ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে ফুড ডেলিভারি শুরু করেন এই নারী। এখন বিশ্ব জুড়ে তার রয়েছে ১১ হোটেল। জেনে নিন সেই নারী সম্পর্কে।
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। অফিসে কাজের প্রচুর চাপ। সেই কোন সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়তেন জয়ন্তী। রাতে যখন বাড়ি ফিরতেন, ছোট্ট ছেলেটা চাইত মায়ের সঙ্গে গল্প করতে, মায়ের থেকে গল্প শুনতে। কিন্তু জয়ন্তীর তখন আর শরীর দিত না।
সারাদিনের ক্লান্তিতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তেন। ছেলের স্কুলের হোমওয়ার্ক থেকে তাকে দেখাশোনা, কোনো দায়িত্বই সেভাবে নিতে পারতেন না। মানসিকভাবে ভীষণ ভেঙে পড়ছিলেন। তারপরই একদিন সিদ্ধান্ত নেন, চাকরি ছেড়ে ফুড হোম ডেলিভারি শুরু করার।
সেই ছোট চিন্তাভাবনার জেরেই জয়ন্তী আজ বিশ্ব জুড়ে ১১ রেস্তোরাঁর মালিক!
যার কথা হচ্ছে তিনি বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা ৪০ বছরের জয়ন্তী কাঁঠালে। একান্নবর্তী পরিবারে জন্ম জয়ন্তীর ছোট থেকেই রান্নার প্রতি ঝোঁক ছিল। জয়েন্ট ফ্যামিলি হওয়ায় তাদের পরিবারে একসঙ্গে অনেকটা রান্না করতে হত। তাই পরিবারের ছোট-বড় সকলেই রান্নার কাজে হাত লাগাতেন।
মহারাষ্ট্রে এক মারাঠি পরিবারে জন্ম জয়ন্তীর। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে বেঙ্গালুরুতে শিফট্ করেন জয়ন্তী। তার হোম ডেলিভারি ব্যবসার শুরু কিন্তু বিদেশে। ২০০৬ সালে অফিস থেকে তাকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানো হয়। সেখানে খাওয়া-দাওয়া নিয়ে খুব সমস্যায় পড়েছিলেন তিনি।
তার অন্যান্য ভারতীয় সহকর্মীরাও একই সমস্যার কথা শেয়ার করেছিলেন। সেই প্রথম হোম ডেলিভারির কথা মাথায় আসে জয়ন্তীর। অরকুটে নিজের একটা প্রোফাইল বানিয়ে তাতে নির্দিষ্ট মেনু লিখে খাবারের হোম ডেলিভারির জন্য অর্ডারের বিজ্ঞাপন দেন।
প্রথম দিনই দারুণ সারা পান। বাড়ির খাবার বহু ভারতীয় সহকর্মী অর্ডার দেন। কর্মসূত্রে দুই বছর অস্ট্রেলিয়ায় ছিলেন তিনি। এই দুই বছরই সেখানে হোম ডেলিভারি করেছেন জয়ন্তী। বিভিন্ন উৎসবে মারাঠি মিষ্টি বানিয়েও হোম ডেলিভারি দিতেন তিনি।
দুই বছর পর বেঙ্গালুরুতে ইনফোসিসের প্রজেক্ট ম্যানেজার হিসাবে যোগ দেন তিনি। প্রজেক্ট ম্যানেজার হওয়ার পাশাপাশি নিজের হোম ডেলিভারিও চালিয়ে যাচ্ছিলেন জয়ন্তী।
সে সময়টা ভীষণ কষ্ট করেছেন জয়ন্তী। তার দিন শুরু হত ভোর ৩টায়। সমস্ত রান্নার ব্যবস্থা করে, তারপর তিনি অফিসে যেতেন। বাড়ি ফিরেও পরের দিনের জন্য ব্যবস্থা করতে শুরু করতেন।
কয়েকজন সহযোগী নিয়েছিলেন জয়ন্তী। তারা সারাদিন ব্যবসার কাজ দেখাশোনা করতেন। প্রথমে বাড়ির গ্যারাজেই শুরু করেছিলেন ব্যবসা।
বেঙ্গালুরুর এইচএসআর আউটলেটে ২০১২ সালে প্রথম তিনি তার রেস্তরাঁর শাখা খোলেন। তার রেস্তরাঁর নাম ‘পূর্ণব্রহ্ম’। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে এই রেস্তরাঁ খোলেন তিনি।
পরে মুম্বই, পুণে, অমরাবতীতেও তার ব্যবসা ছড়িয়ে যায়। বর্তমানে ভারতে ছয়টা শাখা রয়েছে জয়ন্তীর। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেন, লন্ডন, টরন্টো, শিকাগোতেও তার রেস্তরাঁর শাখা রয়েছে।
সব মিলিয়ে মোট ১১টা শাখা খুলেছেন তিনি। বিশ্বজুড়ে আরো অনেক আউটলেট খোলার স্বপ্ন রয়েছে জয়ন্তীর। তার ইচ্ছা বিশ্বজুড়ে ‘পূর্ণব্রহ্ম’-র পাঁচ হাজার শাখা হবে।
তবে তার ব্যবসার একটা শর্ত রয়েছে। শুধুমাত্র মহিলাদেরই তিনি ফ্রাঞ্চাইজি দিয়ে থাকেন। মহিলাদের স্বনির্ভর করার উদ্দেশেই এই পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন জয়ন্তী। প্রতিটা শাখার ৭০ শতাংশ কর্মীও মহিলাই।
রেস্তরাঁর খাবারের বিশেষত্ব কী? একেবারে মহারাষ্ট্রিয়ান স্টাইলে খাবার তৈরি হয় এখানে। মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে খাবারের উপর তিন বছর ধরে গবেষণা চালিয়েছেন জয়ন্তী।
সব জায়গার খাবার খেয়ে, সেগুলো বাড়িতে প্রথমে বানাতেন তিনি। তার রেস্তোরাঁয় শিব থালি, মহালক্ষ্মী থালি এবং শিশুদের জন্য বালগোপাল থালির ব্যবস্থা রয়েছে। স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে প্রতিটা খাবারে কোনো প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করেন না বলেও দাবি করেছেন তিনি।
খাবার বিক্রি করে বিশ্বজুড়ে ১১ হোটেলের মালিক যে নারী
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন