আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

ফল

গুণে ভরা কাঁঠাল : প্রক্রিয়াজাতকৃত প্রযুক্তিই অপচয় রোধের অন্যতম হাতিয়ার

গুণে ভরা কাঁঠাল : প্রক্রিয়াজাতকৃত প্রযুক্তিই অপচয় রোধের অন্যতম হাতিয়ার
গুণে ভরা কাঁঠাল : প্রক্রিয়াজাতকৃত প্রযুক্তিই অপচয় রোধের অন্যতম হাতিয়ার

কাঁঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল। পুষ্টিগুণে ভরপুর তাইতো এটি ফলের মধ্যে গুনের রাজা হিসেবে স্বীকৃত। কাঁঠালে আছে অধিক পরিমাণে আমিষ, শর্করা ও বিভিন্ন ভিটামিন যা মানবদেহের জন্য বিশেষ প্রয়োজন। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা কাঁঠালে ১.৮ গ্রাম, কাঁচা কাঁঠালে ২০৬ গ্রাম ও কাঁঠালের বীজে ৬.৬ গ্রাম আমিষ পাওয়া যায়। কাঁচা কাঁঠাল রোগ ব্যাধি উপশমে যেমন কার্যকর, অন্যদিকে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে দেয় অনেকগুন। এটি ক্যান্সারের মোকাবেলায়ও সাহায্য করে। এতে আছে বিপুল পরিমাণে খনিজ উপাদান যা হাড়ের গঠন ও হাড় শক্তিশালীকরণে এবং রক্তে শর্করা বা চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

কাঁঠালে আছে শক্তিশালী এন্টি-অক্সিডেন্ট যা আমাদের দেহকে ক্ষতিকর ফ্রি-রেডিকেলস থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও সর্দি-কাশি রোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। কাঁঠালে বিদ্যমান ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস- আলসার, উচ্চ রক্তচাপ এবং বার্ধক্য প্রতিরোধে সক্ষম। এই ফলে রয়েছে আয়রন যা দেহের রক্তাল্পতা ও এটি আঁশালো হওয়ায় কোষ্ঠকাঠিণ্যও দূর করে। পাকা কাঁঠালে আয়রনের পরিমাণ ০.৫ মি..গ্রা., কাঁচা কাঁঠালে ১.৭ মি..গ্রা. এবং বীজে ১.৫ মি..গ্রা. বিদ্যমান। কাঁঠালের অন্যতম উপযোগিতা হল ভিটামিন ’সি’।

প্রাকৃতিকভাবে মানবদেহে ভিটামিন ’সি’ তৈরি হয় না। ভিটামিন ’সি’ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দাঁতের মাড়িকে শক্তিশালী করে। এতে আরও আছে ভিটামিন ‘বি৬’ যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। গবেষণা লব্ধ ফলাফল হতে দেখা যায়, পাঁকা কাঁঠালের রস মায়ের দুধের পাশাপাশি শিশুকে খাওয়ালে শিশুর ক্ষুধা নিবারণ হয়। অন্যদিকে তার প্রয়োজনীয় ভিটামিনের অভাবও পূরণ হয় যা আমাদের দেশের অনেক মায়েদের জন্য খুবই প্রয়োজন। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা কাঁঠাল থেকে ৪৮ কিলোক্যালরি, কাঁচা কাঁঠাল থেকে ৫৩ কিলোক্যালরি এবং কাঁঠালের বীজ থেকে ১৩০ কিলোক্যালরি পরিমাণ শক্তি পাওয়া যায়। পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তির যোগান কাঁঠাল থেকে পাওয়া সম্ভব। আবার অনেক খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞানী চেহারায় লাবন্য দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য কাঁঠাল খাওয়ার পরামর্শ দেন। 

দেশের প্রায় সব এলাকায় কম বেশি কাঁঠাল উৎপাদিত হয়ে থাকে। অঞ্চলগুলোর মধ্যে গাজীপুর, ময়মনসিংহ, নরসিংদী, রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, যশোর, খুলনা, সুনামগঞ্জ, পার্বত্যচট্রগ্রামে উল্লেখযোগ্য পরিমান ও উৎকৃষ্টমানের কাঁঠাল উৎপন্ন হয়ে থাকে। এইসকল অঞ্চলের কাঠাঁল ভরা মৌসুমে দেশের আনাচে-কানাচে সর্বত্রই রাস্তাঘাটে, ভ্যানে-রিক্সায়, অটোরিক্সা, টেম্পু, ট্রাক ও রাস্তার মোড়ে ও বাজারে ক্ষুদ্র চাষী, ব্যবসায়ী, আড়ৎদার, বেপারী ও পাইকারী বিক্রেতাদের স্তুপ করে বিক্রয় করতে দেখা যায়। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এই চিত্রটি প্রায় প্রতিবছরই একইরকম ও দাম খুব কম হওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হ্যদয়ে কাঁঠাল চাষী ও উদ্যোক্তাদের বিক্রয় করতে দেখা যায় বা বিক্রয় করতে একরকম বাধ্য হয়ে থাকেন।

গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যায় দেশে কাঠাঁলের সংগ্রহোত্তর ক্ষতির পরিমান প্রায় ২৫ – ৪৫ ভাগ বা কখনও কখনও এই অপচয়ের পরিমান অনেক বেশি হয়ে থাকে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) এর এক প্রতিবেদনে দেখা যায় আমাদের দেশে প্রতিবছর প্রায় ৫০০ কোটি টাকার সমপরিমান কাঠাঁলের অপচয় হয়ে থাকে। কৃষক তার ন্যায্য মুল্য না পাওয়ায় উৎপাদনে নিরুৎসাহিত হচ্ছে বলে অনেক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায় যা কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন (কেজিএফ) এর অর্থায়নে পরিচালিত পোস্টহারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএআরআই) ও নিউভিশন সল্যুশন লিমিটেড, ঢাকার যৌথভাবে পরিচালিত এক গবেষণা জরিপেও চিত্রটি ফুটে উঠেছে। এখানে আরও লক্ষ্যনীয় যে, কৃষক সময়মত বিক্রয় করতে না পারা ও ন্যায্য মুল্য নিশ্চিত না হওয়ায় অনেকে কাঁঠাল গাছ বা কাঠাঁলের বাগান কেটে ফেলছেন ও এর পরিবর্তে অন্য ফসল বিশেষত: উচ্চমূল্যের ফসল উৎপাদনের পরিকল্পনা করছেন, এটে ঘটলে তা হবে খুবই দু:খজনক। 

পাকা কাঁঠাল খাওয়ার প্রবণতা আমাদের দেশে খুব বেশি।গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলাস্থ জৈনা বাজার ও মাওনা এলাকার কৃষক, ব্যবসায়ী ও আড়ৎদারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কাঁঠালকে শুধুমাত্র পাকা ফল হিসেবে খাওয়ার কারণে এটি যখন পাকঁতে শুরু করে তখন একসাথে বেশি ভাগ কাঁঠালই পেকে যায়। ফলে সেই সময় গাছ হতে ৩০ – ৪০ ভাগ কাঁঠাল প্রাকৃতিক ভাবে পড়ে যায় যা খাওয়ার উপযোগী থাকে না অর্থাৎ ব্যাপক কাঁঠাল এক্ষেত্রে নষ্ট হয়ে থাকে। সে সময় অনেকের মতে গরু বা পশু পাখিও পাকা কাঁঠাল খায় না। কিন্তু কাঁঠালকে বাণিজ্যিকীকরণের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে এবং পরিচর্যা ও প্রক্রিয়াজাতকৃত খাদ্য সামগ্রী তৈরিতে উদ্বুদ্ধ করা হলে এ ফলটিকে সারা বছর খাওয়ার টেবিলে আমরা পেতে পারি। অনেক দেশেই গবেষণা মাধ্যমে উদ্ভাবিত প্রযুক্তি সঠিক ব্যবহার করে কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান বছরব্যাপী কাঁঠালের তৈরি খাদ্য সামগ্রীকে জনসাধারণের কাছে সহজলভ্য করেছে। এতে কৃষক, উদ্যোক্তা ও ভোক্তা সকলেই লাভবান হচ্ছে।

এখানে উল্লেখ্য যে, পৃথিবীর অনেক দেশেই কৃষক, উদ্যোক্তা ও বিশেষ করে গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মাঝে শক্তিশালী একটি লিংকেজ বিদ্যমান থাকে যেখানে ষ্টেকহোল্ডার বা প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান প্রযুক্তির প্রয়োজনে উদ্ভাবনে সহায়তার জন্য সরকারের নিকট চেয়ে না থেকে বরং তারা নিজেরাই প্রকল্প হিসেবে প্রযুক্তি উদ্ভাবনে অর্থ ব্যয় করে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের দেশে কৃষি পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এক্ষেত্রে তেমন কোন অর্থ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে ব্যয় করতে উৎসাহীবোধ করেন না বা বাধ্যতামূলকভাবে করার কোন বিধান বা নীতিও নেই বললেই চলে। ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশ হতে উৎপাদন যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি সরাসরি ক্রয় করতে অর্থ ব্যয় করে থাকে। এমনকি নিজ অর্থ ব্যয় করে বিদেশ হতে বিশেষজ্ঞ পর্যন্ত আনা হয়। এতে দেশের অর্থ যেমন বিদেশে চলে যাচ্ছে তেমনি আমাদের দেশের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকেও সঠিকভাবে এ ক্ষেত্রে কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে না। 

কাঁঠালের বহুমুখী ব্যবহার বাড়াতে এবং অপচয় কমাতে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কেজিএফ এর অর্থায়নে পোস্টহারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগ ও নিউভিশন সলিউ্যশন লিমিটেড যৌথভাবে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্পের মুল উদ্দেশ্যই হলো- কাঁঠালের উৎপাদন, সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণন বিষয়কে সম্প্রসারিত করার মাধ্যমে অপচয় রোধ করা। প্রকল্পটি দেশের ৪টি বিভাগের (ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও চট্রগ্রাম) ৮টি জেলায় সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা, বিপণন ব্যবস্থা, গ্রাহকের চাহিদা ও প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে মূল্য সংযোজনসহ (ভ্যালু এ্যাডিশন) উৎপাদনকারীর জন্য টেকসই বিপণন মডেল প্রস্তত করা এবং কাঁঠালের (সতেজ ও প্রক্রিয়াজাতকৃত) বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রীর কৌশলগত বিপণন পরিকল্পনা প্রণয়ন নিয়েও কাজ করবে।

প্রকল্পের টিম লিডার মনে করেন, কাঁঠালকে সঠিকভাবে কাঁচা থেকে ব্যবহার করা গেলে বহুমুখী ব্যবহারের মাধ্যমে বহলাংশে অপচয় কমে আসবে এবং আমাদের দেশেই থাইল্যান্ডের বা ভিয়েতনামের ন্যায় কাঁঠালের চিপস্, ভেজিটেবল মিট, ফ্রেশ-কাট, ফ্রোজেন, অসমোটিক ডিহাইড্রেটেড প্রডাক্ট, রেডি-টু-কুক, ভিনেগার, কাঁঠালসত্ত্ব, জ্যাম, আচারসহ বহুবিধ উৎকৃষ্টমানের ও মুখরোচক খাদ্য দ্রব্য অনায়াসে তৈরি করা সম্ভব হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের নিয়ে বিভিন্ন গ্রুপ গঠন করা হবে এবং তাদেরকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করে প্রক্রিয়াজাতকৃত খাদ্য সামগ্রী তৈরিতে উদ্বুদ্ধ করা হবে এবং বিভিন্ন প্রচারনামূলক কার্য়ক্রমের মাধ্যমে কাঁঠালকে জনপ্রিয় করার বিবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। 

খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এর তথ্য মোতাবেক বিশ্বে বছরে প্রায় ৩৭ লাখ টন কাঁঠাল উৎপাদিত হয় যার অধিকাংশই উৎপাদিত হয় ভারতে (১৮ লাখ টন) এর পরের অবস্থান বাংলাদেশ (১০ লাখ টন)। চীন উৎপাদনে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ড। পুষ্টি বিবেচনায় চীন, জাপান, মালয়েশিয়াসহ পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশই কাঁঠালকে প্রক্রিয়াজাতকরণ কাজে ব্যবহার করায় উৎপাদন চলমান রাখতে বিভিন্ন দেশ হতে কাঁঠাল আমদানিও করছে। এ ক্ষেত্রে উৎকৃষ্টমানের ও সুনির্দিষ্ট জাত উদ্ভাবন এবং সঠিক পরিপক্কতা নির্বাচনের মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানীর যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে যা দেশের কৃষক ও উদ্যোক্তাকে উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধ করবে। এ কথা স্বীকৃত যে, কাঁঠালের সুনির্দিষ্ট জাত না থাকায় এই ফলের বৈচিত্রতা অধিক যা বিদেশে রপ্তানী ও প্রক্রিয়াজাতের ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা। উপমহাদেশের কাঁঠালের জাতের মধ্যে পরিচিত জাতগুলো হচ্ছে গালা, খাজা ও দোরোসা বা রস খাজা। কাঁঠালকে জনপ্রিয় ও যথাযথ ব্যবহার বৃদ্ধি করার প্রয়াসে বিএআরআই-এর উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র এ পর্যন্ত ৩ টি জাত (বারি কাঁঠাল-১, বারি কাঁঠাল-২ ও বারি কাঁঠাল-৩) উদ্ভাবন করেছে যা বছরব্যাপী ভোক্তাদের নিকট সরবরাহ করা সম্ভব হবে। 

কাঁঠালের বহুবিধ খাবারের মধ্যে কাঁঠালের বীচি খুবই পুষ্ঠিগুন সম্পন্ন খাবার যা দিয়ে ভর্তা, সবজি, ফ্রাইড প্রডাক্ট, কেক, হালুয়াসহ রকমারী খাদ্য সামগ্রী সহজেই তৈরি করা যায়। প্রবাসীদের নিকট এই বীচির কদর খুব বেশি। আমেরিকা, ইউরোপ, কানাডা, অস্টেলিয়াসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই দক্ষিণ এশিয়ার সুপার-সপগুলোতে ফ্রোজেন অবস্থায় কেজি প্রতি ৮০০ – ১০০০ টাকা দরে কাঁঠালের বীচি বিক্রয় করতে দেখা যায়। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা, চীন, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়াতে কাঁঠালের তৈরি বিভিন্ন খাদ্য বিশেষ করে চিপস, অসমোটিক ড্রাইড, আচার, জেমসহ হরেক রকমের খাদ্য পণ্য ব্যাপক হারে চোখে পড়ে।

প্রতিবেশী দেশ ভারতের কেরালায় কাঁচা কাঁঠাল খুবই জনপ্রিয়। সেখানে ’ভেজিটাবল মিট’ সহ বিভিন্ন উপকরণে ১০০ প্রকার খাবার কাঁচা কাঁঠাল দিয়ে তৈরি করে খাওয়ার প্রচলন আছে। কাঁঠালের বহুমুখী ব্যবহার খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্ঠির চাহিদা পূরণে ব্যাপক ভুমিকা রাখবে যা এসডিজি এর লক্ষ্য পূরণেও সহায়ক হবে তা নি:সন্দেহে বলা যায়। সেক্ষেত্রে কাঁঠালকে প্রথমেই সবজি হিসেবে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে যা বিএআরআই এর পোস্টহারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগের গবেষণায় ৫৫ দিন হতে ৬৫ দিনের অপরিপক্ক কাঁঠালকে ’ভেজিটাবল মিট’ হিসেবে উপযোগী বলে প্রতীয়মান হয়েছে। এই কাঁঠালকে এন্টিমাইক্রোবিয়াল ও সংগ্রহোত্তর পরিচর্যার মাধ্যমে ডিপ ফ্রিজে ৬ – ৮ মাস গুনগতমান অক্ষুণ্য রেখে সহজেই সংরক্ষণ করা যায়। 

দেশে উৎপাদিত কাঁঠালের খুব অল্প পরিমানে বিদেশে রপ্তানী হয় এবং এর ক্রেতা অধিকাংশই প্রবাসী বাংলাদেশী। ডিএই-এর তথ্য মতে ২০১৬-১৭ সালে ৩৯৩ টন এবং ২০১৭-১৮ সালের জুন পর্যন্ত রফতানি ছিল ৭০০ টন। আমাদের দেশের কাঁঠালের মধ্যে হবিগঞ্জের বড় ও ভালমানের কাঁঠাল ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইংল্যান্ড, আমেরিকা ও মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে কাতার, ওমান, বাহরাইন, সৌদি আরব, দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে। উত্তম কৃষি চর্যা, উন্নত প্যাকেজিং প্রযুক্তি, সঠিক পরিপক্কতা নির্ধারন, সুনির্দিষ্ট জাত নির্বাচন, প্যাকিং হাউজ সুবিধাসহ যথাযথ প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রযুক্তি প্রয়োগ করার মাধ্যমে জাতীয় ফল কাঁঠালকে দেশের গন্ডী পেরিয়ে বিদেশে রপ্তানী বৃদ্ধি ও সম্প্রসারণের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হবে যা কৃষকের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি যেমন নিশ্চিত করবে তেমনি অধিক পুষ্ঠিসমৃদ্ধ ফল কাঠাঁলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। সর্বোপরি খাদ্য ও পুষ্ঠি নিরাপত্তা বিধানসহ দেশের অর্থনীতিকে বেগমান করবে।

লেখক : খাদ্য প্রযুক্তি বিষয়ক গবেষক ও উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, পোস্টহারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, গাজীপুর।

বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

এগ্রোবিজ

বিদেশ থেকে খালি হাতে ফিরে ড্রাগন চাষে সাফল্য

বাগানে চাষ করা ড্রাগন হাতে মিরাজুল ইসলাম
বাগানে চাষ করা ড্রাগন হাতে মিরাজুল ইসলাম

মিরাজুল ইসলাম (৩৩)। ১০ বছর সৌদি আরবে ছিলেন। আকামা জটিলতায় খালি হাতে দেশে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। এক বছর বেকার থাকার পর ইউটিউবে পতিত জমিতে ড্রাগন চাষের ভিডিও দেখেন। বাবার কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে নেমে পড়েন ড্রাগন চাষে। দেড় বছরের ব্যবধানে এখন উপজেলার সবচেয়ে বড় ড্রাগন বাগান তাঁর। এ বছর খরচ বাদে আট থেকে নয় লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার ইন্দুরকানি গ্রামের বাসিন্দা মিরাজুল। উপজেলার টগরা গ্রামে দেড় একর জমিতে তিনি ড্রাগনের বাগান তৈরি করেছেন। তাঁর বাগানে এখন সাড়ে তিন হাজার ড্রাগন ফলের গাছ আছে।

মিরাজুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক হিসেবে ১০ বছর সৌদিতে কাজ করে ২০১৯ সালে দেশে ফেরেন তিনি। আকামা সমস্যার কারণে শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। কিছু একটা করবেন বলে ভাবছিলেন। একদিন ইউটিউবে ড্রাগন চাষের ভিডিও দেখতে পান। সেই থেকে ড্রাগন চাষে আগ্রহ জন্মে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে দেড় একর পতিত জমি ড্রাগন চাষের উপযোগী করেন। গাজীপুর থেকে ৬০ টাকা দরে ৬০০ চারা নিয়ে আসেন। বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে শুরু করেন চাষাবাদ। পরের বছর জুনে ফল পাওয়া শুরু করেন।

ড্রাগনের বাগান করতে মিরাজুলের খরচ হয়েছিল ছয় থেকে সাত লাখ টাকা। ইতিমধ্যে ফল বিক্রি করে তাঁর খরচ উঠে গেছে। সাধারণত মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গাছে ফল আসে। বছরে ছয় থেকে সাতবার পাকা ড্রাগন সংগ্রহ করা যায়। এখন পরিপক্ব ও রোগমুক্ত গাছের শাখা কেটে নিজেই চারা তৈরি করেন। ড্রাগন চাষের পাশাপাশি বাগানে চুইঝাল, এলাচ, চায়না লেবুসহ মৌসুমি সবজি চাষ করেন। এ ছাড়া ড্রাগনের চারাও উৎপাদন করে বিক্রি করেন তিনি।

মিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বাগানের বেশির ভাগ গাছে এ বছর ফল ধরেছে। গত মঙ্গলবার বাগান থেকে দেড় টন ফল সংগ্রহ করেছেন। ২৫০ টাকা কেজি দরে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পাইকারদের কাছে বিক্রি করেছেন। স্থানীয় বাজারে ৩০০ টাকা কেজি দরে ড্রাগন বিক্রি হয়। নভেম্বর পর্যন্ত আরও পাঁচ–ছয়বার বাগান থেকে ফল তোলা যাবে। আশা করছেন, খরচ বাদে এবার আট থেকে নয় লাখ টাকা লাভ থাকবে।

মিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমার বাগান থেকে চারা নিয়ে অনেকে বাড়িতে ও ছাদে ছোট পরিসরে ড্রাগনের বাগান করেছেন। আমি এ পর্যন্ত ৪০ টাকায় দেড় হাজার চারা বিক্রি করেছি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্ণ বয়সের একটি ড্রাগনের চারা রোপণের পর ২৫ বছর পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। এর মৃত্যুঝুঁকি নেই বললেই চলে। তবে কয়েক দিন পরপর সেচ দিতে হয়। বৃষ্টির পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হয়। ড্রাগন ফল চাষে রাসায়নিক সার দিতে হয় না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইশরাতুন্নেছা বলেন, মিরাজুল ইসলামকে ড্রাগন চাষে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে আসছে কৃষি বিভাগ। উপজেলায় তাঁর বাগানটি সবচেয়ে বড়। তিনি নিরলস পরিশ্রম করে ছোট থেকে বাগানটি বড় করেছেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোটেক

কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তারা এক সঙ্গে কাজ করতে রাজি

ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি
ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি

ডাচ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে দুই দেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা একসঙ্গে কাজ করতে রাজি হয়েছেন।

গতকাল সোমবার নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগে অনুষ্ঠিত কৃষি খাতের ব্যবসাবিষয়ক এক সম্মেলনে দুই দেশের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত এগ্রি বিজনেস কনক্লেভে বাংলাদেশের প্রায় ৪০জন উদ্যোক্তা ডাচ কৃষি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি প্রযুক্তি সহযোগিতা ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছে ওয়েগেনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়।

আলোচনায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা প্রযুক্তি কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিলে নেদারল্যান্ডসের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা প্রযুক্তি সহযোগিতা দিতে রাজি থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে ডাচরা প্রস্তুত এবং বাংলাদেশি উদ্যোক্তারাও তাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। এ ছাড়া ডাচ সরকার ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বীজ, পশু খাদ্য, পোলট্রি, হর্টিকালচার ও এ্যাকুয়াকালচার বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম সম্পাদন করেছে, যা ওই দেশের বেসরকারি খাতকে আরও উৎসাহিত করেছে।

আলোচনায় কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করতে তৈরি আছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্কয়ার, ইস্পাহানি এগ্রো, একে খান অ্যান্ড কোম্পানি, প্যারাগন গ্রুপ, এসিআই, জেমকন গ্রুপসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা ডাচ প্রযুক্তির প্রয়োগ সরেজমিনে দেখতে যাবেন।

বাংলাদেশের সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের পোল্ট্রিখাতে সহযোগিতার আলোচনা অনেকটা এগিয়েছে উল্লেখ করে মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, দুই দেশের মধ্যে মৎস্য, পশুপালন ও হর্টিকালচারে সহযোগিতার বিপুল সম্ভাবনা আছে।

কনক্লেভ আয়োজনে প্রথমবারের মতো দূতাবাসের সঙ্গে অংশীদার হয়েছে নেদারল্যান্ডসের কৃষি মন্ত্রণালয়, নেদারল্যান্ডস এন্টারপ্রাইজ এজেন্সি, নেদারল্যান্ডস ফুড পার্টনারশিপ, ডাচ-গ্রিন-হাইজডেল্টা, লারিভ ইন্টারন্যাশনাল, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ।

কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থানকারী নেদারল্যান্ডসের আয়তন বাংলাদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের কম। ২০২১-এ কৃষিপণ্য ও খাদ্য রপ্তানি করে নেদারল্যান্ডস ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি আয় করেছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

পেঁয়াজের ক্ষতি পুষিয়ে দিচ্ছে সাথি ফসল বাঙ্গি

পেঁয়াজ তুলে নেওয়ার পর পুরো জমি ভরে গেছে বাঙ্গিগাছে। ফলন হয়েছে ভালো। পাবনার বেড়া উপজেলার বড়শিলা গ্রামে গত শুক্রবার
পেঁয়াজ তুলে নেওয়ার পর পুরো জমি ভরে গেছে বাঙ্গিগাছে। ফলন হয়েছে ভালো। পাবনার বেড়া উপজেলার বড়শিলা গ্রামে গত শুক্রবার

পাবনার বেড়া উপজেলার বড়শিলা গ্রামের কৃষক সাইদুল ইসলাম তাঁর দুই বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করে এবার প্রায় ৪০ হাজার টাকা লোকসান দিয়েছেন। অথচ পেঁয়াজের জমিতেই সাথি ফসল হিসেবে লাগানো বাঙ্গি থেকে তিনি ৫০ হাজার টাকার মতো লাভ করবেন বলে আশা করছেন। এই বাঙ্গি আবাদে তাঁর কোনো খরচ হয়নি। ফলে পেঁয়াজ আবাদের ক্ষতি পুষিয়ে যাচ্ছে।

সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘বাঙ্গি আবাদ কইর‌্যা যে টাকা পাইল্যাম তা হলো আমাগরে ঈদের বোনাস। পেঁয়াজের দাম না পাওয়ায় আমরা (কৃষকেরা) যে ক্ষতির মধ্যে পড়িছিল্যাম, বাঙ্গিতে তা পুষায়া গেছে। এই কয়েক দিনে ১২ হাজার টাকার বাঙ্গি বেচছি। সব মিলায়া ৫০ হাজার টাকার বাঙ্গি বেচার আশা করতেছি।’

সাইদুল ইসলামের মতো পাবনার বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার অনেক কৃষক এবার পেঁয়াজের সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে বাঙ্গির আবাদ করেন। কৃষকেরা পেঁয়াজ আবাদ করতে গিয়ে বিঘায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করেছিলেন। সেই হিসাবে প্রতি মণ পেঁয়াজ উৎপাদনে তাঁদের খরচ হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকার বেশি। কিন্তু বাজারে সেই পেঁয়াজ কৃষকেরা বিক্রি করতে পেরেছেন প্রতি মণ ৬০০ থেকে ৮৫০ টাকায়। এতে প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদে কৃষকদের এবার ২০ হাজার টাকার বেশি লোকসান হয়েছে।

কৃষকেরা বলেন, পেঁয়াজের জমিতে সাথি ফসল হিসেবে বাঙ্গি, মিষ্টিকুমড়া, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। জমিতে পেঁয়াজ লাগানোর পর তা কিছুটা বড় হলে এর ফাঁকে ফাঁকে এসব সাথি ফসল লাগানো হয়। পেঁয়াজের জন্য যে সার, কীটনাশক, সেচ দেওয়া হয়, তা থেকেই সাথি ফসলের সব চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। ফলে সাথি ফসলের জন্য বাড়তি কোনো খরচ হয় না।

কৃষকেরা বলেন, বাঙ্গিতেই কৃষকের লাভ হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। রমজান মাস হওয়ায় এখন বাঙ্গির চাহিদা ও দাম দুই-ই বেশি।

সাঁথিয়ার শহীদনগর গ্রামের কৃষক আজমত আলী জানান, তাঁর জমিসহ এই এলাকার জমি থেকে ৮ থেকে ১০ দিন হলো বাঙ্গি উঠতে শুরু করেছে। এবার বাঙ্গির ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। বাজারে এসব বাঙ্গি আকারভেদে প্রতিটি ৬০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমন দাম থাকলে এক বিঘা থেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকার বাঙ্গি বিক্রি হবে।

সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জীব কুমার গোস্বামী বলেন, পেঁয়াজের সঙ্গে সাথি ফসলের আবাদ কৃষকদের মধ্যে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এ ব্যাপারে তাঁরাও কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

কাঁঠালের আইসক্রিম জ্যাম ও চিপস

জাতীয় ফল কাঁঠালের জ্যাম, চাটনি ও চিপস উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএআরআই) শস্য সংগ্রহের প্রযুক্তি বিভাগের একদল গবেষক। তাঁরা কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত করে মোট ১২টি প্যাকেট ও বোতলজাত পণ্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।

গত শনিবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসে অবস্থিত বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিনা) ‘কাঁঠালের সংগ্রহত্তোর ক্ষতি প্রশমন ও বাজারজাতকরণ কৌশল’ শীর্ষক কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব তথ্য জানান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. গোলাম ফেরদৌস চৌধুরী। কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) অর্থায়নে এবং নিউভিশন সলিউশন্স লিমিটেডের সহযোগিতায় গবেষণা প্রকল্পটি পরিচালিত হয়।

কর্মশালায় ড. মো. গোলাম ফেরদৌস চৌধুরী বলেন, ‘এই প্রকল্পের আওতায় আমরা কাঁঠালের প্রক্রিয়াজাত করে মুখরোচক ১২টি প্যাকেট ও বোতলজাত পণ্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এসব পণ্য উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। কাঁঠালের জ্যাম, আচার, চাটনি, চিপস, কাটলেট, আইসক্রিম, দই, ভর্তা, কাঁঠাল স্বত্ব, রেডি টু কুক কাঁঠাল, ফ্রেশ কাট পণ্যসহ আরও বিভিন্ন ধরনের প্যাকেটজাত পণ্য তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। প্রক্রিয়াজাত পণ্যগুলো ঘরে রেখে সারা বছর খাওয়া যাবে। কাঁঠাল থেকে এসব পণ্য উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা কমানো সম্ভব বলে মনে করছেন গবেষক।’

কর্মশালায় নিউভিশন সলিউশন্স লিমিটেডের মুখ্য পরিদর্শক তারেক রাফি ভূঁইয়া বলেন, উদ্ভাবিত পণ্যগুলো বাজারজাত করার জন্য নিউভিশন কোম্পানি বিএআরআইয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। ময়মনসিংহসহ বাংলাদেশের কয়েকটি জেলা ও উপজেলা শহরে পণ্যগুলো বিপণনের কাজ চলছে।

কর্মশালায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের শস্য সংগ্রহোত্তর প্রযুক্তি বিভাগের বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. হাফিজুল হক খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। সম্মানিত অতিথি ছিলেন কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের সিনিয়র স্পেশালিস্ট (ফিল্ড ক্রপস) ড. নরেশ চন্দ্র দেব বর্মা। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আবু হানিফ। উপস্থিত ছিলেন নিউভিশন সলিউশন্স লিমিটেডের প্রকল্প ম্যানেজার কায়সার আলম।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ফল

কমলা চাষে সার ব্যবস্থাপনা, সেচ, আগাছা ব্যবস্থাপনা ও ফসল তোলা- দা এগ্রো নিউজ

কমলা

সার ব্যবস্থাপনা:  প্রতি গর্তে ১০০ গ্রাম ইউরিয়া সার, ১০০ গ্রাম টিএসপি সার ও এমওপি সার ১০০ গ্রাম প্রয়োগ করতে হয়।

সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা:  চারা গাছের গোড়ায় মাঝে মাঝে পানি সেচ দিতে হবে। বর্ষাকালে গাছের গোড়ায় যাতে পানি না জমে সেজন্য পানি নিকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তাছাড়া কমলা গাছের আগাছা দমন করতে হবে।

ফসল তোলা: মধ্য কার্তিক থেকে মধ্য পৌষ মাসে ফল সংগ্রহ করতে হয়।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@theagronews.com, theagronewsbd@gmail.com