোর জন্য সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওই অপারেটরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোটেক

কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তারা এক সঙ্গে কাজ করতে রাজি

ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি
ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি

ডাচ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে দুই দেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা একসঙ্গে কাজ করতে রাজি হয়েছেন।

গতকাল সোমবার নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগে অনুষ্ঠিত কৃষি খাতের ব্যবসাবিষয়ক এক সম্মেলনে দুই দেশের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত এগ্রি বিজনেস কনক্লেভে বাংলাদেশের প্রায় ৪০জন উদ্যোক্তা ডাচ কৃষি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি প্রযুক্তি সহযোগিতা ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছে ওয়েগেনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়।

আলোচনায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা প্রযুক্তি কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিলে নেদারল্যান্ডসের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা প্রযুক্তি সহযোগিতা দিতে রাজি থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে ডাচরা প্রস্তুত এবং বাংলাদেশি উদ্যোক্তারাও তাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। এ ছাড়া ডাচ সরকার ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বীজ, পশু খাদ্য, পোলট্রি, হর্টিকালচার ও এ্যাকুয়াকালচার বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম সম্পাদন করেছে, যা ওই দেশের বেসরকারি খাতকে আরও উৎসাহিত করেছে।

আলোচনায় কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করতে তৈরি আছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্কয়ার, ইস্পাহানি এগ্রো, একে খান অ্যান্ড কোম্পানি, প্যারাগন গ্রুপ, এসিআই, জেমকন গ্রুপসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা ডাচ প্রযুক্তির প্রয়োগ সরেজমিনে দেখতে যাবেন।

বাংলাদেশের সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের পোল্ট্রিখাতে সহযোগিতার আলোচনা অনেকটা এগিয়েছে উল্লেখ করে মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, দুই দেশের মধ্যে মৎস্য, পশুপালন ও হর্টিকালচারে সহযোগিতার বিপুল সম্ভাবনা আছে।

কনক্লেভ আয়োজনে প্রথমবারের মতো দূতাবাসের সঙ্গে অংশীদার হয়েছে নেদারল্যান্ডসের কৃষি মন্ত্রণালয়, নেদারল্যান্ডস এন্টারপ্রাইজ এজেন্সি, নেদারল্যান্ডস ফুড পার্টনারশিপ, ডাচ-গ্রিন-হাইজডেল্টা, লারিভ ইন্টারন্যাশনাল, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ।

কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থানকারী নেদারল্যান্ডসের আয়তন বাংলাদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের কম। ২০২১-এ কৃষিপণ্য ও খাদ্য রপ্তানি করে নেদারল্যান্ডস ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি আয় করেছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ফসল

ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বীজ কিনে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা তাঁদের জমির ধানের ফলন খারাপের চিত্র দেখিয়ে দিচ্ছেন। গত সোমবার বিকেলে নান্দাইল উপজেলার গাংগাইল ইউনিয়নের পাছবাড়িয়া গ্রামে
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা তাঁদের জমির ধানের ফলন খারাপের চিত্র দেখিয়ে দিচ্ছেন। গত সোমবার বিকেলে নান্দাইল উপজেলার গাংগাইল ইউনিয়নের পাছবাড়িয়া গ্রামে

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় লাইসেন্সহীন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে নিম্নমানের বীজ কিনে বোরো ধান আবাদ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকেরা। উপজেলার গাংগাইল ইউনিয়নের পাছবাড়িয়া গ্রামের কৃষকদের দাবি, এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কেনা বীজে ধান চাষ করে তাঁরা ধরা খেয়েছেন। ২০ জনের বেশি কৃষকের প্রায় ৮৫০ শতক জমির ৪ ভাগের ৩ ভাগ ধান নষ্ট হয়ে গেছে।

পাছবাড়িয়া গ্রামের কৃষক মো. তাইজুল ইসলাম ভূঁইয়া ও আতাউর রহমান জানান, তাঁরা স্থানীয় বাংলাবাজারের সোলাইমান এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. সোলাইমান মিয়ার কাছ থেকে বেঙ্গল সিড কোম্পানির ধানবীজ কিনে বীজতলা তৈরি করেছিলেন। সেই বীজতলার চারা নিজেদের জমিতে রোপণ করেন। উদ্বৃত্ত চারা গ্রামের অন্য কৃষকদের কাছে বিক্রি করেছেন। এখন তাঁদের সঙ্গে অন্য কৃষকেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে আছেন মহসিন মিয়া, জাহাঙ্গীর মিয়া, আনোয়ার হোসেন, আবদুল হেকিম, আবদুস সালাম, আতাউর রহমান, রমজান আলীসহ আরও অনেকে।

অভিযোগের বিষয়ে বীজ ব্যবসায়ী সোলাইমান মিয়া বলেন, কৃষকেরা তাঁর কাছে বীজ চেয়েছিলেন। তাই তিনি নান্দাইল শহরের স্বপন মিয়ার বীজ বিক্রির দোকান বেঙ্গল সিডের ব্রি ধান-৮৯ জাতের বীজ কিনে এনে কৃষকদের কাছে বিক্রি করেছেন। বীজ বিক্রির লাইসেন্স আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, বীজ বিক্রি করার জন্য তাঁর কোনো লাইসেন্স বা কৃষি বিভাগের অনুমতি নেই। সাত বছর ধরে তিনি লাইসেন্স ছাড়াই বীজ বিক্রির ব্যবসা করছেন।

সোমবার পাছবাড়িয়া গ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জমিতে গিয়ে দেখা যায়, একই বীজের চারা রোপণ করা হলেও জমিতে তিন ধরনের ধানগাছ গজিয়েছে। ধানের শিষ হয়েছে তিন প্রকারের।

এই ঘটনার জন্য ক্ষতিপূরণ ও উপযুক্ত বিচার চান ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা। তাঁরা জানান, ধানের বীজ মানসম্পন্ন না হওয়ায় গ্রামের ৮৫০ শতকের বেশি জমির ফলন নষ্ট হয়ে গেছে। যেখানে প্রতি ১০ শতকে ১০-১১ মণ ধান ফলন হওয়ার কথা। সেখানে ফলন হতে পারে এক থেকে দেড় মণ। বোরো মৌসুমে এমন ক্ষতির মুখে পড়ে তাঁরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। বৃদ্ধ কৃষক মহসিন মিয়া বলেন, তিনিও সুলাইমানের দোকান থেকে বেঙ্গল সিডের বীজ কিনে ৭০ শতক জমি আবাদ করেছেন। তাঁর জমিতেও ফলন ভালো হয়নি।

এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে পাছবাড়িয়া গ্রামে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফয়জুর রহমান বীজ বিক্রেতা সুলাইমান ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের নিয়ে সালিসে বসার কথা।
নান্দাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আনিসুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, তিনি একজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কাছে পাঠাবেন। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। এই ঘটনার জন্য নিম্নমানের ধান বীজ দায়ী হলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির বিষয়ে প্রতিবেদন পাঠাবেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ফসল

বোরো কাটতে বাড়তি খরচ ঃ হাসি নেই কৃষকের মুখে

সরকারের পক্ষ থেকে ভর্তুকির মাধ্যমে কম্বাইন হারভেস্টার দেওয়া হলেও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল।

গত সোমবার কালিহাতীর আউলিয়াবাদ গ্রামে
গত সোমবার কালিহাতীর আউলিয়াবাদ গ্রামে

টাঙ্গাইলে এবার বোরোর ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে দফায় দফায় বৃষ্টি হওয়ায় ধান গোলায় তুলতে বিঘ্ন হচ্ছে। এ ছাড়া শ্রমিকের অতিরিক্ত মজুরির কারণেও ধান ঘরে তুলতে অনেক খরচ হচ্ছে।

এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে ভর্তুকির মাধ্যমে কম্বাইন হারভেস্টার দেওয়া হলেও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। সব মিলিয়ে বোরোর বাম্পার ফলন হলেও হাসি নেই কৃষকের মুখে।

কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক বিঘা (৩৩ শতাংশ) জমিতে ধান চাষ করতে ধানের বীজ, হালচাষ, সার, শ্রমিক মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। এক বিঘা জমিতে সেচপাম্পের মালিকের পানি সেচের জন্য ২৫ ভাগ দেওয়ার পর ১৮ থেকে ২০ মণ ধান পাওয়া যায়। বর্তমান বাজারে প্রতি মণ ধানের মূল্য ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা। এতে তিন মাস পরিশ্রম করেও কৃষকের তেমন লাভ থাকছে না। বর্তমান ধানের যে দাম পাওয়া যাচ্ছে, তাতে বিঘাপ্রতি দু-তিন হাজার টাকা ক্ষতি যাচ্ছে। এ ছাড়া রোদ না থাকায় দফায় দফায় বৃষ্টিতে অনেকের ধান খেতেই নষ্ট হচ্ছে। এলাকাভেদে তিন বেলা খাবারসহ শ্রমিকের মজুরি ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে ১ লাখ ৭১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সেখানে চাষ হয়েছে ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৫৩ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৭ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন। পোকামাকড়ের আক্রমণ না থাকা ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অন্যান্য বছরের তুলনায় ফলন বেশি হয়েছে।

সরেজমিনে টাঙ্গাইল সদর ও কালিহাতীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কয়েক দিনের বৃষ্টিতে অনেক পাকা ধানের খেতে পানি জমে আছে। আবার নিচু খেতগুলোতে হাঁটুপানি জমে আছে। শ্রমিকেরা পানির মধ্যেই ধান কাটছেন। অনেক ধান আবার পাকার আগেই ঝড়ে মাটিতে পড়ে খেতেই নষ্ট হয়েছে। এ সময় কয়েকজন কৃষক জানান, শুকনার সময় প্রতি বিঘা ধান কাটা, আনা ও মাড়াই করতে আটজন শ্রমিক লাগলেও খেতে পানি থাকায় ১০ জন শ্রমিক লাগছে। এতে কৃষকের সময় ও টাকা বেশি লাগছে।

পঞ্চগড় থেকে আসা শ্রমিক সুভাষ ও কালিপদ সাহা বলেন, ‘আমাদের এলাকায় খাবার ছাড়া ৫০০-৬০০ টাকা মজুরি। টাঙ্গাইলে কাজ করছি তিন বেলা খাবারসহ ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপপরিচালক মো. আহসানুল বাসার বলেন, ধানেরও বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় শ্রমিকের মূল্য বেশি হওয়ায় কৃষকেরা একটু সমস্যায় পড়েছেন। এ পর্যন্ত জেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ৫০ শতাংশ ভর্তুকিতে ৫০টি কম্বাইন হারভেস্টার বিতরণ করা হয়। সেগুলো ধান কাটার কাজেই ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ছাড়া আশপাশের জেলা থেকে মেশিন এনে ধান কাটা হচ্ছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@theagronews.com, theagronewsbd@gmail.com